কক্সবাংলা ডটকম(২৩ মে) :: সম্প্রতি রঙ হারিয়ে ফেলা দীর্ঘদিনের সম্পর্ককে পুনরায় চাঙা করে তুলতে হঠাৎ একদিনের রাশিয়া সফর করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। রাশিয়ার সোচি শহরে দুই নেতার বৈঠক হয়। বৈঠকে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে রাশিয়া থেকে অস্ত্র কেনা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞামূলক আইনটি।
এক দিনের ঘরোয়া বৈঠকে মস্কোর সঙ্গে সম্পর্ক মেরামতি, আন্তর্জাতিক উত্তর-দক্ষিণ করিডর গঠন, ব্রিকস নিয়ে আলোচনা করেছেন মোদি।
কিন্তু আজকের বৈঠকে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে রাশিয়া থেকে অস্ত্র কেনা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক নিষেধাজ্ঞামূলক আইনটি।
মোদি আজ পুতিনকে জানিয়েছেন, তাঁরা ওয়াশিংটনকে নিরন্তর বোঝানোর চেষ্টা করে চলেছেন যাতে ভারতকে এই আইনের আওতা থেকে বাদ দেওয়া হয়।
সেই লক্ষ্যেই তড়িঘড়ি ভারত-রাশিয়া বার্ষিক সম্মেলনের (নভেম্বরে) আগেই মোদী পুতিনের সঙ্গে ঘরোয়া আলোচনাতেই সাড়ে চারশো কোটি ডলারের চুক্তি করে এসেছেন। এ বছরেই রাশিয়া থেকে পাঁচটি ‘এস-৪০০ এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম’ কেনার ব্যাপারে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে ভারত।
গত দু বছর বছর ধরেই রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্কে অতীতের মাধুর্য নেই ভারতের। বরং পাকিস্তানের সঙ্গে দৃশ্যতই ঘনিষ্ঠতা বাড়িয়েছে মস্কো। এই নতুন বন্ধুত্বের পেছনে চীন কলকাঠি নাড়ছে বলেই মনে করছে বারত।
তবে বিদেশনীতি নিয়ে যথেষ্ট চাপে থাকা ভারত প্রবল ভাবে চেষ্টা করছে ভারত-রাশিয়ার সেই পুরনো অক্ষকে ফের জাগিয়ে তুলতে। আর সেই লক্ষ্যেই তড়িঘড়ি ভারত-রাশিয়া বার্ষিক সম্মেলনের (নভেম্বরে) আগেই পুতিনের সঙ্গে ঘরোয়া আলোচনা করতে আজ মোদি পৌঁছে গিয়েছেন সোচি।
আলোচনার পরে মস্কোর সঙ্গে সম্পর্কের গভীরতা বোঝাতে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারী বাজপেয়ীর কথা বার বার উল্লেখ করেছেন মোদি।
তিনি বলেন, ‘অটলবিহারী বাজপেয়ী ও রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের তৈরি কৌশলগত সম্পর্ক এখন বিশেষ কৌশলগত অংশীদারিতে পরিণত হয়েছে। এ এক বিরাট সাফল্য।’
এমনকি চলতি বছরেই রাশিয়া থেকে পাঁচটি ‘এস-৪০০ এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম’ (সাড়ে চারশো কোটি ডলারের চুক্তি) কেনার ব্যাপারেও প্রতিশ্রুতি দিয়েছে ভারত।
কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের সদ্য পাশ হওয়া ক্যাটসা আইন (কাউন্টারিং আমেরিকাজ অ্যাডভার্সারিজ থ্রু স্যাংশন অ্যাক্ট) আনার পরে পরিস্থিতি যথেষ্ট জটিল হয়ে গিয়েছে ভারতের কাছে।
যুক্তরাষ্ট্র সাফ জানিয়ে দিয়েছে, রাশিয়া থেকে উচ্চপ্রযুক্তির বা বড় মাপের অস্ত্র এবং সামরিক সরঞ্জাম যে দেশ কিনবে, তাকে নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়তে হবে। ফলে বিপাকে পড়েছে ভারত।
কারণ দক্ষিণ এবং দক্ষিণ-পশ্চিম এশিয়ার রণনীতি এবং নিরাপত্তার প্রশ্নে যুক্তদরাষ্ট্রের প্রতি নির্ভরতা বাড়ছে ভারতের। এ ছাড়া, ওয়াশিংটনের সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রে জড়িয়ে রয়েছে বিপুল অর্থনৈতিক এবং বাণিজ্যিক স্বার্থ। যুক্তরাষ্ট্রকে চটিয়ে রাশিয়ার কাছ থেকে অস্ত্র কেনার ফলাফলও এখন আর অস্পষ্ট নয়। ফলে নয়াদিল্লির চিরাচরিত ভারসাম্যের কূটনীতি এই পরিস্থিতিতে রীতিমতো চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি।
Posted ১:৪৫ পূর্বাহ্ণ | বুধবার, ২৩ মে ২০১৮
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta