কক্সবাংলা ডটকম(২২ সেপ্টেম্বর) :: এতদিন পর্যন্ত শুনে এসেছিলাম বিয়ে হোক কি চাকরি, লম্বা ছেলেদের কদর বেশি। কিন্তু গবেষণা বলছে, যে যত লম্বা, তার তত বেশি ব্লাড ক্লট হওয়ার আশঙ্কা বেশি। আর একবার যদি শরীরের অন্দরে এমনটা ঘটে যায়, তাহলে লাং এবং হার্টের পাশাপাশি দেহের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গগুলি সব কাজ করা বন্ধ করে দিতে পারে। তাই এই নতুন তথ্যটি যে বেজায় ভয়ঙ্কর, তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
বিশেষজ্ঞদের মতে লম্বা মানুষদের পায়ের দৈর্ঘ্য বেশি হওয়ার কারণে এদের শিরার দৈর্ঘ্যও বেশি হয়, যে কারণে হয়তো এমনটা হয়ে থাকতে পারে।
সম্প্রতি কার্ডিওভাসকুলার জেনেটিকস নামক একটি জার্নালে এই বিষয়টির উপরে আলোকপাত করার চেষ্টা করেছিলেন এক দল চিকিৎসক। তারা উচ্চতার সঙ্গে ব্লাড ক্লট হওয়ার সম্পর্ক আদৌ আছে কিনা সে বিষয়ে গবেষণা চালাতে গিয়ে প্রায় ১৬ লাখ কেস স্টাডি করেছিলেন।
তাতে দেখা গেছে ৫ ফুট ৩ ইঞ্চির নিচে যাদের উচ্চতা তাদের ব্লাড ক্লট হওয়ার আশঙ্কা প্রায় ৬৫ শতাংশ কম থাকে, যেখানে ৬ ফুট বা তার বেশি লম্বা মানুষদের এমন রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে সব থেকে বেশি।
লক্ষ করে দেখা গেছে এমন রোগে আক্রান্ত হলে সাধারণত হাত-পা ফুলে যাওয়া, যন্ত্রণা, হঠাৎ দৃষ্টিশক্তি কমে যাওয়া, দুর্বলতা, হাত-পায়ের কর্মক্ষমতা কমে যাওয়া, শ্বাস কষ্ট, ঘাম, বুকে ব্যথা, মাথা ঘোরা, তলপেটে যন্ত্রণা, ডায়ারিয়া, বমি হওয়া, জ্বর এবং বারে বারে অজ্ঞান হয়ে যাওয়ার মতো লক্ষণ দেখা যেতে পারে। প্রসঙ্গত, এমন ধরনের কোনও লক্ষণ দেখা গেলে সময় নষ্ট না করে যত শীঘ্র সম্ভব চিকিৎসকের পরামর্শ নেবেন। সময় নষ্ট করলে কিন্তু ফুসফুস, হার্ট, কিডনি সহ শরীরের একাধিক অঙ্গ কাজ করা বন্ধ করে দিতে পারে। আর এমনটা হলে জীবনের আলো যে অনেকটাই কমে আসে, তা নিশ্চয় আর বলে দিতে হবে না।
এবার জেনে নেওয়া যাক লম্বা মানুষেরা ব্লাড ক্লটের হাত থেকে বাঁচবেন কিভাবে, এক্ষেত্রে কতগুলি নিয়ম মনে চলতে হবে ।
১. বেশিক্ষণ বসে থাকবেন না
অনেক সময় ধরে বসে থাকলে শরীরের নিচের অংশে, বিশেষত পায়ে রক্ত প্রবাহ ঠিক মতো হতে পারে না। ফলে ব্লাড ক্লট বাঁধার আশঙ্কা বৃদ্ধি পায়। তাই যারা ডেস্কে বসে কাজ করেন, তারা প্রতি ১-২ ঘন্টা অন্তর কয়েক মিনিট জন্য হলেও হেঁটে নিতে ভুলবেন না। এমনটা করলে ক্ষতির আশঙ্কা কমবে।
২. ধূমপান ছাড়তে হবে
গবেষণায় একথা প্রামাণিত হয়ে গেছে যে ব্লাড ক্লটের সঙ্গে ধূমপানের সরাসরি যোগ রয়েছে। তাই যদি হঠাৎ করে মরে যেতে না চান, তাহলে এই কু-অভ্যাস ত্যাগ করতে হবে। সেই সঙ্গে পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান জরুরি। কারণ শরীরের ভেতরে পানির অভাব যত কম হবে, এমন ধরনের রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা তত বাড়বে।
৩. ওষুধ খেতে হবে বুঝে-শুনে
বেশ কিছু ওষধের সঙ্গে এমন ধরনের সমস্যার সরাসরি যোগ রয়েছে। তাই চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ না করে ভুলেও কোনও ওষুধ খাবেন না। কে জানে কোন ওষুধ থেকে কী হয়ে যায়।
৪. শরীরচর্চা করতেই হবে
শরীরের প্রতিটি কোণায় যাতে রক্ত সরবরাহ ঠিক মতো হয় সেদিকে খেয়াল রাখা একান্ত প্রয়োজন। আর এই কাজে সাহায্য করতে পারে শরীরচর্চা। শুধু তাই নয়, নিয়মিত ব্যায়াম করলে শিরার কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। ফলে ব্লাড ক্লট হওয়ার সম্ভাবনা কমে।
Posted ১১:৫৪ পূর্বাহ্ণ | শুক্রবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৭
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta