কক্সবাংলা ডটকম(৩ ডিসেম্বর) :: এমন একখানা তথ্য, যা শুনলে মেসি ভক্তদের মন খারাপ হতে পারে। বিশ্বকাপে মেসিকে তাড়া করছে অজানা এক অভিশাপ।
বিশ্বকাপে মেসির গোল সংখ্যা এখনও পর্যন্ত ৮টি। তবে তার মধ্যে একটিও মেসি নক আউট পর্বে করতে পারেননি।
বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্বেই মেসি আটটি গোল করেছিলেন। আর এই পরিসংখ্যান মেসি ভক্তদের কাছে দুস্বপ্নের মতো ঠেকতে পারে।
বিশ্বকাপের নক আউট পর্বে ৪টি অ্যাসিস্ট মেসির। তবে গোল নেই।
মেসি এখনও পর্যন্ত বিশ্বকাপ খেলেছেন ৫টি। তার মধ্যে ৪টিতেই গোল করেছেন তিনি।
২০০৬ বিশ্বকাপে মেসি প্রথমবার খেলেছিলেন। ২০১০ বিশ্বকাপে মেসি অবশ্য গোল পাননি। আজ অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে মেসি কি গোল করতে পারবেন! তা হলে সেই অভিশাপ থেকে মুক্তি পাবেন তিনি।
অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে কিন্তু হারের রেকর্ড আছে আর্জেন্টিনার! কবে জেনে নিন
অঘটনের বিশ্বকাপ। একের পর এক হেভিওয়েট দলকে হারিয়েছে অপেক্ষাকৃত কম দুর্বল দলগুলি। আর্জেন্টিনাও হেরেছে সৌদি আরবের মতো দলের কাছে।
আজ অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে প্রি কোয়ার্টারে খেলতে নামছে আর্জেন্টিনা। ধারে-ভারে মেসিদের থেকে পিছিয়ে অস্ট্রেলিয়া। সেটা অনেকেই হয়তো এক কথায় মেনে নেবেন।
পরিসংখ্যান বলছে, অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে একবার হারের রেকর্ড আছে আর্জেন্টিনার। আর্জেন্টিনা ও অস্ট্রেলিয়া এখনও পর্যন্ত সাতবার মুখোমুখি হয়েছে।
সাতবারের মধ্যে পাঁচবার আর্জেন্টিনা জিতেছে। একটি ম্যাচ ড্র এবং একটিতে জিতেছিল অস্ট্রেলিয়া।
আলবিসেলেস্তে-দের ১৯৮৮ সালে সিডনিতে হারিয়েছিল অস্ট্রেলিয়া। বাইসেন্টেনারি গোল্ড কাপের ম্যাচে।
৪-১ গোলের বড় ব্যবধানে সেবার আর্জেন্টিনাকে হারিয়েছিল অস্ট্রেলিয়া।
২০০৭ সালে সিডনিতে শেষবার আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচে মুথোমুখি হয়েছিল আর্জেন্টিনা-অস্ট্রেলিয়া। সেবার আর্জেন্টিনা জিতেছিল এক গোলে।
মেসি ডান পায়ে পেনাল্টি নিক : বাতিস্তুতা
বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনার হয়ে সবচেয়ে বেশি ১০ গোল গ্যাব্রিয়েল বাতিস্তুতার। পোল্যান্ডের বিপক্ষে পেনাল্টি মিস না করলে ৯ গোল হতে পারত লিওনেল মেসির। বাতিস্তুতার আরো কাছে যেতে পারতেন তিনি। তার পরও আর্জেন্টিনার জার্সিতে ৭৮ ম্যাচে ৫৬ গোল করা বাতিস্তুতা চান পরের পেনাল্টিও যেন মেসিই নেন।
টিওয়াইসি স্পোর্টসকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বাতিস্তুতা বলেন, ‘মেসি খারাপ খেলছে না, তবে আমরা জানি ও আরো কিছু দিতে পারে দলকে। আর্জেন্টিনার এই দলটা মেসিকে ছাড়াও ভালো খেলতে পারে, যা ওকে অনেক স্বস্তি দেয়। শেষ ষোলোতে পেনাল্টি পেলে আমি মেসিকে শট নিতে বলব। ও সেটা ডান পায়ে চেষ্টা করতেই পারে। আমার মনে হয় না মেসির চেয়ে ভালো পেনাল্টি আর কেউ নিতে পারে। ’
