বৃহস্পতিবার ২রা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৯শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম

বৃহস্পতিবার ২রা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

শিরোনাম

মূল্যস্ফীতির চাপ কমাতে আমানত সুদের ঊর্ধ্বসীমা প্রত্যাহার

সোমবার, ১৬ জানুয়ারি ২০২৩
66 ভিউ
মূল্যস্ফীতির চাপ কমাতে আমানত সুদের ঊর্ধ্বসীমা প্রত্যাহার

কক্সবাংলা ডটকম :: মূল্যস্ফীতির চাপ কমাতে আমানতের সুদহারের ঊর্ধ্বসীমা তুলে নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। সামগ্রিক বিবেচনায় এবারের মুদ্রানীতিকে সতর্কমূলক বলছে বাংলাদেশ ব্যাংক। একই সঙ্গে বৈশ্বিক পরিস্থিতির প্রতিকূলতার মধ্যে মূল্যস্ফীতির চাপ সামাল দিতে বাজারে অর্থের জোগান আরো কমাচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এর অংশ হিসেবে নীতি সুদহার আরো এক দফা বাড়িয়ে চলতি অর্থবছরের দ্বিতীয়ার্ধের জন্য ‘সতর্ক ও সংকুলানমুখী’ মুদ্রানীতি ঘোষণা করা হয়েছে।

আগামী ছয় মাসের জন্য গতকাল রবিবার এমন মুদ্রানীতি ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এ পরিবর্তনের ফলে একদিন মেয়াদি রেপোর (পুনঃক্রয় চুক্তি) সুদহার ৫ দশমিক ৭৫ শতাংশ থেকে ২৫ বেসিস পয়েন্ট বেড়ে ৬ শতাংশ হয়েছে। আর রিভার্স রেপো হার আগের ৪ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৪ দশমিক ২৫ শতাংশ করা হয়েছে। একই সঙ্গে ব্যাংকের আমানতের ওপর বেঁধে দেয়া সুদহার তুলে নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এখন থেকে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো আমানতের সুদহার নিজেরাই নির্ধারণ করতে পারবে।

এছাড়া ভোক্তাঋণের ক্ষেত্রে সুদহার ৩ শতাংশ পর্যন্ত বাড়ানো যাবে। বর্তমানে ব্যাংকের সব ধরনের ঋণের সুদহার ৯ শতাংশ। ভোক্তাঋণের সুদহার বাড়ানোর ফলে ব্যাংকগুলো তা ১২ শতাংশ পর্যন্ত করতে পারবে। বিপরীত দিকে শিল্পঋণসহ অন্যান্য ঋণের ক্ষেত্রে সুদহারের বিষয়ে কোনো ঘোষণা দেয়নি কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

রবিবার বাংলাদেশ ব্যাংকের কনফারেন্স হলে ২০২২-২৩ অর্থবছরের দ্বিতীয়ার্ধের (জানুয়ারি-জুন) জন্য ঘোষিত নতুন মুদ্রানীতির ‘মনিটারি পলিসি স্টেটমেন্ট (এমপিএস)’ প্রকাশ করেন গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার।

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর আহমেদ জামাল, কাজী ছাইদুর রহমান, আবু ফরাহ মো. নাছের, এ কে এম সাজেদুর রহমান খান, বিএফআইইউ প্রধান মাসুদ বিশ্বাস, প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. হাবিবুর রহমান, নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মেজবাউল হকসহ গবেষণা বিভাগের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছি?লেন।

কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলছে, চাহিদাজনিত মূল্যস্ফীতির চাপ প্রশমন, বিনিময় হারের চাপ নিয়ন্ত্রণ, সরকারের কাক্সিক্ষত অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে প্রয়োজনীয় অর্থের সরবরাহ নিশ্চিত করা এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টিকারী খাতে ঋণ সরবরাহ নিশ্চিত করতে মুদ্রানীতিতে এই পরিবর্তন আনা হয়েছে। ব্যাংক রেট আগের মতোই ৪ শতাংশে রাখা হয়েছে। তবে পরে আলাদাভাবে বিশেষ রেপো হার ৮ দশমিক ৭৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৯ শতাংশ করার কথা জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার রবিবার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে এ মুদ্রানীতি ঘোষণা করে বলেন, আমরা একটি চ্যালেঞ্জিং সময় পার করছি। পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে আন্ডার ইনভয়েসিংয়ের এলসি খোলায় পণ্যের যে দাম ছিল তার চার ভাগের এক ভাগে এলসি খুলেছেন গ্রাহকরা। এটি ট্যাক্স ফাঁকি দেয়ার জন্য করা হয়েছে। বাকি তিন ভাগ অর্থও কোনো না কোনো জায়গা থেকে পরিশোধ করা হয়েছে। এসব বিষয় বাংলাদেশ ব্যাংকের পর্যবেক্ষণে উঠে এসেছে। এগুলো অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে এসেছে, আরো কমে আসবে।

তিনি বলেন, আমাদের নানা উদ্যোগের ফলে আমদানি কমে এসেছে। আমদানির তুলনায় রপ্তানি ও রেমিট্যান্স বেশি হয়েছে। এতে ডলারের ওপর যে চাপ পড়েছিল তাও কমে এসেছে। আমদানি এলসি খোলা কমানোর প্রভাব আসন্ন রমজানের প্রয়োজনীয় পণ্য আমদানিতে পড়বে না। ব্যাংকগুলোকে সে অনুযায়ী নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

কয়েকটা ব্যাংকে তারল্য সহায়তা বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার বলেন, সা¤প্রতিক সময়ে বেসরকারি ইসলামী ব্যাংকসহ অন্য ব্যাংকগুলোকে তারল্য সহায়তা দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। বিশ্বের যে কোনো ব্যাংক সমস্যায় পড়লে রাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংক সহায়তা করে, আমরাও করেছি। আমাদের দেশে কোনো ব্যাংক সমস্যায় পড়লে আমরা সাপোর্ট করি।

তিনি বলেন, ইসলামী ব্যাংকে শেয়ারহোল্ডারের চেয়ে সাধারণ মানুষের বেশি টাকা রয়েছে। ব্যাংকটি সমস্যায় পড়লে সাধারণ মানুষের ক্ষতি হতো। মানুষের ক্ষতির কথা বিবেচনায় এনেই সাপোর্ট দেয়া হয়েছে। বেসরকারি এ ব্যাংকে ১ লাখ ৫১ হাজার কোটি টাকা আমানত রয়েছে, অ্যাকাউন্ট রয়েছে ১ কোটি ৯ লাখ। দেশের ইতিহাসে কোনো ব্যাংক এখনো বন্ধ হয়নি। ব্যাংক সমস্যায় পড়লে সরকার ও বাংলাদেশ ব্যাংক সাপোর্ট দিয়েছে। গভর্নর বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতি কখনো পড়ে যাবে না। করোনা মহামারি সামলে বাংলাদেশ ঘুরে দাঁড়িয়েছে।

সে সময়ে অন্যতম দেশ বাংলাদেশ, যারা পজিটিভ গ্রোথ করেছে। অর্থনীতিতে তিনটি চ্যালেঞ্জের কথা বলা হচ্ছে, যেমন রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের স্থায়িত্ব, ফেডারেল রিজার্ভের পলিসি ইন্টারেস্ট রেট বাড়ানোর আগ্রাসী কার্যক্রম এবং চীনের কোভিড পরিস্থিতি- এই তিনটি চ্যালেঞ্জ যত দ্রুত মোকাবিলা করা সম্ভব হবে, আমাদের অর্থনীতি তত দ্রুত বাউন্স করবে। তবে এ তিনটি পরিস্থিতি খারাপ হলেও আমাদের অর্থনীতির বর্তমান পরিস্থিতি যা আছে তার চেয়ে খারাপ হবে না বলে আমি মনে করি।

কোনো প্রভাবশালী গোষ্ঠীর চাপে আছেন কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে গর্ভনর বলেন, আমি অনেক চাপের মধ্যে কাজ করে এসেছি। আমার কিংবা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ওপর কোনো ধরনের চাপ নেই। এখন বিশেষ কারো নিয়ন্ত্রণও নেই। ব্যক্তি যেই হোক, আমরা তাকে গ্রাহক হিসেবে দেখি। ভালো মানের গ্রাহক হলে আমরা তাকে ঋণ দিই। যেন সে আরো বড় হতে পারে, উন্নয়নে অবদান রাখতে পারে। ভালো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে আমরা উঠিয়ে আনতে সহযোগিতা করি, কিন্তু ভালো না হলে ঋণ দেয়া হয় না। বাংলাদেশ ব্যাংক সবাইকে গ্রাহক হিসেবে দেখে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলছে, গত ডিসেম্বর পর্যন্ত ছয় মাসে সরকারি ঋণের প্রবৃদ্ধি ধরা হয়েছিল ৩৩ দশমিক ৩ শতাংশ, অর্জন হয়েছে ২৬ দশমিক ৬ শতাংশ। আর বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধি ধরা হয়েছিল ১৩ দশমিক ৬ শতাংশ, হয়েছে ১২ দশমিক ৮ শতাংশ। সব মিলিয়ে মোট অভ্যন্তরীণ ঋণের প্রবৃদ্ধি ধরা হয়েছিল ১৬ দশমিক ৯ শতাংশ, গত ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১৫ দশমিক ১ শতাংশ। মুদ্রানীতিতে ব্যাপক মুদ্রা (এম২) প্রবৃদ্ধি ধরা হয়েছিল ১০ শতাংশ, সে জায়গায় হয়েছে ৮ দশমিক ৪ শতাংশ। আর ২০২৩ সালের জানুয়ারি-জুন সময়ের জন্য ঘোষিত মুদ্রানীতিতে সরকারি ঋণের প্রবৃদ্ধি ধরা হয়েছে ৩৭.৭ শতাংশ, যেখানে গত বছরের জুনে ঘোষিত মুদ্রানীতিতে তা ধরা হয়েছিল ৩৬ শতাংশ।

আর বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধি ধরা হয়েছে ১৪ দশমিক ১ শতাংশ, গত জুনেও একই লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল। সব মিলিয়ে মোট অভ্যন্তরীণ ঋণের প্রবৃদ্ধি ধরা হয়েছে ১৮ দশমিক ৫ শতাংশ, গত জুনে ঘোষিত মুদ্রানীতিতে যা ধরা হয়েছিল ১৮ দশমিক ২ শতাংশ। মুদ্রানীতিতে ব্যাপক মুদ্রা (এম২) প্রবৃদ্ধি ধরা হয়েছে ১১ দশমিক ৫ শতাংশ, জুনের মুদ্রানীতিতে ধরা হয়েছিল ১২.১ শতাংশ। ২০২২-২৩ অর্থবছরের জাতীয় বাজেটে সরকার মূল্যস্ফীতি ৫ দশমিক ৬ শতাংশে ধরে রেখেই মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) ৭ দশমিক ৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য ঠিক করেছে। তবে সর্বশেষ গত ডিসেম্বরে মূল্যস্ফীতি দাঁড়িয়েছে পয়েন্ট টু পয়েন্ট ভিত্তিতে ৮ দশমিক ৭১ শতাংশ। কেন্দ্রীয় ব্যাংক আশা করছে, নতুন মুদ্রানীতি সরকারের জিডিপি প্রবৃদ্ধির ওই লক্ষ্য পূরণে সহায়ক হবে।

66 ভিউ

Posted ১১:৫০ অপরাহ্ণ | সোমবার, ১৬ জানুয়ারি ২০২৩

coxbangla.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

Editor & Publisher

Chanchal Dash Gupta

Member : coxsbazar press club & coxsbazar journalist union (cbuj)
cell: 01558-310550 or 01736-202922
mail: chanchalcox@gmail.com
Office : coxsbazar press club building(1st floor),shaheed sharanee road,cox’sbazar municipalty
coxsbazar-4700
Bangladesh
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
বাংলাদেশের সকল পত্রিকা সাইট
Bangla Newspaper

ABOUT US :

coxbangla.com is a dedicated 24x7 news website which is published 2010 in coxbazar city. coxbangla is the news plus right and true information. Be informed be truthful are the only right way. Because you have the right. So coxbangla always offiers the latest news coxbazar, national and international news on current offers, politics, economic, entertainment, sports, health, science, defence & technology, space, history, lifestyle, tourism, food etc in Bengali.

design and development by : webnewsdesign.com