শুক্রবার ২৬শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৩ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম

শুক্রবার ২৬শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

শিরোনাম

পেকুয়ায় দিনে-রাতে জুঁয়া ও মাদকের আসর

রবিবার, ০৪ জুলাই ২০২১
225 ভিউ
পেকুয়ায় দিনে-রাতে জুঁয়া ও মাদকের আসর

নাজিম উদ্দিন,পেকুয়া :: কক্সবাজার জেলার পেকুয়ায় দিনে-রাতে সমান তালে বাড়িতে বসে নিয়মিত জুঁয়া মাদকের আসর। প্রতিদিন গাঁজা ও ইয়াবা সেবনে অতিষ্ট করে তুলেছে এলাকাবাসীকে। বিভিন্ন ইউনিয়ন ও ভিন্ন উপজেলার লোকজন এসে জড়ো হয় ওই বাড়িতে। তারপর সারা দিন ও রাত চলে জুঁয়া, গাঁজা ও ইয়াবা সেবনের মহোৎসব। গাঁজাড়ি ও জুঁয়াড়িয়ের হাতে প্রতিনিয়ত হেনাস্থা হচ্ছে নানান বয়সের নারীরা। এর জের ধরে মাদক বিক্রেতা ও স্থানীয়দের মধ্যে ব্যাপক হট্টগোল হয়েছে।

স্থানীয়রা জড়ো হয়ে মাদক সেবী দুই সহোদরকে পাকড়াও করার চেষ্টা চালায়। অবস্থার বেগতিক দেখতে পেয়ে মাদক বিক্রেতা দুই সহোদর সটকে পড়ে।

৩ জুলাই (শনিবার) সকাল ৮ টার দিকে উপজেলার সদর ইউনিয়নের গোঁয়াখালী মাতবরপাড়ায় এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার জের ধরে সদর ইউপির মাতবরপাড়ায় টান টান উত্তেজনা বিরাজ করছে।

স্থানীয় সুত্র জানায়, পেকুয়া সদর ইউনিয়নের পশ্চিম গোঁয়াখালী মাতবরপাড়ায় মোহাম্মদ চান্দু ও ইদ্রিসের বাড়িতে বসছে জুঁয়া ও মাদকের আসর। দিনে মাদক সেবীরা ওই বাড়িতে বসে পান করছে বিভিন্ন নেশাজাত দ্রব্য। এ ছাড়াও একই বাড়িতে রাতে বসে জুঁয়ার আড্ডা। প্রতিদিন ওই বাড়িতে মাদকের আসর ও জুঁয়ার আড্ডা নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। গত কয়েকমাস ধরে ইদ্রিস ও চান্দুর বাড়িতে এ সব অনৈতিক কাজ চলমান থাকায় স্থানীয়দের মধ্যে চরম অসন্তোষ দেখা দিয়েছে।

স্থানীয়রা জানান, মাদকসেবীরা নেশাজাত দ্রব্য পান করে মহিলাদের প্রায় সময় উত্যক্ত করে। বিশেষ করে স্কুল, মাদ্রাসা ও কলেজের অধ্যয়নরত ছাত্রীরা ইভটিজিংয়ের শিকার হচ্ছে। মাদকসেবীরা নেশা পান করে মাতাল অবস্থায় মহিলাদের যৌন হয়রানির চেষ্টাও করেছে একাধিকবার। সর্বশেষ গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে চারজন গৃহবধু ও কিশোরী চরম হেনস্থার শিকার হয়েছে।

সুত্র জানায়, মো.ইদ্রিস ও চান্দু নেশাজাত দ্রব্য বিক্রি করেন আবার তারা নিজেরা সেবনও করেন। নেশাগ্রস্ত দুই ভাই মিলে ছাত্র-ছাত্রী ও গৃহবধূদের গালিগালাজ করে। এমনকি তারা দুই ভাই প্রতিনিয়ত নেশা পান করে গৃহবধূদের হেনস্থা করে। মাঝে মধ্যে পরনের লুঙ্গি খোলে মহিলাদের গালমন্দ করে এমন অভিযোগও ভুরি ভুরি।

শনিবার সকাল ৮ টার দিকে চান্দু ও ইদ্রিস মাতাল হয়ে একজন মহিলাকে গালি দেন। তিনি বিস্মিত হয়ে এর প্রতিবাদ করে। এ সময় তারা দুই ভাই মিলে ওই নারীকে টানা হ্যাঁচড়া করে। ভীতি ও আতংক অবস্থায় ইজ্জত বাঁচাতে ওই নারী দ্রুত সটকে পড়ে। এদিকে দুই ভাইয়ের অত্যাচারে অতিষ্ট হয়ে পড়েছে পুরো এলাকাবাসী। মদ ও গাঁজার দুর্গন্ধে এলাকায় ঢুকাও যায়না। তাদের কারনে আস্তে আস্তে যুব সমাজও পা বাড়াচ্ছে মাদকের দিকে। ঝুঁকছে কলেজ পড়ুয়া অনেক শিক্ষার্থীও। এনিয়ে চরম উদ্বিগ্ন হয়েছে পড়েছে তাদের অভিভাবকরা।

গোঁয়াখালী মাতবরপাড়া সমাজ কমিটির সর্দার জেব্রিস চৌধুরী জানান, আসলে বিষয়টি সঠিক। আমি কয়েকবার গিয়েছি। একজন নারী হেনস্থা হয়েছিল। আমাকে অভিযোগ দেয়। আমি গিয়ে সতর্ক করেছি।

প্রতিবেশি কহিনুর আক্তার জানান, আমরা অতিষ্ট হয়ে গেছি। ওদের মুখের ভাষা শুনলে বুঝতে পারবেন কত নিকৃষ্ট। গাঁজা ও ইয়াবা বিক্রি করে, তারা সেবনও করে। মহিলাদের দেখলে বাজে মন্তব্য করে।

মনজিলা বেগম, রিপু আক্তার, ময়ুরা বেগম,রেজিয়া বেগম জানান, চান্দু ও ইদ্রিস গাঁজা বিক্রি করে। রাতে জুঁয়ার আসর বসায়। বাহির থেকে অপরাধীরা এসে ওদের বাড়িতে আড্ডা দেয়। সারা রাত চলে জুঁয়া। আমরা নিজেরাই অনেকবার লাঞ্চিত হয়েছি। মহিলারা যৌন হয়রানির শিকার হয়। ইভটিজিংয়ের শিকার হচ্ছে ছাত্রীরা।

তছলিমা খানম, তানমুনসহ কয়েকজন শিক্ষার্থী জানান, আমরা ভয় ও আতংকে আছি। ওরা এলাকার পরিবেশ নষ্ট করছে। পথে ঘাটে শুধু টিটকারী মারে। বিভিন্ন এলাকা থেকে মাদকসেবী ও জুয়াড়ীরা এসে সেখানে অবস্থান করে। এলাকার মানুষ এর বাধা দিলে তারা আরো ক্ষিপ্ত হয়ে যান। আমরা এর নিস্তার চাই।

ব্যবসায়ী সাজিম, বদিউল আলম, টমটম চালক নেজাম জানান, আমরা অনেকবার বাধা দিয়েছি। চান্দু ও ইদ্রিসের বাড়ি গাঁজা ও জুঁয়ার ঠিকানা। অনেক মহিলা লাঞ্চিত হয়েছে। মান সম্মানের ভয়ে অনেকে ওদের কাছে পরাভূত। জিএমসির ৯ম শ্রেনীর ছাত্র মেহেদী হাসানসহ অনেক শিক্ষার্থী জানান, আমাদের সমাজকে এরা দুই ভাই মিলে ধ্বংস করছে। সন্ধ্যা নামলেই বসে জুয়া ও মদের আড্ডা।

স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তি নুরুল ইসলাম মনু, খালেদ নেওয়াজ চৌধুরী ও আবু বক্কর জানান, আসলে এ অপতৎপরতা দ্রুত বন্ধ করতে হবে। না হয় যুব সমাজের জন্য এটি অশনি সংকেত। তারা দুই ভাই সমাজকে মগেরমুল্লক বানিয়েছে। বাহির থেকে লোক এসেও গাঁজা, জুঁয়া খেলে। এগুলো অবশ্যই বন্ধ করতে হবে।

গৃহবধূ রোজিনা বেগম জানান, আমাকে তারা হেনেস্থা করেছে। প্রতিবাদ করতে গিয়ে আমি অনেকবার অপমান হয়েছি।

ইউপি সদস্য নুরুল হক সাদ্দাম জানান, আসলে চান্দু একজন অরজিনাল গাঁজাখোর। জুঁয়ার বিষয়টি আমি অবগত নই। বিষয়টি আমি দেখব।

পেকুয়া থানার ওসি (তদন্ত) কানন সরকার জানান, জুঁয়া ও মদের আড্ডায় অবশ্যই পুলিশ অভিযান পরিচালনা করবে।

225 ভিউ

Posted ২:৪২ অপরাহ্ণ | রবিবার, ০৪ জুলাই ২০২১

coxbangla.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

Editor & Publisher

Chanchal Dash Gupta

Member : coxsbazar press club & coxsbazar journalist union (cbuj)
cell: 01558-310550 or 01736-202922
mail: chanchalcox@gmail.com
Office : coxsbazar press club building(1st floor),shaheed sharanee road,cox’sbazar municipalty
coxsbazar-4700
Bangladesh
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
বাংলাদেশের সকল পত্রিকা সাইট
Bangla Newspaper

ABOUT US :

coxbangla.com is a dedicated 24x7 news website which is published 2010 in coxbazar city. coxbangla is the news plus right and true information. Be informed be truthful are the only right way. Because you have the right. So coxbangla always offiers the latest news coxbazar, national and international news on current offers, politics, economic, entertainment, sports, health, science, defence & technology, space, history, lifestyle, tourism, food etc in Bengali.

design and development by : webnewsdesign.com