এম জিয়াবুল হক,চকরিয়া(৬ জানুয়ারী) :: কক্সবাজার-চট্টগ্রাম মহাসড়কের চকরিয়া পৌরশহরের বাণিজ্যিক জনপদ চিরিঙ্গা সোসাইটিকে বর্তমানে যানজটের শহর বলা যায়। শহরজুড়ে অনিয়ন্ত্রিত পরিবহন কাউন্টার, মহাসড়কের মাঝপয়েন্টে সবধরণের যানবাহন থামিয়ে যাত্রী উঠানামা এবং ফুটপাতের জায়গায় দোকানপাট বসিয়ে বেচাকেনাসহ বেশ কিছু অনিয়মের ঘটনায় যানজটে নাকাল পৌরবাসি।
অবশ্য গেল একযুগের বেশি সময় ধরে চকরিয়া উপজেলা প্রশাসন পৌরসভা কর্তৃপক্ষের সহযোগিতায় শহরের যানজট নিরসনে বারবার উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করেছে। এমনকি বাণিজ্যিক জনপদ থেকে যানজটের চাপ কমাতে প্রায় আড়াই কোটি টাকা ব্যয় সাপেক্ষে চকরিয়া পৌরসভার অর্থায়নে একযুগ আগে নতুন একটি বাস টার্মিনালও নির্মাণ করা হয়েছে। কিন্তু এসব আয়োজন আর প্রচেষ্ঠার পরও অদ্যবদি চকরিয়া পৌরশহরের যানজট প্রশসন আলোর মুখ দেখেনি।
অভিযোগ রয়েছে, দুরবর্তী এলাকায় টার্মিনালের অবস্থানের ফলে যাত্রী সংকট হবে এবং সেখানে ক্রেতা সাধারণ সওদা করতে যাবে না এইধরণের অজুহাতে সংশ্লিষ্টরা চকরিয়া পৌর বাসটার্মিনাল কেন্দ্রীক হয়নি এতদিন। এ কারণে দিনের পর দিন চকরিয়া পৌরশহরের বাণিজ্যিক জনপদ চিরিঙ্গা সোসাইটিতে যানজটের মাত্রা বেড়ে চলছে। এতে বাড়ছে জনভোগান্তি। এই অবস্থা থেকে উত্তোরণে এবার ব্যতিক্রমী একটি কর্মসুচি নিয়ে এগিয়ে এসেছেন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন স্বাধীন মঞ্চ। সংগঠনটি ইতোমধ্যে চকরিয়া পৌরশহরের যানজট নিরসনে চকরিয়া উপজেলা প্রশাসন ও পৌরসভা কর্তৃপক্ষকে অনেকগুলো সুপারিশ জানিয়েছেন।
তাদের আবেদন ও সুপারিশের আলোকে সর্বশেষ রবিবার ৫ জানুয়ারী চকরিয়া পৌরশহরে যানযট নিরসনে যাত্রীবাহি বাস ও সবধরণের যানবাহন মালিক এবং শ্রমিক সংগঠনের নেতৃবৃন্ত, পরিবহন কাউন্টার সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও হকার সমিতির সাথে মতবিনিময় করেছেন চকরিয়া উপজেলা প্রশাসন ও চকরিয়া পৌরসভা প্রশাসন। আশার কথা হলো মতবিনিময় সভার সিদ্বান্তের আলোকে অবশেষে শৃঙ্খলা ফিরছে চকরিয়া পৌরশহরের বাণিজ্যিক জনপদে। সভায় উপস্থিত একাট্টা হয়েছেন যানজট নিরসনে করণীয় নির্ধারণে।
চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন উপজেলা নির্বাহী নুরুদ্দীন মুহাম্মদ শিবলী নোমান।
এতে উপস্থিত থেকে বক্তব্য দেন চকরিয়া পৌরসভার মেয়র আলমগীর চৌধুরী, চিরিঙ্গা ইউপি চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিন, চকরিয়া পৌর সচিব মাসউদ মোর্শেদ। মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন চকরিয়া সড়ক ও জনপদ বিভাগের প্রতিনিধি, যাত্রীবাহি বাস সৌদিয়া, এসআলম, শ্যামলী, হানিফ, সেন্টমার্টিন, এনা পরিবহন কাউন্টার ও মাইক্রোসহ সিএনজি, টমটম লাইন পরিচালনাকারী কর্মকর্তা, এসব পরিবহন মালিক ও শ্রমিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ এবং হকার সমিতির নেতৃবৃন্দ।
মতবিনিময় সভার সিদ্বান্তের আলোকে চকরিয়া পৌরসভার মেয়র আলমগীর চৌধুরী জানিয়েছেন, আগামী ১১ জানুয়ারী থেকে চকরিয়া পৌরশহরের ফুটপাতে গড়ে উঠা অবৈধ দোকান-কাউন্টার উচ্ছেদ সহ পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতা অভিযান পরিচালনা করা হবে। এরপর ১৫ জানুয়ারী থেকে পুরাতন এসআলম কাউন্টারের আশেপাশে গড়ে উঠা বিভিন্ন যানবাহনের কাউন্টার উচ্ছেদ করে ঐ কাউন্টারগুলো চকরিয়া বাস টামিনালে স্থানান্তর প্রক্রিয়া শুরু করা হবে।
এছাড়া বক্স রোড় অর্থাৎ এনসিসি ব্যাংক হতে থানা রাস্তার মাথা পর্যন্ত কোন ধরণের গাড়ি দাঁড়িয়ে থাকতে পারবে না। আর মার্কেটের সামনে কোন হকার বসানো যাবে না। উপরোক্ত আদেশ কেউ অমান্য করলে তার বিরুদ্ধে যথাযথ আইনী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে
চকরিয়া পৌরসভার মেয়র আলমগীর চৌধুরী বলেন, পৌরসভা থেকে মার্কেটের সামনে ফুটপাতে হকার বসাতে কাউকে কোন প্রকার ইজারা দেয়া হয়নি। চকরিয়া পৌর প্রশাসনের অন্তরালে ফুটপাতের হকার থেকে কেউ যদি অবৈধ অর্থ আদায় করে তাহলে সরাসরি পৌর প্রশাসনকে অবহিত করার জন্য অনুরোধ করেছেন মেয়র আলমগীর চৌধুরী।
Posted ১০:৫৬ অপরাহ্ণ | সোমবার, ০৬ জানুয়ারি ২০২০
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta