সূত্র জানায়, নিরাপত্তা পরিষদের প্রতিনিধি দল ২৭ ও ২৮ এপ্রিল বাংলাদেশ সফরে আগ্রহী। সফরের বিষয়ে জাতিসংঘ ছাড়াও ঢাকায় মার্কিন দূতাবাস বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে আলোচনা করছে। সরকারের পক্ষ থেকে নিরাপত্তা পরিষদের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানানো হয়েছে। তবে চলতি মাসের শেষে প্রধানমন্ত্রী অস্ট্রেলিয়া সফর করবেন বলে তাদের জানানো হয়েছে।
নিরাপত্তা পরিষদের প্রতিনিধি দলের ঢাকা সফরকালে রাখাইনের সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা মুসলিম জনগোষ্ঠীর ওপর নৃশংস হত্যাকাণ্ড ও তাদের জোরপূর্বক দেশ ত্যাগের বিষয়টি জানানো হবে। সফরে প্রতিনিধি দলটি কক্সবাজারে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পও পরিদর্শন করতে পারেন।
এদিকে নিরাপত্তা পরিষদের প্রতিনিধি দলের মিয়ানমার সফরের বিষয়েও সবুজ সংকেত দিয়েছে অং সান সু চির সরকার। তবে তাদের রাখাইনে যাওয়ার অনুমতি দেয়া হবে কিনা তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
গত ফেব্রুয়ারিতে নিরাপত্তা পরিষদের প্রতিনিধি দল মিয়ানমার সফরের প্রস্তাব করেছিল। তখন সু চি সরকারের পক্ষে বলা হয়েছিল, সফরের জন্য এটা উত্তম সময় নয়। তবে এবার নেপিদো নিরাপত্তা পরিষদকে মিয়ানমারে স্বাগত জানিয়েছে।
২৬ এপ্রিল থেকে ২ মে পর্যন্ত প্রতিনিধি দলের বাংলাদেশ, মিয়ানমার ও ইরাক সফরের কথা রয়েছে।
নিরাপত্তা পরিষদের প্রতিনিধিদের সফরের বিষয়টি নিশ্চিত করে ঢাকায় জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী মিয়া সেপ্পো এক ই-মেইলের উত্তরে বলেন, নিরাপত্তা পরিষদের প্রতিনিধি দলের বাংলাদেশ সফরের বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।
তবে সফরে কোন দেশের (নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য) প্রতিনিধিরা আসছেন, তা এখনো চূড়ান্ত করা হয়নি।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা বলেন, রোহিঙ্গা ইস্যুতে শুরু থেকেই সোচ্চার নিরাপত্তা পরিষদ। সংস্থার স্থায়ী সদস্যদের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্স এ সংকটে বাংলাদেশের পক্ষে থাকলেও বিপরীত অবস্থানে রয়েছে চীন ও রাশিয়া।
পশ্চিমা দেশগুলো মিয়ানমারের কাছে অস্ত্র বিক্রি বন্ধে মত দিলেও চীন ও রাশিয়া বলছে, রোহিঙ্গা সংকট দেশটির অভ্যন্তরীণ বিষয়।
মূলত শক্তিশালী রাষ্ট্রগুলোর এ টানাপড়েনের কারণে এক বছরেও রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে কোনো আশার আলো দেখাতে পারেনি নিরাপত্তা পরিষদ। তবে নিরাপত্তা পরিষদের প্রতিনিধি দলের সফর রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে জাতিসংঘের সদিচ্ছাই প্রমাণ করে।
উল্লেখ্য, নিরাপত্তা পরিষদের এ সফর আয়োজন করছে যুক্তরাজ্যে, কুয়েত ও পেরু। ২৫ আগস্ট রাখাইনে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে সহিংসতা শুরুর পর অন্তত সাত লাখ রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নিয়েছে।