কক্সবাংলা ডটকম(১৯ ডিসেম্বর) :: মহান মুক্তিযুদ্ধ ও পরবর্তী সময়ে সদ্য স্বাধীন যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ গঠনে সহায়তাকারী ভারত ও রাশিয়ার সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের সংবর্ধনা দেয়া হয়েছে গণভবনে।
সোমবার বিকালে গণভবনের সবুজ লনে বীর যোদ্ধাদের এই সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
৪৭তম মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী আয়োজিত এ সংবর্ধনায় ভারতের ২৮ বীর যোদ্ধা, তাদের স্ত্রী ও সন্তান, ভারতের চার জন সামরিক কর্মকর্তা এবং ৬ জন দূতাবাস কর্মকর্তা অংশ নেন। একই সঙ্গে রাশিয়ার ৪ বীর যোদ্ধা, তাদের স্ত্রী ও তিন দূতাবাস কর্মকর্তাও যোগ দেন এই সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে।
আমন্ত্রিত এই বীর যোদ্ধারা ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেয়ার পাশাপাশি যুদ্ধপরবর্তী সময়ে মাইন অপসারণ ও যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ পুনর্গঠনে অবদান রাখেন। প্রধানমন্ত্রী অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত সকল অতিথিদের কাছে যান এবং দীর্ঘ সময় ধরে রাষ্ট্রের অতিথি এই বীর যোদ্ধা ও তাদের স্ত্রী-সন্তানদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন।
এ সময় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বঙ্গবন্ধুর আরেক কন্যা শেখ রেহানার ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববি ছিলেন। এ অনুষ্ঠান উপলক্ষে ভিন্ন আঙ্গিকে সাজানো হয় গণভবনের আঙিনা।
পরে প্রধানমন্ত্রী তার সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে আমন্ত্রিত এই বীর যোদ্ধাদের উদ্দেশে বলেন, আমরা আপনাদের ত্যাগ ও অবদানের কথা ভুলিনি। আপনারা আমাদের স্বাধীনতার জন্য যুদ্ধ করেছেন। মহান মুক্তিযুদ্ধে ভারত ও রাশিয়ার অবদান বাংলাদেশ কখনো ভুলবে না। আপনারা আমাদের দেশে এসে আমাদের সম্মানিত করেছেন।
বঙ্গবন্ধু কন্যা বলেন, আমরা সব সময়ই আপনাদের অবদানের কথা স্মরণ করি। আমরা মহান নেতা, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে স্বাধীনতা পেয়েছি। আপনারা যুদ্ধে সব ধরনের সহযোগিতা করেছেন। দুর্দিনে পাশে দাঁড়ানো যোদ্ধাদের বাংলাদেশে স্বাগত জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, আপনারা যখন মন চায় আমাদের দেশে আসবেন, আমাদের আতিথেয়তা গ্রহণ করবেন।
ভারতীয় প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন লে. জেনারেল (অব.) জয় ভগবান সিং যাদব। ভারতীয় প্রতিনিধিদের পক্ষে বক্তব্য রাখেন তিনি। জয় ভগবান সিং যাদব বলেন, এই ঐতিহাসিক উপলক্ষ্যকে ঘিরে বাংলাদেশ সফর; আমাদের জন্য মহান সুযোগ।
নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষায় বাংলাদেশের অগ্রগতি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমাদের সফরে দেখেছি, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা বাহিনীর অনেক অগ্রগতি হয়েছে।
১৯৭১ সালের স্মৃতিচারণ করে লে. জেনারেল (অব.) জয় ভগবান সিং বলেন, দীর্ঘ নয় মাস অনেক আঘাত ও নৃশংসতার মধ্যে দিয়ে যেতে হয়েছে। কিন্তু মুক্তিবাহিনীর ভাইদের সাহস একটা পরিবেশ ও ফ্লাটফর্ম তৈরি করেছে। যার ফলে আমরা মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশের সহযোগিতায় পাশে এসে দাঁড়াতে পেরেছি। ভারত ও বাংলাদেশের সম্পর্ক প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যেকার সম্পর্ক রক্ত আর ঘামে সংযুক্ত। আমি নিশ্চিত অতি মজবুত এই সম্পর্ক দুই দেশের বন্ধুত্বকে চিরস্থায়ী করবে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বের প্রশংসা করে ভগবান সিং বলেন, বাংলাদেশে অভূতপূর্ব অগ্রগতি লাভ করেছে। এটা সম্ভব হয়েছে তার (শেখ হাসিনা) চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা সাহসের কারণে। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ভারত ও বাংলাদেশের বন্ধুত্ব আরো ঘনিষ্ট ও সম্প্রসারণ হবে আশা প্রকাশ করে তিনি বলেন, আমরা সব নেতিবাচক ও অস্থিতিশীল শক্তিকে পরাজিত করতে পারবো।