কক্সবাংলা রিপোর্ট :: করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে ঈদের এক দিন পর ২৩ জুলাই শুক্রবার ভোর ৬টা থেকে মহামারিকালের সবচেয়ে ‘কঠোরতম’ লকডাউন শুরু হয়েছে কক্সবাজার সহ সারাদেশে। পবিত্র ঈদ-উল-আযহার ঠিক একদিন পরেই, আজ শুক্রবার থেকে শুরু হয়েছে এই লকডাউন। চলবে ৫ আগস্ট পর্যন্ত। তবে এবারের লকডাউন পূর্বের তুলনায় অনেক কঠিন থেকে কঠোরতম হবে।
এদিন সকাল ৬টা থেকে শুরু হওয়া লকডাউনে কঠোর অবস্থানে রয়েছে জেলা প্রশাসন,সেনাবাহিনী, বিজিবি, পুলিশ ও র্যাব।
কক্সবাজার শহর ঘুরে দেখা গেছে, পুরো শহর প্রায় ফাঁকা। সরকারি, বেসরকারি সব ধরনের অফিস বন্ধ রাখা হয়েছে। বিপণি বিতান, দোকানপাট সব বন্ধ রয়েছে। সড়কে যানবাহন ও মানুষের সংখ্যা একেবারেই কম। শুধুমাত্র জরুরি প্রয়োজন আছে, এমন মানুষজনই বাইরে বেরিয়েছেন।
কক্সবাজার থেকে দূরপাল্লার কোনো বাস চলাচল করছে না। আন্তঃজেলা বাসও বন্ধ রয়েছে। জেলার উপকূলীয় মহেশখালী ও কুতুবদিয়া নৌ রুটেও নৌ চলাচল বন্ধ রয়েছে।
শহরের মোড়ে মোড়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের অবস্থান নিতে দেখা গেছে। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া যারা বেরিয়েছেন, তাদেরকে করা হচ্ছে জরিমানা।
সেনাবাহিনী, বিজিবি ও র্যাবের সদস্যদের বিভিন্ন স্থানে টহল দিতে দেখা গেছে।
সবকিছু বন্ধ থাকলেও খাদ্যপণ্যের দোকান, ওষুধের দোকান খোলা রয়েছে।
কক্সবাজারে লকডাউন বাস্তবায়নে পুলিশ কঠোর অবস্থানে রয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা পুলিশ সুপার মো: হাসানুজ্জামান তাহের। তিনি জানান, কেউ জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বাইরে বের হলেই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এই লকডাউনে যা কিছু বন্ধ থাকছে
*সব সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি অফিস বন্ধ। তবে সরকারি কর্মচারীরা নিজ নিজ কর্মস্থলের এলাকায় অবস্থান করবেন এবং দাপ্তরিক কাজ ভার্চুয়ালি সম্পন্ন করবেন।
*সব প্রকার শিল্প কারখানা বন্ধ, যা আগে লকডাউনের মধ্যে খোলা রাখার অনুমতি ছিল।
*সড়ক, রেল ও নৌপথে গণপরিবহন (অভ্যন্তরীণ বিমানসহ) সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ।
*বিপণিবিতান/মার্কেটসহ সব দোকানপাট বন্ধ।
*সকল পর্যটনকেন্দ্র, রিসোর্ট, কমিউনিটি সেন্টার ও বিনোদন কেন্দ্র বন্ধ।
*জনসমাবেশ হয় এই ধরনের সামাজিক (বিবাহোত্তর অনুষ্ঠান, জন্মদিন, পিকনিক পার্টি ইত্যাদি) রাজনৈতিক ও ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান বন্ধ।
লকডাউনের মধ্যে যা কিছু খোলা
*আইনশৃঙ্খলা এবং জরুরি পরিষেবা, যেমন কৃষি পণ্য ও উপকরণ (সার, বীজ, কীটনাশক, কৃষি যন্ত্রপাতি ইত্যাদি) খাদ্যশস্য ও খাদ্যদ্রব্য পরিবহণ, ত্রাণ বিতরণ, স্বাস্থ্যসেবা, কোভিড-১৯ টিকা দেওয়া, জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) প্রদান কার্যক্রম, রাজস্ব আদায় সম্পর্কিত কার্যাবলী, বিদ্যুৎ, পানি, গ্যাস ও জ্বালানি, ফায়ার সার্ভিস, টেলিফোন ও ইন্টারনেট (সরকারি-বেসরকারি), গণমাধ্যম (প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া), বেসরকারি নিরাপত্তা ব্যবস্থা, ডাক সেবা, ব্যাংক, ভিসা সংক্রান্ত কার্যক্রম, সিটি করপোরেশন ও পৌরসভা (পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা, সড়কের বাতি ব্যবস্থাপনা ইত্যাদি কার্যক্রম), সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি, ফার্মেসি ও ফার্মাসিউটিক্যালসহ অন্যান্য জরুরি/অত্যাবশ্যকীয় পণ্য ও সেবার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অফিসের কর্মচারী ও যানবাহন প্রাতিষ্ঠানিক পরিচয়পত্র দেখিয়ে চলাচল করতে পারবে।
*জরুরি পণ্য পরিবহনে নিয়োজিত ট্রাক, লরি, নৌযান, পণ্যবাহী রেল ও ফেরি এ নিষেধাজ্ঞার আওতায় থাকছে না। ফেরিতে কেবল পণ্যবাহী গাড়ী ও অ্যাম্বুলেন্স পারাপার করা যাবে।
*খাদ্য ও খাদ্যদ্রব্য উৎপাদন ও প্রক্রিয়াজাতকরণ মিল কারখানা; কোরবানির পশুর চামড়া পরিবহন, সংরক্ষণ ও প্রক্রিয়াজাতকরণ এবং ঔষধ, অক্সিজেন ও কোভিড-১৯ প্রতিরোধে ব্যবহারের জন্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য উৎপাদনকারী শিল্প লকডাউনে খোলা থাকছে।
*কাঁচাবাজার এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৩টা পর্যন্ত স্বাস্থ্যবিধি মেনে কেনা-বেচা করা যাবে।
*খাবারের দোকান, হোটেল-রেস্তোরাঁ সকাল ৮টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত শুধু খাবার বিক্রি (অনলাইন/টেকওয়ে) করতে পারবে। দোকানে বা রেস্টুরেন্টে বসিয়ে খাবার খাওয়াতে পারবে না।
*বিমান, সমুদ্র, নৌ ও স্থলবন্দর এবং সংশ্লিষ্ট অফিস নিষেধাজ্ঞার আওতার বাইরে থাকছে।
Posted ৫:০০ অপরাহ্ণ | শুক্রবার, ২৩ জুলাই ২০২১
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta