কক্সবাংলা ডটকম(১০ মার্চ) :: সরকার বিরোধী আন্দোলনের আওয়াজ দিয়ে বিএনপি আবার পিছু হঠলো। বিএনপির মধ্যে আন্দোলন নিয়ে সুস্পষ্ট মতবিরোধ দেখা দিয়েছে। বিএনপির একটি অংশ মনে করছে যে এখুনি সরকার বিরোধী আন্দোলনে গেলে হিতে বিপরীত হবে এবং এটাতে বিএনপির লাভের চেয়ে ক্ষতি বেশি হবে। তারা এখন আন্দোলনের পক্ষে মোটাদাগে তিনটি যুক্তি দেখাচ্ছে।
প্রথমত তারা বলছেন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির বিষয়টি এই আন্দোলনের সঙ্গে সম্পৃক্ত। যদি বিএনপি সরকার বিরোধী বড় ধরনের আন্দোলনে যায় তাহলে এখন খালেদা জিয়া যেটুকু মুক্ত জীবন-যাপন করছে সেটুকু বাধাগ্রস্থ হতে পারে। কাজেই খালেদা জিয়াকে বিদেশে পাঠানোর আগে বড় ধরনের আন্দোলন করা সমীচীন হবে না।
দ্বিতীয় কারণ হিসেবে তারা মনে করছে আর কদিন পরেই রোজা শুরু হবে। কাজেই একটি আন্দোলন তুঙ্গে তুলতে যে সময় লাগে সেই সময় তাদের হাতে নেই। এখন আন্দোলন করার বাস্তব পরিস্থিতি নেই।
তৃতীয় কারণ হিসেবে তারা মনে করছে, রাজনৈতিক একটি সংগঠন যদি শক্তিশালী না থাকে বা সংগঠন যদি আন্দোলনের জন্য প্রস্তুত না হয় তাহলে সেই আন্দোলনে জনগণকে সম্পৃক্ত করা সম্ভব হয় না। আর বিএনপির এই পক্ষের মানুষ মনে করছে আন্দোলনের আগে বিএনপিকে আগামী ৬ মাস বা ১ বছরের মধ্যে সংগঠন গোছাতে হবে।
তবে এই মতের পক্ষে মূল ব্যক্তি হলেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি আরো একটু সময় নিয়ে আগামী বছরের শুরু নাগাদ একটি আন্দোলন শুরুর পক্ষে। আর এজন্যই তিনি বারবার আন্দোলনের লাগাম টেনে ধরছেন। অন্যদিকে বিএনপির একটি অংশ মনে করছে যে, এখন থেকেই যদি ধাপে ধাপে আন্দোলন গড়ে তোলা না যায়, তাহলে ১ বছর কেনো ১০ বছর পরও আন্দোলন গড়ে তোলা যাবে না। এখন থেকে আন্দোলনের চেষ্টা করতে হবে এবং সরকারকে চাপে রাখতে হবে। তারা মনে করছেন নানা কারণে আন্দোলনের জন্য এখনই সব থেকে ভালো সময়।
তারাও আন্দোলনের পক্ষে তিনটি যুক্তি দিচ্ছে। প্রথমত তারা মনে করছেন যে, নানা কারণেই সরকারের ভেতরে এখন অস্থিরতা কাজ করছে। সরকার আমলাদের ওপর নির্ভশীল হয়ে পড়েছে। এই সময়ে আন্দোলন করলে সরকারকে চাপে ফেলা সহজ হবে।
দ্বিতীয়ত তারা মনে করছে, আওয়ামী লীগ এখন অন্তর্কলহে ভুগছে। এখন যদি আন্দোলন করা যায় তাহলে সাংগঠনিকভাবে আওয়ামী লীগ মোকাবেলা করার মতো অবস্থায় নেই।
তৃতীয়ত তারা মনে করছে দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি, দুর্নীতি সহ বিভিন্ন বিষয়ে মানুষের মধ্যে একটি নেতিবাচক ধারণা তৈরি হয়েছে। এইগুলো নিয়ে আন্দোলন করলে এই আন্দোলনে জনগণ সম্পৃক্ত হবে।
তবে এই পক্ষের যারা আছেন তাদের মধ্যে রয়েছেন, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের মতো নেতারা। যখন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন ছিলেন তখন এরা ঝটিকা আন্দোলনের সূচনা করেছিল। যদিও ফখরুল এসে সেই আন্দোলনের লাগাম টেনে ধরেন। এখন বিএনপিতে আন্দোলনের পক্ষের শক্তি এবং বিরোধী শক্তির মধ্যে এক ধরনের প্রকাশ্য মতবিরোধ দেখা যাচ্ছে। আন্দোলন নিয়ে বিভক্ত বিএনপি আবার ভাঙ্গনের দিকে যায় কিনা সেটা নিয়ে অনেকে সংশয় প্রকাশ করছে।
Posted ৭:০২ অপরাহ্ণ | বুধবার, ১০ মার্চ ২০২১
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta