কক্সবাংলা ডটকম(৫ সেপ্টেম্বর) :: পৃথিবীর আবহাওয়া সম্পর্কে আমাদের ধারণা থাকলেও বেশিরভাগ মানুষেরই অন্য গ্রহের আবহাওয়া সম্পর্কে কোনো ধারণাই নেই।
কিন্তু অন্যসব গ্রহের আবহাওয়ার দিকে তাকালে দেখা যায় কোনো কোনো গ্রহে ঘণ্টায় আট হাজার কিলোমিটার বেগে বাতাস প্রবাহিত হয়।
আবার কোনো কোনো গ্রহের তাপমাত্রা এতটা বেশি যে, সেখানে অনায়াসেই গলে যেতে পারে সিসা।
অস্বাভাবিক গ্রহ ‘শুক্র’
পৃথিবীর বাড়ির কাছে গ্রহ হিসেবে পরিচিত শুক্র। সৌরজগতের মধ্যে বসবাসের সবচেয়ে অনুপযোগী জায়গা হলো শুক্র গ্রহ। এখানকার বায়ুমণ্ডলের ঘনত্ব অনেক বেশি এবং এটি কার্বনডাই-অক্সাইড দ্বারা গঠিত। শুক্র গ্রহে বায়ুমণ্ডলের চাপ পৃথিবীর চেয়ে ৯০ গুণ বেশি।
এখানকার বায়ুমণ্ডল সূর্যের বিকিরণকে আটকে রাখে, যার অর্থ হচ্ছে শুক্র গ্রহের তাপমাত্রা ৪৬০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছাতে পারে।
সুতরাং এখানে পা রাখামাত্রই যে কোনো মানুষ ভয়ানক এক পরিবেশের মুখোমুখি হবে। শুক্র গ্রহে বৃষ্টি হিসেবে ঝরে মারাত্মক ক্ষতিকারক সালফিউরিক অ্যাসিড। এটি শরীরে পড়ামাত্রই নভোচারীর শরীর কিংবা পোশাক পুড়ে যাবে। এ কারণে এখানো শুক্র গ্রহে কেউ যেতে পারেনি।
উত্তাল গ্রহ নেপচুন
আমাদের সৌরজগতের অন্য দিকে রয়েছে ইউরেনাস এবং নেপচুন গ্রহ। নেপচুন গ্রহটি পৃথিবী থেকে সবচেয়ে দূরে অবস্থিত। এখানে ঠান্ডায় জমে থাকা মিথেন গ্যাসের মেঘ রয়েছে। সৌরজগতের মধ্যে নেপচুনের বাতাস সবচেয়ে বিধ্বংসী। কারণ এখানকার উপরিভাগ অনেকটা সমতল। ফলে মিথেন গ্যাসযুক্ত বাতাসের গতিকে থামানোর কোনো উপায় নেই।
এর গতি ঘণ্টায় ২ হাজার ৪০০ কিলোমিটার পর্যন্ত উঠতে পারে। এখানকার গড় তাপমাত্রা মাইনাস ২০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। অর্থাত্ নেপচুনের উপরিভাগে যাওয়া যে কেউ সঙ্গে সঙ্গে ঠান্ডায় জমে যাবে।
ব্রিটেনের ওয়ার উইক ইউনিভার্সিটির গবেষক টম লুডেন সৌরজগতের আবহাওয়া নিয়ে গবেষণা করেন। তার কাজ অন্য গ্রহগুলোতে বায়ুমণ্ডলের অবস্থা সম্পর্কে জানা।
তিনি সৌরজগতের এইচডি১৮৯৭৩৩বি গ্রহ সম্পর্কে চমকপ্রদ সব তথ্য দিয়েছেন। টম লুডেন জানিয়েছেন, এইচডি১৮৯৭৩৩বি গ্রহটি নক্ষত্র দ্বারা ঢেকে গেছে।
গাঢ় নীল এ গ্রহটি ৬৩ হাজার আলোকবর্ষ দূরে। এটি চরম আবহাওয়ার জন্য বিশেষ পরিচিত। তার মতে, এই গ্রহটি দেখতে সুন্দর হতে পারে কিন্তু এর আবহাওয়ার অবস্থা খুবই বিধ্বংসী।
এ গ্রহে বাতাসের গতিবেগ ঘণ্টায় ৮ হাজার কিলোমিটার এবং এটি পৃথিবীর তুলনায় ২০ গুণ বেশি সূর্যের কাছাকাছি। এখানে বায়ুমণ্ডলের তাপমাত্রা ১ হাজার ৬০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস—অর্থাত্ গলিত লাভার মতো গরম। এ তাপমাত্রায় আমাদের গ্রহের পাথরগুলো তরল ও বাষ্প হয়ে যাবে অথবা গ্যাসে রূপান্তরিত হবে।
মি. লুডেন বলেন, পৃথিবীর সমান আরো গ্রহ আছে যেগুলো এম ডর্ফ অথবা রেড ডর্ফ নক্ষত্রের চারপাশে প্রদক্ষিণ করে। এগুলো হচ্ছে ছায়াপথের সবচেয়ে পরিচিত নক্ষত্র। কিন্তু এরা ছায়ার ভেতরে লুকিয়ে থাকে। এগুলোর আলো এত কম যে, পৃথিবী থেকে খালি চোখে দেখা যায় না।
—বিবিসি
Posted ১:৫৪ পূর্বাহ্ণ | শুক্রবার, ০৬ সেপ্টেম্বর ২০১৯
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta