শুক্রবার ২৬শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৩ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম

শুক্রবার ২৬শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

শিরোনাম

কক্সবাজার সংলগ্ন বঙ্গোসাগরের পানি ৩০ বছরের মধ্যে ব্যবহার অনুপযোগী হওয়ার আশঙ্কা

শুক্রবার, ১৪ জানুয়ারি ২০২২
207 ভিউ
কক্সবাজার সংলগ্ন বঙ্গোসাগরের পানি ৩০ বছরের মধ্যে ব্যবহার অনুপযোগী হওয়ার আশঙ্কা

বিশেষ প্রতিবেদক :: কক্সবাজারের  বঙ্গোপসাগর প্লাস্টিক বর্জ্য ফেলাসহ নানাভাবে দূষণের শিকার হচ্ছে। এসব কারণে আগামী ৩০ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে ব্ল ইকোনোমির খ্যাত কক্সবাজারের সমুদ্রের বিশাল জলরাশি ও এর তলদেশের বিভিন্ন প্রকার সম্পদকে কাজে লাগানোর অর্থনীতি এ সাগর ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়ার আশঙ্কা করছেন বিজ্ঞানীরা।

এই অবস্থা থেকে পরিত্রাণে দেশের জনগণের মধ্যে সমুদ্র সংক্রান্ত জ্ঞান ছড়িয়ে দেওয়ার তাগিদ দিয়েছেন সমুদ্র বিজ্ঞানীরা। এ জন্য পাঠ্যপুস্তকে সমুদ্র সংক্রান্ত বিষয় অন্তর্ভুক্ত করার পরামর্শ তাঁদের।সম্প্রতি কক্সবাজারে বাংলাদেশ সমুদ্র গবেষণা ইনস্টিটিউট (বুরি) এর এক সেমিনারে বিশেষজ্ঞরা এ সব মতামত তুলে ধরেন মহাপরিচালক সাঈদ মাহমুদ বেলাল।

তিনি বলেন, বর্তমানে প্রথম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত কোনো পাঠ্য পুস্তকে সমুদ্র সংক্রান্ত বিষয় পড়ানো হয় না। অনেকে সাগর দূষণ কথাটাও বোঝেন না এবং মানতেও চানা না। সিংহভাগ মানুষের মাঝে সমুদ্র সম্পর্কে কোনো ধারণা নেই।

তিনি বলেন, দেশে সমুদ্র বিজ্ঞানের শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও গবেষকরাও এ পর্যন্ত সমুদ্রের বিশাল রহস্যের কিনারা করতে পারেননি। সবেমাত্র শতকরা ৫ ভাগ জানতে পেরেছে পরিবেশগত বিপর্যয়ের কারণে গত ২ বছর ধরে কক্সবাজার উপকূলে কাছিম আসছে না বলে জানান নেকমের ব্যবস্থাপক সমুদ্র বিজ্ঞানী আবদুল কাইয়ুম।

ড. ওয়াহিদুল আলম সাগরের পানিতে মাইক্রোবায়াল পলিউশন বা ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়া দূষণ বেড়ে যাওয়ার কারণে পর্যটন শিল্পও হুমকির মুখে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করেন।

সূত্র জানায়, সাগরের সম্পদ আহরণে দেশকে সমৃদ্ধ করতে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সঙ্গে ২০১৬ সালের আগস্টে চুক্তি করেছে সরকার। এ চুক্তির মাধ্যমে ইইউর অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশের বিশাল সমুদ্র সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবহার নিশ্চিত করতে চায় সরকার। চুক্তির আওতায় সমুদ্র অর্থনীতির বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে যৌথ গবেষণা করবে সমুদ্র গবেষণায় দক্ষ ইইউ। এরপর এ সম্পদ কীভাবে ব্যবহার করা যায় সে বিষয়ে সরকারের কাছে সুপারিশমালা তুলে ধরা হবে। এ ছাড়া সমুদ্র সম্পদ আহরণ ও সমুদ্রসীমার ব্যবহারসহ বিভিন্ন বিষয়ে ভারত ও চীনের সঙ্গে পৃথক সমঝোতা স্মারকে সই করেছে বাংলাদেশ।

প্রসঙ্গত,বর্তমান বিশ্বে বস্নু ইকোনমি বা নীল অর্থনীতি বা সমুদ্র অর্থনীতিকে সম্ভাবনাময় বিকল্প অর্থনীতি হিসেবে বিবেচনা করা হয়। বস্নু ইকোনমির আধুনিক সংজ্ঞায় বলা হয়েছে, সমুদ্রে যে পানি আছে এবং এর তলদেশে যে পরিমাণ সম্পদ রয়েছে, সেসব সম্পদ যদি আমরা টেকসই উন্নয়নের জন্য ব্যবহার করি তবে তাকে বস্নু ইকোনমি বা নীল অর্থনীতি বলে।

জানা যায়,বঙ্গোপসাগরের সীমানা নিয়ে মায়ানমার ও ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের বিরোধ চলে আসছিল দীর্ঘদিন ধরে। ২০১২ সালে আন্তর্জাতিক আদালতের রায়ে মায়ানমারের সাথে ও ২০১৪ সালে ভারতের সাথে সমুদ্রসীমা বিরোধ নিষ্পত্তি হয়। যার ফলে ১ লাখ ১৮ হাজার ৮১৩ বর্গকিলোমিটার সমপরিমাণ টেরিটোরিয়াল সমুদ্র এলাকায় বাংলাদেশের নিরঙ্কুশ কর্তৃত্ব, অধিকার ও সার্বভৌমত্ব প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। যার আয়তন প্রায় আরেকটি বাংলাদেশের সমান। আরো আছে ২০০ নটিক্যাল মাইল একচ্ছত্র অর্থনৈতিক অঞ্চল। আর কক্সবাজারের উপকূল থেকে ৫৫৪ নটিক্যাল মাইল পর্যন্ত মহীসোপানের তলদেশে সব ধরনের সম্পদের ওপর রয়েছে পুরো অধিকার।

দেশের স্থলভাগে যে পরিমাণ সম্পদ বিদ্যমান, তার প্রায় সমপরিমাণ (৮১ শতাংশ) সম্পদ সমুদ্রের তলদেশে রয়েছে। কক্সবাজার সংলগ্ন বঙ্গোপসাগরের তলদেশে যে খনিজ সম্পদ রয়েছে তা পৃথিবীর আর কোনো সাগর, উপসাগরে নেই বলেও ধারণা করা হয়। খনিজ সম্পদের মধ্যে রয়েছে প্রায় ১৭ ধরনের খনিজ বালি। এর মধ্যে বেশি পরিমাণে পাওয়া যায় জিরকন, রুটাইল, সিলিমানাইট, ইলমেনাইট, ম্যাগনেটাইট, গ্যানেট, কায়ানাইট, মোনাজাইট, লিকোক্সিন ইত্যাদি। যার প্রত্যেকটি পদার্থই মূল্যবান, তবে মোনাজাইট অতিমূল্যবান পদার্থ। এই তেজস্ক্রিয় পদার্থ পারমাণবিক বোমা তৈরিতে ও পারমাণবিক চুলি্লতে শক্তি উৎপাদক হিসেবে ব্যবহৃত হয়। সাগরে ৪৭৫ প্রজাতির মাছসহ ৩৬ প্রজাতির চিংড়ি, ২০ প্রজাতির কাঁকড়া ও ৩৩৬ প্রজাতির শামুক-ঝিনুক রয়েছে। এছাড়া রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন সম্পদ। সমুদ্র জয়ের ফলে বঙ্গোপসাগরে ভারতের হাতে থাকা ১০টি গ্যাস বস্নকের মধ্যে আটটি এবং মায়ানমারের অধীনে থাকা ১৩টির মালিকানা বাংলাদেশ পেয়েছে। এসব বস্নক থেকে প্রায় ৪০ ট্রিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস পাওয়া সম্ভব। বঙ্গোপসাগরে বাংলাদেশের সমুদ্রসীমায় রয়েছে ৪টি মৎস্যক্ষেত্র। মৎস্য সম্পদ ছাড়াও সামুদ্রিক প্রাণী, সামুদ্রিক আগাছা, লতা, গুল্মতেও ভরপুর বঙ্গোপসাগর।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর এবং অর্থনীতিবিদ ড. মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন বাসসকে বলেন,বাংলাদেশের বিশাল জনগোষ্ঠীর জন্য কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা যাবে সমুদ্র নির্ভর ব্লু- ইকোনোমির বদৌলতে।আর সমুদ্র বিজয়ের পর খুলে গেছে নীল বিপ্লবের অপার দুয়ার। টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা ও ভিশন-২০৪১ অর্জনে ব্লু-ইকনমি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।

207 ভিউ

Posted ১২:৩৪ অপরাহ্ণ | শুক্রবার, ১৪ জানুয়ারি ২০২২

coxbangla.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

Editor & Publisher

Chanchal Dash Gupta

Member : coxsbazar press club & coxsbazar journalist union (cbuj)
cell: 01558-310550 or 01736-202922
mail: chanchalcox@gmail.com
Office : coxsbazar press club building(1st floor),shaheed sharanee road,cox’sbazar municipalty
coxsbazar-4700
Bangladesh
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
বাংলাদেশের সকল পত্রিকা সাইট
Bangla Newspaper

ABOUT US :

coxbangla.com is a dedicated 24x7 news website which is published 2010 in coxbazar city. coxbangla is the news plus right and true information. Be informed be truthful are the only right way. Because you have the right. So coxbangla always offiers the latest news coxbazar, national and international news on current offers, politics, economic, entertainment, sports, health, science, defence & technology, space, history, lifestyle, tourism, food etc in Bengali.

design and development by : webnewsdesign.com