রবিবার ২৮শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৫ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম

রবিবার ২৮শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

শিরোনাম

আপন জুয়েলার্সে অভিযানে যতটুকু সোনার জন্য অভিযান, ততটুকুই প্রাপ্তি

বুধবার, ২৪ মে ২০১৭
747 ভিউ
আপন জুয়েলার্সে অভিযানে যতটুকু সোনার জন্য অভিযান, ততটুকুই প্রাপ্তি

কক্সবাংলা ডটকম(২৪ মে) :: বনানীতে দুই শিক্ষার্থী ধর্ষণ মামলার পর আপন জুয়েলার্সের পাঁচটি শো-রুমে অভিযান চালায় শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতর। অভিযানে এই পাঁচটি শো-রুম থেকে সাড়ে ১৩ মন সোনা ও ৪২৭ গ্রাম হীরা জব্দ করা হয়, এর বাজার মূল্য প্রায় আড়াইশ কোটি টাকা। এসব সোনা ও হীরার কোনও বৈধ কাগজ নেই বলে জানিয়েছেন অভিযানে সংশ্লিষ্ট শুল্ক কর্মকর্তারা। এরপর ওই পাঁচটি শো-রুমে সিলগালা করে দেওয়া হয়। শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতরের মহাপরিচালক ড. মইনুল খান বলছেন, সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে চালানো অভিযানে তারা যেটা অনুসন্ধান করেছিলেন, সেটাই পেয়েছেন।

যেসব অভিযোগে আপন জুয়েলার্সের বিরুদ্ধে অভিযান চালানো হয়েছে, ঠিক একই ধরনের অভিযোগ অন্যান্য জুয়েলারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধেও রয়েছে। এ কারণে কেবলমাত্র আপন জুয়েলার্সের বিরুদ্ধে শুল্ক গোয়েন্দাদের অভিযান নিয়ে জনমনে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। তবে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতরের মহাপরিচালক ড. মইনুল খান বলেন, ‘সুনির্দিষ্ট তথ্য-প্রমাণের ভিত্তিতেই আপন জুয়েলার্সের বিরুদ্ধে অভিযান চালানো হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে রয়েছে সোনা চোরাচালানসহ নানা অভিযোগ।’

একই বিষয়ে জানতে চাইলে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল মজিদ  বলেন, ‘আপন জুয়েলার্সের অভিযান শুল্ক গোয়েন্দা অধিদফতরের অব্যাহত প্রক্রিয়ার একটি অংশ। কেউ মামলায় পড়েছে বলেই তারা তৎপর হয়েছে— এটা আমি মনে করি না। তবে একটি চমকপ্রদ কাহিনী তৈরির কিছুদিন পর আর কোনও খোঁজ পাওয়া যায় না। এ ধরনের বিষয়গুলো সবসময় ফলোআপ থাকা প্রয়োজন। অর্থনীতির স্বার্থে এগুলো আগে থেকেই স্পষ্ট করা উচিত, যাতে সবাই জানতে পারে। যেমন এতদিন ধরে তারা যে একটা ফাইলআপ করলো, তার কী অ্যাকশন হচ্ছে, সেটা এখন দেখার বিষয়।’

শুধু আপন জুয়েলার্সের বিরুদ্ধে কেন অভিযান চালানো হচ্ছে, অন্যদের বিরুদ্ধে নয় কেন— এমন প্রশ্নের জবাবে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতরের মহাপরিচালক ড. মইনুল খান  বলেন, ‘ঢালাওভাবে কোনও অভিযান শুল্ক গোয়েন্দা অধিদফতর চালাবে না। সোনা ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আমরা একযোগে কাজ করবো। সেখানে সিস্টেমে যদি কোনও ত্রুটি থাকে, সেটা ঠিক করার চেষ্টা করবো। সোনা আমদানিতে আমরা নতুন নীতিমালা তৈরির পক্ষে। এ ব্যবসায় যেন স্বচ্ছতা থাকে। যেহেতু বৈধ সোনার কোনও সরবরাহ নেই। আমরা কিন্তু বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। সেখানে অনেক সোনা মজুদ রয়েছে। সেগুলো যেন যথাযথভাবে নিলাম করা হয় এবং সোনা ব্যবসায়ীরা যাতে বৈধভাবে এসব সোনা পান, এবং আমদানি নীতিমালা অনুযায়ী বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমতি যেন সহজলভ্য হয়, সেজন্যেও উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে ।’

ড. মইনুল খান বলেন, ‘আপনারা জানেন যে সোনা, গাড়ি ও অন্যান্য পণ্যের চোরাচালান ও শুল্ক আইন ভঙ্গের বিরুদ্ধে শুল্ক গোয়েন্দারা গত কয়েক বছর ধরে অভিযান চালিয়ে আসছে। এর দৃশ্যমান ফলাফল রয়েছে। আপন জুয়েলার্সে শুল্ক গোয়েন্দা অভিযান নতুন কিছু নয়। আমরা অভিযোগ পেয়েছি, অনুসন্ধান হয়েছে। আমাদের কাছে ফাইন্ডিং আসছে যে, সেখানে অস্বচ্ছ হিসাব আছে। সেখানে যে সোনা বিক্রি হচ্ছে, সেগুলো অবৈধ পথে চোরাচালানের মাধ্যমে আনা হয়েছে। সেক্ষেত্রে শুল্ক গোয়েন্দারাতো বসে থাকতে পারে না। সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়েছি। আমরা যে অনুসন্ধানটা করেছিলাম সেটাই পেয়েছি। পাঁচটা শো-রুম থেকে সাড়ে ১৩ মন সোনা উদ্ধার করেছি, একইসঙ্গে ৪২৭ গ্রাম ডায়মন্ড উদ্ধার করা হয়েছে। সব মিলিয়ে এর মূল্য আড়াইশ কোটি টাকা। এসব সোনার কোনও কাগজ নেই ও বৈধতা নেই। তাই আপন জুয়েলার্সের বিরুদ্ধে আমাদের অভিযান একেবারেই প্রাসঙ্গিক।’
সিলগালা করে দেওয়া আপন জুয়েলার্সের একটি শাখাহঠাৎ করে বনানীতে ধর্ষণ ঘটনার পর যখন আপন জুয়েলার্সের মালিক দিলদার আহমেদ সেলিমের ছেলে সাফাত আহমেদের বিরুদ্ধে মামলা হয়, তখনই কেন তাদের জুয়েলার্সে অভিযান চালানো হলো? এ প্রশ্নের জবাবে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতরের মহাপরিচালক বলেন, ‘একইসঙ্গে গাড়ির ক্ষেত্রেও যেখানে আমরা অভিযোগ পেয়েছি, সেখানেই অভিযান চালিয়েছি।

মঙ্গলবার (২৩ মে) সকালে সিলেট থেকে বিলাসবহুল মার্সিডিজ গাড়ি উদ্ধারের পর জানা যায়, সেটার মালিক আপন জুয়েলার্সের দিলদার আহমেদ সেলিম ও তার ছেলে সাফাত আহমেদ। শুধুমাত্র বনানী ধর্ষণ ঘটনার জন্যই এসব অভিযান হচ্ছে তা নয়। সার্বিক অর্থে যেখান থেকে অভিযোগ পাচ্ছি, সেটা আমলে নিয়ে আমরা কার্যক্রম গ্রহণ করছি।’

ড. মইনুল খান আরও বলেন, ‘আমরা সোনা ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে নই। আমরা সোনা চোরাচালানের বিরুদ্ধে। আমরা এয়ারপোর্টগুলোতে নিয়মিত অভিযান চালাচ্ছি। গত তিন বছরে প্রায় ১১শ কেজির বেশি সোনা উদ্ধার ও শতাধিক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে শুল্ক গোয়েন্দারা। আমাদের অবস্থান খুবই স্বচ্ছ। বিশেষ করে সোনা চোরাচালানের বিরুদ্ধে আমরা জিরো টলারেন্স নিয়ে কাজ করছি। সোনা ব্যবসায়ীদের মধ্যে অনেক সৎ ব্যবসায়ী আছেন। সুনামের সঙ্গে দীর্ঘদিন যাবত ব্যবসা করছেন। আমরা তাদের সমর্থন দিয়ে যাচ্ছি যেন একটা যুগোপযোগী নীতিমালা করা যায়। তাদের ব্যবসা যেন আরও ভালোভাবে করতে পারে, সে ব্যাপারে আমাদের সমর্থন থাকবে। আপন জুয়েলার্সের অভিযান সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন ঘটনা।’

এসব বিষয়ে অভিমত জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক আবুল বারাকাত বলেন, ‘আমারও প্রশ্ন, কেবল আপন জুয়েলার্সের বিরুদ্ধে অভিযান কেন? অন্যরা নয় কেন?’ তিনি বলেন, ‘যারা সোনার ব্যবসা করেন তাদের সোনা সংগ্রহ ও কেনার প্রক্রিয়া নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে। শুধু বাংলাদেশে নয় আশেপাশের অনেক দেশেই দোকানে যেসব সোনা থাকে, তার সামান্য একটা অংশ লিগ্যাল। বাদ-বাকি অন্যরকম।’

747 ভিউ

Posted ৭:১৬ অপরাহ্ণ | বুধবার, ২৪ মে ২০১৭

coxbangla.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

এ বিভাগের আরও খবর

Editor & Publisher

Chanchal Dash Gupta

Member : coxsbazar press club & coxsbazar journalist union (cbuj)
cell: 01558-310550 or 01736-202922
mail: chanchalcox@gmail.com
Office : coxsbazar press club building(1st floor),shaheed sharanee road,cox’sbazar municipalty
coxsbazar-4700
Bangladesh
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
বাংলাদেশের সকল পত্রিকা সাইট
Bangla Newspaper

ABOUT US :

coxbangla.com is a dedicated 24x7 news website which is published 2010 in coxbazar city. coxbangla is the news plus right and true information. Be informed be truthful are the only right way. Because you have the right. So coxbangla always offiers the latest news coxbazar, national and international news on current offers, politics, economic, entertainment, sports, health, science, defence & technology, space, history, lifestyle, tourism, food etc in Bengali.

design and development by : webnewsdesign.com