মোসলেহ উদ্দিন,উখিয়া(১৮ ফেব্রুয়ারি) :: বাংলাদেশ-মিয়ানমরের মধ্যে গত শুক্রবার অনুষ্ঠিত বৈঠকে ৬৭৩ পরিবারের ৮,০৩২ রোহিঙ্গার তালিকা মিয়ানমারের কাছে হস্তান্তরের পরও সীমান্তের বিভিন্ন পয়েন্ট দিয়ে রোহিঙ্গারা আসছে।
শনি ও রোববার দু’দিনে মিয়ানমারের বুচিডং থেকে ৮৪ পরিবারে ৩৮৩ জন রোহিঙ্গা উখিয়ার কুতুপালং ট্রানজিট ক্যাম্পে আশ্রয় নিয়েছে।
বাংলাদেশ রেডক্রিসেন্ট সোসাইটির কর্মকর্তারা বলছেন, এসব রোহিঙ্গার বায়োমেট্টিক পদ্ধতিতে নিবন্ধনসহ পারিবারিক তালিকা প্রণয়ন করে ক্যাম্পে অস্থায়ী আশ্রয়ের ব্যবস্থা করা হবে।
এদিকে সীমান্তের তুমব্রু কোনারপাড়া শূন্যরেখায় ৫ মাস ধরে অবস্থান করা রোহিঙ্গারা মিয়ানমারে ফিরতে না চাওয়ার ঘটনায় প্রশাসন বিব্রতকর অবস্থায় পড়েছে।
তবে ৩৪ বিজিবি’র অধিনায়ক লে. কর্নেল মনজুরুল হাসান খান শনিবার বিকেল ৩টার দিকে নো ম্যানস ল্যান্ডে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফিরে যেতে মানসিকভাবে প্রস্থতি নেওয়ার কথা বলেছেন।
কক্সবাজার ৩৪ বিজিবি’র উপঅধিনায়ক মেজর ইকবাল আহমেদ মুঠোফোনে জানান, প্রত্যাবাসনের শুরুতেই সীমান্তের শূন্যরেখায় অবস্তিত প্রায় ৮০৩২ রোহিঙ্গাকে মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো জন্য প্রত্যাবাসন কমিটি প্রস্ততি নিচ্ছে। যে কারণে শূন্যরেখায় আশ্রিত রোহিঙ্গারা
ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে উঠছে। তারা চেষ্টা করছে কুতুপালং ক্যাম্পে আশ্রয় নেওয়ার জন্য। এ ঘটনা নিয়ে ওইসব রোহিঙ্গা বিচ্ছিন্নভাবে বেশ কিছু দাবি দাওয়া দিয়েছে বলে রোহিঙ্গা নেতা দিল মোহাম্মদ জানিয়েছেন।
তিনি আরো জানান, প্রতি রাতেই মিয়ানমার সেনাবাহিনী শূন্যরেখায় তাদের বস্তির পাশে এসে ফাঁকা গুলিবর্ষণ করছে। এমনকি রোহিঙ্গাদের লক্ষ্য করে ইট, পাথর, ঢিল ও খালি মদের বোতল নিক্ষেপ করছে। যে কারণে রোহিঙ্গারা মিয়ানমারে না ফিরে কুতুপালং ক্যাম্পে ফিরতে আগ্রহ প্রকাশ করছে।
কক্সবাজার শরনার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (যুগ্ন সচিব) আবুল কালাম জানান, মঙ্গলবার ঘুমধুম সীমান্ত এলাকায় বান্দরবান জেলা প্রশাসক দিলীপ কুমার বনিকের নেতৃত্বে দু’দেশের মধ্যে একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। ওই বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে শূন্যরেখায় অবস্থিত রোহিঙ্গাদের কখন, কোথায়, কিভাবে স্থনান্তর করা হবে।
বান্দরবান জেলা প্রশাসক দিলীপ কুমার বনিক জানান, সীমান্ত এলাকায় ভীতিকর পরিস্থিতি ও পরিবেশ নিয়ন্ত্রণের জন্য শূন্যরেখায় আশ্রিত রোহিঙ্গাদের প্রথম দফায় প্রত্যাবাসনের আওতায় আনা সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে।
প্রত্যাবাসনের তালিকা আনুষ্ঠানিকভাবে মিয়ানমারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী লে. জেনারেল কিয়াও সোয়ের কাছে হস্তান্তর করেন বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।
এরপরেও সীমান্তের বিভিন্ন পয়েন্ট দিয়ে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের কারণ সম্পর্কে জানতে চাওয়া হলে বেশ কয়েকজন রোহিঙ্গা নেতা জানান, প্রত্যাবাসন বিলম্বিত হওয়ায় ও মিয়ানমারে অবস্থিত অবশিষ্ট রোহিঙ্গারা খাদ্য সংকটে পড়ে এদেশে চলে আসছে। প্রত্যাবাসন শুরু হলে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ বন্ধ হয়ে যাবে বলেও তারা আশাবাদী।
Posted ৩:২৭ পূর্বাহ্ণ | সোমবার, ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৮
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta