মোসলেহ উদ্দিন,উখিয়া(১১ ফেব্রুয়ারী) :: নাইক্ষ্যংছড়ি ঘুমধুম ইউনিয়নের কোনারপাড়া নো-ম্যানস ল্যান্ডে দীর্ঘ পাঁচ মাস ধরে অবস্থান করা ৬৯৩৯ জন রোহিঙ্গাকে সেখান থেকে সরে যেতে মাইকিং করছে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী ও পুলিশ। গত কয়েক দিন ধরে মিয়ানমারের সেনারা নো-ম্যানস ল্যান্ডসহ বিভিন্ন স্থানে মাইকিং করছে।
তারা বলছে, তোমাদের (রোহিঙ্গারা) মিয়ানমারের ভূখণ্ড ত্যাগ করতে হবে। অন্যথায় মিয়ানমারে চলে আসতে হবে। গত শুক্রবার থেকে তারা জিরো লাইন এসে মাইকিংয়ের পাশাপাশি ভয়ভীতি প্রদর্শন করে ইট পাটকেল, ঢিল ও বোতল ছুড়ে মারছে বলে জিরো লাইনে অবস্থানরত রোহিঙ্গারা জানিয়েছেন।
ঘুমধুম ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এ কে জাহাঙ্গীর আজিজ প্রত্যক্ষদর্শী রোহিঙ্গাদের উদ্ধৃতি দিয়ে সাংবাদিকদের জানান, গত শুক্রবার মিয়ানমারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মংডু এসে সেনাবাহিনীর সঙ্গে বৈঠক করেছেন।
বৈঠকের পর শূন্যরেখায় এসে তিনি রোহিঙ্গাদের বলেন, তোমাদের কাছ থেকে কিছু জানতে আসিনি। তোমাদের বলতে এসেছি। তোমরা অবিলম্বে মিয়ানমারের ভূখণ্ড ছেড়ে অন্য কোথাও চলে যাও। নইলে তোমাদের অবস্থা খারাপ হবে।
নো-ম্যানস ল্যান্ডে আশ্রিত রোহিঙ্গা নেতা দিল মোহাম্মদ জানান, মিয়ানমারের সেনা ও সেখানকার উগ্রপন্থি সশস্ত্র রাখাইন যুবকরা পুলিশের সহযোগিতায় কোনারপাড়া এসে রোহিঙ্গাদের লক্ষ্য করে ইট, পাথর, ঢিল ছুড়ে মারছে। এছাড়াও তারা সকাল-বিকাল এসে মাইকিং করে রোহিঙ্গাদের সরে যেতে বলছে।
নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. এস এম সরওয়ার কামাল স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শী চকিদার ও দফাদারদের উদ্ধৃতি দিয়ে জানান, মিয়ানমার সেনারা মাইকিং করে শূন্যরেখায় অবস্থিত রোহিঙ্গাদের সরে যেতে বলছে। নয়তো মিয়ানমারে ফিরে যাওয়ার কথাও মাইকিংয়ে বলা হয়েছে।
গত ২৫ আগস্টের পর প্রায় সাত হাজারের মতো রোহিঙ্গা ঘুমধুম ইউনিয়নের কোনারপাড়া শূন্যরেখায় আশ্রয় নেয়। এসব রোহিঙ্গাদের রেডক্রিসেন্টসহ বিভিন্ন এনজিও ত্রাণ সামগ্রীর পাশাপাশি চিকিত্সা সেবা দিয়ে আসছিল।
কক্সবাজার বিজিবির সেক্টর কমান্ডার কর্নেল আবদুল খালেক জানান, জিরো লাইনে অবস্থানকারী রোহিঙ্গাদের অনুপ্রবেশে মিয়ানমার কর্তৃপক্ষের চাপ দেয়ার বিষয়টি আমরা জেনেছি। আমরা সার্বিক বিষয় পর্যবেক্ষণ করছি। এ ছাড়াও সীমান্তে বিজিবি সতর্ক অবস্থায় রয়েছে বলে জানান তিনি।
Posted ২:৪৫ পূর্বাহ্ণ | সোমবার, ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৮
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta