শনিবার ২৭শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৪ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম

শনিবার ২৭শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

শিরোনাম

রোহিঙ্গা শরণার্থী সঙ্কট জটিলতর হয়ে উঠছে

সোমবার, ০৯ সেপ্টেম্বর ২০১৯
154 ভিউ
রোহিঙ্গা শরণার্থী সঙ্কট জটিলতর হয়ে উঠছে

কক্সবাংলা ডটকম(৯ সেপ্টেম্বর) :: বাংলাদেশে রোহিঙ্গা-কেন্দ্রিক বিশৃঙ্খলা অব্যাহত রয়েছে। রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনকে শুধু অসম্ভবই মনে হচ্ছে না, বরং বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তের কক্সবাজারের যে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে তারা অবস্থান করছে, সেখানকার ব্যবস্থাপনা নিয়েও ব্যাপক উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে। বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদের আগমনের দ্বিতীয় বার্ষিকীতে শরণার্থীরা ওই এলাকায় এক সমাবেশের আয়োজন করে, যেটা নিয়ে সরকার তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। তারা একটা ‘খুবই উসকানিমূলক’ আচরণ হিসেবে বর্ণনা করেছে এবং এ জন্য এনজিও ও জাতিসংঘ সংস্থাগুলোকেও দায়ি করেছে। ৪০টির বেশি এনজিওকে তাদের কর্মকাণ্ড বন্ধ করতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এদিকে, নজিরবিহীন এক বিবৃতিতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন জাতিসংঘকে অভিযুক্ত করে বলেছেন যে, তারা কিছুই করছে না এবং এমনকি তাদেরকে দেশ থেকে বের করে দেয়ারও হুমকি দিয়েছেন। বাংলাদেশ ও জাতিসংঘের সম্পর্কের ক্ষেত্রে নিশ্চিতভাবে এটা সর্বোচ্চ অবনতির সময়। কিন্তু মূল সমস্যা হলো সীমিত সামর্থ ও সীমিত সম্পদ এবং পরিস্থিতি এখানে বাংলাদেশের নিয়ন্ত্রণে আর নেই।

সরকারি অবস্থান বদলাচ্ছে

রোহিঙ্গাদেরকে এখন ‘অনাকাঙ্ক্ষিত’ অতিথি হিসেবে দেখা হচ্ছে ‘যাদেরকে অবশ্যই ফিরে যেতে হবে’ এবং এনজিওগুলোকে দেখা হচ্ছে বাংলাদেশে তাদের অবস্থানকে দীর্ঘ করার প্রচেষ্টাকারী হিসেবে। ২২ মার্চ অনেকটা প্রতীকী প্রত্যাবর্তনের একটা পরিকল্পনা নেয়া হয়েছিল, কিন্তু রোহিঙ্গারা যেতে অস্বীকার করেছে। সঙ্কটের দুটো গুরুত্বপূর্ণ পক্ষ – চীন ও মিয়ানমারের কর্মকর্তারাও সেখানে ছিলেন, কিন্তু তারা ফিরে যেতে রাজি না হওয়ায় পুরো পরিকল্পনা ব্যর্থ হয়েছে। তারা নিরাপত্তাহীন বোধ করছে এবং মিয়ানমারের ভেতর থেকে প্রতিনিয়ত মানুষের পালানোর খবর আসছে বলে তারা বাংলাদেশকেই নিরাপদ ভাবছে। এটা অবশ্যম্ভাবী বিষয়।

ব্যর্থ প্রত্যাবাসন প্রচেষ্টার পরিণতি সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে, বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল মোমেন বলেছেন, “আমরা আমাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখবো। তবে আমরা কিছু চাপিয়ে দেবো না। আমাদের দিক থেকে কোন ঘাটতি নেই। আস্থার ঘাটতি পূরণের জন্য মিয়ানমারকে কাজ করতে হবে”।

স্পষ্টতই, মিলিয়নের বেশি শরণার্থীকে আশ্রয় দেয়ার উত্তাপ বাংলাদেশ এখন টের পাচ্ছে এবং তারা চায় যে এরা ফিরে যাক। সমস্যা হলো মিয়ানমারের এটা করার কোন আগ্রহ নেই এবং শুধু কিছু প্রতীকী শরণার্থী ফেরত নিতে চায় তারা।

বাংলাদেশ একই সাথে শরণার্থীদের একটা অংশকে ভাসান চরে পাঠাতে চায়, কিন্তু এনজিও এবং বেশ কিছু জাতিসংঘ সংস্থা এটার বিরোধিতা করছে। এনজিওগুলোর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেয়ার কারণ শুধু প্রত্যাবাসন প্রচেষ্টা ব্যর্থ হওয়া বা শরণার্থীদের সমাবেশ করা নয়, বরং দীর্ঘদিনের পুঞ্জিভূত হতাশা, যখন এটা স্পষ্ট হয়ে গেছে যে, বিশ্ব মূলত এই সমস্যাটা অগ্রাহ্য করে যাবে।

বাংলাদেশ (সরকার) স্পষ্টতই ধৈর্য হারাচ্ছে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন যে, তারা চান জাতিসংঘের ত্রাণ সংস্থাগুলো যাতে ১০০,০০০ শরণার্থীকে ভাষানচরে স্থানান্তরের ব্যাপারে সহায়তা করে। এই দ্বীপটি বঙ্গোপসাগরের মধ্যে অবস্থিত।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডয়চে ভেলেকে বলেছেন, “শরণার্থীদের ফেরত নেয়ার জন্য জাতিসংঘ মিয়ানমারের উপর যথেষ্ট চাপ দিতে ব্যর্থ হয়েছে। ঢাকা চায় জাতিসংঘ সংস্থাগুলো যাতে শরণার্থীদের দ্বীপে স্থানান্তরের পরিকল্পনা মেনে নেয় অথবা দেশ ছেড়ে চলে যায়”।

পরিস্থিতি কঠিন হচ্ছে?

“দ্বীপে শরণার্থীদের জন্য অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের সুযোগ রয়েছে। কিন্তু কক্সবাজার শরণার্থী ক্যাম্পে যে ত্রাণ সংস্থাগুলো কাজ করছে, তারা ভাসান চরে যেতে চায় না। আমরা একইসাথে সেই সব আইএনজিওগুলোকেও চিহ্নিত করছি, যারা রোহিঙ্গা ইস্যুর রাজনীতিকরণ করছে”।

মিয়ানমারের উপর চাপ দিতে ব্যর্থতার জন্য তিনি জাতিসংঘকে দোষারোপ করেন। “জাতিসংঘকে এই পরিকল্পনার সাথে একমত হতে হবে অথবা শরণার্থীদের তারা সাথে নিয়ে যেতে পারে। স্থানীয় অধিবাসীরা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের অভিযোগ করছে। সে কারণেই আমরা তাদেরকে স্থান বদলে বাধ্য করতে পারতাম। এখন অন্যান্যদেরও এগিয়ে আসা উচিত কারণ এটা শুধু আমাদের সমস্যা নয়। এটা একটা আন্তর্জাতিক ইস্যু, এবং আমরা যদি তাদের সুরক্ষা না দিতাম, তাহলে তারা গণহত্যার স্বীকার হতো। যারাই তাদের নিতে চায়, সেখানে আমরা তাদের পাঠানোর জন্য প্রস্তুত আছি। তাদেরকে অনির্দিষ্টকালের জন্য রাখার সামর্থ আমাদের নেই।

জাতিসংঘের সাথে সঙ্ঘাত অনিবার্য। “জাতিসংঘ আমাদের সাহায্য করছে না। মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের পরিবেশ তৈরির জন্য তারা কোন কাজ করছে না”। প্রয়োজনে তিনি জাতিসংঘ সংস্থাগুলো বহিষ্কার করারও হুমকি দেন।

অনেকেরই আশঙ্কা হলো রোহিঙ্গারা জিহাদি তৎপরতায় জড়িয়ে যাবে এবং নিরাপত্তা সঙ্কট তৈরি করবে। সেটা যদিও হয়নি তবে উদ্বেগটা রয়ে গেছে। তবে, অন্যান্য শরণার্থী জনগোষ্ঠির মতো, তারা বিভিন্ন ছোটখাটো অপরাধে জড়িয়ে গেছে, যেগুলো সরাসরি রাষ্ট্রের জন্য হুমকি না হলেও সম্মিলিতভাবে বড় ধরনের সমস্যা তৈরি করেছে। যেখানে তারা সক্রিয়, সেখানে এমনিতেই আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির ঘাটতি রয়েছে এবং সেটা ইয়াবা পাচারের কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত। এ অবস্থায় রোহিঙ্গাদের বিষয়টি আর ‘মানবিক’ ইস্যু নেই। কেউই নিশ্চিত নন এর পর কি করতে হবে।

রোহিঙ্গা ও বাংলাদেশ: কারো সমস্যা নয়?

জাতিসংঘ এই সমস্যার সমাধানে খুব বেশি কিছু করতে পারেনি এবং পরাশক্তিগুলোর বাংলাদেশের এই সমস্যা সমাধানের কোন আগ্রহ নেই, কারণ বাংলাদেশ তাদের কাছে অগ্রাধিকারের কোন জায়গা নয়। বাস্তবতা হলো শরণার্থীদের আধিক্যের কারণে জিহাদী সমস্যা যদি বাড়তো, তখন বরং তাদের মনোযোগ কাড়তো আরও বেশি। বাংলাদেশ যেভাবে জিহাদীদের নিয়ন্ত্রণ করেছে, তাতে অনেকের মনে হয়েছে যে তাদের এখানে অত মনোযোগ দেয়ার প্রয়োজন নেই। ধারাবাহিক ঘটনাপ্রবাহ সরকারকে ক্ষুব্ধ করেছে যারা এটাকে নিজেদের বিরুদ্ধে এক ধরনের হুমকি হিসেবে দেখছে যেখানে প্রতিপক্ষে একজোট হয়েছে জাতিসংঘ আর এনজিওগুলো।

এই জঞ্জালের শুরুটা যেই করুক না কেন, মনে হচ্ছে বাংলাদেশকে এ জন্য কড়া মূল্য দিতে হচ্ছে।

154 ভিউ

Posted ১১:৪৭ পূর্বাহ্ণ | সোমবার, ০৯ সেপ্টেম্বর ২০১৯

coxbangla.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

এ বিভাগের আরও খবর

Editor & Publisher

Chanchal Dash Gupta

Member : coxsbazar press club & coxsbazar journalist union (cbuj)
cell: 01558-310550 or 01736-202922
mail: chanchalcox@gmail.com
Office : coxsbazar press club building(1st floor),shaheed sharanee road,cox’sbazar municipalty
coxsbazar-4700
Bangladesh
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
বাংলাদেশের সকল পত্রিকা সাইট
Bangla Newspaper

ABOUT US :

coxbangla.com is a dedicated 24x7 news website which is published 2010 in coxbazar city. coxbangla is the news plus right and true information. Be informed be truthful are the only right way. Because you have the right. So coxbangla always offiers the latest news coxbazar, national and international news on current offers, politics, economic, entertainment, sports, health, science, defence & technology, space, history, lifestyle, tourism, food etc in Bengali.

design and development by : webnewsdesign.com