কক্সবাংলা ডটকম(২১ ডিসেম্বর) :: নির্বাচন কমিশন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, আদালত- কোনো কিছুতেই আস্থা রাখাতে পারছে না বিএনপি। দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, সবগুলো সংস্থাই ‘গণতন্ত্রকে ধ্বংস করতে একজোট হয়েছে’। এ জন্য তারা শঙ্কিত।
শুক্রবার গুলশানে দলীয় চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এই মন্তব্য করেন বিএনপি নেতা।
ফখরুল বলেন, ‘অত্যন্ত ক্ষোভ ও দুঃখের সঙ্গে বলতে হয় বিচার বিভাগ পক্ষপাতিত্ব আচরণ করছে। উদ্দেশ্যমূলকভাবে আমাদের প্রার্থীদের প্রার্থিতা বাতিল করছে। সিলেট-২ আসনের প্রার্থী তাহসিনা রুশদির লুনা শায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চাকরি থেকে তিন বছর আগে কেন পদত্যাগ করেননি সেজন্য মনোনয়ন বাতিল করেছে। অথচ ড. এনামুল হক সরদার জৈন্তাপুর কলেজের অধ্যক্ষ হিসেবে থাকলেও তার মনোনয়ন বাতিল হয়নি।’
‘এখন হাইকোর্ট যে রায় দিয়েছে সেটাকে আমরা কী বলব। আমার দলের প্রার্থী কে হবে সেটাও হাইকোর্ট বলে দিচ্ছে। তাহলে সেই হাইকোর্টকে কীভাবে বিশ্বাস করব।’
বিএনপির মনোনয়ন পাওয়া ১৩ জনের প্রার্থিতা উচ্চ আদালতে স্থগিত হয়েছে। এদের মধ্যে সিংহভাগের বাতিল হয়েছে উপজেলা চেয়ারম্যানের পদত্যাগপত্র গ্রহণের আগে সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হওয়া। আর লুনার মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেপুটি রেজিস্ট্রারের পদ ছাড়ার তিন বছর শেষ না হতেই প্রার্থী হওয়ায়।
এই সব প্রার্থীকে নির্বাচন কমিশন বৈধ ঘোষণা করলেও প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের রিট আবেদনে হাইকোর্ট স্থগিত করে দিয়েছে প্রার্থিতা।
নির্বাচন কমিশনের বৈধ প্রার্থীদের প্রার্থিতা বাতিলের এখতিয়ার হাইকোর্টের আছে কি না, তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন ফখরুল।
এর পেছনে সরকারের হাতও দেখছেন বিএনপি মহাসচিব। বলেন, ‘২০১৪ সালে ১৫৩ জন বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় সংসদ সদস্য হয়েছিলেন। এবার সেটা হয়নি। তাই ক্ষমতাসীনরা রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠানগুলো ব্যবহার করে একের পর এক প্রার্থী বাতিল করছে। আমাদের ১৫ জন প্রার্থী কারাগারে, সাত জন বাতিল, ২৫ জনের ভাগ্য আদালতে ঝুলছে।’
নির্বাচন সুষ্ঠু হবে না, এ বিষয়েও নিশ্চিত ফখরুল। বলেন, ‘একটি দল প্রচার প্রচারণা চালাচ্ছে নির্বিঘেœ আর আমাদের প্রার্থীদেরকে ঘর থেকেই বের হতে দেওয়া হচ্ছে না।… এখন নির্বাচনের আদৌ কোনও পরিবেশ আছে কি না সেই প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। অবিশ্বাস্য পরিস্থিতি সৃষ্টি করা হয়েছে যাতে কোনও মতেই একটি অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হওয়ার সম্ভাবনা নেই।’
‘আমাদের প্রতিপক্ষ হয়ে দাঁড়িয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। নেতাকর্মীদেরকে বাসা থেকে গ্রেপ্তার, জেলগেট থেকে গ্রেপ্তার নিত্যনৈমিত্তিক ব্যপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রার্থীরাও পর্যন্ত বাদ যাচ্ছেন না।’
‘সরকারদলীয় নেতাকর্মীরা সারাদেশে হামলার ঘটনা ঘটাচ্ছে আবার তারাই বিএনপির নামে মামলা দিচ্ছে।…একদিকে আওয়ামী সন্ত্রাস, অন্যদিকে রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস চলছে।’
ফখরুল বলেন, তারা এখানো বিশ্বাস করেন নির্বাচন কমিশন তাদের অবস্থান থেকে ফিরে আসবে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সর্বোপরি সেনাবাহিনী সবাই ‘দায়িত্ববোধ ও কর্তব্যবোধ নিয়ে কাজ করবেন’।
ভোট সুষ্ঠু হলে নৌকাকে খুঁজে পাওয়া যাবে না বলেও মন্তব্য করেন বিএনপি নেতা।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, ভাইস-চেয়ারম্যান শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুল কাইয়ুম, যুগ্ম-মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল প্রমুখ সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।
Posted ৫:২৭ অপরাহ্ণ | শুক্রবার, ২১ ডিসেম্বর ২০১৮
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta