কক্সবাংলা ডটকম :: আর্জেন্টাইন কিংবদন্তি দিয়েগো ম্যারাডোনার নেতৃত্বে ১৯৮৭ ও ১৯৯০ সালে ইতালির লিগ শিরোপা জিতেছিল নাপোলি। ওই দুবারের আগে ও পরে আর শিরোপার গৌরব ছিল না তাদের। সেই থেকে নেপলসবাসীর ছিল দীর্ঘ প্রতীক্ষা। অবশেষে সেই প্রতীক্ষার অবসান ঘটল। পাঁচ ম্যাচ হাতে রেখেই ২০২২-২৩ মৌসুমের লিগ শিরোপা জিতে নিল ম্যারাডোনার স্মৃতিবিজড়িত ক্লাবটি। এই জয়ের পর উৎসবের নগরীতে পরিণত হয়েছে ইতালির নেপলস শহর।
বৃহস্পতিবার উদিনেসের মাঠে ড্র করেই শিরোপা নিশ্চিত করে ফেলে নাপোলি। ম্যাচের ১৩ মিনিটে সান্দি লভরিচ গোল করে উদিনেসকে এগিয়ে দিয়েছিলেন। এরপর ৫২ মিনিটে ভিক্টর অসিমেন নাপোলির হয়ে সমতা আনেন। মূলত এই গোলটিই এবারের লিগ শিরোপা নির্ধারণ করে দেয়। ৩৩ ম্যাচে ৮০ পয়েন্ট নাপোলির, সমান ম্যাচে দুইয়ে থাকা ল্যাৎসিওর ঝুলিতে ৬৪ পয়েন্ট। বাকি ৫ ম্যাচে আর ১৬ পয়েন্টের ব্যবধান ঘুচানো লাৎসিওর পক্ষে সম্ভব নয়। তাই ওসিমেনদের ড্রয়ের পরই উৎসব শুরু হয়ে যায় নেপলস শহরে।
সারা বিশ্ব থেকেই নাপোলির সমর্থকরা আনন্দ-উল্লাস করেছেন। তবে নেপলসের চিত্র একেবারেই আলাদা। সেখানে এক সপ্তাহ ধরেই উৎসবের প্রস্তুতি চলছিল। অবশেষে এসে গেল সেই মাহেন্দ্রক্ষণ। বৃহস্পতিবার রাতে নেপলসের মানুষজন নেচে-গেয়ে উদযাপন করেন। নাপোলির সমর্থকরা একে অপরের সঙ্গে আলিঙ্গন করে, কেউ বাঁশি বাজিয়ে, শহরের ঝর্নায় গোসল করে, শিশুরা ফুটবল খেলে আনন্দ উল্লাসে মেতে থাকে।
এমন আনন্দ হওয়ারই কথা। কেননা এই নেপলস শহর এখন ইতালির চ্যাম্পিয়ন। এদোয়ার্দো নাপ্পা নামের এক কিশোর সমর্থক অনুভুতি প্রকাশ করে এভাবে, ‘আমি কাঁদছিলাম। এটা ঐতিহাসিক মুহূর্ত। আমাদের হৃদয়ে একটি স্বপ্ন ছিল। নেপলস আবারো চ্যাম্পিয়ন!’
যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, জার্মানিসহ বিভিন্ন দেশ থেকে নাপোলির সমর্থকরা নেপলস শহরে জড়ো হয়েছেন আগেই। নেপলস শহরের মানুষ ফুটবল অন্তঃপ্রাণ। পার্টির জন্য গোটা শহরের মানুষ অপেক্ষায় ছিলেন। নীল ও সাদা পতাকা ও ফেস্টুনে ছোট-বড় সব রাস্তাঘাটা ছেঁয়ে যায়। লাইফ-সাইজের কাটআউট শোভা পাচ্ছিল মোড়ে মোড়ে। সেই কাটআউটের বেশিরভাগই প্রয়াত ফুটবল কিংবদন্তি ম্যারাডোনার। আর বর্তমান দলের তারকাদের তো বটেই। রাতভর কেক, পার্টি, পানাহার…এসবে মত্ত হয় নেপলসবাসী।
তবে উৎসব এখনই শেষ হচ্ছে না। পার্টিতে মজে থাকা এই শহরের মানুষ এখনই থামছে না। অন্তত সপ্তাহখানেক তো এভাবে উৎসবের আমেজ চলতে থাকবে।
রোম থেকে নাপোলির জয় উদযাপন করতে নেপলসে আসা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী অ্যামেলিয়া বুফি বলেন, ‘আমার তো মনে হয়, গোটা পৃথিবীটাই এখন থমকে আছে। এটা অবিশ্বাস্য অনুভুতি: নাপোলিটানরা যা করে তাতেই ভালোবাসা ঢেলে দেয়, ফুটবলও তার মধ্যে অন্যতম।’
জুভেন্টাস টানা নয়বার শিরোপা জয় করার পর তিনটি ভিন্ন ভিন্ন দল ইতালির লিগ শিরোপা জিতল—ইন্টার মিলান, এসি মিলান ও নাপোলি।
