কক্সবাংলা ডটকম(৬ মে) :: বর্তমান দুনিয়ায় আমেরিকার অন্যতম প্রতিদ্বন্দ্বী রাশিয়া ও চীন এবং অনেকটা সাইড লাইনে চলে যাওয়া তুরস্কের মোকাবিলায় নতুন কিছু কৌশল নিচ্ছে ওয়াশিংটন।
এ জন্য ৭১ হাজার ৭০০ কোটির ডলারের প্রতিরক্ষা কৌশল বাজেটের একটি বিল প্রস্তুত করা হয়েছে। আগামী সপ্তাহে বিলটি নিয়ে আলোচনা হবে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স এক প্রতিবেদনে বলেছে, আগামী সপ্তাহে মার্কিন পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ হাউজ অব রিপ্রেজেন্টেটিভে এ সংক্রান্ত কমিটি ন্যাশনাল ডিফেন্স অথরাইজেশন অ্যাক্ট (এনডিএএ) আলোচনার জন্য উপস্থাপন করবে।
প্রসঙ্গত, মার্কিন সরকার প্রতিরক্ষা খাতে কী পরিমাণ ব্যয় করবে, কী নীতি অনুসরণ করবে এবং অর্থ কিভাবে ব্যয় হবে তা নিয়ন্ত্রণ করে এই কমিটি।
রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কমিটি আগামী সপ্তাহে আলোচনার আগে বিষয়টি প্রকাশ করবে না। তবে হাউজ অব রিপ্রেজেন্টেটিভের কিছু সদস্য (রিপাবলিকান ও ডেমোক্র্যাট) বিষয়টি সম্পর্কে আভাস দিয়েছেন। হাউজ অব রিপ্রেজেন্টেটিভের নিয়ন্ত্রণ এখন ক্ষমতাসীন রিপাবলিকানদের হাতে।
পার্লামেন্ট সদস্যদের প্রকাশ করা তথ্য অনুযায়ী, আগামী বছর (২০১৯) রাশিয়ার অস্ত্র শিল্পের ওপর নতুন করে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে। এ ছাড়া সামরিক সহযোগিতার ক্ষেত্রে বিধি-নিষেধ আরোপের পাশাপাশি সাইবার যুদ্ধের জন্য আরো বেশি ব্যয় করা হবে।
তাছাড়া নতুন একটি আইনের কথা বলা হয়েছে বিলে। ওই আইন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে এমন ক্ষমতা দেবে, যার দ্বারা রাশিয়ার ওপর কংগ্রেসের আরোপ করা নিষেধাজ্ঞা বাতিল করতে পারবেন তিনি। গত বছর ট্রাম্পের আপত্তি সত্ত্বেও কংগ্রেস ওই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে।
অন্যদিকে, চীনের মোকাবিলায় তাইওয়ানের সঙ্গে প্রতিরক্ষা সহযোগিতা বৃদ্ধি এবং চীনা প্রযুক্তি কোম্পানি হাওয়াই ও জেটিই’র পণ্য আমেরিকায় নিষিদ্ধ করা হবে। কারণ আমেরিকা মনে করে, ওই দুই কোম্পানির ফোনের মাধ্যমে চীন মার্কিনিদের ওপর গোয়েন্দাগিরি করছে।
আর তুরস্কের সঙ্গে মার্কিন সম্পর্কের সর্বশেষ অবস্থা নিয়ে একটি প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। ওই প্রতিবেদন প্রকাশের আগ পর্যন্ত তুরস্কের কাছে প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম বিক্রির ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে।
তবে বিষয়টি নিয়ে হাউজের উভয়কক্ষে আলোচনার পরই চূড়ান্ত করা হবে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
রাশিয়া-চীনকে টেক্কা দিতে দ্বিতীয় নৌবহর ফিরিয়ে আনছে যুক্তরাষ্ট্র
রাশিয়া ও চীনকে মোকাবেলায় নিজেদের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা বাড়াতে চলেছে যুক্তরাষ্ট্র। জানা গেছে, ২০১১ সালে বিলুপ্ত করা দ্বিতীয় নৌবহর ফিরিয়ে আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা। মার্কিন চীফ অব ন্যাভাল অপারেশন এডমিরাল জন রিচার্ডসন বলেছেন, ‘দ্বিতীয় নৌবহর আবার নতুন করে গঠন করে যুক্তরাষ্ট্রের পূর্ব উপকুল এবং উত্তর আটলান্টিকে মোতায়েন করা হবে।’
তিনি আরো বলেছেন, ‘এ বছরের শুরুতে যুক্তরাষ্ট্রের যে নতুন প্রতিরক্ষা কৌশল প্রকাশ করা হয়েছে তাতে এটা পরিষ্কার যে পৃথিবীতে বৃহৎ শক্তিধর দেশগুলোর প্রতিদ্বন্দ্বিতা ফিরে এসেছে। কাজেই রাশিয়া এবং চীনকে মোকাবেলার বিষয়টিকে এই নীতি প্রাধান্য দেয়া হয়েছে।’
এর আগে, খরচ কমানো এবং অন্যান্য কাঠামোগত বিষয় বিবেচনায় রেখে তাদের দ্বিতীয় নৌবহর বিলুপ্ত করেছিল যুক্তরাষ্ট্র। তবে ফের দ্বিতীয় নৌবহরকে ফিরিয়ে আনার সিদ্ধান্ত হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের বৃহত্তর প্রতিরক্ষা কৌশলের অংশ।
রাশিয়া সম্প্রতি তাদের নৌশক্তি বাড়ানোর জন্য প্রচেষ্টা জোরদার করেছে। বাল্টিক সাগর, উত্তর আটলান্টিক মহাসাগর এবং আর্কটিক অঞ্চলে রাশিয়ার সামরিক তৎপরতা বাড়ছে। আর এ কারণেই যুক্তরাষ্ট্র বড় বড় দেশগুলোর মধ্যে এখন যে প্রতিযোগিতা চলছে সেদিকে মনোযোগ দিচ্ছে। বিশেষ করে রাশিয়ার দিকে। তবে কে এই দ্বিতীয় নৌবহরের কমান্ডার হবেন এই বহরে কি কি থাকবে তা এখনো ঠিক হয়নি।
