কক্সবাংলা ডটকম(১৬ জুন) :: যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও রাশিয়ার কাছ থেকে পাঁচটি এস ৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরোধব্যবস্থা এবং তার আনুষঙ্গিক যন্ত্র কিনতে যাচ্ছে ভারত। যার আর্থিক মূল্য ৪৫০ কোটি ডলার। আগামী অক্টোবরে রাষ্ট্রীয় সফরে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ভারতে যাবেন। তখনই এই চুক্তি চূড়ান্ত হবে।
কূটনৈতিক শিবিরের মতে, নিঃসন্দেহে এটি একটি ঝুঁকি নিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। অবশ্যই শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত চেষ্টা চলছে যুক্তরাষ্ট্রকে নিজেদের শর্তে রাজি করানোর। এটাও ঠিক যে কিছুটা নরমও হয়েছে ওয়াশিংটন। তবে শেষ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের আইন অগ্রাহ্য করে রাশিয়া থেকে ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষাব্যবস্থাটি কেনার পর ট্রাম্প প্রশাসন কী পদক্ষেপ নেবে, তা এখনো স্পষ্ট নয়।
তবে যুক্তরাষ্ট্রের সিদ্ধান্ত যা-ই হোক, দিল্লি বিষয়টিতে অনড়। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তার মতে, ‘আমরা যদি নতি স্বীকার করে নিই তাহলে বারবার বিভিন্ন শর্তে মাথা নোয়াতে হবে। আর আমরা তো একা নই। সৌদি আরব, তুরস্ক, কাতারের মতো দেশগুলোও রাশিয়ার কাছ থেকে অস্ত্র কিনছে। ওয়াশিংটনের সঙ্গে কথা চলেছে।
তবে শেষ মুহূর্তেও যদি ওরা ছাড় না দেয়, তা হলে আমাদেরও কিছু করার থাকবে না। রাশিয়ার কাছে বহুদিন আগে থেকেই আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’ কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞরা অবশ্য প্রশ্ন তুলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র যদি শেষ পর্যন্ত ভারতের জন্য ছাড় দেয় তাহলে ভালো। না হলে দিল্লি পরিস্থিতি কতটা সামলাতে পারে, তা নিয়ে সংশয় আছে।
গত বছরের শেষ দিকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প রাশিয়াবিরোধী আইনটি আনার পর হইচই পড়ে যায়। ওই আইন অনুযায়ী, কোনো দেশ মস্কোর কাছ থেকে বড়মাপের প্রতিরক্ষা বাণিজ্য করলে তাদের মার্কিন নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়তে হবে। এই আইনের ফলে অন্যান্য দেশের পাশাপাশি সংকটের মুখে পড়ে ভারত। কারণ একদিকে যেমন বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অস্ত্র রপ্তানিকারী দেশ রাশিয়া, তেমনই ভারতও সবচেয়ে বেশি অস্ত্র কেনে এই দেশটির কাছ থেকেই।
আবার এটাও ঠিক যে ভারত বহু কাঠখড় পুড়িয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কৌশলগত অংশীদারি শুরু করতে পেরেছে। তাই উভয় সংকটের মধ্যে বিভিন্ন স্তরে হোয়াইট হাউসের কাছে ভারত দরবার করতে থাকে যে এই চুক্তিটি দীর্ঘদিনের দ্বিপক্ষীয় প্রস্তুতির ফসল এবং পুতিনকে মোদির কথা দেওয়া হয়ে গেছে।
দক্ষিণ এশিয়ার নিরাপত্তার প্রশ্নে এই অস্ত্র ব্যবস্থা দিল্লির জন্য কতটা জরুরি, সেটিও বিশদে বোঝানো হয় ট্রাম্প প্রশাসনকে।
এই ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষাব্যবস্থা শত্রুপক্ষের পারমাণবিক বোমা বহনকারী যুদ্ধবিমান, ফাইটার জেট, গোয়েন্দা বিমান, ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন শুধু শনাক্তই করতে পারে না, ৪০০ কিলোমিটার গতিতে ৩০ কিলোমিটার উচ্চতায় সেগুলো ধ্বংসও করতে পারে।
মার্কিন নির্বাচনে রুশ হস্তক্ষেপের অভিযোগ এবং তারপর সিরিয়ায় রাশিয়ার অভিযানের মতো বিষয়গুলোকে কেন্দ্র করে যুক্তরাষ্ট্র-রাশিয়ার মধ্যে সম্পর্ক ক্রমে তিক্ত হচ্ছে। সূত্রের খবর, এই পরিস্থিতিতে ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা বিষয়টি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষস্তরে কথা বলছেন।
Posted ২:৫৬ পূর্বাহ্ণ | শনিবার, ১৬ জুন ২০১৮
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta