কক্সবাংলা ডটকম(১৬ জুন) :: ফুটবল মহাযজ্ঞের পর্দা উঠলেও বিশ্বকাপের ‘আসল’ উত্তেজনা শুরু হয়েছে স্পেন-পর্তুগালের দ্বৈরথ দিয়ে। রাশিয়া বিশ্বকাপ তবে কি রোনাল্ডোর বিশ্বকাপ হতে চলেছে? সোচিতে বিশ্বকাপের দ্বিতীয় দিনের ম্যাচে সেই ইঙ্গিত মিলল৷
স্পেনের বিরুদ্ধে হ্যাটট্রিক করাই শুধু নয়, একার দক্ষতায় লড়াই করে হারা ম্যাচ ড্র করালেন পর্তুগাল কাপ্তান ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো৷ স্পেনের বিরুদ্ধে তাঁর তিনটি গোল(৪,৪৪, ৮৮মি) দেখে বলতেই হচ্ছে গোলমেশিন রোনাল্ডো হইতে সাবধান!
দিনের সেরা গোলটি এলে ৮৮ মিনিটে রোনাল্ডোর পা থেকে৷ ফ্রি-কিকে বিশ্বমানের গোল করে পর্তুগালের হয়ে স্কোরলাইন ৩-৩ করেন সি আর সেভেন৷
এর আগে স্পেনের বিপক্ষে আরও চার ম্যাচে মাঠে নেমেছিল পর্তুগিজ যুবরাজ। কিন্তু সেই চার দেখায় একবারও লা রোজাদের জালে বল পাঠানে পারেননি রোনালদো। অথচ বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচেই স্পেনের বিপক্ষে তুলে নিলেন হ্যাটট্রিক। তুলে নিয়েছেন ক্লাব এবং জাতীয় দলের হয়ে ৫১ তম হ্যাটট্রিক। এছাড়া নাম লিখিয়েছেন বিশ্বকাপের ৫১ তম হ্যাটট্রিক করা খেলোয়াড় হিসেবে।
এমনকি এই ম্যাচের আগে তিনটি বিশ্বকাপে ১৩ ম্যাচ মাঠে নেমে সিঅারসেভেনের ছিল মাত্র ৩ গোল। অথচ ২০১৮ বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচেই নিজের নামের পাশে ৩ গোল লিখেছেন তিনি। পর্তুগিজ যুবরাজ জয় বঞ্চিত করেছে স্পেনকে। ম্যাচের ৮৮ মিনিটে গোল করার আগে ৩-২ ব্যবধানে এগিয়ে ছিল স্পেন। দারুণ দুই গোল করেছেন স্পেন স্ট্রাইকার ডিয়াগো কস্তা। এছাড়া রোনালদোকে ফাউল করে পেনাল্টি উপহার দেওয়া ন্যাচো বক্সের বাইরে থেকে চোখ ধাঁধাঁনো এক গোল করে প্রায়শ্চিত করেন। কিন্তু দিনটি ছিল রোনালদোর। শেষ হলো রোনালদো ময়।
রোনালদো প্রথমে চার মিনিটের মাথায় পেনাল্টি থেকে দলকে ১-০ গোলের লিড এনে দেন। এরপর ২৪ মিনিটের মাথায় দলকে সমতায় ফেরায় স্পেন স্ট্রাইকার ডিয়াগো কস্তা। প্রথমার্ধের শেষ বাঁশি বাজার আগে আবার রোনালদো শো। ৪৪ মিনিটের মাথায় স্পেন গোলরক্ষক ডি গিয়াকে সোজাসুজি বল মারেন রোনালদো। কিন্তু গতির কাছে হার মানে সময়ের অন্যতম সেরা এই গোলরক্ষক। সোজাসুজি মারা বলটি ধরতে পারেননি তিনি। তার পায়ে লেগে বল চলে যায় স্পেনের গোলে।
দ্বিতীয়ার্ধের ৫৫ মিনিটে আবার সমতা ফেরান কস্তা। এরপর ৫৮ মিনিটে গোল করে দলকে এগিয়ে নেন ন্যাচো। কিন্তিু ৮৮ মিনিটে রোনালদোর হ্যাটট্রিক গোলে সব ম্লান হয়ে গেল। রোনালদোও অবশ্য আফসোস করতে পারেন এমন এক হ্যাটট্রিক করেও সমতা নিয়ে সন্তুষ্ট থাকতে হলো।
https://www.youtube.com/watch?v=HmS8dnhqlIo
আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণ, গোল, হ্যাটট্রিক…সব দেখা হয়ে গেল বিশ্বকাপের দ্বিতীয় দিন, চতুর্থ ম্যাচেই! পর্তুগাল-স্পেন ম্যাচটি মনে হচ্ছিল ফাইনাল। এমন ম্যাচে রেকর্ড না হলে কি হয়! হয়েছেও তাই। রেকর্ডের জন্য যাঁর জন্ম সেই রোনালদো গোল করলেন টানা চার বিশ্বকাপে। এটা একটা রেকর্ড।
সে রেকর্ডও ছাপিয়ে গেল একটু পরে। যখন বিশ্বকাপের ৫১তম হ্যাটট্রিকটি করলেন রোনালদো। আরেকটি তথ্য কাকতালীয়, সেটা হচ্ছে এটা রোনালদোর ক্যারিয়ারেরও (ক্লাব ও জাতীয় দল মিলিয়ে) ৫১তম হ্যাটট্রিক। এত রেকর্ডের মাঝে একটি রেকর্ডে রোনালদো হয়তো মন খারাপ করবেন, মন খারাপ হতে পারে তাঁর সমর্থকদেরও। বিশ্বকাপে সবচেয়ে বয়সী যে খেলোয়াড়টি হ্যাটট্রিক করেছেন তিনি রোনালদো। বয়স যে ৩৩ হয়ে গেল।
আরেকটি রেকর্ড স্পেন সমর্থকদের বুকে কাঁটা হয়ে বিধবে। সেখানেও কারিগর ওই রোনালদোই। রোনালদোর আগে যে কেউ এটা করে দেখাতে পারেনি। বিশ্বকাপের ইতিহাসের পাতা উল্টে তন্ন তন্ন করে খুঁজে দেখা হলো; না এমনটি কেউ করেনি এর আগে। বিশ্বকাপের মঞ্চে স্পেনের বিপক্ষে এর আগে কেউ হ্যাটট্রিক করতে পারেনি। পেরেছেন একজন তিনি পর্তুগীজ ফুটবলের রাজপুত্র, তিনি রোনালদো।