কক্সবাংলা ডটকম(২৫ জুলাই) :: বিশ্বকাপের পর নিজেদের গুছিয়ে নেয়ার আগেই শ্রীলংকা সফর। বলা যায়, একরকম এলোমেলো অবস্থায় লংকা সফর করতে হচ্ছে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলকে। এ সফরে দলের নিয়মিত তারকাদের অনেককেই পাচ্ছে না বাংলাদেশ। তার পরও আত্মবিশ্বাস নিয়েই শুক্রবার কলম্বোয় শ্রীলংকার বিপক্ষে প্রথম ওয়ানডে খেলতে নামছে টাইগাররা। বিশেষ করে প্রস্তুতি ম্যাচের দাপুটে জয়ই বাড়তি আত্মবিশ্বাস দিচ্ছে সফরকারীদের। দুই দলের তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম ওয়ানডে আজ মাঠে গড়াবে বেলা ৩টায়।
এ দুই দলের অবশ্য বিশ্বকাপেই মুখোমুখি হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ব্রিস্টলের সেই ম্যাচটি পরিত্যক্ত হয়ে যায় বৃষ্টির কারণে। সেই ম্যাচটি না হওয়াতে টুর্নামেন্টের শেষদিকে গিয়ে দুই দলকেই ভুগতে হয়েছে। তবে বিশ্বকাপে নিজেদের প্রত্যাশামতো সাফল্য না পাওয়ার হতাশা কিছুটা হলেও ভুলতে এ সিরিজটা জিততে চাইছে দুই দল। এর আগে দুই দলের অধিনায়কই বলেছেন, তারা রোমাঞ্চকর এক সিরিজের অপেক্ষায় আছেন। যেখানে প্রবল প্রতিদ্বন্দ্বিতাও দেখছেন তারা। কিন্তু দুটি দলকেই সাম্প্রতিক সময়ে যেতে হচ্ছে নানা উত্থান-পতনের ভেতর দিয়ে। অবশ্য এই একটি সিরিজে জিততে পারলে সবকিছু বদলে যাবে। নতুন করে শুরুর জন্য একটি পথ খুঁজে পাবে তারা। তবে সে জন্য নিজেদের সেরাটা উজাড় করে খেলার বিকল্প নেই দুই দলের।
এদিকে বিশ্বকাপের পর পরই সমঝোতার ভিত্তিতে দল থেকে বাদ দেয়া হয় বাংলাদেশ দলের কোচ স্টিভ রোডসকে। আগে থেকেই ছুটি নিয়ে এ সিরিজ থেকে সরে যান বিশ্বকাপের অন্যতম সেরা পারফরমার সাকিব আল হাসান। এরপর সফরের আগের দিনই চোটের কারণে ছিটকে যান অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা। তাত্ক্ষণিকভাবে তামিম ইকবালকে অধিনায়কের দায়িত্ব দিয়ে পাঠানো হয় শ্রীলংকা সফরে, সঙ্গে অন্তর্বর্তীকালীন কোচ খালেদ মাহমুদ সুজন। দল পরিচালনায় দুজনেরই অভিজ্ঞতাতেই ঘাটতি আছে। অবশ্য চ্যালেঞ্জটা কঠিন হলেও বাংলাদেশকে স্বস্তি দিচ্ছে শ্রীলংকা দলের অবস্থা। তারাও খুব একটা সুবিধাজনক অবস্থায় নেই। মাঠের লড়াইয়ে তাই প্রতিপক্ষের দুর্বলতাকে কাজে লাগানোর অপেক্ষায় থাকবে তামিম ইকবালের দল। তবে সবার আগে তামিমদের চোখ থাকছে ভালো শুরুতে। শুরুটা ভালো করতে পারলে অনেক কিছু সহজ হয়ে যাবে। তামিম বলেন, ‘আমার কাছে শুরুটা গুরুত্বপূর্ণ। আমরা যদি শুরু করার আগেই ফিনিশিং লাইন দেখতে শুরু করে দিই, তবে সেটা সমস্যা। আমরা ব্যাট করি বা বল করি আমাদের ভালো শুরু করাটা গুরুত্বপূর্ণ। অবশ্যই চূড়ান্ত লক্ষ্য থাকবে ম্যাচটা জেতার।’ আর ভালো শুরুর মধ্য দিয়েই সিরিজটা নিজেদের করে নিতে চাইছেন তামিম।
অবশ্য কেবল প্রতিপক্ষই নয়, বাংলাদেশকে লড়তে হচ্ছে লংকান আবহাওয়ার সঙ্গেও। এর আগে ইংল্যান্ডে ভিন্ন পরিবেশে খেলে এসেছে টাইগাররা। দেশে কয়েকদিন গরমের ভেতর অনুশীলন করলেও লংকার গরমটা যেন একটু বেশিই গায়ে লাগে। সম্ভাব্য বাজে পরিস্থিতি মোকাবেলায় বাড়তি সদস্য হিসেবে দলে নেয়া হয়েছে শফিউল ইসলামকে। সেসঙ্গে ডেথ বোলিংয়ে যে দুর্বলতা, সেটি কাটাতেও শফিউল ভূমিকা রাখবেন বলে বিশ্বাস টিম ম্যানেজমেন্টের। তবে বাংলাদেশকে স্বস্তি দিচ্ছে তিন নম্বরে সাকিবের বিকল্প হিসেবে মোহাম্মদ মিঠুনের পারফরম্যান্স। প্রস্তুতি ম্যাচে ৯১ রানের দারুণ এক ইনিংস খেলেছেন তিনি। আজও তার ব্যাটের দিকে তাকিয়ে থাকবে বাংলাদেশ।
অবশ্য লংকানরাও এ ম্যাচে ছেড়ে কথা বলবে না। তাদের ঘুরে দাঁড়ানোয় চোখ এ সিরিজ দিয়ে। বিশেষ করে এ ম্যাচ দিয়ে বিদায় নিচ্ছেন লংকানদের কিংবদন্তি পেসার লাসিথ মালিঙ্গা। তার বিদায়টাকেও রাঙিয়ে দিতে চাইছে দিমুথ করুনারত্নের দল। এদিকে গুঞ্জন আছে এটিই কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহের শেষ সিরিজ। এরপর শ্রীলংকার কোচের দায়িত্ব ছাড়তে বলা হয়েছে তাকে। তাই হাথুরুও চাইবেন শিষ্যরা যেন তার সম্ভাব্য বিদায়টাকে জয় দিয়ে সাজিয়ে দেন।
উপমহাদেশের দুই দলের মুখোমুখি লড়াইয়ে অবশ্য বাংলাদেশের চেয়ে এগিয়ে আছে শ্রীলংকা। মুখোমুখি ৪৫ ম্যাচে শ্রীলংকার ৩৬ জয়ের বিপরীতে বাংলাদেশের জয় মাত্র সাতটি।
