বৃহস্পতিবার ২রা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৯শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম

বৃহস্পতিবার ২রা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

শিরোনাম

রোজার পণ্যের আমদানি বেশি : ৩৯১ কোটি টাকার তেল-ডাল কিনবে সরকার

বুধবার, ২৪ জানুয়ারি ২০২৪
34 ভিউ
রোজার পণ্যের আমদানি বেশি : ৩৯১ কোটি টাকার তেল-ডাল কিনবে সরকার

কক্সবংলা ডটকম(২৪ জানুয়ারি) :: আসন্ন রমজান ঘিরে অত্যাবশ্যকীয় নয় ভোগ্যপণ্যের চাহিদা সবচেয়ে বেশি থাকে। এর মধ্যে ছয় পণ্য পেঁয়াজ, ডাল (মসুর), খেজুর, ডাবলি (অ্যাংকর), গম, অপরিশোধিত সয়াবিন তেল পূর্ববর্তী বছরের এ সময়ের তুলনায় বেশি আমদানি করেছেন ব্যবসায়ীরা। কেবল চিনি, ছোলা ও পাম অয়েল আমদানি কমেছে।

তবে অ্যাংকর ডাল বেশি আসায় ছোলার চাহিদা পূরণ হয়ে যাবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করে এ তথ্য পাওয়া গেছে। সম্প্রতি রোজার পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে বিশেষ সুবিধা দেয়ায় দুই মাসের মধ্যে আমদানি আরো বাড়বে বলে প্রত্যাশা করছেন ব্যবসায়ীরা।

এদিকে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) জন্য ৩৯১ কোটি ১৯ লাখ টাকার রাইস ব্রান তেল ও মসুর ডাল কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এর মধ্যে ১ কোটি ২০ লাখ লিটার রাইস ব্রান অয়েল এবং ২০ হাজার মেট্রিক টন মসুর ডাল রয়েছে।

মঙ্গলবার সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে এই তেল ও ডাল কেনার অনুমোদন দেয়া হয়েছে।

কমিটির আহ্বায়ক অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলীর সভাপতিত্বে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। নতুন সরকারের অধীনে এটি সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির প্রথম বৈঠক।

বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে জানানো হয়েছে, স্থানীয়ভাবে সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে (ডিপিএম) ১ কোটি ২০ লাখ লিটার (+৫%) রাইস ব্রান তেল ক্রয় করার প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে।

টিসিবি কর্তৃক তিনটি লটে ১ কোটি ২০ লাখ লিটার রাইস ব্রান তেল সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে স্থানীয় প্রতিষ্ঠান মজুমদার প্রডাক্ট, মজুমদার ব্রান অয়েল মিলস এবং আলী নেচারাল অয়েল মিলস অ্যান্ড অ্যাগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজের কাছ থেকে কেনার প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়। এতে ব্যয় হবে ১৮৯ কোটি ৬০ লাখ টাকা।

মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ আরও জানায়, ভারতের উমা এক্সপো প্রাইভেট লিমিটেড থেকে ১০ হাজার টন মসুর ডাল কেনার প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়। এ ডাল কিনতে ৯৬ কোটি ১৪ লাখ টাকা ব্যয় হবে। প্রতি কেজি মসুর ডালের দাম পড়বে ১০১ টাকা ১৩ পয়সা।

এছাড়া বগুড়ার রয় অ্যাগ্রো ফুড প্রোডাক্টস এবং ঢাকার নাবিল নবা ফুডস লিমিটেড থেকে ১০ হাজার মেট্রিক টন মসুর ডাল কেনার প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা কমিটি। এই ডাল কিনতে খরচ হবে ১০৫ কোটি ৪৫ লাখ টাকা। প্রতি কেজি মসুর ডালের দাম পড়বে ১০৫ টাকা ৪৫ পয়সা।

চট্টগ্রাম কাস্টমসের তথ্যমতে, ২০২৩ সালের ১৫ অক্টোবর থেকে চলতি বছরের ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত তিন মাসে পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে ১ লাখ ৯৫ হাজার ৮৮১ টন। অ্যাংকর এসেছে ১ লাখ ৬৭ হাজার ৭৯১ টন, ছোলা ২৪ হাজার ৬৩২ ও মসুর ডাল ১ লাখ ৫৫ হাজার ৭৭১ টন। এছাড়া সর্বশেষ তিন মাসে খেজুর ২৩ হাজার ১৭০ টন, গম ১১ লাখ ২৬ হাজার ৯৯২, অপরিশোধিত সয়াবিন তেল ২ লাখ ৩৫ হাজার ৪৫৯, পাম অয়েল ৪ লাখ ৮ হাজার ৪৭২ ও অপরিশোধিত চিনি ৪ লাখ ১৭ হাজার ৪৬০ টন আমদানি করা হয়েছে।

ব্যবসায়ীরা মনে করছেন, মূল্যস্ফীতিসহ নানামুখী সংকটে উল্লেখযোগ্য ভোক্তা চাহিদা না বাড়লেও বিভিন্ন পণ্যের বাড়তি আমদানি রোজার বাজারকে স্থিতিশীল রাখতে ভূমিকা রাখবে।

কাস্টমসের তথ্য পর্যালোচনায় দেখা গেছে, ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত তিন মাসে এক বছর আগের একই সময়ের তুলনায় ৪১ হাজার ৮৪০ টন পেঁয়াজ বেশি আমদানি হয়েছে। এছাড়া আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় এবার অ্যাংকর ১ লাখ ৪১ হাজার ৭৮১ টন, মসুর ডাল ১৪ হাজার ৩৯১, খেজুর ১৪ হাজার ৮৭৯, গম ২৮ হাজার ২০১ ও অপরিশোধিত সয়াবিন তেল ১ লাখ ৮ হাজার ৮৬৮ টন বেশি আমদানি হয়েছে। কেবল ছোলা, চিনি ও পাম অয়েল আমদানি আগের বছরের তুলনায় কম হয়েছে।

ব্যবসায়ীরা অবশ্য বলছেন, রোজায় সবচেয়ে বেশি বিক্রি হওয়া পণ্যের তালিকায় রয়েছে ছোলা। বছর তিনেক আগেও পণ্যটির সর্বোচ্চ দাম ছিল কেজিপ্রতি ৭০ টাকা। দুই বছরের ব্যবধানে তা বেড়ে ১০০ টাকা ছাড়িয়েছে। তাই বিকল্প পণ্য হিসেবে দেশে অ্যাংকর বা ডাবলির চাহিদা বেড়ে গেছে। আমদানিও এবার অনেক বেশি হয়েছে। অন্যদিকে চিনি আমদানি কিছুটা কম হলেও দেশীয় মিলের উৎপাদনের ভরা মৌসুম এখন। এক মাসের মধ্যে দেশের সব সরকারি চিনিকলের উৎপাদন শেষ পর্যায়ে চলে আসবে। তাছাড়া মার্চে রোজা শুরু হওয়ায় চিনির চাহিদাও আগের বছরের তুলনায় কম থাকবে বলে মনে করছেন ব্যবসায়ীরা।

চট্টগ্রামের শীর্ষস্থানীয় খাদ্যশস্য আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান বিএসএম গ্রুপের চেয়ারম্যান আবুল বশর চৌধুরী বলেন, ‘‌রোজার কয়েক মাস আগেই পণ্য আমদানি করেন ব্যবসায়ীরা। এবার মোট চাহিদা, আমদানি ও মজুদ নিয়ে ব্যবসায়ীদের কাছে কোনো সঠিক তথ্য না থাকায় অনেক সময় চাহিদার তুলনায় অনেক বেশি পণ্য আমদানি হয়ে যায়।’ আমদানি প্রক্রিয়ায় নানামুখী সংকট থাকলেও মানুষের ভোগপ্রবণতা ঋণাত্মক হওয়ায় এবারের রোজায় নিত্যপণ্যের দাম নিয়ে অস্থিরতা না হওয়ার সম্ভাবনা দেখছেন তিনি।

ভোগ্যপণ্যের সবচেয়ে বড় পাইকারি বাজার খাতুনগঞ্জের আমদানিকারক, ট্রেডিং ও পাইকারি ব্যবসায়ীরা বলছেন, অন্য সময়ের তুলনায় আসন্ন রমজানের আগে পণ্যের চাহিদা তুলনামূলক কম। পণ্যমূল্য বেশি হওয়ায় মানুষের মধ্যে ভোগের পরিমাণ কমেছে। আগে রোজা শুরুর দুই মাস আগেই নিত্যপণ্য কেনার বাড়তি প্রতিযোগিতা ছিল। এ বছর বিক্রি কিছুটা কম হওয়ায় প্রায় এক মাস ধরে নিত্যপণ্যের বাজার বাড়তি অবস্থায় স্থিতিশীলতায় রয়েছে।

খাতুনগঞ্জে গতকাল সয়াবিন তেল লেনদেন হয়েছে মণপ্রতি (৩৭ দশমিক ৩২ কেজি) ৬ হাজার ২০০ (মিল থেকে উত্তোলনযোগ্য) টাকায়, পাম অয়েল মণপ্রতি ৫ হাজার ও চিনি মণপ্রতি ৫ হাজার টাকায়। গম মানভেদে ১ হাজার ৫০০ থেকে ১ হাজার ৬০০ (রাশিয়া) ও কানাডীয় সর্বোচ্চ ১ হাজার ৯০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। অন্যদিকে ছোলার দাম কিছুটা কমে কেজিপ্রতি বিক্রি হচ্ছে ৮৬ থেকে ৯৬ টাকায়। তবে বাড়তি চাহিদার কারণে অ্যাংকরের দাম দুই সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিপ্রতি ৩ টাকা বেড়ে ৬৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

চট্টগ্রামভিত্তিক আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান এমএইচ গ্রুপের চেয়ারম্যান মোশারফ হোসেন মিন্টু বলেন, ‘মুদ্রাস্ফীতির কারণে পণ্যমূল্য বৃদ্ধিতে ভোক্তা পর্যায়ে চাহিদা কম। রোজার আগে বিক্রিও কমে গেছে পাইকারি বাজারগুলোয়। আমদানি পর্যায়ে ব্যবসায়ীরা নানামুখী সংকট মোকাবেলা করলেও রোজার পণ্যের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে বেশকিছু নিদের্শনা রয়েছে। নিত্যপণ্যের বাজারে এর প্রভাবও পড়েছে।’

নিত্যপণ্যের আমদানিকারকরা বলছেন, আগের তুলনায় এ বছর নিত্যপণ্যের চাহিদা অন্তত ১০-১৫ শতাংশ কমেছে। ক্রয়ক্ষমতা কম থাকায় সাধারণ মানুষের মধ্যে কম দামে বিকল্প পণ্য সংগ্রহের প্রবণতা বেড়েছে। ফলে একসময় গমের বাড়তি চাহিদা থাকলেও বর্তমানে সেটি বছরে ১০-১৫ লাখ টন কমেছে। ঊর্ধ্বমুখী দামের কারণে খেজুরসহ রোজার বেশকিছু পণ্যের চাহিদাও কম। ছোলার পরিবর্তে ডাবলিসহ কম দামের বিকল্প পণ্যের চাহিদা বাড়ছে।

সিটি গ্রুপের পরিচালক (করপোরেট অ্যান্ড রেগুলেটরি অ্যাফেয়ার্স) বিশ্বজিৎ সাহা বলেন, ‘রোজা ছাড়াও ব্যবসায়িক ধারাবাহিকতার প্রয়োজনে সংকটের মধ্যেও পণ্য আমদানি অব্যাহত রাখা হয়েছে। ফলে প্রতিবারের মতো এবারো রোজার পণ্য নিয়ে সংকটের কোনো সুযোগ নেই। পণ্যের মূল্যের কারণে অবশ্য ভোক্তা পর্যায়ে আগের তুলনায় চাহিদা কমেছে।’

বাজারকে স্থিতিশীলতায় নিয়ে আসতে সিঙ্গেল পার্টি বরোয়ার এক্সপোজার লিমিট, বিআরপিডি সার্কুলার লেটার নং-১/২০২২-এর আমদানি সুবিধা জরুরি বলে মনে করছেন বিশ্বজিৎ সাহা। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনসহ কয়লা আমদানিকারকরা এর সুবিধা পেলেও ভোগ্যপণ্য আমদানিকারকদের সে সুযোগ দেয়া হচ্ছে না। সার্কুলারটি ভোগ্যপণ্য আমদানিতেও বাস্তবায়ন হলে দেশে নিত্যপণ্যের বাজার স্থিতিশীলতার পাশাপাশি পণ্যের দাম সহনীয় পর্যায়ে নেমে আসবে।’

 

34 ভিউ

Posted ১২:৪০ পূর্বাহ্ণ | বুধবার, ২৪ জানুয়ারি ২০২৪

coxbangla.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

Editor & Publisher

Chanchal Dash Gupta

Member : coxsbazar press club & coxsbazar journalist union (cbuj)
cell: 01558-310550 or 01736-202922
mail: chanchalcox@gmail.com
Office : coxsbazar press club building(1st floor),shaheed sharanee road,cox’sbazar municipalty
coxsbazar-4700
Bangladesh
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
বাংলাদেশের সকল পত্রিকা সাইট
Bangla Newspaper

ABOUT US :

coxbangla.com is a dedicated 24x7 news website which is published 2010 in coxbazar city. coxbangla is the news plus right and true information. Be informed be truthful are the only right way. Because you have the right. So coxbangla always offiers the latest news coxbazar, national and international news on current offers, politics, economic, entertainment, sports, health, science, defence & technology, space, history, lifestyle, tourism, food etc in Bengali.

design and development by : webnewsdesign.com