কক্সবাংলা ডটকম(১১ এপ্রিল) :: সরকারের প্রস্তাবে রাজি হয়ে ৭ মে পর্যন্ত আন্দোলন স্থগিত করার ঘোষণা দিলেও আবারও আন্দোলনে নেমেছেন চাকরিপ্রার্থী এবং শিক্ষার্থীরা।
প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে ওবায়দুল কাদের তাদের সঙ্গে বৈঠকে ৭ মে’র মধ্যে কোটা ব্যবস্থা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে সিদ্ধান্তের কথা জানালেও প্রধানমন্ত্রী কোটা সংস্কার বিষয়ে সুনির্দিষ্ট ঘোষণা না দেওয়া পর্যন্ত লাগাতার আন্দোলন, সড়ক অবরোধ এবং প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস-পরীক্ষা অনির্দিষ্ট বন্ধ রাখার ঘোষণা দেন তারা।
মূলত যে কারণে আবারও আন্দোলনের ঘোষণা
আন্দোলনকারীরা যে কারণগুলোর কথা বলছেন তার মধ্যে আছে: একটি অংশের স্থগিতের সিদ্ধান্ত না মেনে আলাদা বিক্ষোভ করা, কৃষিমন্ত্রীর বক্তব্য প্রত্যাহারের দাবিতে সাড়া না দেওয়া, ‘বাজেটের পর কোটা সংস্কারে হাত’ অর্থমন্ত্রীর এমন ঘোষণা, আটক সকল আন্দোলনকারীদের মুক্তি না দেওয়া এবং পুলিশের হামলায় আহতদের চিকিৎসার দায়িত্ব না নেওয়া।
রোববার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ব্যাপক সহিংস বিক্ষোভ এবং দেশব্যাপী সড়ক অবরোধের পর সরকারের পক্ষ থেকে আলোচনার প্রস্তাব দেওয়া হয় আন্দোলনকারীদের।
এ আহ্বানে সাড়া দিয়ে সোমবার বিকেলে সড়ক পরিবহন এবং সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এবং আওয়ামী লীগের কয়েকজন কেন্দ্রীয় নেতার সঙ্গে বৈঠক করেন আন্দোলনকারীদের প্লাটফর্ম সাধারণ শিক্ষার্থী অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের ২০ জন প্রতিনিধি।
বৈঠক থেকে বেরিয়ে পরিষদের সমন্বয়ক হাসান আল মামুন বলেন, আগামী ৭ মে’র মধ্যে কোটা সংস্কারের বিষয়ে সিদ্ধান্ত দিয়েছে সরকার। তাই আমরা আগামী ৭ মে পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন স্থগিত করলাম।
এ ঘোষণা দিয়ে ওই প্রতিনিধিদল টিএসসিতে এলে তাদের বিরোধিতা করে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেয় একটি অংশ। মঙ্গলবার সারাদিন তারা টিএসসি অবরোধ করে বিক্ষোভও করেন।
সোমবার জাতীয় সংসদে কৃষিমন্ত্রীর বক্তব্যের পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া হলে মঙ্গলবার সকালে সংবাদ সম্মেলন করে তার বক্তব্য বিকেলের মধ্যে প্রত্যাহারের আল্টিমেটাম দেওয়া হয়।
এর মধ্যেই দুপুরে সচিবালয়ে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেন, বাজেটের পরে কোটা সংস্কারে হাত দেওয়া হবে।
আন্দোলনকারীদের নির্ধারিত সময় বিকেল ৫টার মধ্যে কৃষিমন্ত্রী সাড়া না দেওয়া এবং অর্থমন্ত্রীর এমন বক্তব্যের পর বৈঠকে বসেন অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের নেতারা। বৈঠকের পর তারা বিকেল পৌনে ছয়টার দিকে সংবাদ সম্মেলনে আসেন।
পরিষদের অন্যতম যুগ্ম আহ্বায়ক নুরুল হক নূর সন্ধ্যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে এক সংবাদ সম্মলেনে বলেন, “ সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরসহ সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের অনুরোধে আমরা কর্মসূচি ৭ মে পর্যন্ত স্থগিত করার ঘোষণা করেছিলাম। কিন্তু কাল সংসদে দাঁড়িয়ে কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী ৮০ শতাংশ আন্দোলনকারী ছাত্র-ছাত্রীদের রাজাকারের বাচ্চা বলে গালিগালাজ করেন। এরপর আজ বিকেলে আমাদের অর্থমন্ত্রী বলেছেন, বাজেটের আগ পর্যন্ত কোটা সংস্কার সম্ভব নয়। এই দীর্ঘ মেয়াদী প্রক্রিয়া আমরা মানি না।”
‘‘তাছাড়া আমাদের যাদের পুলিশ আটক করেছিল তাদের ছেড়ে দেওয়ার কথা থাকলেও ছাড়া হয়নি এবং আহতদের চিকিৎসার দায়িত্ব সরকারের নেওয়ার কথা থাকলেও আমাদের সঙ্গে এখনও যোগাযোগ করা হয়নি,’’ অভিযোগ করেন তিনি।
পরিষদের আরেক যুগ্ম আহ্বায়ক রাশেদ খান বলেন, “সচিবালয়ে নেওয়া সিদ্ধান্ত সারাদেশের ছাত্রসমাজ মেনে নেয়নি। আজ থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য বাংলাদেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ থাকবে।”
তাদের ভাষায় প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে সুস্পষ্ট কোনো নির্দেশনা না আসা পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন তারা।
সংবাদ সম্মেলনে এমন ঘোষণার পরপরই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হল থেকে বেরিয়ে আসে কয়েক হাজার শিক্ষার্থী। আগে থেকে স্থগিতের সিদ্ধান্ত না মেনে যারা আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছিলেন তারাও যোগ দেন এই শিক্ষার্থীদের সঙ্গে।
যেভাবে এলো কোটা ব্যবস্থা
মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য উপহার হিসেবে ১৯৭২ সালে কোটা চালু করেছিলেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তখন সরকারি কর্মচারী নিয়োগে মেধা কোটা ছিল মাত্র ২০ শতাংশ। এছাড়া ৪০ শতাংশ জেলা কোটা, ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটা আর ১০ শতাংশ ছিল যুদ্ধাহত নারী কোটা। কিন্তু ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে নির্মমভাবে হত্যার পর পরিবর্তন আসে কোটায়। ১৯৭৬ সালে মেধা কোটায় বরাদ্দ হয় ৪০ শতাংশ, জেলা কোটায় ২০ শতাংশ ও আগের মতোই মুক্তিযোদ্ধা কোটা রাখা হয় ৩০ শতাংশ।
১৯৮৫ সালে আবারও পরিবর্তন আনা হয় কোটা ব্যবস্থায়। প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে মেধার ভিত্তিতে ৪৫ শতাংশ, মুক্তিযোদ্ধা কোটায় ৩০ শতাংশ, জেলা কোটায় ১০ শতাংশ ও নারীদের জন্য ১০ শতাংশ পদ সংরক্ষণ করা হয়। আর প্রথমবারের মতো উপজাতি ও ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর জন্য রাখা হয় ৫ শতাংশ কোটা।
১৯৯৬ সালে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আসার পর মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের জন্য আবার কোটা চালু করেন। আর সমাজের পিছিয়ে পড়াদের জন্য কোটা পদ্ধতি তো চালু আছেই। সবশেষ ২০০৯ সালের ২০ ডিসেম্বর জেলা ভিত্তিক কোটা নির্ধারণ করা হয়।
ভারতীয় উপমহাদেশে কোটার প্রচলন প্রথম শুরু হয় ১৯১৮ সালে। সিভিল সার্ভিসে ব্রিটিশদের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় টিকতে না পারায় ভারতীয়দের জন্য আলাদা কোটার ব্যবস্থা করা হয় তখন থেকে। পরবর্তী সময়ে শিক্ষায় অনগ্রসর মুসলমানদের জন্যও আলাদা কোটা রাখা হয়। পাকিস্তান আমলে পিছিয়ে পড়া পূর্ব পাকিস্তানের (বাংলাদেশ) মানুষদের আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে চালু করা হয় প্রদেশ ভিত্তিক কোটা। স্বাধীনতা অর্জনের পর ১৯৭২ সালের ৫ ডিসেম্বর তৎকালীন সংস্থাপন সচিবের এক নির্বাহী আদেশে কোটা পদ্ধতি প্রথম প্রাতিষ্ঠানিক রূপ লাভ করে বাংলাদেশে।
বর্তমানে দেশে মুক্তিযোদ্ধার ছেলে ও মেয়ে, নাতি-নাতনি কোটা, জেলা কোটা, উপজাতি কোটা, পোষ্য কোটা, নারী কোটাসহ বিভিন্ন কোটা বিদ্যমান। সরকারি চাকরির কোটার বিন্যাস হচ্ছে মুক্তিযোদ্ধা ৩০ শতাংশ (ছেলে-মেয়ে ও নাতি-নাতনি), নারী ১০ শতাংশ, জেলা কোটা ১০ শতাংশ ও ক্ষুদ নৃ-গোষ্ঠীর জন্য ৫ শতাংশ। এই ৫৫ শতাংশ কোটায় পূরণযোগ্য প্রার্থী পাওয়া না গেলে সেক্ষেত্রে ১ শতাংশ পদে প্রতিবন্ধী নিয়োগের বিধান রয়েছে।
সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, আধা-স্বায়ত্তশাসিত, বিভিন্ন করপোরেশন ও দফতরে সরাসরি নিয়োগে জনসংখ্যার ভিত্তিতে জেলা কোটা পুনর্নির্ধারণ করা হয়। ২০০১ সালের আদমশুমারির পরিসংখ্যানের ভিত্তিতে ২০০৯ সালের ২০ ডিসেম্বর জেলা ভিত্তিক কোটা চূড়ান্ত করে সরকার।
জনসংখ্যাভিত্তিক জেলা কোটা (১০ শতাংশ) অনুযায়ী উপযুক্ত প্রার্থী দিয়ে তা পূরণ করতে হবে। জেলা কোটার সব পদ প্রার্থীদের দিয়ে পূরণ সম্ভব না হলে জাতীয় মেধা তালিকা থেকে তা পূরণ করতে হয়।
২০১০ সালের ৫ মে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সংশোধিত পরিপত্রে বলা হয়, ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের সন্তান/নাতি-নাতনি, নারী কোটা ১০ শতাংশ, ক্ষুদ্র জেলা কোটা ১০ শতাংশ, নৃ-গোষ্ঠীর জন্য ৫ শতাংশ। প্রথমে জনসংখ্যা ভিত্তিক জেলা কোটা (১০ শতাংশ) অনুযায়ী উপযুক্ত প্রার্থীদের মাধ্যমে পূরণ করতে হবে। জেলা কোটার সব পদ প্রার্থীদের দিয়ে পূরণ সম্ভব না হলে জেলা কোটার জাতীয় মেধা তালিকা থেকে তা পূরণ করতে হবে।
বিভিন্ন জেলার বিতরণ করা কোটায় যোগ্য প্রার্থী বিবেচিত না হলে নিয়োগ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ বিশেষ কোটার প্রার্থীদের দিয়ে বিশেষ কোটাভিত্তিক মুক্তিযোদ্ধা, নারী ও উপজাতীয়দের জন্য জাতীয়ভিত্তিক মেধা তালিকা প্রণয়ন করতে হবে। এরপর বিশেষ কোটার অধীন জাতীয় ভিত্তিক স্ব স্ব কোটার প্রার্থীদের জাতীয় তালিকা থেকে পূরণ করতে হবে।
২০১৩ সালের পরিপত্রে বলা হয়— শান্তিচুক্তি অনুযায়ী পার্বত্য চট্টগ্রামের স্থায়ী অধিবাসীদের জন্য সরকারি, আধাসরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে নিয়োগ দেওয়া হবে। যদি যোগ্য প্রার্থী না পাওয়া যায় সেক্ষেত্রে প্রেষণে ও নির্দিষ্ট মেয়াদে ওই পদে নিয়োগ দেওয়া যাবে।
সংবিধান অনুযায়ী কোটা
কোটা ব্যবস্থার মূল লক্ষ্য হলো অবহেলিত জনগোষ্ঠীর জন্য সমান সুযোগ তৈরি করে দেওয়া। সংবিধানের ২৮ নং অনুচ্ছেদে রয়েছে— কেবল ধর্ম, গোষ্ঠী, বর্ণ, নারী-পুরুষ ভেদে বা জন্মস্থানের কারণে কোনও নাগরিকের প্রতি বৈষম্য করতে পারবে না রাষ্ট্র।
সংবিধানের ২৯ নং অনুচ্ছেদে উল্লেখ আছে— সরকারি চাকরিতে নিয়োগ বা পদ পাওয়ার ক্ষেত্রে সব নাগরিকের জন্য সুযোগের সমতা থাকবে। কেবল ধর্ম, গোষ্ঠী, বর্ণ, নারী-পুরুষ ভেদে বা জন্মস্থানের কারণে কোনও নাগরিক সরকারি চাকরিতে নিয়োগ বা পদের জন্য অযোগ্য হবেন না কিংবা সেক্ষেত্রে তার প্রতি বৈষম্য দেখানো যাবে না।
২৯ নং অনুচ্ছেদেই জানানো হয়েছে, নাগরিকদের যে কোনও অনগ্রসর অংশ যেন সরকারি চাকরিতে উপযুক্ত প্রতিনিধিত্ব লাভ করতে পারেন, সেই উদ্দেশে তাদের কল্যাণে বিশেষ বিধান প্রণয়ন করা হবে।
ঢাবিতে অবাঞ্ছিত মতিয়া চৌধুরী
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরীকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়েছে। কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা এই ঘোষণা দিয়েছেন।
মঙ্গলবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের সংবাদ সম্মেলন শেষে মিছিল নিয়ে ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। টিএসসির রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে এসে মিছিল পরবর্তী সমাবেশ থেকে মাইকে এই ঘোষণা দেয়া হয়।
আন্দোলনকারীরা মিছিলে ‘ম তে মতিয়া, তুই রাজাকার, তুই রাজাকার’ এবং ‘মতিয়ার চামড়া, তুলে নেবো আমরা’ বলে স্লোগান দিতে থাকে। এ সময় মতিয়া চৌধুরীর কুশপুত্তলিকা প্রদর্শন করে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। শহীদ মিনার ঘুরে এসে রাত ৮টার দিকে রাজু ভাস্কর্যের সামনে কৃষিমন্ত্রীর কুশপুত্তলিকা দাহ করে আন্দোলনকারীরা।
এর আগে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরীকে তাদের ক্যাম্পাসে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে।
গতকাল সোমবার জাতীয় সংসদে দাঁড়িয়ে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদেরকে রাজাকারের বাচ্চারা বলে সম্বোধন করেন কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী। এ সময় তিনি কোটা সংস্কারের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে বক্তব্য প্রদান করেন।
কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী সোমবার সংসদে বলেন, ‘মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তানেরা সুযোগ পাবে না, রাজাকারের বাচ্চারা সুযোগ পাবে? তাদের জন্য মুক্তিযোদ্ধা কোটা সংকুচিত হবে?’
তিনি আরো বলেন, ‘রাজধানীকেন্দ্রিক একটি এলিট শ্রেণি তৈরির চক্রান্ত চলছে। তারই মহড়া গতকাল আমরা দেখলাম।’
এমন বক্তব্যের ফলে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা মতিয়া চৌধুরীকে তার বক্তব্যের কারণে ক্ষমা চাওয়ার দাবি জানায়।