শনিবার ২৭শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৪ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম

শনিবার ২৭শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

শিরোনাম

বঙ্গোপসাগরে মধ্যরাত থেকে ইলিশ ধরা শুরু : প্রস্তুত কক্সবাজারের জেলেরা

সোমবার, ২৫ অক্টোবর ২০২১
227 ভিউ
বঙ্গোপসাগরে মধ্যরাত থেকে ইলিশ ধরা শুরু : প্রস্তুত কক্সবাজারের জেলেরা

কক্সবাংলা রিপোর্ট :: বঙ্গোপসাগরে ইলিশ মাছ ধরার ওপর ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষ হচ্ছে আজ সোমবার (২৫ অক্টোবর) মধ্যরাতে। ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুম রক্ষায় ৪ অক্টোবর থেকে ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত মোট ২২ দিন ইলিশ ধরায় নিষেধাজ্ঞা দেয় সরকার। আজ সোমবার মধ্যরাত ১২টা ১ মিনিট থেকে পুনরায় ইলিশ শিকার শুরু হচ্ছে।

দীর্ঘদিন পর মাছ ধরার সুযোগ পাবেন বলে ইলিশ অধ্যুষিত  কক্সবাজারের জেলেদের মনে স্বস্তি ফিরে এসেছে।সাগরে নামার জন্য প্রস্তুতি ইতোমধ্যেই সেরে ফেলেছেন জেলেরা। সরব হয়ে উঠেছে জেলে পল্লীগুলো। ইলিশের প্রজনন মৌসুম উপলক্ষে গত ৪ অক্টোবর থেকে ২২ দিনের জন্য সাগরে মাছ শিকার ও বিপণনের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল সরকার।

নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হলেই কক্সবাজারের সমুদ্র উপকূলের মোহনা ও ঘাটে নোঙর করা প্রায় ৭ হাজার মাছ ধরার ট্রলার সাগরে রওনা হবে। এ জন্য  রোববার সকাল থেকে বেশির ভাগ ট্রলারে জাল, রসদপাতি ও বরফ ভর্তি করে প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন জেলেরা।

সরেজমিনে দেখা যায়, শহরের বাঁকখালী নদীর মোহনা ফিশারিঘাটে নোঙর করে রাখা ছোট-বড় হাজারো ট্রলারের জেলেরা সাগরে যেতে ঘাটে পৌঁছেছেন।

জেলা মৎস্য অধিদপ্তর সূত্র জানায়, ২০১৯ সাল থেকে বঙ্গোপসাগরে সামুদ্রিক মাছ ও ইলিশের প্রজনন বৃদ্ধিতে সরকার ২০ মে থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত ৬৫ দিন মাছ ধরা ও বিপণনে নিষেধাজ্ঞা জারি করে। এ ছাড়া ২০১১ সালের ৪ অক্টোবর থেকে ২২ দিন একই কারণে নিষেধাজ্ঞা মেনে চলতে হয় জেলেদের।

জেলা ফিশিং বোট মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন বলেন, নিষেধাজ্ঞা শেষে জেলেরা ট্রলার নিয়ে সাগরে রওনা হবেন। ইতিমধ্যে সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।

জেলা ফিশিং বোট মালিক সমিতির তথ্যমতে, জেলার কুতুবদিয়া, পেকুয়া, মহেশখালী, চকরিয়া, কক্সবাজার সদর, উখিয়া ও টেকনাফের উপকূলে প্রায় সাত হাজার ছোট-বড় মাছ ধরার ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে লক্ষাধিক মাঝি-মাল্লা রয়েছে।

এর মধ্যে বড় নৌকায় ৩০ থেকে ৪০ জন এবং ছোট নৌকায় ৫ থেকে ১৭ জন জেলে থাকে। আবার কিছু কিছু এলাকায় উপকূলের কাছাকাছি ইঞ্জিনবিহীন ককশিটের বোটে থাকে দুজন জেলে।

জেলা মৎস্য কর্মকর্তা এস এম খালেকুজ্জামান বলেন, ইলিশ শিকার, পরিবহন ও বিপণনের ওপর ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা সোমবার মধ্যরাতে শেষ হচ্ছে। নিষেধাজ্ঞা শেষে সাগরে যাওয়ার জন্য জেলেরা প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের কক্সবাজারস্থ সামুদ্রিক মৎস্য ও প্রযুক্তি কেন্দ্রের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. শফিকুর রহমান বলেন, ইলিশের প্রজননকালে সাগরে মৎস্য আহরণ বন্ধ থাকায় মাছ বড় হওয়ার সুযোগ পেয়েছে। এতে সবাই সুফল পাবে।

সূত্র জানিয়েছে, প্রধান প্রজনন মৌসুমে মা ইলিশের প্রজনন নিরাপদ রাখতে চলতি অক্টোবরের ৪ তারিখ থেকে ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত মোট ২২ দিন সারাদেশে ইলিশ ধরা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। ইলিশ সম্পদ উন্নয়ন-সংক্রান্ত জাতীয় টাস্কফোর্স কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, এ ২২ দিন দেশব্যাপী ইলিশ আহরণ, বিপণন, ক্রয়-বিক্রয়, পরিবহন, মজুত ও বিনিময় নিষিদ্ধ ছিল। ইলিশের প্রজনন ক্ষেত্রে সব ধরনের মৎস্য আহরণও এ সময় নিষিদ্ধ ছিল। ইলিশের নিরাপদ প্রজননের স্বার্থে এ সময় মা ইলিশ সংরক্ষণ কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হয়।

ইলিশ গবেষকেরা বলছেন, ইলিশ মূলত সারা বছরই ডিম ছাড়ে। তবে সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর এই দুই মাসের চারটি অমাবস্যা-পূর্ণিমায় ডিম ছাড়ে বেশি। বিশেষ করে অক্টোবরের মানে আশ্বিনের দুটি অমাবস্যা-পূর্ণিমাকে কেন্দ্র করে প্রতিবছর ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। এই সময় ইলিশ ধরা থেকে বিরত থাকার প্রধান উদ্দেশ্য হচ্ছে মা ইলিশ রক্ষা করা, যাতে তারা নিরাপদে নদীতে এসে ডিম ছাড়তে পারে। এই ডিম রক্ষা করতে পারলে তা থেকে জাটকার জন্ম হবে। সেই জাটকা রক্ষা করা গেলে দেশে বড় আকারের ইলিশের উৎপাদন বাড়বে। এই ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষ হওয়ার পর আবার জাটকা ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হবে। দুই ধাপের এই নিষেধাজ্ঞার কারণে দেশে ইলিশ উৎপাদন বেড়েছে, ওজন-আকারও বেড়েছে ইলিশের।

মৎস্য বিভাগ জানিয়েছে, এ বছর মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযানের অংশ হিসেবে ৪ অক্টোবর থেকে ২৩ অক্টোবর পর্যন্ত ১ হাজার ৮৯২টি মোবাইল কোর্ট ও ১৫ হাজার ৩৮৮টি অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। এবং ৮৮৪ লাখ মিটার অবৈধ জাল আটক করা হয়। বাংলাদেশে ২০০৩-০৪ সাল থেকেই জাটকা রক্ষার কর্মসূচি শুরু করা হয়। তখন থেকেই ধীরে ধীরে ইলিশের উৎপাদন বাড়ছিলো। বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের তথ্যানুযায়ী দেশের মোট মাছ উৎপাদনের প্রায় ১২ শতাংশ আসে ইলিশ থেকে।

মৎস্য অধিদফতরের হিসাব অনুযায়ী গত এক দশকে বাংলাদেশে ইলিশের উৎপাদন প্রায় তিনগুণ বেড়েছে। মৎস্য গবেষণা ইন্সটিটিউটের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ও ইলিশ গবেষক ড. আনিসুর রহমান সংবাদ মাধ্যমকে জানান, ইলিশ সংরক্ষণের উদ্দেশে গত কয়েক বছর নেওয়া পদক্ষেপগুলো আগামীতেও কার্যকরভাবে বাস্তবায়ন করা গেলে ইলিশের উৎপাদন বৃদ্ধি অব্যাহত থাকবে এবং দামও কম থাকবে।

মৎস্যবিষয়ক আন্তর্জাতিক সংস্থা ওয়ার্ল্ড ফিশের হিসাবে, বিশ্বের মোট ইলিশের ৮৬ শতাংশ এখন বাংলাদেশে আহরিত হচ্ছে। বাংলাদেশের পরই ইলিশের উৎপাদনে দ্বিতীয় স্থানে আছে ভারত। ৫ বছর আগে দেশটিতে বিশ্বের প্রায় ২৫ শতাংশ ইলিশ উৎপাদিত হতো।

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী জানিয়েছেন, মৎস্য খাতকে কোনোভাবেই ধ্বংস হতে দেওয়া হবে না। মৎস্যসম্পদ রক্ষার মাধ্যমে খাদ্যের চাহিদা পূরণ হচ্ছে, বেকারত্ব দূর হচ্ছে, উদ্যোক্তা তৈরি হচ্ছে, গ্রামীণ অর্থনীতি সচল হচ্ছে এবং দেশের রফতানি আয় বাড়ছে।

তিনি আরও বলেন ইলিশ মাছ সংরক্ষণ, উৎপাদন বৃদ্ধি, এর নিরাপদ আশ্রয় ও নিরাপদ প্রজননের জন্য সরকার নানা কার্যক্রম বাস্তবায়ন করছে। মা ইলিশ রক্ষা, ইলিশের অভয়াশ্রম সৃষ্টি করা, ইলিশ গবেষণা, জাটকা সংরক্ষণসহ বিভিন্ন ভাবে আমরা কাজ করছি। ইলিশের পরিসর বাড়াতে রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে সকল প্রকার আগ্রহ রয়েছে, পরিকল্পনা রয়েছে।

227 ভিউ

Posted ১১:০৮ পূর্বাহ্ণ | সোমবার, ২৫ অক্টোবর ২০২১

coxbangla.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

এ বিভাগের আরও খবর

Editor & Publisher

Chanchal Dash Gupta

Member : coxsbazar press club & coxsbazar journalist union (cbuj)
cell: 01558-310550 or 01736-202922
mail: chanchalcox@gmail.com
Office : coxsbazar press club building(1st floor),shaheed sharanee road,cox’sbazar municipalty
coxsbazar-4700
Bangladesh
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
বাংলাদেশের সকল পত্রিকা সাইট
Bangla Newspaper

ABOUT US :

coxbangla.com is a dedicated 24x7 news website which is published 2010 in coxbazar city. coxbangla is the news plus right and true information. Be informed be truthful are the only right way. Because you have the right. So coxbangla always offiers the latest news coxbazar, national and international news on current offers, politics, economic, entertainment, sports, health, science, defence & technology, space, history, lifestyle, tourism, food etc in Bengali.

design and development by : webnewsdesign.com