কক্সবাংলা ডটকম(৮ আগস্ট ) :: যেকোন পুরুষকে বশীকরণের ক্ষমতা ছিলো পরীমনির। নানা ছলচাতুরী, অনিয়ম, আবেগ দিয়ে সহজেই মোহাচ্ছন্ন করতে পারতেন পরীমনি। এ নিয়ে পরীমনি প্রকাশ্যেই গর্ববোধ করতেন। বিভিন্ন মহলে তিনি এ নিয়ে দম্ভাক্তিও করতেন। এ কাজে যে তিনি পটু ছিলেন তার প্রমাণও পাওয়া যায় বিভিন্ন সময়ে। এর সর্বশেষ উদাহরণ হলো, পুলিশ কর্মকর্তা সাকলায়েন বশীকরণ। সাকলায়েন একজন মেধাবী পুলিশ কর্মকর্তা। বোট ক্লাবের ঘটনা তদন্তের দায়িত্ব পেয়েছিলেন তিনি। এই তদন্তকারী কর্মকর্তাকে পটিয়ে ফেলেন পরীমনি।
বিভিন্ন মহল বলছেন, পরীমনি যে ড্যাম কেয়ার, বেপরোয়া জীবন যাপন করতেন, তার পেছনে অন্যতম কারণ ছিলো, পরীমনির আত্মবিশ্বাস। পরীমনি বিশ্বাস করতেন, যেকোন ব্যক্তিকেই পরীমনি ম্যানেজ করতে পারতেন। এখন আটকের পর পরীমনির বশীকরণ জাদু সম্পর্কে চাঞ্চল্যকর তথ্য পাওয়া যাচ্ছে। বিভিন্ন মহল থেকে পাওয়া তথ্যে দেখা যায় পরীমনির বশীকরণ ফর্মুলার ৫টি ধাপ ছিলো-
প্রধম ধাপ: আবেগঘন কথাবার্তা; পরীমনির বশীকরণ ফর্মুলার প্রথমধাপ হলো আবেগঘন কথাবার্তা। যেকোন ব্যক্তির সঙ্গে পরিচিত হলেই তার সঙ্গে আবেগময় কথাবার্তা বলতেন পরীমনি। এরকম আবেগময় কথাবার্তায় সহজেই কাউকে কাছের করে নিতেন পরীমনি।
দ্বিতীয় ধাপ: জন সংযোগ; পরীমনি বেখেয়ালি, বোহেমিয়ান জীবন যাপন করলেও তার জনসংযোগ ছিলো খুবই শক্তিশালী। কারো সাথে পরিচয় হলে, একটু সখ্য হলেই তার সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ করতেন পরীমনি। সম্পর্কটা এগিয়ে নিয়ে যেতেন।
তৃতীয় ধাপ: কষ্টের কথা বলা; কাউকে ঘনিষ্ভাবে পাবার আগে পরীমনি তার কষ্টের কথা বলতেন। তার অতীত জীবনের কষ্ট, পিতা-মাতা হারানোর গল্প বলে, সহানুভূতি আদায়ের চেষ্টা করতেন।
চতুর্থ ধাপ: খোলামেলা সম্পর্ক; পরীমনির বশীকরণের একটি বড় অস্ত্র ছিলো যে, দ্রুতই তিনি খোলামেলা সম্পর্কে জড়িয়ে পড়তে পারতেন। খুব সহজেই তিনি সম্পর্ককে স্পর্শকাতর দিকে নিয়ে যেতে পারতেন। এভাবে মুখের কথায় অনেককেই বিয়ে করেছিলেন পরীমনি। এক ছবির শুটিং করতে গিয়ে সহকারী পরিচালককে বিয়ে করে ফেলেন। যদিও সেই বিয়ে বেশি দূর গড়ায় নি।
পঞ্চম ধাপ: আড়ষ্টহীন শারীরিক সম্পর্ক; পরীমনি শারীরিক সম্পর্কের ব্যাপারে আড়ষ্টহীন। যেকোন ব্যক্তির সঙ্গে সহজেই শারীরিক সম্পর্ক করতে পারতেন।
মূলত এই পাঁচ ফর্মুলায় তিনি ‘বশীকরণ’ করতেন। আর এজন্যই পরীমনি বিশ্বাস করতেন, তিনি ধরাছোঁয়ার বাইরে।
প্রসঙ্গত ঢাকাই চলচ্চিত্রের আলোচিত অভিনেত্রী ব্যক্তিগত জীবনও রহস্যে ঘেরা। পরিচালক কামরুজ্জামান রনিকে বিয়ে করেছিলেন তিনি। সেই বিয়ের স্থায়ীত্ব ছিল মাত্র ৫ মাস। এর আগে এক পত্রিকার বিনোদন সাংবাদিকের সঙ্গে তার বিয়ের খবরের গুঞ্জন ছড়িয়েছিল। কখনও অবশ্য ওই বিয়ের ব্যাপারে মুখ খোলেননি তিনি। তবে গ্ল্যামার জগতে আসার আগেও পরী গ্রামে থাকাকালীন বিয়ে করেছিলেন বলে জানা যায়। তার সেই স্বামী ছিলেন একজন ফুটবলার। নাম ফেরদৌস কবীর সৌরভ। বাড়ি যশোরের কেশবপুরে। তিন বছর প্রেম করার পর ২০১২ সালের ২৮ এপ্রিল বিয়ে করেছিলেন তারা। ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে পরী ও সৌরভের কয়েকটি ঘনিষ্ঠ ছবি ছড়িয়ে পড়েছিল ফেসবুকে। এর আগে ভোলার ইসমাইল নামে এক ব্যক্তির সঙ্গেও বিয়ের কথাও শোনা গিয়েছিল। তবে সেই বিয়েও বেশি দিন টেকেনি। ওই সময় ইসমাইল ও পরীমণির ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়।
আলোচিত এ অভিনেত্রী র্যাবের হাতে গ্রেপ্তারের পর মাদক মামলায় এখন চার দিনের রিমান্ডে। বনানী থানা ও গোয়েন্দা পুলিশের হাত ঘুরে পরীমনির এই মামলার তদন্ত করছে সিআইডি। রিমান্ডের জিজ্ঞাসাবাদে তিনি এখন পর্যন্ত রাজধানীর প্রভাবশালী ১৯ জনের তালিকা ফাঁস করায় অনেকের ঘুম হারাম হয়ে গেছে। এরই মধ্যে তার শয্যাসঙ্গী হওয়ার কেলেঙ্কারি ফাঁস হওয়ায় প্রভাবশালী গোয়েন্দা কর্মকর্তা গোলাম সাকলায়েন শিথিলকে প্রত্যাহার করা হয়েছে ডিবি থেকে। এ ঘটনায় গোটা পুলিশ বাহিনীতে তোলপাড় চলছে। পুলিশের আরও তিনজন কর্মকর্তা পরীমনির কানেকশানে ফেঁসে যাবার আতঙ্কে আছেন।
পুলিশ ছাড়াও একটি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক, ২ জন রাজনীতিক, ৩ জন শিল্পপতি ও ব্যবসায়ী, একজন সাবেক এমপির ছেলে, ২ জন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব, ৩ জন চলচ্চিত্র নির্মাতা, একটি পত্রিকার একজন বিনোদন সাংবাদিক ও দুজন সরকারী কর্মকর্তার সম্পর্কে মুখ খুলেছেন তিনি। পরীর দেয়া এ সব তথ্য ক্রসচেকড করে দেখছে গোয়েন্দা।
আলোচিত এই অভিনেত্রী গত জুলাইয়ে বোটক্লাব-কাণ্ডে জড়ানোর পর থেকেই তার বিলাসী জীবনযাপন নিয়ে আলোচনার পালে হাওয়া লাগে। গ্রেপ্তার হওয়ার পর আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী জানায়, কথিত মডেল পিয়াসাদের সিন্ডিকেটের সদস্য ছিলেন পরীমনি, যাদের কাজ মাদক ও নারী ব্যবহার করে বিত্তশালীদের ব্ল্যাকমেইল করা। বিত্তশালীদের কাছ থেকে নিয়মিত দামি উপহার ও উপঢৌকন নেয়ার অভিযোগও রয়েছে পরীমনির বিরুদ্ধে।
Posted ১০:২৪ অপরাহ্ণ | রবিবার, ০৮ আগস্ট ২০২১
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta