বৃহস্পতিবার ২রা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৯শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম

বৃহস্পতিবার ২রা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

শিরোনাম

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন : মিয়ানমার ও বাংলাদেশের সমঝোতা চুক্তিতে কি আছে

রবিবার, ২৬ নভেম্বর ২০১৭
487 ভিউ
রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন : মিয়ানমার ও বাংলাদেশের সমঝোতা চুক্তিতে কি আছে

কক্সবাংলা ডটকম(২৬ নভেম্বর) :: রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে ঢাকা-নেপিদো স্বাক্ষরিত ১৯ দফার চুক্তি প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ। ২৩ নভেম্বর চুক্তিটি সই হয়। এতে স্বাক্ষর করেন বাংলাদেশের পক্ষে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী ও মিয়ানমারের পক্ষে দেশটির স্টেট কাউন্সেলরের দফতরের মন্ত্রী চ টিন্ট সোয়ে।

শনিবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সম্পূর্ণ চুক্তি প্রকাশ করা হয়। এতে বক্তব্য রাখেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। সংবাদ সম্মেলন চলাকালে চুক্তির কপি সাংবাদিকদের মধ্যে বিতরণ করার নির্দেশ দেন মন্ত্রী।

‘অ্যারেঞ্জমেন্ট অন রিটার্ন অব ডিসপ্লেসড পারসনস ফ্রম রাখাইন স্টেট’ নামের ছয় পৃষ্ঠার এ চুক্তিতে ১৯টি দফা রয়েছে। চুক্তির কোথাও রোহিঙ্গা শব্দ উল্লেখ করা হয়নি। তাদের বাস্তুচ্যুত বলে উল্লেখ করা হয়েছে।চুক্তির শুরুতেই স্বেচ্ছায়, নিরাপদে ও মর্যাদার সঙ্গে বাস্তুচ্যুতদের ফেরত পাঠানোর ক্ষেত্রে যাচাই সম্পাদন করার কথা বলা হয়।

১৯৯২ সালে যৌথ বিবৃতিতেও বাস্তুচ্যুতদের ফিরিয়ে নেয়ার গাইডলাইন চূড়ান্ত করা হয়েছিল বলে চুক্তিতে মনে করিয়ে দেয়া হয়। বর্তমান চুক্তির নীতি মেনে দ্রুত বাস্তুচ্যুতদের ফেরত পাঠানোর বিষয়ে উভয়পক্ষ সম্মত বলে উল্লেখ করা হয়।

চুক্তির প্রথম দফায় বলা হয়, রাখাইন থেকে বাস্তুচ্যুতদের দ্রুত ফেরত পাঠানো শুরু করতে হবে এবং দুই পক্ষের সম্মতিতে একটা সময়সীমা দিয়ে তার মধ্যে ফেরত পাঠানো সম্পাদন করতে হবে।

দ্বিতীয় দফায় বলা হয়, বাস্তুচ্যুতরা যাতে বাংলাদেশে আসা বন্ধ করে, সেজন্য পদক্ষেপ নিতে রাজি হয়েছে মিয়ানমার। এতে করে রাখাইনে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরবে এবং যারা পালিয়ে এসেছে, তারা স্বেচ্ছায় নিরাপদে তাদের মূল বাড়িঘরে কিংবা তাদের পছন্দমতো কাছাকাছি নিরাপদ স্থানে থাকতে উৎসাহিত হবে। ফিরে যাওয়ারা যাতে অস্থায়ী স্থানে দীর্ঘদিন না থাকে, সে লক্ষ্যে মিয়ানমার সব পদক্ষেপ নেবে।

বর্তমান আইনের সঙ্গে সংগতি রেখে ফিরে যাওয়াদের রাখাইনে স্বাধীনভাবে চলাচলের নিশ্চয়তা দেবে মিয়ানমার। তাদের মৌলিক চাহিদা ও জীবিকায়নে পুনরায় উন্নয়ন ঘটাতে হবে। বাস্তচ্যুতরা ফিরে যাওয়া মাত্রই মিয়ানমার তাদের একটি আইডি কার্ড প্রদান করবে।

চুক্তির তৃতীয় দফায় বলা হয়, রাখাইনে বর্তমানে বসবাসরতদের নাগরিকত্ব দেয়ার লক্ষ্যে পরিচালিত জাতীয় যাচাইয়ের চেয়ে পৃথকভাবে যাচাই সম্পন্ন করতে হবে। পালিয়ে আসা বাস্তুচ্যুতরা অতীতে সেখানে ছিলেন কিনা, তার প্রমাণই হবে যাচাইয়ের ভিত্তি।

চতুর্থ দফায় বলা হয়, দুই সরকারই প্রয়োজনমতো ইউএনএইচসিআরের সহায়তা নেবে। বাংলাদেশ সরকার তাৎক্ষণিকভাবে ইউএনএইচসিআরের সহায়তা নেবে। মিয়ানমার যখন প্রয়োজন হবে, তখন উপযুক্ত সময়ে সহায়তা নেবে।

পঞ্চম দফায় বলা হয়, সন্ত্রাসী কিংবা অপরাধে জড়িত থাকার সুনির্দিষ্ট অভিযোগ না থাকলে মিয়ানমার ফিরে যাওয়াদের অবৈধভাবে দেশ ছেড়ে যাওয়ার জন্য তাদের বিচার করবে না কিংবা শাস্তি দেবে না।

ষষ্ঠ দফায় বলা হয়েছে, বাংলাদেশ ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট এবং ২০১৬ সালের ৯ অক্টোবরের পর মিয়ানমার থেকে আসা ব্যক্তিদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্য-উপাত্ত দেবে। উভয়পক্ষ দ্রুততার সঙ্গে বাংলাদেশে পালিয়ে আসার আগে মিয়ানমারে কোথায় তাদের বসতি ছিল, তা খুঁজে বের করবে।

এক্ষেত্রে যেসব যোগ্যতা তাদের থাকতে হবে সেগুলো হলো-

১. ফিরে যেতে ইচ্ছুকরা অবশ্যই মিয়ানমারের বসবাসকারী হতে হবে,

২. তাদের অবশ্যই স্বেচ্ছায় মিয়ানমারে ফিরে যাওয়ায় ইচ্ছুক হতে হবে,

৩. বিভক্ত পরিবারের ফেলে আসা সদস্য এবং এতিমদের ব্যাপারে বাংলাদেশের কোনো আদালতের সনদ থাকতে হবে,

৪. পিতামাতা মিয়ানমারের হলে সীমান্তের এপারে জন্ম হলেও তারা মিয়ানমারের নাগরিক হিসেবে গণ্য হবে,

৫. অনাকাক্সিক্ষত ঘটনায় কোনো শিশুর জন্ম হলে তার ব্যাপারে বাংলাদেশের কোনো আদালতের সনদ নিতে হবে। এছাড়াও যাচাইয়ের সুবিধার জন্য মিয়ানমার ফিরে যেতে ইচ্ছুকদের নিজেদের পূরণ করার একটি ফরম সরবরাহ করবে।

চুক্তির তৃতীয় দফায় বলা হয়, বাংলাদেশ সরকারের দেয়া তালিকা যাচাইয়ের পর মিয়ানমার তাদের বিভিন্ন ব্যাচে গ্রহণ করবে। তবে এক পরিবারের সদস্যদের একই ব্যাচে রাখা হবে। তবে ফিরে যেতে ইচ্ছুকদের চিহ্নিত করার জন্য তারা যে মিয়ানমারের অধিবাসী ছিলেন, তার কিছু প্রমাণ থাকতে হবে।

এসব প্রমাণ হতে পারে নাগরিকত্বের পুরনো মেয়াদোত্তীর্ণ আইডি কার্ড, কিংবা জাতীয় নিবন্ধন কার্ড কিংবা অস্থায়ী নিবন্ধন কার্ড (সাদা কার্ড) কিংবা মিয়ানমারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের ইস্যু করা যে কোনো ডকুমেন্ট। এছাড়াও তারা মিয়ানমারের কোন এলাকার বাসিন্দা ছিলেন, তার প্রমাণ লাগবে। যেমন- ঠিকানা, বাড়িঘর কিংবা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মালিকানার ডকুমেন্ট, স্কুলের হাজিরা খাতার উপস্থিতি কিংবা অন্য কোনো ডকুমেন্ট কিংবা তথ্য।

ইউএনএইচসিআরের দেয়া শরণার্থী সনদও একই যাচাইয়ের মধ্য দিয়ে যেতে হবে। মিয়ানমারের অধিবাসী ছিলেন এমন প্রমাণ দেখাতে পারলে সবাইকে ফিরিয়ে নেয়া হবে। তাদের সংখ্যা কোনো সীমিত নয়। কোনো বিষয়ে বিরোধ দেখা দিলে দুই পক্ষ বসে তা নিষ্পত্তি করবে। তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেবে মিয়ানমার সরকার। বিরোধপূর্ণ সমস্যাগুলো মিয়ানমার দ্রুত সমাধান করবে। ছয় মাসের মধ্যেই তা করতে হবে।

চুক্তির ১১, ১২ ও ১৩ দফায় বলা হয়, চুক্তি সইয়ের তিন সপ্তাহের মধ্যে যাচাই সম্পাদনে যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠন করতে হবে। যাচাইয়ের সময়সীমা, পরিবহন, গ্রহণের প্রক্রিয়া, পারস্পরিক যোগাযোগ প্রক্রিয়া দ্রুত সম্পাদন করতে হবে। চুক্তি সইয়ের দুই মাসের মধ্যে প্রথম ব্যাচের প্রত্যাবাসন সম্পাদনের মাধ্যম কাজটি শুরু করতে হবে।

চুক্তির ১৪ দফায় বলা হয়েছে, মিয়ানমারে ফিরে যাওয়াদের বসতি, জীবন ও জীবিকায়নে সহায়তার জন্য ইউএনএইচসিআর ও জাতিসংঘের অপরাপর সংস্থা ও আন্তর্জাতিক অংশীদারদের ফিরে যাওয়াদের সহায়তার জন্য বিভিন্ন পর্যায়ে আমন্ত্রণ জানানো হবে।

চুক্তির ১৫তম দফায় বলা হয়েছে, দুই সরকার সীমান্তে নিরাপত্তা জোরদারে সহায়তা করবে।

১৬ দফায় বলা হয়েছে, উভয় সরকার সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, চোরাচালান, মাদক পাচার, মানব পাচার প্রভৃতির বিরুদ্ধে কাজ করবে। সন্ত্রাসীদের একে অন্যের ভূমি ব্যবহার করতে দেয়া হবে না।

১৭ দফায় বলা হয়েছে, প্রত্যাবাসন সম্পন্ন হওয়ার পর কেউ যাতে অবৈধভাবে সীমান্ত অতিক্রম করতে না পারে, সে ব্যাপারে উভয় সরকার সহযোগিতা করবে।

১৮তম দফায় বলা হয়েছে, একই ধরনের সমস্যার যাতে পুনরাবৃত্তি না ঘটে, সে ব্যাপারে একটি বিস্তৃত সমাধানের লক্ষ্যে উভয় সরকারই কাজ করবে। মিয়ানমার সরকার কফি আনান কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়ন করবে।

১৯ দফায় বলা হয়েছে, উভয়পক্ষ বিদ্যমান বন্ধুত্বপূর্ণ ও সুপ্রতিবেশীসুলভ সম্পর্কের উন্নয়নে কাজ করবে।

২০১৬ সাল থেকে আসা রোহিঙ্গারা ফেরত যাবে

 প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ার এ ধাপে কেবল ২০১৬ সাল থেকে আসা রোহিঙ্গাদের ফেরত নিতে রাজি হয়েছে মিয়ানমার। মিয়ানমারের সঙ্গে স্বাক্ষরিত সমঝোতা চুক্তি সম্পর্কে জানাতে আয়োজিত ২৫ নভেম্বর এক সংবাদ সম্মেলনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী এ কথা বলেন।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, স্বাক্ষরিত চুক্তি অনুযায়ী মিয়ানমার ২০১৬ সালের ৯ অক্টোবর এবং চলতি বছরের ২৫ আগস্টের পর বাংলাদেশে আশ্রয়গ্রহণকারী বাস্তুচ্যুত রাখাইন রাজ্যের অধিবাসীদের ফেরত নেবে। ২০১৬ সালের আগে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া বাস্তুচ্যুত রাখাইন রাজ্যের অধিবাসীদের প্রত্যাবাসনের বিষয়টি নিয়ে পরে আলোচনা হবে।

রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠাতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে যুক্ত করে নতুন চুক্তির কথা এতদিন বলে এলেও শেষ পর্যন্ত ১৯৯২ সালের চুক্তির অনুসরণেই নতুন চুক্তি সই করেছে বাংলাদেশ।

১৯৯২ সালের চুক্তির অনুসরণে কেন চুক্তি হলো— সাংবাদিকদের এ প্রশ্নের উত্তরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘মিয়ানমার ওই চুক্তি অনুসরণ করতে চায় বলে সেভাবেই করা হয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানো। এর খুঁটিনাটি, ত্রুটি-বিচ্যুতি, এটা-ওটা নেই, কেন নেই, কী হবে— এসব কথা বলে তো কোনো লাভ নেই। গুরুত্বপূর্ণ জিনিস হলো, রোহিঙ্গাদের তারা ফেরত নিতে চেয়েছে। লোকগুলোকে সেখানে থাকার ব্যবস্থা করতে হবে, সেটারও কাজ শুরু হয়েছে।’

মন্ত্রী জানান, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের জন্য আগামী তিন সপ্তাহের মধ্যে যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠন এবং ‘টার্মস অব রেফারেন্স’ চূড়ান্ত করা হবে। যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপ এ চুক্তি বাস্তবায়নে কাজ করবে। রোহিঙ্গারা ফেরত যাওয়ার পর তাদের আগের আবাসস্থল বা তাদের পছন্দ অনুযায়ী কাছাকাছি কোনো স্থানে পুনর্বাসিত করা হবে। প্রাথমিকভাবে তাদের অস্থায়ী আশ্রয়স্থল/ব্যবস্থায় সীমিত সময়ের জন্য রাখা হবে। এ প্রক্রিয়ায় চীন ও ভারতের সহযোগিতা নেয়ার বিষয়েও আলোচনা হয়েছে। মিয়ানমার প্রতিবেশী দেশ দুটির সঙ্গে আলোচনা করতে রাজি হয়েছে বলেও জানান আবুল হাসান মাহমুদ আলী।

দুই মাসের মধ্যে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরুর কথা থাকলেও কবে নাগাদ এ প্রক্রিয়া শেষ হবে, তার কোনো সুনির্দিষ্ট সময় চুক্তিতে নির্ধারণ করা হয়নি বলে জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তার ভাষ্য, যৌক্তিক সময়ের মধ্যে প্রত্যাবাসন সম্পন্ন করতে দুই পক্ষ সম্মত হয়েছে। যৌক্তিক সময়ের ব্যাখ্যা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটার শেষ তো দেয়া যায় না। শোনেন, প্র্যাকটিক্যাল ব্যাপারটা হলো যে, এই রকম কোনো টাইম ফ্রেম দিয়ে লাভও নাই।’

স্বাক্ষরিত প্রত্যাবাসন চুক্তির কোনো আইনি বাধ্যবাধকতা আছে কিনা জানতে চাইলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘বাধ্যবাধকতা আছে। কিন্তু আইন থাকলেও লঙ্ঘন হয়। আইন দিয়ে কিছু হয় না। মূল কথা হলো, কোনো দেশ এটি মানছে কিনা।’

চুক্তিতে বাংলাদেশের স্বার্থ রক্ষা হয়েছে কিনা ও এতে বাংলাদেশ সন্তুষ্ট কিনা, এমন প্রশ্নের উত্তরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমি সন্তুষ্ট। তবে বাংলাদেশের স্বার্থ রক্ষা হয়নি আপনার এমন মন্তব্য অত্যন্ত হাস্যকর। গোটা পৃথিবী একদিকে বলছে, আপনি বলছেন এটি কোনো চুক্তি হয়নি। স্বার্থ কে ঠিক করে? যে সরকার ক্ষমতায় আছে সেই ঠিক করে। আমরা স্বার্থ ঠিক করেছি।’

জানা গেছে, কেবল স্বেচ্ছায় ফিরে যেতে আগ্রহী রোহিঙ্গাদেরই মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো হবে। সেখানে যেতে আগ্রহী রোহিঙ্গাদের অবশ্যই মিয়ানমারের নাগরিক হতে হবে। এক্ষেত্রে তাদের প্রমাণপত্র দেখাতে হবে।

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে ২৩ নভেম্বর নেপিদোয় বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে যে চুক্তি সই হয়েছে, তার ৬ নম্বর ধারায় বলা হয়েছে, স্বেচ্ছায় ফিরে যেতে আগ্রহীদেরই মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো হবে। এতে আরো বলা হয়, মিয়ানমারের বাইরে যেসব রোহিঙ্গা শিশুর জন্ম হয়েছে, তাদেরকে বাংলাদেশ আদালতের মাধ্যমে চিহ্নিত করবে। এছাড়া ১৯৯২ সালের প্রত্যাবাসন চুক্তি অনুযায়ী রোহিঙ্গাদের ফেরাতে যে ফরম ব্যবহার করা হয়েছিল, সেই ফরমই এবারো ব্যবহার করা হবে।

চুক্তির ৭ নম্বর ধারায় উল্লেখ করা হয়েছে, মিয়ানমারের নাগরিকত্ব যাচাই-বাছাই করার লক্ষ্যে রোহিঙ্গাদের প্রমাণপত্র দেখাতে হবে। তাদেরকে মিয়ানমারের পুরনো বা মেয়াদোত্তীর্ণ নাগরিকত্ব পরিচয়পত্র অথবা জাতীয় নিবন্ধনপত্র অথবা অস্থায়ী নিবন্ধনপত্র (সাদা কার্ড) অথবা মিয়ানমার কর্তৃপক্ষের অন্য কোনো কার্ড দেখাতে হবে। এছাড়া তাদের আবাসস্থলের ঠিকানা, ব্যবসায়িক ঠিকানা বা অন্য কোনো যথাযথ তথ্য উপস্থাপন করতে পারলে তাদেরকেও মিয়ানমার ফেরত নেবে। তবে মোট কতজন রোহিঙ্গা ফেরত নেয়া হবে, সে বিষয়ে চুক্তিতে কিছু বলা হয়নি।

চুক্তির ১৪ নম্বর ধারায় রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন ও পুনর্বাসন প্রক্রিয়ায় বিভিন্ন ধাপে জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক সংস্থা (ইউএনএইচসিআর) ও জাতিসংঘের আওতায় অন্যান্য সংস্থার সহযোগিতা নেয়া হবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

জাতিসংঘসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, ২০১৬ সালের ৯ অক্টোবর সেনা অভিযানের মুখে ৮৫ হাজারের বেশি রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। আর ২৫ আগস্টের পর নতুন করে বাংলাদেশে আসে সোয়া ছয় লাখের বেশি রোহিঙ্গা। এর আগে বিভিন্ন সময় জাতিগত দমন-পীড়নের শিকার হয়ে পালিয়ে বাংলাদেশে শরণার্থী জীবন কাটাচ্ছে চার লাখের বেশি রোহিঙ্গা। বাংলাদেশের আহ্বানে ১৯৯২ সালে দ্বিপক্ষীয় একটি চুক্তির আওতায় মিয়ানমার কিছু রোহিঙ্গাকে ফেরত নিলেও পরে আর সে প্রক্রিয়া এগোয়নি।

487 ভিউ

Posted ৪:০২ পূর্বাহ্ণ | রবিবার, ২৬ নভেম্বর ২০১৭

coxbangla.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

এ বিভাগের আরও খবর

Editor & Publisher

Chanchal Dash Gupta

Member : coxsbazar press club & coxsbazar journalist union (cbuj)
cell: 01558-310550 or 01736-202922
mail: chanchalcox@gmail.com
Office : coxsbazar press club building(1st floor),shaheed sharanee road,cox’sbazar municipalty
coxsbazar-4700
Bangladesh
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
বাংলাদেশের সকল পত্রিকা সাইট
Bangla Newspaper

ABOUT US :

coxbangla.com is a dedicated 24x7 news website which is published 2010 in coxbazar city. coxbangla is the news plus right and true information. Be informed be truthful are the only right way. Because you have the right. So coxbangla always offiers the latest news coxbazar, national and international news on current offers, politics, economic, entertainment, sports, health, science, defence & technology, space, history, lifestyle, tourism, food etc in Bengali.

design and development by : webnewsdesign.com