শেষ ষোলোতে নিজের পছন্দের ‘নাম্বার নাইন’ নিয়ে বাতিগোল বলেছেন, ‘আগের ম্যাচে মার্তিনেসের জায়গায় আলভারেস খেলেছে। এই দুজনকে একসঙ্গে খেলানোর কোনো মানে নেই, যতক্ষণ না চার বা পাঁচ গোল দরকার। আমি অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে আলভারেসকেই চাইব। দি মারিয়া ফিট না হলে ওকে বেঞ্চে রাখা ভালো। শতভাগ ফিট ছাড়া কাউকে খেলানোর পক্ষে নই। অস্ট্রেলিয়াকে যেন ছোট দল মনে করে খেলার ভুল না করে আর্জেন্টিনা। ’
আর্জেন্টিনার (Argentina) জার্সিতে অভিষেক ১৭ বছর আগে। ২০০৫ সালে। তখন বয়স মাত্র ১৮ বছর লিওনেল মেসির (Lionel Messi)। বয়সের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখেই হয়তো গায়ে চাপাতেন ১৮ নম্বর জার্সি! তবে স্বপ্নপূরণের সেই ম্যাচে তাঁর অভিজ্ঞতা ভালো ছিল না। মাঠে নামার ৪০ সেকেন্ডের মাথায় দেখেছিলেন লাল কার্ড! ৬৪ মিনিটে মাঠে নামেন লিসান্দ্রো লোপেজের (Lisandro Lopez) বদলি হয়ে।
মাঝমাঠে বল পেয়ে শুরু করেছিলেন নিজের বিখ্যাত সেই দৌড়। গায়ের সঙ্গে তখন লেগে ছিলেন হাঙ্গেরির (Hungary) ডিফেন্ডার ভিলমোস ভানচাক (Vilmos Vanczak)। মেসিকে আটকাতে না পেরে একটা সময় টেনে ধরেন জার্সি। পড়েও যান হঠাৎ করে। কিন্তু রেফারির মনে হয়েছিল মেসি কনুই দিয়ে আঘাত করেছেন সেই ডিফেন্ডারের মুখে! ব্যস, সরাসরি লাল কার্ড।
এহেন মেসিই একদিন সবচেয়ে বেশি ম্যাচ খেলবেন আর্জেন্টিনার হয়ে? সেটাই হয়েছে। জাতীয় দলের জার্সিতে সবচেয়ে বেশি ১৬৮ ম্যাচ খেলার রেকর্ড তাঁর। এই তালিকার দ্বিতীয় স্থানে থাকা জ্যাভিয়ার মাসচেরানোর (Javier Mascherano) ম্যাচ ১৪৭টি। জাতীয় দল ও ক্লাব কেরিয়ার মিলিয়ে অনন্য এক কীর্তি গড়তে চলেছেন ‘এল এম টেন’ (LM 10)। চলতি বিশ্বকাপে (FIFA World Cup 2022) অস্ট্রেলিয়ার (Australia) বিরুদ্ধে নিজের ১০০০তম ম্যাচ খেলতে নামবেন তিনি। আহমদ বিন আলী স্টেডিয়ামে।
কেরিয়ারের প্রায় পুরোটা সময় বার্সেলোনায় কাটিয়েছেন মেসি। কাতালান এই ক্লাবটিতে খেলেছেন সবচেয়ে বেশি ৭৭৮ ম্যাচ। নতুন ক্লাব পিএসজির হয়ে মাঠে নেমেছেন ৫৩ বার। সব মিলিয়ে মেসির পেশাদার কেরিয়ার এই মুহূর্তে ৯৯৯টি ম্যাচে দাঁড়িয়ে আছে। বিশ্বকাপের মতো মঞ্চে মেসি ছুঁতে যাবেন হাজার ম্যাচের মাইলফলক। আন্তর্জাতিক পেশাদার ফুটবলে হাজারের বেশি ম্যাচ খেলা ফুটবলার হাতে গোনা। আর্জেন্টাইনদের মধ্যে এই কীর্তি আছে কেবল জ্যাভিয়ার জানেত্তির (Javier Zanetti)। ৪০ বছর পর্যন্ত ফুটবল খেলা জানেত্তির ম্যাচ ১১০০-এর বেশি।
একইসঙ্গে এই নক আউট ম্যাচে তাঁর ‘আইডল’ দিয়েগো মারাদোনাকে (Diego Maradona) ছাপিয়ে যাওয়ার সুবর্ণ সুযোগও রয়েছে। ইতিমধ্যেই প্রথম আর্জেন্টাইন হিসেবে পাঁচটি বিশ্বকাপ খেলার রেকর্ড গড়েছেন মেসি। আর্জেন্টাইনদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ২২ ম্যাচ খেলার কীর্তিও তাঁর ঝুলিতে। ২১ ম্যাচ নিয়ে এত দিন শীর্ষে ছিলেন মারাদোনা। বিশ্বকাপে আট গোল করে মারাদোনাকে ছুঁয়ে ফেলেছেন। অজিদের বিরুদ্ধে আর এক গোল করলেই ১৯৮৬ সালের বিশ্বকাপ জয়ী অধিনায়ককে ছাপিয়ে যাবেন তিনি।