কক্সবাংলা ডটকম(২৬ সেপ্টেম্বর) :: চলতি বছরের নভেম্বরে ইরানের কাছ থেকে অপরিশোধিত তেল কেনার কোনো পরিকল্পনা করছে না ভারত। ফলে মার্কিন নিষেধাজ্ঞায় থাকা তেহরান আরো একটি বড় গ্রাহক হারাচ্ছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। খবর বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড।
রাষ্ট্রায়ত্ত তেল-গ্যাস কোম্পানি ইন্ডিয়ান অয়েল করপোরেশন ও ভারত পেট্রোলিয়াম করপোরেশন নভেম্বরে কোনো ইরানি কার্গোকে তেল সরবরাহের জন্য বলেনি বলে কোম্পানি দুটির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। এছাড়া ভারতভিত্তিক নায়ারা এনার্জিরও তেল কেনার কোনো পরিকল্পনা নেই বলে এক শিল্প নির্বাহী জানিয়েছেন।
এদিকে ম্যাঙ্গালোর রিফাইনারি অ্যান্ড পেট্রোকেমিক্যালসের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, কোম্পানি এখন পর্যন্ত নভেম্বরে তেল আমদানির কোনো সিদ্ধান্ত না নিলেও পরবর্তীতে তা নেয়া হতে পারে। আগামী মাসের প্রথমদিকে ইরানের কাছ থেকে তেল কেনার বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে। ফলে এখনো কোম্পানিগুলোর সিদ্ধান্ত পরিবর্তনের সম্ভাবনা রয়েছে।
ইরানের তেল রফতানি দ্রুত হ্রাস পাওয়ায়, এরই মধ্যে অপরিশোধিত ব্রেন্টের দাম ব্যারেলপ্রতি ৮০ ডলার ছাড়িয়েছে, যা চার বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। তেল উৎপাদন আরো হ্রাস পেলে তেলের দাম আরো বৃদ্ধির সম্ভাবনা রয়েছে। এরই মধ্যে পরিশোধনাগারগুলো জরুরি ভিত্তিতে অন্য উৎস থেকে তেল সংগ্রহের খোঁজ খবর নেয়া শুরু করেছে। ইরান বাদে সারা বিশ্বে কেবল সৌদি আরব এবং কিছুমাত্রায় সংযুক্ত আরব আমিরাত ও রাশিয়া অতিরিক্ত তেল উৎপাদনে সক্ষম।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ওপেকের সমালোচনা ও তেলের দাম আরো কমানোর দাবির মধ্যেই মঙ্গলবার ব্রেন্টের দাম বেড়ে ব্যারেলপ্রতি ৮২ দশমিক ৫৫ ডলারে দাঁড়ায়। এ নিয়ে চলতি বছর ব্রেন্টের দাম ২৩ শতাংশ বাড়ল।
ভারত ইরানি তেলের দ্বিতীয় বৃহৎ ক্রেতা। ব্লুমবার্গের পরিসংখ্যান অনুসারে, চলতি বছর দৈনিক গড়ে ৫ লাখ ৭৭ হাজার ব্যারেল বা ইরানের মোট রফতানির প্রায় ২৭ শতাংশ তেল আমদানি করেছে ভারত। কিন্তু সম্প্রতি দক্ষিণ কোরিয়া, জাপান ও ইউরোপীয় দেশগুলোর ইরান থেকে তেল আমদানি শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনায়, অস্থায়ীভাবে হলেও ভারতীয় কোম্পানিগুলো হাতছাড়া হয়ে যাওয়া তেহরানের জন্য বড় একটি ধাক্কা হিসেবে কাজ করবে।
এদিকে নভেম্বরের প্রথমদিকেই বাস্তবায়িত হতে যাওয়া মার্কিন নিষেধাজ্ঞা বৈশ্বিক তেলের বাজারে বড় ধরনের শূন্যতা তৈরি করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ইরান থেকে সরবরাহ কমে যাওয়ায় তেলের দাম ২০১৪ সালের পর প্রথমবার ব্যারেলপ্রতি ১০০ ডলার ছাড়াবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ ট্রেডিং কোম্পানি মারকারিয়া এনার্জি গ্রুপ লিমিটেড এবং ট্রাফিগুরা গ্রুপ।
বিশ্বের বেশকিছু বৃহৎ তেল কোম্পানিও একই আশঙ্কা প্রকাশ করেছে। ব্রিটিশ তেল কোম্পানি বিপির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বব ডাডলি ইরানের ওপর নিষেধাজ্ঞাকে বাজারের জন্য সবচেয়ে বড় ঝুঁকি হিসেবে দেখছেন।
Posted ৩:০৮ পূর্বাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৮
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta