কক্সবাংলা ডটকম(১১ নভেম্বর) :: দুর্নীতিবিরোধী অভিযানে সৌদি আরবে ধরপাকড় চলছেই। গত এক সপ্তাহে এ অভিযানে গ্রেফতার করা হয়েছে ২০১ জনকে। এদের মধ্যে সৌদি রাজপরিবারের সদস্য রয়েছেন ১১ জন। কয়েক দশকজুড়ে দুর্নীতির মাধ্যমে ১০ হাজার কোটি ডলারেরও বেশি অর্থ নয়ছয়ের অভিযোগে তাদের আটক করে রাখা হয়েছে বলে দেশটির অ্যাটর্নি জেনারেল সাউদ আল-মোজেব গতকাল এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন। খবর টেলিগ্রাফ।
গত সপ্তাহের শনিবার সন্ধ্যা থেকে হঠাত্ ধরপাকড় নিয়ে দেশটিতে ব্যাপক জল্পনা-কল্পনা শুরু হয়। বিশেষ করে শাসক সৌদ পরিবারের এত বেশি সংখ্যক সদস্যকে একসঙ্গে আটক করার এটিই প্রথম নজির। তবে এখন পর্যন্ত যতজন গ্রেফতার হয়েছেন বলে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশ হয়েছে, সৌদি অ্যাটর্নি জেনারেলের বিবৃতিতে জানানো আটকের সংখ্যা তার চেয়েও বেশি।
বিবৃতিতে সৌদি অ্যাটর্নি জেনারেল জানান, শনিবার সন্ধ্যা থেকে গতকাল পর্যন্ত দুর্নীতির অভিযোগে মোট ২০৮ জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়। এর মধ্যে দুর্নীতিতে সম্পৃক্ততা না পাওয়ায় সাতজনকে এরই মধ্যে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। ফলে আটকের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২০১।
শনিবার রাতে ১১ রাজকুমার ও ৩৮ কর্মকর্তাকে আটকের মধ্য দিয়ে এ ধরপাকড়ের সূত্রপাত ঘটে। আটক যুবরাজদের বর্তমানে রিতজ-কার্লটনসহ সৌদি আরবের বিভিন্ন পাঁচতারা হোটেলে আটকে রাখা হয়েছে।
সমালোচক ও পর্যবেক্ষকদের মতে, সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের নিরঙ্কুশ ক্ষমতাকে কণ্টকমুক্ত করতেই দেশটির শীর্ষ রাজকুমার, কর্মকর্তা, সেনানায়ক ও ব্যবসায়ীদের আটক করা হয়েছে। আটককৃতদের মধ্যে উল্লেখযোগ্যরা হলেন— সৌদি বিলিয়নেয়ার প্রিন্স আলওয়ালিদ বিন তালাল ও প্রিন্স মুতায়েব বিন আব্দুল্লাহসহ সাবেক বাদশাহ আব্দুল্লাহর দুই ছেলে। আটক হওয়ার আগ পর্যন্ত সৌদি ন্যাশনাল গার্ডের কর্তৃত্ব মুতায়েব বিন আব্দুল্লাহর হাতে ছিল। প্রিন্স মুতায়েবকে একসময় সৌদি সিংহাসনের সম্ভাব্য জোরালো উত্তরাধিকারী হিসেবে ধরা হতো। সে হিসাবে ক্ষমতাসীন বাদশাহ সালমানের ৩২ বছর বয়স্ক ছেলে মোহাম্মদ বিন সালমানের একজন অন্যতম বড় প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন প্রিন্স মুতায়েব। অন্যদিকে যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান নিজেই দুর্নীতির অভিযোগগুলো তদন্তের জন্য গঠিত কমিটির প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
সাউদ আল-মোজেব বিবৃতিতে বলেন, ‘এখন পর্যন্ত যেসব তথ্য উদ্ঘাটিত হয়েছে, তার ভিত্তিতে বলা যায় ব্যাপক হারে দুর্নীতি হয়েছে। তিন বছর ধরে চলা তদন্তের ভিত্তিতে বলা যায়, দুর্নীতির মাধ্যমে কমপক্ষে ১০ হাজার কোটি ডলার পরিমাণ অর্থ নয়ছয় করা হয়েছে।’ অন্যদিকে জিজ্ঞাসাবাদের অধীন ব্যক্তিদের পূর্ণ তালিকা প্রকাশে অনীহা জানিয়েছে সৌদি সরকার। এ বিষয়ে তদন্ত প্রক্রিয়া চলাকালে আটককৃতদের গোপনীয়তা বজায় রাখার নীতিকে সম্মান জানানো হবে বলে জানিয়েছে রিয়াদ।
আটককৃতদের মোট ১ হাজার ৭০০ ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্ধ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সাউদ আল-মোজেব। তবে এসব অ্যাকাউন্টে থাকা মোট অর্থের পরিমাণ সম্পর্কে কোনো তথ্য জানাননি তিনি। তবে সৌদি সরকারের দৃষ্টি এখন পর্যন্ত ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্টেই সীমাবদ্ধ বলে নিশ্চিত করেছেন তিনি। কোনো কোম্পানি বা ব্যবসার তহবিলের দিকে এখনো হাত বাড়ায়নি রিয়াদ।
Posted ৯:৫৫ পূর্বাহ্ণ | শনিবার, ১১ নভেম্বর ২০১৭
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta