রবিবার ৫ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২২শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম

রবিবার ৫ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

শিরোনাম

সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি হত্যায় জড়িত দুই ব্যক্তি

মঙ্গলবার, ০৩ মার্চ ২০২০
237 ভিউ
সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি হত্যায় জড়িত দুই ব্যক্তি

কক্সবাংলা ডটকম(২ মার্চ) :: সাংবাদিক দম্পতি সাগর সারওয়ার ও মেহেরুন রুনি হত্যায় দুই ব্যক্তি জড়িত রয়েছেন। এদের কাউকেই শনাক্ত করতে পারেনি তদন্ত সংস্থা। তবে তাদের শনাক্তের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের দুটি ল্যাব কাজ করছে। আলোচিত এই হত্যা মামলার তদন্তের অগ্রগতি প্রতিবেদন হলফনামা আকারে হাইকোর্টে দাখিল করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তার দেওয়া ঐ প্রতিবেদনে রুনির ঘনিষ্ঠ বন্ধু তানভীর রহমানের বিষয়ে বলা হয়েছে, হত্যাকাণ্ডের আগে ও পরে ঘটনাবলি পর্যালোচনা করে এটা প্রতীয়মান হয় যে তার আচরণ খুবই রহস্যজনক। তদন্তের এই পর্যায়ে তানভীর জড়িত নন—এ কথা বলাটা যুক্তিযুক্ত হবে না।

বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে বুধবার এই প্রতিবেদনের ওপর শুনানি অনুষ্ঠিত হবে।

২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি রাতে ঢাকার পশ্চিম রাজাবাজারে ভাড়া বাসায় নির্মমভাবে খুন হন সাংবাদিক দম্পতি সাগর ও রুনি। পরদিন ভোরে তাদের ক্ষতবিক্ষত লাশ উদ্ধার করা হয়। পরে রুনির ভাই নওশের আলী রোমান বাদী হয়ে শেরেবাংলা নগর থানায় মামলা করেন। প্রথমে মামলার তদন্তভার যায় শেরেবাংলা নগর থানায়। পরে গোয়েন্দা পুলিশের ওপর। এরপর হাইকোর্টের আদেশে তদন্ত পায় র্যাব। এখন পর্যন্ত ৭১ বার সময় নেওয়া হয়েছে আদালত থেকে, কিন্তু মামলার তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করতে পারেননি তদন্ত কর্মকর্তা। এ মামলায় ২০১২ সালের ৭ অক্টোবর সন্দেহভাজন হিসেবে তানভীরকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। পরে তিনি হাইকোর্ট থেকে জামিন পান।

ধার্য তারিখে নিম্ন আদালতে হাজিরা দিতে হয় বলে তাকে মামলার কার্যক্রম থেকে বাদ দেওয়ার জন্য হাইকোর্টে আবেদন করেন। ঐ আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত ২০ অক্টোবর বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিমের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ এ মামলার তদন্তের অগ্রগতি প্রতিবেদন এবং আসামি তানভীরের সম্পৃক্ততার বিষয়ে জানাতে তদন্তকারী কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেন। ঐ নির্দেশের পরিপ্রেক্ষিতে তদন্ত কর্মকর্তা র্যাবের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার খন্দকার শফিকুল আলম হাইকোর্টে প্রতিবেদন দিয়ে জানান মামলার তদন্তের অগ্রগতি সম্পর্কে। তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলকারী সূত্রে এসব তথ্য নিশ্চিত হওয়া গেছে।

র্যাবের অগ্রগতি প্রতিবেদনে বলা হয়, সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডের ঘটনাস্থলে দুই জন অজ্ঞাত পুরুষের ডিএনএ পাওয়া গেছে। তদন্তকালে ঐ দুই জন অজ্ঞাত পুরুষকে চিহ্নিত করার লক্ষ্যে ব্যাপক তদন্ত করা হয়। ডিএনএ পরীক্ষার প্রাথমিক তথ্যানুযায়ী সাগরকে বাঁধার জন্য ব্যবহূত চাদর এবং রুনির টিশার্ট থেকে পাওা নমুনা পরীক্ষণে প্রতীয়মান হয়, উক্ত হত্যাকাণ্ডে কমপক্ষে দুই জন অপরিচিত পুরুষ জড়িত ছিল। এই অপরিচিত অপরাধী শনাক্তকল্পে ডিএনএ প্রস্তুতকারী যুক্তরাষ্ট্রের দুটি ল্যাব যথাক্রমে ইনডিপেনডেন্ট ফরেনসিক সার্ভিস এবং প্যারাবন স্ন্যাপশট ল্যাব কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বর্তমানে যোগাযোগ অব্যাহত আছে। প্রতিষ্ঠান দুটি ডিএনএর মাধ্যমে অপরাধীর ছবি বা অবয়ব প্রস্তুতের প্রচেষ্টায় কাজ করে যাচ্ছে।

‘তানভীরের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল রুনির’

র্যাবের অগ্রগতি প্রতিবেদনে বলা হয়, তানভীরের সঙ্গে রুনির পরিচয় ২০১০ সাল থেকে। ফেসবুকের মাধ্যমে শুরু এবং সামনাসামনি দেখা হয় ২০১১ সালে রুনি দেশে ফেরার পর। তানভীরের সঙ্গে রুনির সবচেয়ে বেশি ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল। প্রতিদিন বেশ কয়েকবার তাদের মধ্যে ফোনে আলাপ হতো। তারা প্রায়ই দেখা-সাক্ষাত্ করতেন। নানাবিধ তথ্য-উপাত্ত, ফেসবুকের ছবি ও মেসেজ ইত্যাদি বিশ্লেষণ করা হয়। হত্যাকাণ্ডের আগের দিন ২০১২ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি রুনি ও তানভীরের মধ্যে একাধিকবার ফোনে যোগাযোগ ও মেসেজ বিনিময় হয়।

ঐদিন তারা বিকাল ৫টায় ধানমন্ডি লেক এলাকায় দেখা করেন এবং সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত একসঙ্গে কাটান। এছাড়া ১০ ফেব্রুয়ারি রাত ৯টা ৫৪ মিনিটে রুনির মোবাইল ফোন থেকে তানভিরের মোবাইলে একটি মেসেজ পাঠানো হয়। রাত ১০টা ১৭ মিনিটে তানভিরের মোবাইল থেকে রুনির মোবাইলে ফিরতি মেসেজ আসে। রাত আনুমানিক ১২টা ২৫ মিনিটে রুনির সঙ্গে তানভীরের ফোনে শেষ যোগাযোগ হয়। তানভীরের তথ্য মোতাবেক ঘটনার দিন সকাল আনুমানিক ৮টায় সে স্কুলের পিকনিকে অংশগ্রহণের লক্ষ্যে পুবাইলে চলে যান এবং রাত সাড়ে ৮টায় বাসায় ফিরে টেলিভিশনে রুনির হত্যার ঘটনা জানতে পারেন।

মোবাইল কললিস্ট অনুযায়ী হত্যার দিন আনুমানিক সকাল ৭টা ২১ মিনিটে রুনির ফোন থেকে তানভীরের ফোনে কল যায়, যার স্থায়িত্ব ছিল ৮ সেকেন্ড। প্রতিদিন তানভীর ও রুনির মধ্যে একাধিকবার যোগাযোগ হলেও হত্যার দিন তানভীর রুনিকে একবারও ফোন করেননি। এমনকি রাতে হত্যার খবর জানার পরেও তানভীর রুনি বা সাগরের বিষয়ে কোনো খোঁজ-খবর নেননি বা তাদের জানাজাসহ কোনো ধরনের ধর্মীয় কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেননি। স্বাভাবিকভাবে আসামি তানভীর ঘটনার পূর্ববর্তী ও পরবর্তী আচরণ খুবই রহস্যজনক।

তদন্তের ফলাফল

প্রতিবেদনে তদন্ত কর্মকর্তা জানান, তদন্তকালে ৮ আসামিকে গ্রেপ্তার করে আদালতে হাজির করা হয়। ঘটনায় সম্পৃক্ত মোট ৪৭টি বিভিন্ন ধরনের আলামত জব্দ করা হয়। তার মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ আলামত যুক্তরাষ্ট্র ও নেদারল্যান্ডের কয়েকটি পরীক্ষাগারে ডিএনএ পরীক্ষার জন্য আদালতের অনুমতিক্রমে প্রেরণপূর্বক ব্যাপক ডিজিটাল ফরেনসিক পরীক্ষা করে দেশি-বিদেশি বিশেষজ্ঞদের মতামত সংগ্রহ করা হয়।

আদালতের অনুমতি সাপেক্ষে ২৫ জন সন্দিগ্ধ ব্যক্তির শ্লেষ্মার (কফ) নুমনা সংগ্রহপূর্বক ডিএনএ পরীক্ষার জন্য যুক্তরাষ্ট্র ও নেদারল্যান্ডের তিনটি অত্যাধুনিক পরীক্ষাগারে ডিজিটাল ফরেনসিক পরীক্ষার মাধ্যমে দীর্ঘদিন ব্যাপক অনুসন্ধান ও অনুবিশ্লেষণ করে মতামত সংগ্রহ করা হয়। তদন্তকালে মোট ১৩০টি চুরি ও ডাকাতি মামলার সন্দিগ্ধ গ্রেপ্তারকৃত ১৪৫ জন আসামির বিরুদ্ধে গোপনে ও প্রকাশ্যে ব্যাপক তদন্ত করা হয়। মামলার ঘটনার বিষয়ে ১৬০ জন সাক্ষীর জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়।

উল্লিখিত তদন্তকাজে বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা, সিডিআর বিশ্লেষণ ও কললিস্ট যাচাইয়ের জন্য বিটিআরসিসহ সরকারি বিভিন্ন সংস্থার সহায়তা গ্রহণ করা হয়। বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র ও নেদারল্যান্ডে পাঠানো ডিএনএ নমুনার ভিত্তিতে জড়িত সন্ধিগ্ধ অপরাধীদের ছবি বা আকৃতি প্রস্তুত করা যায় কি না, সেই মর্মে যুক্তরাষ্ট্রের অন্য একটি ডিএনএ ল্যাব প্যারাবন স্ন্যাপশট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ অব্যাহত আছে।

প্যারাবন স্ন্যাপশট কর্তৃপক্ষ জানায়, পূর্বের ডিএনএ সংগ্রহকারী ইনডিপেনডেন্ট ফরেনসিক সার্ভিস কর্তৃক যদি তাদের কোয়ালিটি নমুনা দেওয়া যায়, তাহলে প্যারাবন স্ন্যাপশট কর্তৃপক্ষ ছবি প্রস্তুত করতে পারবে। সেই মর্মে ইনডিপেনডেন্ট ফরেনসিক সার্ভিস কর্তৃপক্ষের চাহিদা মোতাবেক গত ৩ ডিসেম্বর ১ হাজার ২০০ মার্কিন ডলার সার্ভিস চার্জ হিসেবে পাঠানো হয়েছে।

ইনডিপেনডেন্ট ফরেনসিক সার্ভিস কর্তৃপক্ষ ডলার পাওয়ার বিষয়টি অবহিতপূর্বক উক্ত আলামত পর্যালোচনা করছে বলে জানান। মামলাটি বর্তমানে ডিএনএ পরীক্ষার আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারসহ গতানুগতিক পদ্ধতিতে অর্থাত্ উভয় প্রক্রিয়ায় তদন্ত অব্যাহত আছে। মামলার ঘটনার প্রকৃত কারণ এবং জড়িত আসামিদের গ্রেপ্তার করে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে তদন্ত নিষ্পত্তি করা হবে।

237 ভিউ

Posted ২:৫২ পূর্বাহ্ণ | মঙ্গলবার, ০৩ মার্চ ২০২০

coxbangla.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

এ বিভাগের আরও খবর

Editor & Publisher

Chanchal Dash Gupta

Member : coxsbazar press club & coxsbazar journalist union (cbuj)
cell: 01558-310550 or 01736-202922
mail: chanchalcox@gmail.com
Office : coxsbazar press club building(1st floor),shaheed sharanee road,cox’sbazar municipalty
coxsbazar-4700
Bangladesh
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
বাংলাদেশের সকল পত্রিকা সাইট
Bangla Newspaper

ABOUT US :

coxbangla.com is a dedicated 24x7 news website which is published 2010 in coxbazar city. coxbangla is the news plus right and true information. Be informed be truthful are the only right way. Because you have the right. So coxbangla always offiers the latest news coxbazar, national and international news on current offers, politics, economic, entertainment, sports, health, science, defence & technology, space, history, lifestyle, tourism, food etc in Bengali.

design and development by : webnewsdesign.com