শনিবার ৪ঠা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২১শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম

শনিবার ৪ঠা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

শিরোনাম

মালদ্বীপে ইয়ামিনের পরাজয় চীনা স্বার্থ সংকটে

মঙ্গলবার, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৮
334 ভিউ
মালদ্বীপে ইয়ামিনের পরাজয় চীনা স্বার্থ সংকটে

কক্সবাংলা ডটকম(২৫ সেপ্টেম্বর) :: ভারত মহাসাগরের খুদে খুদে দ্বীপ নিয়ে গঠিত দ্বীপরাষ্ট্র মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ী হয়েছেন বিরোধী জোটের প্রার্থী ইব্রাহিম মোহামেদ সোলিহ। চীনপন্থী কর্তৃত্বপরায়ণ বর্তমান প্রেসিডেন্ট আবদুল্লাহ ইয়ামিন পরাজয় মেনে নিয়েছেন।

নির্বাচনপূর্ব পরিস্থিতি বিবেচনায় ইয়ামিনের এই পরাজয়ে অনেকেই বিস্মিত। আশঙ্কা ছিল, নির্বাচন নিরপেক্ষ হবে না এবং নিশ্চিতভাবেই জয়ী হবেন ইয়ামিন। তবে সেসব আশঙ্কা নাকচ করে দিয়ে আগামী ১৭ নভেম্বর শপথ নিতে যাচ্ছেন সোলিহ।

প্রাথমিক ফলাফলে দেখা গেছে, মালদিভিয়ান ডেমোক্রেটিক পার্টির (এমডিপি) সোলিহ ভোট পেয়েছেন এক লাখ ৩৪ হাজার ৬১৬টি এবং প্রগ্রেসিভ পার্টি অব মালদিভসের (পিপিএম) ইয়ামিন পেয়েছেন ৯৬ হাজার ১৩২ ভোট। অর্থাৎ ৫৮.৩ শতাংশ ভোট পেয়েছেন সোলিহ। মালদ্বীপের নিবন্ধিত ভোটারসংখ্যা দুই লাখ ৬২ হাজার ১৩৫। এর মধ্যে দুই লাখ ৩৩ হাজার ৮৭৭ জন অর্থাৎ ৮৯.২২ শতাংশ ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করে।

ভোটকেন্দ্রগুলোতে লম্বা লাইনের জন্য নির্ধারিত সময়ের চেয়ে তিন ঘণ্টা বেশি সময় ভোট গ্রহণ করা হয়। মালদ্বীপ ছাড়াও আরো চারটি দেশে মালদ্বীপের দূতাবাসে ভোট নেওয়া হয়েছে। গত রবিবার শান্তিপূর্ণভাবেই ভোট সম্পন্ন হয়। এতে সংঘর্ষ বা কারচুপির অভিযোগ পাওয়া যায়নি।

ভারত ও চীনের বৈরিতার যুদ্ধক্ষেত্র হিসেবে অভিহিত করা হয় মালদ্বীপকে। সোলিহর জয় নিশ্চিত হওয়ার পর ভারত ও যুক্তরাষ্ট্র তাত্ক্ষণিকভাবে তাঁকে অভিনন্দন জানায়। ইয়ামিন মালদ্বীপকে চীনের কাছাকাছি নিয়ে গিয়েছিলেন। তাঁর কারণে দেশটিতে বিপুল বিনিয়োগ করে চীন। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ভারতীয় উপমহাদেশে পদচারণ বাড়াচ্ছে চীন। এরই একটি অংশ হিসেবে পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কার পাশাপাশি মালদ্বীপের দিকেও তারা নজর দেয়। ইয়ামিনের পরাজয় চীনা স্বার্থকে সংকটে ফেলবে বলে আশঙ্কা করছেন বিশ্লেষকরা।

নির্বাচনপূর্ব পরিস্থিতি থেকে অবশ্য ধারণা করা হচ্ছিল, ইয়ামিনই নির্বাচিত হতে চলেছেন। মালদ্বীপের সাবেক প্রেসিডেন্ট মামুন আবদুল গাইয়ুমসহ বহু রাজনীতিক বর্তমানে কারান্তরীণ। আরেক সাবেক প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ নাশিদ বর্তমানে শ্রীলঙ্কায় নির্বাসনে রয়েছেন। তাঁদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তাঁরা কেউই নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারেননি। তাঁরা সবাই ভারতপন্থী বলেই পরিচিত। এমনকি নব্বইয়ের দশকে একবার তৎকালীন প্রেসিডেন্ট মামুনের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ হলে তা দমনে সেনাও পাঠায় ভারত।

বিরোধী শীর্ষ রাজনীতিকদের দমনের পাশাপাশি ধরপাকড়ও কম হয়নি। জাতিসংঘ ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন নির্বাচনে তাদের কোনো পর্যবেক্ষক পাঠায়নি। নির্বাচন পর্যবেক্ষণে আগ্রহী অন্য দেশগুলো জানিয়েছে, নির্ধারিত সময়ে তারা ভিসা পায়নি। পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে নির্বাচন নিরপেক্ষ হবে না বলেই স্থির বিশ্বাস তৈরি হয়।

এ সময় যুক্তরাষ্ট্র ও ইইউ জানায়, নির্বাচনী প্রক্রিয়া অস্বচ্ছ হলে মালদ্বীপের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করবে তারা। এসব কিছুর ছাপই পাওয়া গেছে গত রবিবারের নির্বাচনের ফলাফলে। আভাস মেলা মাত্র সোলিহকে অভিনন্দন জানিয়ে মালদ্বীপে শিগগির পরিবর্তন আসবে বলে আশা প্রকাশ করে ভারত।

বিজয় নিশ্চিত হওয়ার পর দেওয়া এক ভাষণে সোলিহ বলেন, ‘সুউচ্চ কণ্ঠে স্পষ্ট বার্তা দেওয়া হয়েছে। মালদ্বীপের মানুষ পরিবর্তন, শান্তি ও ন্যায়বিচার চায়।’

এদিকে টেলিভিশনে প্রচারিত এক ভাষণে বিদায়ী প্রেসিডেন্ট ইয়ামিন বলেন, ‘মালদ্বীপের জনগণ তাদের চাহিদা অনুসারেই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আমি ফলাফল মেনে নিয়েছি। আজ (সোমবার) সকালে আমি সোলিহর সঙ্গে দেখা করে পরবর্তী প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ায় তাঁকে অভিনন্দন জানিয়েছি।

’ মালদ্বীপের নির্বাসিত সাবেক প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ নাশিদ এক টুইট বার্তায় বলেন, ‘মালদ্বীপের জনগণকে অসাধারণ সেবা দিতে যাচ্ছেন সোলিহ।’

সোলিহ মালদ্বীপে ইবু নামেই বেশি পরিচিত। দেশটির পাঁচ দশকের ইতিহাসে এটি তৃতীয় নির্বাচন এবং সোলিহ ষষ্ঠ প্রেসিডেন্ট। তিনি মালদিভিয়ান ডেমোক্রেটিক পার্টি (এমডিপি) থেকে প্রেসিডেন্ট পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। দলের শীর্ষ নেতারা যখন কারাগারে অথবা দেশান্তরে এর মধ্যেই প্রার্থী হিসেবে সামনে আসেন সোলিহ (৫৬)। তাঁর মুখ্য পরিচয় গণতন্ত্রপন্থী কর্মী হিসেবে। সংস্কার তৎপরতায় উদ্যোগী ছিলেন তিনি। সোলিহর রাজনৈতিক জীবন শুরু হয় ১৯৯৪ সালে। সে বছরই আইন প্রণেতা হিসেবে নির্বাচিত হন তিনি। নির্বাচনী প্রচার শুরু হওয়ার পর থেকেই সবার নজরে আসেন। এর আগ পর্যন্ত প্রচারবিমুখ মানুষ হিসেবেই সবাই তাঁকে জানত।

সোলিহর জন্ম ১৯৬৪ সালে হিন্নাভারুর লাভিয়ানি দ্বীপে। ১৩ ভাই-বোন ছিল তাঁর। সোলিহর স্ত্রী ফারজানা আহমেদ সাবেক প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ নাশিদের খালাতো বোন। এই দম্পতির এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে।

ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থীকে হারিয়ে পার্লামেন্টে প্রবেশ করেন সোলিহ। ওই সময় দেশে কোনো বিরোধী দল ছিল না। ১৯৯৪ সাল থেকেই তিনি পার্লামেন্টে লাভিয়ানি দ্বীপের প্রতিনিধিত্ব করে চলেছেন। এমডিপির প্রতিষ্ঠাতা সদস্যদের অন্যতম সোলিহ।

সূত্র : বিবিসি, এএফপি, পিটিআই।

334 ভিউ

Posted ৩:০৫ পূর্বাহ্ণ | মঙ্গলবার, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৮

coxbangla.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

এ বিভাগের আরও খবর

Editor & Publisher

Chanchal Dash Gupta

Member : coxsbazar press club & coxsbazar journalist union (cbuj)
cell: 01558-310550 or 01736-202922
mail: chanchalcox@gmail.com
Office : coxsbazar press club building(1st floor),shaheed sharanee road,cox’sbazar municipalty
coxsbazar-4700
Bangladesh
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
বাংলাদেশের সকল পত্রিকা সাইট
Bangla Newspaper

ABOUT US :

coxbangla.com is a dedicated 24x7 news website which is published 2010 in coxbazar city. coxbangla is the news plus right and true information. Be informed be truthful are the only right way. Because you have the right. So coxbangla always offiers the latest news coxbazar, national and international news on current offers, politics, economic, entertainment, sports, health, science, defence & technology, space, history, lifestyle, tourism, food etc in Bengali.

design and development by : webnewsdesign.com