কক্সবাংলা ডটকম(২৮ জুলাই) :: প্রথম ম্যাচের মতোই দ্বিতীয় ম্যাচেও ধ্বংসস্তূপের ওপর দাঁড়িয়ে একাই লড়ে গেলেন মুশফিকুর রহিম। চলতি শ্রীলংকা সফরে প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশের পক্ষে সর্বোচ্চ ৬৭ রানের ইনিংস খেলেছিলেন এই উইকেটরক্ষক-ব্যাটসম্যান। প্রথম ম্যাচে মুশফিকের সঙ্গে জুটি বেঁধে লড়াইয়ের সম্ভাবনা জাগিয়েছিলেন সাব্বির রহমান। মুশফিককে সমর্থন দিয়েছেন ৮ নম্বরে খেলতে নামা মেহেদী হাসান মিরাজ। ইনিংসের শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থেকে ৯৮ রান করেন এই লিটল মাস্টার। তার ব্যাটে ভর দিয়ে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ২৩৮ রান সংগ্রহ করে সফরকারী বাংলাদেশ। কিন্তু এ রান লংকানদের সামনে কোনো সমস্যাই তৈরি করতে পারেনি, বাংলাদেশ হেরে গেছে ৭ উইকেটের বড় ব্যবধানে। সেই সঙ্গে সিরিজও হারল তামিম ইকবালের দল। তিন ম্যাচের সিরিজে এখন ২-০-তে পিছিয়ে গেল বাংলাদেশ।
লক্ষ্য তাড়ায় এদিন শুরু থেকেই অবিচল লংকান ব্যাটসম্যানরা। আভিস্কা ফার্নান্দোর ৮২ রানের ইনিংসটিই মূলত গড়ে দিয়েছে জয়ের ভিত। এরপর বাকিদের ব্যাটিং দৃঢ়তায় সহজ জয় তুলে নেয় লংকানরা।
এর আগে রানাসিংহে প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে বাংলাদেশের শুরুটা হয় টস জয় দিয়ে। ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক তামিম ইকবাল সিদ্ধান্ত নেন ব্যাট করার। কিন্তু এ সিদ্ধান্তের যৌক্তিকতা প্রমাণ করতে পারেননি সফরকারী ব্যাটসম্যানরা। লংকান বোলিংয়ের সেরা অস্ত্র লাসিথ মালিঙ্গার না থাকার সুযোগও নিতে পারেনি বাংলাদেশ।
মাত্র ৩১ রান তুলতেই বিদায়ঘণ্টা বেজে যায় দুই ওপেনারের। সৌম্য সরকারকে (১১) লেগ বিফোরের ফাঁদে ফেলে পতনের শুরুটা করেন লংকান পেসার নুয়ান প্রদীপ। পরের ওভারেই তামিমকে বোল্ড আউট করেন আরেক পেসার উসুরু উদানা। প্রথম ম্যাচের মতো এ যাত্রায়ও প্লেইড অন হন এই বাঁহাতি। বাইরের বল খেলতে গিয়ে স্টাম্পে টেনে আনেন। বিশ্বকাপ থেকেই নিয়মিতভাবে বোল্ড আউট হচ্ছেন তামিম। বিশ্বকাপের সর্বশেষ চার ম্যাচেই বোল্ড আউটের শিকার হন বাংলাদেশ দলের এই অভিজ্ঞ ওপেনার। তামিম (১৯) বিদায়ের পর উইকেটে আসেন মুশফিক। প্রান্ত আগলে রেখেও ধস থামাতে পারেননি তিনি। অন্য প্রান্ত থেকে চলতে থাকে আসা-যাওয়ার মিছিল। ৩ নম্বরে খেলতে থাকা মোহাম্মদ মিঠুন সাজঘরমুখো হন ব্যক্তিগত ১২ রানে। বিশ্বকাপে ৩ নম্বরে খেলতে নেমে গোটা ক্রিকেট দুনিয়ার ফোকাস নিজের দিকে নিয়ে নিয়েছিলেন সাকিব আল হাসান। মিঠুনও তেমন কিছু করবেন, এমন কথা বলেছিলেন এই সিরিজের জন্য কোচ হিসেবে দায়িত্ব পালন করা খালেদ মাহমুদ সুজন। কিন্তু বাস্তবে দেখা গেছে উল্টোটাই। সাকিবের শূন্যস্থান পূরণ হচ্ছে না কোনোভাবেই।
মুশফিককে সমর্থন দিতে পারেননি অভিজ্ঞ মাহমুদউল্লাহও। ৫ নম্বরে খেলতে নামা মাহমুদউল্লাহ সাজঘরমুখো হন ব্যক্তিগত ৬ রানে। এ ধাক্কা সামলে ওঠার আগেই বিদায় নেন আগের ম্যাচে ৬০ রান করা সাব্বির রহমান। ব্যক্তিগত ১১ রানে রান আউটের খাঁড়ায় কাটা পড়েন এই হার্ড হিটার। পর পরই মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত (১৩) বিদায় নিলে বড় ধরনের বিপর্যয়ের আশঙ্কা জেগে ওঠে টাইগার শিবিরে। বাংলাদেশের স্কোরবোর্ডে তখন ১১৭/৬। এ অবস্থায় খাদের কিনার থেকে দলকে লড়াইয়ে ফেরান মুশফিক-মিরাজ। সপ্তম উইকেটে ৮২ বলের জুটিতে ৮৪ রান যোগ করেন দুজনে। মিরাজকে (৪৩) শিকারে পরিণত করে এ জুটি ভাঙেন প্রদীপ। বলাবাহুল্য, বাংলাদেশ ইনিংসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান সংগ্রহকারী ব্যাটসম্যান হলেন মিরাজ। মিরাজ বিদায়ের পরও লড়াই চালিয়ে গেছেন মুশফিক। ইনিংসের শেষ ওভারে প্রদীপের করা পঞ্চম বল থেকে সিঙ্গেল নেন মুশফিক। আর এতেই শেষ হয়ে যায় তার সেঞ্চুরির সম্ভাবনা। ১১০ বলের ইনিংসে ৯৮ রানে অপরাজিত থাকেন মুশফিক।
সংক্ষিপ্ত স্কোর :
বাংলাদেশ: ৫০ ওভারে ২৩৮/৮ (মুশফিক ৯৮*, মিরাজ ৪৩, তামিম ১৯; আকিলা ২/৩৯, প্রদীপ ২/৫৩, উদানা ২/৫৮)। শ্রীলংকা: ৪৪.৪ ওভারে ২৪২/৩ (আভিস্কা ৮২, ম্যাথুজ ৫২*; মুস্তাফিজ ২/৫০)। ফল: শ্রীলংকা ৭ উইকেটে জয়ী। সিরিজ: তিন ম্যাচের সিরিজে শ্রীলংকা ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে।
Posted ৪:১৯ পূর্বাহ্ণ | সোমবার, ২৯ জুলাই ২০১৯
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta