শুক্রবার ২৬শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৩ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম

শুক্রবার ২৬শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

শিরোনাম

কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে প্রতিমা বিসর্জনে দুর্গা মা’কে শেষ বিদায় জানাতে লাখো ভক্তের ঢল

মঙ্গলবার, ০৮ অক্টোবর ২০১৯
225 ভিউ
কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে প্রতিমা বিসর্জনে দুর্গা মা’কে শেষ বিদায় জানাতে লাখো ভক্তের ঢল

কক্সবাংলা রিপোর্ট(৮ অক্টোবর) :: বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত কক্সবাজারে লাখও ভক্তের উপস্থিতিতে শেষ হয়েছে দুর্গা প্রতিমা বিসর্জন অনুষ্ঠান। শোক আর গভীর শ্রদ্ধায় মা দুর্গাকে বিদায় জানাতে সমুদ্র সৈকতে ভীড় জমায় হাজার হাজার ভক্তরা। এসময় পূজার আনন্দে ভাসে সৈকত শহর কক্সবাজার। মঙ্গলবার ৮ অক্টোবর সনাতন ধর্মালম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজার শেষদিন বিজয়া দশমীতে সৈকতের লাবণী পয়েন্টে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে জেলা পূজা উদযাপন পরিষদ।এবছর জেলার ৭১টি ইউনিয়নের ২৯৬টি পূজামন্ডপে আয়োজন হয়েছিল শারদীয় দুর্গাপূজার। এছাড়াও এবার মিয়ানমার থেকে এসে আশ্রয় নেওয়া উখিয়ার কুতুপালং হিন্দু রোহিঙ্গা ক্যাম্পেও জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে দুর্গাপূজার আয়োজন করা হয়েছে।

মঙ্গলবার বিকালে সৈকতে সাগরের পানিতে বিজয়ের অশ্রু রেখে দেবী দুর্গাকে বিদায় জানালেন হিন্দু সম্প্রদায়ের পুণ্যার্থী মানুষ। সনাতন ধর্মের বিশ্বাস অনুযায়ী, মহালয়ার দিন কন্যারূপে ধরায় আসেন দুর্গা। বিসর্জনের মধ্য দিয়ে তাকে এক বছরের জন্য বিদায় জানানো হয়। তাদের বিশ্বাস, এবারে দেবীর আগমন ও প্রস্থান তেমন কোনো শুভবার্তা বয়ে আনেননি।

আয়োজকেরা জানান, সৈকতের এ অনুষ্ঠানে বিভিন্ন উপজেলা থেকে আসা ৫০টির অধিক প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া হয়েছে।আর প্রতিমা বিসর্জন অনুষ্ঠানকে ঘিরে বেলা ৩টার পর থেকে ট্রাকে করে শোভাযাত্রা সহকারে প্রতিমা নিয়ে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের লাবণী পয়েন্টে আসতে শুরু করে সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। বিসর্জনের আগ পর্যন্ত সৈকতের বালুচরে রাখা দুর্গা প্রতিমা ঘিরে ধরে চলে ভক্তদের শেষ আরাধনা ও আরতি। শুধু তাই নয়, নাচে-গানে এক অন্য রকম আনন্দমুখর পরিবেশ সৃষ্টি হয় বিশ্বের দীর্ঘতম এ সৈকতে। অনুষ্ঠানকে ঘিরে সমাগম ঘটে পর্যটকসহ জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে আগত লাখও মানুষের। সব ধর্মের লাখো মানুষের উপস্থিতিতে সৈকত তীরের অনুষ্ঠানস্থল কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায়। সনাতন ধর্মের পুণ্যার্থী ছাড়াও এই মিলনমেলায় ছিলেন দেশি বিদেশি হাজারো পর্যটক। সৈকতে লক্ষাধিক মানুষের সম্প্রীতি সমাবেশে বাঁধভাঙা আনন্দ উল্লাসে মেতেছেন সবাই।

সৈকতের লাবণী পয়েন্টের বিজয়া মঞ্চ থেকে বিসর্জনের অনুষ্ঠান শুরু হয় বিকাল ৪ টায়।

 

জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারন সম্পাদক বাবুল শর্মার সঞ্চালনায় জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি অ্যাডভোকেট রনজিত দাশের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন-কক্সবাজার সদর-রামু আসনের সংসদ সদস্য সাইমুম সরওয়ার কমল, বিশেষ অতিথি ছিলেন মহেশখালী-কুতুবদিয়া আসনের সংসদ সদস্য আশেকউল্লাহ রফিক,সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ কানিজ ফাতেমা আহমেদ, জেলা প্রশাসক মো: কামাল হোসেন, জেলা পুলিশ সুপার এ বি এম মাসুদ হোসেন জেলা ট্যুরিস্ট পুলিশ সুপার মো: জিল্লুর রহমান, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট সিরাজুল মোস্তফা, সাধারণ সম্পাদক ও কক্সবাজার পৌরসভার মেয়র মুজিবুর রহমান,পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি নজিবুল ইসলাম,হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের ট্রাস্টি অধ্যাপক প্রিয়তোষ শর্মা চন্দন প্রমুখ।

প্রতিমা বিসর্জনে আগতরা জানান, ‘এটি তো কেবলই বিসর্জন নয়, এটি একটি সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির উৎসব। উৎসব প্রিয় বাঙ্গালির আরেকটি প্রাণের উৎসব।’ সমুদ্রে ‘মা দূর্গা’র প্রতীমা বিসর্জন দিতে আসা তরুণী রুম্পা দাশএভাবেই যেন সব কিছুকে বুঝিয়ে দিলেন। কক্সবাজার সমুদ্র পাড়ে হাজারে হাজারে মানুষ দেখে না বলে উপায় নেই এটি একটি উৎসব।

প্রতিবারের মতোই পৃথিবীর দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকতে প্রতীমা বিসর্জন হয়ে উঠেছিল এক প্রাণের উৎসব। ধর্মের আচার অনুষ্ঠান গুলো হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের হলেও উৎসবে মেতে উঠেছেন সবাই। এই উৎসবে কে নেই, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান কিংবা মুসলমান!

যে দিকে চোখ যায় মানুষ আর মানুষ। চোখের সীমানা যতদূর মানুষও যেন ততদূর। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের দূর্গোৎসবের প্রতীমা বিসর্জনের এই দিনে জাতি ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে সমুদ্র সৈকতে ভীড় করেছিলেন অন্তত দেড় লাখ মানুষ। ঢোল তবলা, রং মেখে সঙ সেজে, হাসি আর কান্নায় দূর্গাকে বিদায় দিয়েছে সনাতন ধর্মাবলম্বী বলে পরিচিত হিন্দুরা। আর মুসলমান, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টানরা যোগ দিয়েছিল ভ্রাতৃত্বের বন্ধনে। জাতিতে জাতিতে মিলেমিশে একাকার ছিল আজকের সমুদ্র সৈকত। বিজয়া দশমীতে প্রতিবছরই এমন মানুষেরই সমাবেশ ঘটে সৈকতে। কিন্তু এবার এই ভীড়টা ছিল একটু বেশিই। সাধারণের মতে, এই সংখ্যা লাখ ছাড়িয়ে যাবে। সমুদ্র সৈকতের লাবনী পয়েন্ট থেকে দক্ষিণে কলাতলী পয়েন্ট আর উত্তরে হোটেল শৈবাল পয়েন্ট পর্যন্ত দীর্ঘ ৫ কিলোমিটার সৈকত ছিল লোকে লোকারণ্য।

এর আগে কক্সবাজার জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে বেলা তিনটার পর থেকেই একে একে প্রতীমা গুলো আসতে শুরু করে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে। বিকাল ৫টা পর্যন্ত প্রতিমা আসতেই থাকে। এক সময় সৈকতের লাবনী পয়েন্টের বিশাল এলাকাজুড়ে মানুষ আর প্রতীমায় ভরে যায়।

কক্সবাজারের হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রীষ্টান ঐক্য পরিষদের সা:ধারণ সম্পাদক ও ট্রাস্টি অধ্যাপক প্রিয়তোষ শর্মা মনে করেন, বিজয়া দশমী হিন্দুদের উৎসব নয়। এটি একটি অসাম্প্রদায়িক উৎসব। এখানে হিন্দুদের চেয়ে মুসলমানরাই যোগ দেন বেশি। এভাবেই মির্মল ভালোবাসায় দূর্গাকে বিসর্জন দিয়েছে সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। আর সেই মিছিলে যোগ দিয়েছেন মুসলমান, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টানসহ আর নাম না জানা অনেক ধর্মাবলম্বী মানুষ। এবারও সমুদ্রপাড়ের মঞ্চে আয়োজন করা হয় সঙ্গীতানুষ্টান। গানের তালে তালেই সমুদ্রের লোনা পানিতে বিসর্জনের মধ্যদিয়ে বিদায় জানানো ‘মা দূর্গা’ দেবীকে।

 

225 ভিউ

Posted ৭:০০ অপরাহ্ণ | মঙ্গলবার, ০৮ অক্টোবর ২০১৯

coxbangla.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

এ বিভাগের আরও খবর

Editor & Publisher

Chanchal Dash Gupta

Member : coxsbazar press club & coxsbazar journalist union (cbuj)
cell: 01558-310550 or 01736-202922
mail: chanchalcox@gmail.com
Office : coxsbazar press club building(1st floor),shaheed sharanee road,cox’sbazar municipalty
coxsbazar-4700
Bangladesh
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
বাংলাদেশের সকল পত্রিকা সাইট
Bangla Newspaper

ABOUT US :

coxbangla.com is a dedicated 24x7 news website which is published 2010 in coxbazar city. coxbangla is the news plus right and true information. Be informed be truthful are the only right way. Because you have the right. So coxbangla always offiers the latest news coxbazar, national and international news on current offers, politics, economic, entertainment, sports, health, science, defence & technology, space, history, lifestyle, tourism, food etc in Bengali.

design and development by : webnewsdesign.com