বুধবার ৮ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২৫শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম

বুধবার ৮ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

শিরোনাম

রোহিঙ্গা শরণার্থীরা রাখাইনে ফিরলে গ্রাম ছাড়বে ম্রো জনগোষ্ঠী

বৃহস্পতিবার, ২৩ আগস্ট ২০১৮
478 ভিউ
রোহিঙ্গা শরণার্থীরা রাখাইনে ফিরলে গ্রাম ছাড়বে ম্রো জনগোষ্ঠী

কক্সবাংলা ডটকম(২৩ আগস্ট) :: মিয়ানমারের রাখাইনে বসবাসীকারীরা যুক্তরাজ্যের সংবাদমাধ্যম স্কাই নিউজকে বলেছেন, রোহিঙ্গা শরণার্থীরা তাদের পুরনো ভূমিতে ফিরলে তারা গ্রাম ছেড়ে চলে যাবে। রোহিঙ্গাদের সঙ্গে পাশাপাশি বসবাস সম্ভব নয় বলে জানিয়েছে তারা। মিয়ানমার সরকার নিয়ন্ত্রিত সফরে সম্প্রতি রাখাইনের ম্রো জনগোষ্ঠী অধ্যুষিত এক গ্রাম পরিদর্শন করে স্কাই নিউজ।

সেখানে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের জন্য নির্মিত দুটি কেন্দ্র পরিদর্শনও করে তারা। মিয়ানমারের নেত্রী অং সান সু চি রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন প্রশ্নে বাংলাদেশের ওপর দায় চাপাতে থাকলেও সেখানকার পরিবেশ অস্থিতিশীল থাকার নজির উঠে এসেছে স্কাই নিউজের প্রতিবেদনে।

গত বছর রাখাইনে রোহিঙ্গাবিরোধী সেনা অভিযানের জন্য ২৫ আগস্টে নিরাপত্তা চৌকিতে আরসার (রোহিঙ্গাদের সশস্ত্র সংগঠন)হামলাকে দায়ী করে থাকে মিয়ানমার। কিন্তু ওই বছরের অক্টোবরে জাতিসংঘের এক প্রতিবেদনে উঠে আসে আগে থেকেই সেখানে জাতিগত নিধনের পরিকল্পনা নেওয়া হয়।

ওই প্রতিবেদন অনুযায়ী, রাখাইন থেকে সব রোহিঙ্গাকে তাড়িয়ে দিয়ে তাদের আর ফিরে না আসা নিশ্চিত করতে পরিকল্পিতভাবে সংগঠিত ও কাঠামোবদ্ধ কায়দায় সেনা-প্রচারণা ও অভিযান চালিয়েছে মিয়ানমার।

১৯৮০’র দশকে নাগরিকত্ব আইনে রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব প্রত্যাখানের পর থেকেই দীঘর্ সময় ধরে সামরিক প্রচারণা চালিয়ে স্থানীয়দের রোহিঙ্গাবিদ্বেষী করে তোলার প্রমাণ পাওয়া যায় ওই প্রতিবেদনে। স্কাই নিউজের প্রতিবেদনেও সেই বিদ্বেষ এখনও থাকার নজির রয়েছে।

স্কাই নিউজের খবরে বলা হয়েছে সরকার নিয়ন্ত্রিত সফরে তাদের পরিদর্শন করা ম্রো জরগোষ্ঠী অধ্যুষিত গ্রামটির নেতৃস্থানীয়দের দাবি গত বছরের আগস্টে তাদের গ্রামের একটি স্কুলে মুসলিম ধর্মাবলম্বীদের হামলায় আটজন নিহত হয়। ওই স্কুল ভবনটি পুননির্মাণ করা হয়েছে। হামলাকারীরা কেউ রোহিঙ্গা ছিল কি না তা নিশ্চিত করতে না পারলেও ওই নেতারা বলছেন, তারা আর পরস্পরের কাছাকাচছি বাস করতে চায় না।

সান তুন নামে গ্রামটির এক নেতা বলেন, ‘তারা ফিরে আসলে আমরা আমাদের গ্রাম ছেড়ে যাবো। আমরা একটি বৈঠক ডেকে তাদের ফিরে আসার বিষয়ে আলোচনা করেছি। সেখানে বয়স্ক ব্যক্তিরাও বলেছেন তারা তাদের (রোহিঙ্গা) সঙ্গে থাকতে চায় না।’ম্রো জনগোষ্ঠী অধ্যুষিত গ্রামের স্কুলে শিশুরা

গত বছরের আগস্টে সেনা অভিযানে নির্যাতনের মুখে বাংলাদেশে পালিয়ে যায় সাড়ে সাত লাখ রোহিঙ্গা। ওই বছরে নভেম্বরে মিয়ানমারের সঙ্গে প্রত্যাবাসন চুক্তি স্বাক্ষরের পর এই প্রক্রিয়ায় জাতিসংঘের সম্পৃক্ততার দাবি করতে থাকে বাংলাদেশ। রাখাইনের পরিবেশ রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন প্রশ্নে নিরাপদ বলে জাতিসংঘ সতর্ক করলেও এই বছরের জানুয়ারি থেকে মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ বলে আসছে বাংলাদেশ থেকে ফেরত আসা রোহিঙ্গাদের গ্রহণে প্রস্তুত রয়েছে তারা।

স্কাই নিউজের প্রতিনিধি সাম্প্রতিক ওই সফরে দুটি রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন কেন্দ্র পরিদর্শন করেন। বাংলাদেশ থেকে আসা শরণার্থীদের এধরনের কেন্দ্রে রেখে প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে চায় বাংলাদেশ। নাগাখুয়া প্রত্যাবাসন কেন্দ্রে থাকা কিছু মানুষ দেখিয়ে কর্তৃপক্ষ তাদের বাংলাদেশ থেকে ফিরে আসা শরণার্থী বলে জানায়।মিয়ানমারের অভিবাসন পরিচালক

তবে ওই বাসিন্দারা স্কাই নিউজকে বলেছেন তারা কখনও বাংলাদেশে আসেইনি। বরং অবৈধ অনুপ্রবেশের দায়ে আটকের পর মিয়ানমারের কারাগার থেকে তাদের এখানে এনে রাখা হয়েছে। ওই লোকগুলোর দাবি উত্তরাঞ্চলীয় রাখাইন থেকে সেনা সদস্যরা তাদের আটক করে আর বাংলাদেশ থেকে আসা বলে অভিযুক্ত করে।

তবে সেই অভিযোগ মিথ্যা বলে দাবি তাদের। দেশটির অভিবাসন পরিচালক উ খিন খাইনও নিশ্চিত করেন, জানুয়ারিতে খুলে দেওয়ার পর এই কেন্দ্রে কোনও প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়নি। তার দাবি, ‘তারা এখনও ফিরছে না কারণ বাংলাদেশে পাওয়া সাহায্য উপভোগ করছে।আমরা এখানে অপেক্ষা করছি, তারা ফিরছে না-এই হলো ঘটনা।’

গত এপ্রিলে প্রথমবারের মতো এক রোহিঙ্গা পরিবারকে বাংলাদেশ থেকে ফিরিয়ে নেওয়ার দাবি করে বাংলাদেশ। বিতর্কিত ওই পরিবারটিকে গুপ্তচর আখ্যা দিয়ে বাংলাদেশের শিবিরে থাকা শরণার্থীরা নাগরিক অধিকার ও স্বাধীনতা নিশ্চিত হওয়ার আগ পর্যন্ত সেখানে ফেরা প্রত্যাখান করে আসছে।

গত বছর বাংলাদেশে পালিয়ে যাওয়া সাড়ে সাত লাখ রোহিঙ্গা মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনীর বিরুদ্ধে খুন, ধর্ষণ ও অগ্নিসংযোগের অভিযোগ করে। স্কাই নিউজের সফরের সময়েও উত্তর রাখাইনে রোহিঙ্গাদের পুড়িয়ে দেওয়া ও পরিত্যক্ত বাড়ির চিহ্ন দেখতে পেয়েছে তারা। তবে স্থানীয় সরকারি কর্মকর্তাদের দাবি সেনা নির্যাতনের কারণে রোহিঙ্গারা পালায়নি।

মংডুর বেসামরিক প্রশাসনের কর্মকর্তা উইন নান সান বলেন, ‘তারা নিজেরাই নিজেদের বাড়িঘর ও খামার পুড়িয়ে দিয়েছে।’ কেন তারা নিজেদের ঘরবাড়ি পুড়িয়েছে এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, তা রোহিঙ্গারা বলতে পারবে।

এই দাবি আন্তর্জাতিক বরাবর অস্বীকার করে আসলেও রাখাইন কর্তৃপক্ষ এখনও তাই বলে চলেছে। রাখাইনে জাতিগত নিধনযজ্ঞ চালানোর দায়ে মিয়ানমার সেনা ও পুলিশ বাহিনীর দুই কমান্ডার ও দুটি সেনা ইউনিটের ওপর নিষধাজ্ঞা জারি করেছে যুক্তরাষ্ট্র। রাখাইনে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে চালানো সহিংসতার বিষয়ে একটি বিস্তারিত তদন্ত রিপোর্ট প্রকাশের চেষ্টা চালাচ্ছে বলেও খবর পাওয়া গেছে।

বাংলাদেশের শিবিরে বসবাসরত শরণার্থীদের সাক্ষাৎকারের ভিত্তিতে তৈরি ওই রিপোর্ট আগামী ২৫ আগস্ট রাখাইনে সেনা অভিযানের বর্ষপূর্তির দিনে প্রকাশ হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

478 ভিউ

Posted ১১:৩১ অপরাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ২৩ আগস্ট ২০১৮

coxbangla.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

Editor & Publisher

Chanchal Dash Gupta

Member : coxsbazar press club & coxsbazar journalist union (cbuj)
cell: 01558-310550 or 01736-202922
mail: chanchalcox@gmail.com
Office : coxsbazar press club building(1st floor),shaheed sharanee road,cox’sbazar municipalty
coxsbazar-4700
Bangladesh
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
বাংলাদেশের সকল পত্রিকা সাইট
Bangla Newspaper

ABOUT US :

coxbangla.com is a dedicated 24x7 news website which is published 2010 in coxbazar city. coxbangla is the news plus right and true information. Be informed be truthful are the only right way. Because you have the right. So coxbangla always offiers the latest news coxbazar, national and international news on current offers, politics, economic, entertainment, sports, health, science, defence & technology, space, history, lifestyle, tourism, food etc in Bengali.

design and development by : webnewsdesign.com