কক্সবাংলা ডটকম(২৩ সেপ্টেম্বর) :: সব হিসাব-নিকাশ উল্টে ভারত মহাসাগরীয় দ্বীপদেশ মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ী হয়েছেন বিরোধীদলীয় নেতা ইব্রাহিম মোহামেদ সোলিহ।
রোববার গভীর রাতে প্রকাশ করা নির্বাচনের অফিসিয়াল ফলে ইব্রাহিম সোলিহকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। এর আগে ধারণা করা হয়েছিল বর্তমান প্রেসিডেন্ট আবদুল্লাহ ইয়ামিনই ফের ক্ষমতায় আসবেন।
এএফপির খবরে জানানো হয়, নির্বাচনে ইব্রাহিম সোলিহ প্রতিদ্বন্দ্বী প্রাথী আবদুল্লাহ ইয়ামিনের চেয়ে ৩৪ হাজার ভোট বেশি পেয়েছেন।
এর আগে রোববার স্থানীয় সময় সকাল থেকে দেশজুড়ে ৪০০ ভোটকেন্দ্রে একযোগে ভোটগ্রহণ শুরু হয়ে চলে সন্ধ্যা পর্যন্ত। আড়াই লাখের বেশি নিবন্ধিত ভোটারের অংশগ্রহণে এবারের নির্বাচনে ধারণা করা হয়েছিল আবদুল্লাহ ইয়ামিনই ফের ক্ষমতায় আসবেন। তিনি চীনপন্থি বলে পরিচিত।
সাড়ে তিন লাখ মানুষের দেশ মালদ্বীপ ভারত না চীন কার দিকে ঝুঁকবে সে প্রশ্নও এবারের নির্বাচনে বেশ আলোচিত ইস্যু ছিল। মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ এই দেশটির এবারের নির্বাচনের দিকে কঠোর নজর রেখেছিল এশিয়ার এই দুই প্রভাবশালী দেশ ভারত ও চীনও।
এবারের নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট ইয়ামিনের মূল প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে লড়াই করেছেন ইব্রাহিম সোলিহ। স্বাভাবিকভাবেই বিরোধী দলের নেতাদের দমনে দেশটির বতর্মান প্রেসিডেন্ট ইয়ামিনের নানা পদক্ষেপ পশ্চিমা গণমাধ্যমে তীব্রভাবে সমালোচিত হয়। ভোটের পর গণনায় ‘বড় ধরনের জালিয়াতি’ হতে পারে বলে আশঙ্কার কথা জানিয়েছিল বিরোধী জোট।
ভোটের দিন ভোটারদের ব্যালট পেপার যাচাইয়ে পর্যবেক্ষকদের সুযোগ দেয়নি নির্বাচন কমিশন। এর ফলে প্রতিষ্ঠানটি ইয়ামিনের পক্ষে কাজ করেছে বলে অভিযোগ করে বিরোধীরা।
এদিকে ভোটের আগের রাতেও দেশটির পুলিশ বিরোধী দলগুলোর সদর দপ্তরগুলোতে হানা দেয়। মানবাধিকার সংগঠনগুলোর পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন দক্ষিণ এশীয় এ দেশটির প্রেসিডেন্ট নির্বাচন নিয়ে উদ্বেগ জানিয়েছে। গণতান্ত্রিক পরিস্থিতির উন্নয়ন না ঘটলে মালদ্বীপের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়ারও হুমকি দিয়ে রেখেছে তারা।
মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচের এশিয়া বিষয়ক সহযোগী পরিচালক প্যাট্রিসিয়া গসম্যান বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনের অপব্যবহারের মাধ্যমে সরকার বিরোধীদের আটক, গণমাধ্যমের মুখ বন্ধ ও বিরোধী প্রার্থীদের বাধা দিয়ে মালদ্বীপ সরকার ভোটের দিন প্রেসিডেন্ট ইয়ামিনের জয় নিশ্চিত করতে চায়।
‘ পুলিশের এক মুখপাত্রও স্বীকার করেছেন, ভোটের আগের রাতে তারা কোনো ধরনের পরোয়ানা ছাড়াই বিরোধী দল মালদিভিয়ান ডেমোক্রেটিক পার্টির মালের সদর দপ্তরে অভিযান চালিয়েছে। তবে পশ্চিমা বিশ্বের সমালোচনা ও বিরোধীদের অভিযোগের মুখে দেশটির নির্বাচন কমিশনের মুখপাত্র ভোট জালিয়াতির সম্ভাবনাও উড়িয়ে দিয়েছেন।
ইয়ামিনের বিরোধী তার সৎ ভাই মামুন আবদুল গাইয়ুম টানা তিন দশক ধরে মালদ্বীপ শাসন করেছিলেন। ২০০৮ সালে দ্বীপপুঞ্জটিতে অনুষ্ঠিত প্রথম গণতান্ত্রিক ভোটে নাশিদ বিজয়ী হন। তিনি বর্তমানে বিদেশে নির্বাসনে আছেন।
ইয়ামিনের সমালোচক গাইয়ুমও এ বছরের জুন থেকে জেলে রয়েছেন। তবে বিরোধী জোটের প্রার্থী ইব্রাহিম মোহামেদ সোলিহ ভোটের আগের দিন তার সমর্থকদের বলেন, তিনি জয়ের ব্যাপারে দৃঢ়ভাবে আশাবাদী।
Posted ৩:৪৮ পূর্বাহ্ণ | সোমবার, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৮
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta