কক্সবাংলা রিপোর্ট(২৬ অক্টোবর) :: ভারতে অনুপ্রবেশের দায়ে অভিযুক্ত বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও কক্সবাজার বিএনপির প্রভাবশালী নেতা সালাহউদ্দিন আহমেদকে (২৬ অক্টোবর) বেকসুর খালাস দিয়েছে ভারতের মেঘালয় রাজ্যের আদালত।
বাংলাদেশে জাতীয় নির্বাচন আসন্ন৷ দিনক্ষণ ঘোষণা না হলেও ডিসেম্বরই নির্বাচন তা স্থির হয়ে গিয়েছে৷ এই অবস্থায় ভারত থেকে বেকসুর হয়েই নিজের দেশে ফিরতে চাইছিলেন বিএনপির শীর্ষ নেতা তথা সালাউদ্দিন আহমেদ৷ শিলং থেকে এই খবর ছড়িয়েছে ঢাকায়৷
বাংলাদেশের সর্বাধিক আলোচিত রাজনৈতিক অন্তর্ধান ঘটনার একটি ছিল এই বিএনপি নেতার নিখোঁজ হওয়া৷ অভিযোগ তাঁকে অপহরণ করেছিল ঢাকা মহানগর পুলিশ ও গোয়েন্দা বিভাগ৷ পরে রহস্যজনকভাবে তাঁর খোঁজ মিলেছিল শিলং শহরের কাছে৷
রায় প্রকাশের পর এই বিএনপি নেতা জানান তার অনুভূতির কথা।খালেদা জিয়ার ঘনিষ্ঠ ও বিএনপি শীর্ষ নেতা সালাউদ্দিন আহমেদ জানিয়েছেন, উত্তর পূর্ব ভারতের জঙ্গি সমস্যা সমাধানে ভারত ও বাংলাদেশকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে৷ সেই সঙ্গে তিনি শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ সরকারের সমালোচনা করে জানিয়েছেন, বর্তমান সরকারের আমলে দেশে শান্তি বিঘ্নিত৷ বিরোধী কণ্ঠস্বর স্তব্ধ করে দেওয়া হচ্ছে৷
বলেন, “আমি খুশি। ন্যায় বিচার পেয়েছি। আদালত আদেশ দিয়েছে আমাকে যেনো দ্রুত দেশে ফেরত পাঠানো হয়। সাড়ে তিন বছরের প্রবাস জীবনের দুর্বিসহ জীবন থেকে মুক্তি পেলাম। আমি আশা করছি, খুব দ্রুত দেশে ফিরতে পারবো। দ্রুত দেশে ফিরতে চাই।”
বাংলাদেশে চলমান রাজনৈতিক অবস্থা সম্পর্কেও মন্তব্য করেছেন এই বিএনপি নেতা। বলেন, “গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে বাংলাদেশে একটি জাতীয় ঐক্য হয়েছে। এই ঐক্য জরুরি ছিলো। আশা করছি, দেশের জনগণ দ্রুত মুক্ত গণতন্ত্রে ফিরতে পারবে।”
“দেশে জাতীয় ঐক্য তৈরি হয়েছে। সেই ঐক্য ব্যর্থ হবে না। আশা করছি, সরকারের শুভ বুদ্ধির উদয় হবে এবং একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যবস্থা করবে,” যোগ করেন সালাহউদ্দিন।
এছাড়াও, ভারতীয় সরকার ও জনগণকে ধন্যবাদ দেন সালাহউদ্দিন। বলেন, “ভারতীয় সরকারকে ধন্যবাদ জানাই। আমার চিকিৎসাসহ সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা ভারতীয় সরকার আমাকে দিয়েছে। তাই ভারতের সব মহলকে ধন্যবাদ জানাই। রাজ্য সরকার, কেন্দ্রীয় সরকার সবার কাছে আমি কৃতজ্ঞ।”
উল্লেখ্য, ২০১৫ সালের মার্চে ঢাকার উত্তরা থেকে নিখোঁজ হওয়ার প্রায় দুই মাস পর মে মাসে ভারতে মেঘালয়ের রাজধানী শিলংয়ের একটি রাস্তায় উদভ্রান্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয় সালাউদ্দিন আহমেদকে। তবে কে বা কারা তাকে ওখানে নিয়ে এসেছিল বা কীভাবে তিনি ঢাকা থেকে শিলংয়ে এসে উপস্থিত হলেন, সে ব্যাপারে সালাউদ্দিন আহমেদ কিছুই জানাতে পারেননি। তবে পরিবারের অভিযোগ ছিল, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা তাকে উত্তরার বাসা থেকে তুলে নিয়ে গেছে।
ভারতে অনুপ্রবেশের অভিযোগে ২০১৫ সালের মার্চে বিএনপির এই নেতার বিরুদ্ধে মামলা করে মেঘালয় পুলিশ। সিটি থানায় দায়ের করা ওই মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয় তাকে। তবে শারীরিক অসুস্থতার কারণে বিচারক তাকে শর্তসাপেক্ষে জামিন দেন। জামিনের প্রধান শর্তই ছিল শিলংয়ের বাইরে যাওয়া চলবে না। আর সে কারণেই সালাউদ্দিন আহমেদ আপাতত সেখানেই একটি গেস্ট হাউস ভাড়া করে আছেন। অসুস্থতার জন্য তার চিকিৎসাও চলছে ওই শহরেই। মাঝে মাঝে বাংলাদেশ থেকে স্ত্রী-সন্তান ও বন্ধুরা গিয়ে সেখানে দেখা করে যান। সালাউদ্দিনের পক্ষে তার মামলা পরিচালনা করেন সিনিয়র আইনজীবী এস পি মোহন্ত। আইনজীবী এ কে আগরওয়াল তাকে সহযোগিতা করেন।
Posted ১২:৫৪ অপরাহ্ণ | শনিবার, ২৭ অক্টোবর ২০১৮
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta