নাজিম উদ্দিন,পেকুয়া :: কক্সবাজারের পেকুয়ায় মগনামা হাই স্কুল সড়ক সংষ্কারের দাবীতে সড়কে ধানের চারা রোপন করে অভিনব প্রতিবাদ জানিয়েছেন এলাকাবাসি। প্রতিবাদে এলাকাবাসি ছাড়াও যোগ দিয়েছেন স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীও।
মঙ্গলবার (২৭জুলাই) সকালে সড়কে নেমে পড়ে তারা। এ সময় সড়কের উপর ধানের চারা রোপন করে অভিনব প্রতিবাদ জানায়। এ সময় শিশুসহ শতশত এলাকাবাসি দেখতে ভীড় জমায়।
স্থানীয়রা জানায়,উপজেলার মগনামা ইউনিয়নের হাইস্কুল সড়কটি গত ত্রিশ বছর ধরে উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি। দীর্ঘ বছর ধরে সংষ্কার না হওয়ায় ওই সড়কটি বর্তমানে চলাচল অযোগ্য হয়ে পড়েছে। এতে করে কয়েক হাজার মানুষ চরম দুর্ভোগে পড়েছে। সড়কের বেহাল দশা যাতায়াত থমকে গিয়েছে।
স্থানীয় সুত্র জানায়, মগনামা হাইস্কুল সড়কটি ১৯৯২ সালে ব্রিক সলিন দ্বারা সংষ্কারকাজ বাস্তবায়ন হয়েছে। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) হাই স্কুল সড়ক সংষ্কার করে। মুহুরীপাড়া বাজারের পশ্চিম সীমানা থেকে সড়কটি পূর্বদিকে বহমান। বাইন্যাঘোনা সড়ক ও জনপথ বিভাগের সড়ক পর্যন্ত এর বিস্তৃতি প্রায় ৩ কিলোমিটার। তবে সেই সময় দেড় কিলোমিটারে ব্রিক সলিন দ্বারা উন্নয়ন সাধিত হয়। পরবর্তীতে দীর্ঘ ৩০ বছর সড়কটি পুন:সংষ্কারকাজ বাস্তবায়ন হয়নি।
মুহুরীপাড়ার বাসিন্দা সাংবাদিক হাসেম বলেন, হাইস্কুল সড়কটি খুবই গুরুত্বপুর্ন। সংষ্কার না হওয়ায় সড়কের বিপুল অংশে এখন ইট নেই। খানাখন্দকে ভরপুর। বড় বড় গর্ত আর কাঁদার মিশ্রণে সড়কটি এখন মারাত্মক বেহাল অবস্থায় রয়েছে। সংস্কারের দাবীতে সড়কে ধানের চারা রোপন করে এলাকাবাসি প্রতিবাদ করছে।
স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতা নাজেম উদ্দিন, জাহাঙ্গীর আলম বলেন, অভিশাপ পড়েছে সড়কটির উপর। কোন জনপ্রতিনিধি সংস্কারের জন্য এগিয়ে আসেনি। জনদুর্ভোগ লাঘব করতে স্থানীয়রা ব্যক্তি উদ্যোগে সড়কটির আংশিক সংষ্কারকাজ বাস্তবায়নের উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন। সম্প্রতি হাইস্কুল সড়ক উন্নয়নের জন্য একটি কমিটিও গঠিত হয়েছে। ইটের কংকর ও বালি দিয়ে সংষ্কারের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তিন গ্রামের মানুষ জড়ো হয়ে সড়ক সংষ্কারের দাবীতে বৃষ্টি উপেক্ষা করে ধানের চারা রোপন করে।
লবণ ব্যবসায়ী মুহাম্মদ ইউনুছ জানান,আমরা চাঁদা তুলে ইট,কংকর দিয়েছি অনেকবার। এখন মানুষ চলাফেরাও করতে পারেনা। এটি চরম বৈষম্য। শিক্ষক নুরুল আমিন জানান, ভাষায় প্রকাশ করা যাচ্ছেনা। আসলে সরাসরি না দেখলে বুঝাও যাচ্ছেনা যে মানুষের দুর্গতি কি পর্যায়ে। সড়ক সংষ্কার গঠিত কমিটির সদস্য মনিরুল কবির জানান, আমরাতো হেঁটেও যেতে পারছিনা। জরুরী চিকিৎসার জন্য কোন রোগীও নেওয়ার মতো পরিবেশ নেই এ সড়কের কারণে।
শিক্ষার্থী সোলতান মুহাম্মদ রিয়াজ, শফিকুর রহমান ছোটন জানান, রাস্তার কারনে ঠিকমত স্কুলে যেতে পারিনা। সড়কে ধানের চারা রোপন করে প্রতিবাদে শরীক হয়েছি।
আইয়ুব মিয়া, মনিরুল করিম জানান, ৩০ বছর আগে একবার ইট বসাই। এরপর আর হাত দেয়া হয়নি।
জেলা আ’লীগের শিক্ষা ও মানবসম্পদ বিষয়ক সম্পাদক ডক্টর আশরাফুল ইসলাম সজীব জানান, এখানে আমাদের পৈত্রিক বাড়ি। এখানকার মানুষ আ’লীগ করে। দ্বিতীয় টঙ্গীপাড়া বলা যাবে মুহুরীপাড়াসহ ৫ নং ওয়ার্ডকে। এটাই মূলত কারণ। জনপ্রতিনিধিদের বৈষম্যমূলক আচরণের কারনে আজকে আমরা সড়কটি নিয়ে কষ্টে আছি। আশা করছি কষ্ট পেলেও ইনশাআল্লাহ হয়ে যাবে।
মগনামা ইউপির চেয়ারম্যান শরাফত উল্লাহ চৌধুরী ওয়াসিম বলেন,শীর্ঘ্রই সড়কটি সংস্কার হবে। সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কর্মকর্তাদের সাথে আলাপ হচ্ছে।
Posted ৬:০৭ অপরাহ্ণ | বুধবার, ২৮ জুলাই ২০২১
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta