কক্সবাংলা ডটকম(১৮ মার্চ) :: বিশ্বের সবচেয়ে বড় দেশ রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বর্তমান প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনসহ আটজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন। তবে প্রধান বিরোধী নেতা নাভালনি নির্বাচনে অংশ নিতে না পারায় পুতিনের জয়লাভ অনেকটাই নিশ্চিত হবে বলে মনে করা হচ্ছে। নির্বাচনে জয় লাভ করলে ভ্লাদিমির পুতিন টানা চতুর্থ বারের মত রাশিয়ায় সপ্তম প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হবেন।
বিশ্বের সবচেয়ে বড় দেশটির প্রায় ১০ কোটি নাগরিক এ নির্বাচনে নিবন্ধিত ভোটার। বর্তমান প্রেসিডেন্ট ভাদিমির পুতিনকে চতুর্থ দফায় ছয় বছর মেয়াদে ২০২৪ সাল পর্যন্ত ক্ষমতায় রাখতে ভোট দিয়েছেন তারা। নাগরিকদের মুখে ফুটছে, পুতিন… পুতিন রব। সোভিয়েত রাশিয়ায় পুতিনের বিকল্প নেই বলে বিশ্বাস তাদের। তার জয়ের বিষয়টিও প্রায় নিশ্চিত। একে একটি ঐতিহাসিক ঘটনা হিসেবেই দেখছেন বিশেষজ্ঞরা।
কারণ আরেক মেয়াদ পূর্ণ হলে ৬৫ বছর বয়সী পুতিন সোভিয়েত একনায়ক জোশেফ স্ট্যালিনের পর সবচেয়ে বেশিদিন ক্রেমলিনের ক্ষমতায় থাকা দ্বিতীয় নেতা হবেন। ১৯২২ থেকে ১৯৫২ সাল পর্যন্ত সোভিয়েত শাসক ও কমিউনিস্ট পার্টির প্রধান ছিলেন স্ট্যালিন। খবর এএফপি ও সিএনএনের।
রাশিয়ার পূর্বের প্রশান্ত মহাসাগরীয় উপকূলীয় অঞ্চলগুলোয় স্থানীয় সময় রোববার সকাল ৮টায় (বাংলাদেশ সময় রোববার সকাল ১০টায়) ভোট গ্রহণ শুরু হয়। বড় আয়তনের দেশ হওয়ায় সময়ের ব্যবধানের কারণে নয় ঘণ্টা পর খুলেছে মস্কোর ভোট কেন্দ্রগুলো। সোমবার ফল ঘোষণা করবে নির্বাচন কমিশন। এ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন আটজন প্রার্থী।
তারা হলেন ভাদিমির পুতিন, কোটিপতি কমিউনিস্ট পাভেল গ্রুদিনিন, গ্রিগরি ইয়াভলিনস্কি, সাবেক টিভি উপস্থাপক সেনিয়া সবচাক, বরিস টিটোভ, সের্গেই বাবুরিন, ভাদিমির ঝিরিনোভস্কি ও মাক্সিম সুরাইকিন। অন্যতম বিরোধী প্রতিদ্বন্দ্বী অ্যালেক্সাই নাভালনির বিরুদ্ধে জালিয়াতি মামলায় অভিযোগ আনায় তিনি নির্বাচনে নেই। যদিও এ পুরো প্রক্রিয়াকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হিসেবে অভিহিত করেছেন পুতিনের কট্টর এ সমালোচক। অনিয়মের অভিযোগ তুলে আগেই নির্বাচন বয়কটের ডাক দেন নাভালনি।
নির্বাচনের আগে রাশিয়ান পাবলিক ওপিনিয়ন রিসার্চ সেন্টারের প্রকাশিত সর্বশেষ এক জরিপে দেখা যায়, প্রায় ৭০ শতাংশ রুশ ভোটার পুতিনকে আবার প্রেসিডেন্ট হিসেবে চান। সমর্থনের এই হার তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী থেকে প্রায় ১০ গুণ বেশি। শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতা না থাকায় এ নির্বাচনেও পুতিন বিপুল ভোটে জয়ী হবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। ২০০০ সালের পর থেকেই প্রেসিডেন্ট অথবা প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ক্ষমতার কেন্দ্রে আছেন তিনি। প্রথম ও দ্বিতীয় দফায় ২০০০ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত প্রেসিডেন্ট। মাঝখানে দিমিত্রি মেদভেদেভকে প্রেসিডেন্ট পদে বসিয়ে নিজে প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। তারপর ২০১২ সাল থেকে আবার প্রেসিডেন্ট হন পুতিন।
দেশটির তরুণ সমাজ পরিবর্তন চাইলেও পঞ্চাশোর্ধ্ব নাগরিকরা পুতিনের বিকল্প কাউকে চিন্তা করতে পারেন না। ৬৫ বছর বয়সী অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওলগা মাতউনিনা বলেন, অবশ্যই আমি পুতিনের জন্য কাজ করছি, তিনিই নেতা।
তিনি আরও বলেন, ক্রিমিয়া ফিরিয়ে নেয়ার পর তিনি আমার নেতা হয়েছেন। গতবারের নির্বাচনে ওলগা পুতিনকে ভোট দেননি বলেও জানান। ওলগা বলেন, গত তিন-চার বছর রাশিয়া নিষেধাজ্ঞার ওপর ছিল, কিন্তু আমরা বহু কিছু নির্মাণ করেছি। বেড়েছে কলকারখানা। কমেছে মুদ্রাস্ফীতি।
Posted ৩:২১ পূর্বাহ্ণ | সোমবার, ১৯ মার্চ ২০১৮
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta