কক্সবাংলা ডটকম(৫ সেপ্টেম্বর) :: অবশেষে ঐতিহাসিক মুহূর্তের সাক্ষী হতে চলেছে ভারত। খবর, সব ঠিক থাকলে আজ রাতেই চাঁদের মাটি ছোঁবে চন্দ্রযান ২ (Chandrayaan 2)। শুক্রবার রাত ১:৫৫ মিনিটে চন্দ্রপৃষ্ঠে অবতরণ করার কথা রয়েছে এই মহাকাশ যানের। ঘটনা বাস্তবায়িত হলে চাঁদের দক্ষিণ মেরুর কাছাকাছি প্রথম পৌঁছনোর ইতিহাস গড়বে ভারত। এবং সেই ইতিহাসের সাক্ষী থাকবেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (PM Narendra Modi)। খবর, স্কুল পড়ুয়াদের নিয়ে তিনি ইসরোর নিয়ন্ত্রণ কক্ষ থেকে লাইভে দেখবেন এই অবতরণ।
যদিও খাতায় কলমে তা শনিবার রাত হয়ে যাচ্ছে, তবু নজরে থাকবে বিক্রমের অবতরণের শেষ ১৫ মিনিট৷ ইসরো জানাচ্ছে এই অবতরণের সময়টিই সবচেয়ে উদ্বেগের মুহূর্ত গোটা প্রজেক্টে৷
ইসরোর পক্ষ থেকে ‘সফট ল্যাণ্ডিং’-এর আশা করা হচ্ছে৷ অবতরণ সফল হলে শনিবার ভোর সাড়ে পাঁচটা থেকে সাড়ে ছটার মধ্যে প্রজ্ঞান রোভার বেরিয়ে আসবে বিক্রম ছেড়ে৷ তারপরেই শুরু হবে চাঁদের অজানা পৃষ্ঠে ভারতের পদচারণ৷
চন্দ্রায়ন ২ এমন একটি মিশন, যা পৃথিবীর কোনও দেশ এর আগে করেনি৷ কারণ চাঁদের অন্ধকার দিকটি সম্পর্কে তথ্য তুলে আনবে প্রজ্ঞান৷ এই প্রজ্ঞান নিয়মিত যোগাযোগ রাখবে বিক্রম ল্যাণ্ডারের সঙ্গে৷ তার মাধ্যমেই পৃথিবীতে এসে পৌঁছবে ছবি ও তথ্য৷ চাঁদের দক্ষিণ মেরুর নানা গুরুত্বপূর্ণ তথ্য হাতে পাবে ইসরো৷ মূলত কোন কোন খনিজ পদার্থে পূর্ণ সে অঞ্চল, তা জানা যাবে৷
বিজ্ঞানীরা বলছেন, চাঁদের এই অংশটিতে যে পাথর রয়েছে তা প্রায় ৪বিলিয়ন বছরের পুরোনো৷ বিজ্ঞানীরা মনে করছেন, এখানেই ছিল এক বিশালকার সমুদ্র৷ সেই সমুদ্রের তরল পাথর জমাট বেঁধে চাঁদের মাটিতে এই পাথর জমেছে৷
ইতিমধ্যে বেশ কিছু ছবি পাঠায় চন্দ্রায়ন ২৷ মোট চারটি ছবি প্রকাশ করা হয়। মহাকাশ থেকে পৃথিবীকে কেমন দেখাচ্ছে, সেই ছবিই প্রকাশ করা হয়। ট্যুইট করে সেই ছবিগুলি প্রকাশ করে ইসরো। চন্দ্রযানের ল্যান্ডার বিক্রমের LI4 ক্যামেরা থেকে তোলা হয় সেই ছবি। একাধিক দিক থেকে তোলা হয় ছবিগুলি। ৩ অগস্ট, শনিবার ছবিগুলি পাঠায় চন্দ্রায়ন ২৷
কীভাবে বিক্রম চাঁদের মাটি ছোঁবে, সেই সম্পর্কে তথ্য দিয়ে একটি ভিডিও প্রকাশ করে ইসরো৷ ইসরো জানায়, মোট তিনটি ক্যামেরার সাহায্যে ছবি তোলা হবে৷ ল্যাণ্ডার পজিশন ডিটেকশন ক্যামেরা বা এলপিডিসি, ল্যাণ্ডার হরাইজেনটল ভেলোসিটি ক্যামেরা বা এলএইচভিসি এবং ল্যাণ্ডার হ্যাজারডাস ডিটেকশন ক্যামেরা বা এলএইচডিএসি৷ বিক্রমের অবতরণের প্রতি মুহুর্তের ছবি সংগ্রহ করা হবে এই তিনটি ক্যামেরার মাধ্যমে৷
এছাড়াও চন্দ্রপৃষ্ঠের তাপমাত্রা, পৃষ্ঠদেশের ভূমির মান ও তার আকার সম্পর্কে তথ্য দেবে দুটি কেএ ব্যাণ্ড অলটিমিটার ১ ও ২৷ এছাড়াও থাকছে লেসার অলটিমিটার বা লাসা৷ বিক্রম ল্যান্ডারে রয়েছে ৫টি ৮০০এন লিকুইড থ্রাস্টার ইঞ্জিন, টাচডাউন সেন্সর ও সোলার প্যানেল৷ এর চারদিকে আটকে থাকা চারটি ইঞ্জিন লাগাতার কাজ করে চলেছে৷
এবার প্রতীক্ষা চাঁদের মাটি ছোঁওয়ার৷ তারপরেই ইতিহাসের পাতায় নাম তুলে ফেলবে ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরো৷
Posted ১১:৩২ পূর্বাহ্ণ | শুক্রবার, ০৬ সেপ্টেম্বর ২০১৯
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta