শনিবার ২৭শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৪ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম

শনিবার ২৭শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

শিরোনাম

৪৩ বছরে বিএনপি এখন কোন পথে

মঙ্গলবার, ০১ সেপ্টেম্বর ২০২০
340 ভিউ
৪৩ বছরে বিএনপি এখন কোন পথে

কক্সবাংলা ডটকম(১ সেপ্টেম্বর) :: আজ ১ সেপ্টেম্বর, মঙ্গলবার— প্রতিষ্ঠার ৪৩ বছরে পা দিয়েছে বিএনপি। ১৯৭৮ সালের এই দিনে সামরিক শাসক জিয়াউর রহমানের হাত ধরে দলটির জন্ম। দেশের সংসদীয় ইতিহাসে তিন বার কর্তৃত্ব করলেও টানা তৃতীয় মেয়াদে ক্ষমতার বাইরে দলটি। এরমধ্যে ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভরাডুবির পর হতভম্ব অবস্থা থেকে উঠে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে বিএনপি। দলের ৪২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে এবার একদিনের কর্মসূচি দিয়েছে দলটি।

আর ৪২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতেও আরো কঠিন সংকটে নিমজ্জিত বিএনপি। জামিনে মুক্ত থাকলেও সক্রিয় রাজনীতিতে নেই দলের সাজাপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান লন্ডন থেকে ভার্চুয়াল মাধ্যমে পরিচালনা করছেন দলের সাংগঠনিক কার্যক্রম। কর্মীরা মনে করছেন, দুই শীর্ষস্থানীয় নেতা রাজনীতির মাঠে সরাসরি না থাকায় বড় সংকট থেকে বেরিয়ে আসতে পারছে না দলটি।

আবার জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ও জামায়াতে ইসলামীকে সঙ্গে নিয়ে পথ চলায়ও দলের মধ্যে বিরাজ করছে অস্বস্তি। টানা তিন দফায় ক্ষমতার বাইরে থাকা দলটি অনেক দিন থেকেই কোণঠাসা। অনেকে বলছেন, বিদ্যমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে নিজেদের লক্ষ্য নির্ধারণ করে প্রয়োজনীয় কৌশল গ্রহণেও ব্যর্থ হচ্ছে দলটি। অবশ্য এ ‘দুরবস্থা’ থেকে ঘুরে দাঁড়াতে দলের হাইকমান্ড নানামুখী তৎপরতা চালালেও কোনো আশার আলো দেখছেন না নেতাকর্মীরা। এ পরিস্থিতিতে দলের এবং নিজেদের ভবিষ্যৎ নিয়ে হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন তারা। সংকট উত্তরণে কোন পথে যাবে বিএনপি- এই প্রশ্ন এখন ঘুরপাক খাচ্ছে সবার মনে।

এ পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) ৪২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী আজ মঙ্গলবার। দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালনে এবার এক দিনের কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। ১৯৭৮ সালের এই দিনে প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান দলটি প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯৮১ সালে জিয়াউর রহমানের মৃত্যুর পর তার বিধবা স্ত্রী খালেদা জিয়া গৃহবধূ থেকে রাজনীতিতে এসে দলটির হাল ধরেন। তার নেতৃত্বে নানা চড়াই-উতরাই পেরিয়ে দু’বার রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আসীন হয় দলটি।

অবশ্য দলের সিনিয়র নেতা ও রাজনৈতিক বিশ্নেষকরা মনে করেন, বর্তমানে দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের আদর্শ থেকে সরে এসেছে বিএনপি। ঘুরে দাঁড়াতে দলটিকে আবার প্রতিষ্ঠাতার আদর্শে ফিরে যেতে হবে। সৎ, যোগ্য, ত্যাগী ও মেধাবী নেতাকর্মীদের খুঁজে নেতৃত্বের আসনে বসাতে হবে। দলমত নির্বিশেষে দেশের বিভিন্ন সেক্টরের জ্ঞানী ও গুণী ব্যক্তিদের পরামর্শ গ্রহণ এবং দলে টেনে গুরুত্বপূর্ণ কাজে লাগাতে হবে। একই সঙ্গে নিজেদের ভুলত্রুটি চিহ্নিত করে তা থেকে শিক্ষা নিতে হবে। শুধু নিজেদের ‘অযোগ্য’ ও ‘অন্ধ’ সমর্থকদের দলের গুরুত্বপূর্ণ দায়দায়িত্ব দিয়ে কাঙ্ক্ষিত সাফল্য অর্জন সুদূরপরাহত হবে বলে মনে করেন তারা।

দশম সংসদ নির্বাচন বর্জন এবং একাদশ সংসদ নির্বাচনের ফল প্রত্যাখ্যানের পরও শপথ নেওয়ায় দলে ব্যাপক সমালোচনা হয়। অবশ্য সারাদেশে দলের অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের কমিটি পুনর্গঠন কাজ চালিয়ে যাচ্ছে বিএনপি। শিগগির সারাদেশে মূল দলেরও মেয়াদোত্তীর্ণ ও অসমাপ্ত কমিটিগুলো পুনর্গঠনের পর জাতীয় কাউন্সিলের চিন্তাভাবনা চলছে। পাশাপাশি সরকারবিরোধী সব রাজনৈতিক দলকে ঐক্যবদ্ধ করে নির্দলীয় সরকারের অধীনে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবি আদায়ে আন্দোলনে নামারও চিন্তাভাবনা রয়েছে।

বর্তমানে দলের বিশাল নেতৃত্বশূন্যতার পাশাপাশি সাজাপ্রাপ্ত খালেদা জিয়ার শারীরিক অসুস্থতা নিয়েও চিন্তিত দলের নেতাকর্মীরা। সাংগঠনিকভাবে দুর্বল দলটিকে কীভাবে আবার শক্তিশালী করা যায়- তা নিয়ে আলাপ আলোচনা করছেন শীর্ষ নেতারা। বিশ্নেষকরা বলছেন, বিএনপির সংকট উত্তরণে সবার আগে নেতৃত্ব ঠিক করা জরুরি।

১৯৮১ সালে দলের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের মৃত্যুর পর প্রথমবার সংকটে পড়েছিল বিএনপি। ‘৯০ দশকে জেনারেল হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের শাসনামলে চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া কারাবন্দি হওয়ার পরও দ্বিতীয়বার গভীর সমস্যার মুখে পড়ে দলটি। ২০০৭ সালে ওয়ান-ইলেভেনের সময় খালেদা জিয়াসহ বিপুলসংখ্যক শীর্ষ নেতা কারাবন্দি হলে তৃতীয় দফা দলটি নেতৃত্ব সংকটে পড়েছিল। তিন দফায়ই ভাঙনের মুখে পড়ে দলটি। এভাবে নানা সংকট ও ভাঙাগড়ার মধ্য দিয়েই দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়েছে বিএনপি।

এ বিষয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সমকালকে বলেন, দেশের অন্যতম বৃহৎ রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপি অতীতের মতো সব চক্রান্ত ও ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে সামনে এগিয়ে যাবে। বিএনপিকে বারবার নির্মূল করার ষড়যন্ত্র করা হয়েছে। কিন্তু বিএনপি গণমানুষের দল। এ জন্য তা সম্ভব হয়নি। জনগণের সহায়তায় সব সংকট কাটিয়ে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় এসেছে। গত ৪২ বছরে বহুদলীয় সংসদীয় গণতন্ত্র ও অর্থনৈতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে বিএনপি।

তিনি অভিযোগ করেন, ১২ বছর ধরে বর্তমান সরকার রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় থেকে বিএনপিকে ধ্বংস করতে নেতাকর্মীদের ওপর নির্যাতন ও নিপীড়ন চালিয়ে যাচ্ছে। ক্ষোভ প্রকাশ করে মির্জা ফখরুল বলেন, দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলায় সাজা দেওয়া হয়েছে। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে মামলাও মিথ্যা। শুধু তাই নয়, বর্তমানে বিএনপির লাখ লাখ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে। গুম করা হয়েছে ৫০০ নেতাকর্মীকে।

দলের বর্তমান সংকট মোকাবিলা করবেন কীভাবে- প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার অনুপস্থিতিতে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বে দল ঐক্যবদ্ধ আছে। জনগণকে সঙ্গে নিয়ে আবারও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করা হবে। বিএনপিও ঘুরে দাঁড়াবে।

বিভিন্ন সমস্যায় থাকা দলটি আগামী দিনে কীভাবে পথ চলবে- তা নিয়ে রয়েছে নানামুখী জল্পনা-কল্পনা। দলটি খালেদা জিয়ার মুক্তিকে প্রাধান্য দিলেও তা কতটুকু সফল হবে, তা নিয়ে সন্দিহান অনেকে। বিশেষ করে আড়াই বছর আন্দোলন ও আইনি লড়াই চালিয়ে কার্যকর তেমন কিছু হয়নি। এ পরিস্থিতিতে নতুন করে হিসাব-নিকাশ করছেন দলটির নীতিনির্ধারকরা।

মুখে বিএনপি নেতারা সাংগঠনিকভাবে শক্তিশালী দাবি করলেও বারবার উদ্যোগ নিয়ে তৃণমূল পর্যায়ে দল পুনর্গঠনের কাজও শেষ হয় না। ব্যক্তিস্বার্থে নেতাদের মধ্যেও রয়েছে অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব-কোন্দল। পারস্পরিক অবিশ্বাস ও সন্দেহ প্রবণতা। আন্দোলনের কেন্দ্রবিন্দু রাজধানী ঢাকায় দলের সাংগঠনিক অবস্থাও তেমন ভালো নয়।

নেতৃত্বের সংকট গভীর :

২০০৭ সালে ওয়ান-ইলেভেনে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনে বিপর্যস্ত হওয়ার পর একযুগেও নতুন করে ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি বিএনপি। একাদশ সংসদ নির্বাচনের ফল প্রত্যাখ্যান করে শেষ পর্যন্ত আবার শপথ নিয়েছেন তারা। নির্বাচনের আগের দিন রাতেই ভোট কারচুপি করে বাক্সভর্তি করা হয়েছে অভিযোগ তুললেও এ ইস্যুতে রাজপথে বড় ধরনের কর্মসূচি দিতে পারেনি। চার দেয়ালের ভেতরে সভা-সমাবেশ, জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন এবং দলীয় কার্যালয়ে প্রতিদিন নামকাওয়াস্তে ‘সংবাদ সম্মেলনে’র মধ্যেই সীমাবদ্ধ থেকেছে কেন্দ্রীয় কর্মসূচিও।

বর্তমানে করোনার কারণে চার দেয়ালের ভেতর কর্মসূচি বন্দি রয়েছে বিগত পাঁচ মাস। অবশ্য এখন প্রতি শনিবার গুলশান কার্যালয়ে দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠকে পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে একটি সংবাদ সম্মেলন করে দলের অবস্থান তুলে ধরা হচ্ছে। পাশাপাশি মাঝে মাঝে বিদেশি কূটনীতিকদের কাছেও গণতন্ত্র এবং মানবাধিকার পরিস্থিতি তুলে ধরা হচ্ছে প্রকাশ্যে ও গোপনে। কিন্তু কাঙ্ক্ষিত সুফল নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন খোদ দলের নেতাকর্মীরাও।

বিশ্নেষকরা বলছেন, বিএনপিতে চরম ‘নেতৃত্বের সংকট’ বিরাজ করছে। দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া সাজাপ্রাপ্ত হয়ে শর্তসাপেক্ষে জামিনে থাকলেও সক্রিয় রাজনীতিতে অংশ নিতে পারছেন না। আবার গ্রেনেড হামলাসহ বেশ কয়েকটি মামলার সাজা মাথায় নিয়ে লন্ডনে অবস্থান করছেন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। যদিও সেখান থেকে তিনি টেলিফোনে এবং স্কাইপিতে দলের স্থায়ী কমিটিসহ বিভিন্ন সভা-সেমিনারে বক্তব্য ও দিকনির্দেশনা দিচ্ছেন। সশরীরে উপস্থিত না থাকায় ওইসব সিদ্ধান্ত নিয়ে মাঝেমধ্যে ভুল এবং সঠিক হচ্ছে না বলেও প্রশ্ন তুলছেন খোদ দলের নীতিনির্ধারক নেতারাও। প্রকাশ্যে বাইরে না বললেও ঘরোয়াভাবে তারা ক্ষোভ প্রকাশ করছেন।

শীর্ষ নেতার অনুপস্থিতিতে সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্যরা বৈঠকে বসে ভার্চুয়াল মাধ্যমে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন। আবার উদ্ভূত পরিস্থিতি মোকাবিলায় দলের শীর্ষস্থানীয় নেতাদের আড়ালে রেখেও এককভাবে সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন তারেক রহমান। এ নিয়ে দলের ভেতর রয়েছে নানা ক্ষোভ ও অসন্তোষ।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি জাতীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে কয়েকজন নেতাকে ইঙ্গিত করে ভর্ৎসনা করেছেন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান। অনেক জেলায় বিএনপি ও অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনগুলোর কমিটি গঠন নিয়ে চলছে ক্ষোভ। অবশ্য খালেদা জিয়ার অনুপস্থিতিতে তারেক রহমান তার পছন্দের নেতাদের কমিটির গুরুত্বপূর্ণ পদে পদায়ন করে কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করছেন। এ নিয়ে দলের ভেতরে সিনিয়র নেতাদের মধ্যে কিছুটা অস্বস্তি থাকলেও প্রকাশ্যে কেউ মুখ খুলছেন না।

লক্ষ্য ও কৌশল নির্ধারণে ব্যর্থতা :

বিএনপি সঠিক রাজনৈতিক লক্ষ্য ও কৌশল নির্ধারণ করতে পারছে না বলে মনে করছেন বিশ্নেষকরা। তাদের মতে, ১৯৯১ সাল থেকে বিএনপি মূল রাজনৈতিক আদর্শ থেকে বিচ্যুত হয়েছে। সারাদেশে দলের কর্মী-সমর্থক থাকলেও মূল লক্ষ্য অর্জন করতে পারছে না। উদার গণতান্ত্রিক ভাবধারার অবস্থান থেকে ধর্মভিত্তিক রাজনীতির প্রভাব বৃদ্ধি পেয়েছে দলটির ভেতর। মৌলবাদী রাজনীতি তথা জামায়াতে ইসলামীর মতো ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জোট করেছে। এটা ভালোভাবে নেননি দেশি-বিদেশি কূটনীতিকরা। বিএনপির ক্ষমতার আসার পথে এটিও অন্যতম বড় একটি অন্তরায় বলে মনে করেন রাজনৈতিক বিশ্নেষকরা।

জানা গেছে, ‘বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট রিসার্চ সেন্টার’-এর মাধ্যমে দেশি-বিদেশি পেশাদার বিশেষজ্ঞরাও বিএনপির আগামীর পথচলার কৌশল প্রণয়নে সহায়তা করছেন। সম্প্রতি ২৫ পৃষ্ঠার একটি গবেষণাপত্র জাতীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে উপস্থাপন করা হয়। স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী রিসার্চ সেন্টার প্রণীত ওই পরামর্শ পেপারটি উপস্থাপন করেন। এতে বিএনপির স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক রাজনীতির লক্ষ্য ও কৌশল সম্পর্কে বিস্তারিত আলোকপাত করা হয়।

দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, বিএনপি একটি গণতান্ত্রিক দেশপ্রেমিক দল। তারা গণতান্ত্রিক পথে রাজনীতি করছেন। দেশ একটি অগণতান্ত্রিক ও স্বৈরশাসনের কবলে পড়েছে। বিএনপি গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করতে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে এবং যাবে।

সুজন সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর ভেতর গণতান্ত্রিক চর্চা বাড়াতে হবে। দলে গণতন্ত্র না থাকলে দেশে গণতন্ত্র চর্চা হয় না। আজ বিএনপি সংকটে, গণতন্ত্রও সংকটে। সরকারি দল সংকটে এবং পুরো জাতিই সংকটে। এ সংকট উত্তরণে বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন প্রয়োজন। ভোট ছাড়া যেমন গণতন্ত্র হয় না, তেমনি বিরোধী দল ছাড়াও গণতন্ত্র শক্তিশালী হয় না।

বদিউল আলম মজুমদার আরও বলেন, বিএনপির অন্যতম সংকট নেতৃত্বের। পরিবারতন্ত্র থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। জনগণের আস্থা অর্জনকারী বিশ্বাসযোগ্য নেতৃত্বের প্রয়োজন। এ নেতৃত্বকে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে নির্বাচিত হতে হবে। শ্যাডো ক্যাবিনেট প্রক্রিয়া করা দরকার। শুধু দলীয় প্রধানের মুক্তি নয়, সরকারের জনবিরোধী কর্মকাণ্ডেরও সমালোচনা করতে হবে। সরকারের দুর্নীতিসহ বিভিন্ন অন্যায় কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে জনস্বার্থে কর্মসূচি পালন করতে হবে।

ঐক্যফ্রন্ট ও জামায়াতকে নিয়ে অস্বস্তি :

জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ও ২০ দলীয় জোটেও চলছে ব্যাপক টানাপোড়েন। একাদশ সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে ড. কামাল হোসেনকে শীর্ষ নেতা মেনে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠন নিয়ে এখন চলছে বিএনপির ভেতরে অস্বস্তি। জোট করেও নির্বাচনের ফলাফল শূন্য হওয়ায় খোদ দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াও ড. কামাল হোসেনকে জাতীয় নেতা বানিয়ে নির্বাচনে যাওয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন। এ নিয়ে বিএনপি ও ঐক্যফ্রন্টের মধ্যে অস্বস্তি বিরাজ করছে। এ পরিস্থিতিতে ঐক্যফ্রন্টের ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক পথচলা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করছেন নেতাকর্মীরা। ঐক্যফ্রন্ট থেকে বেরিয়ে গেছে কৃষক-শ্রমিক-জনতা লীগ। আবার জোটের অন্যতম শরিক পৃথক জোট করার ঘোষণা দিয়ে ভাঙছে এলডিপিও।

জামায়াতসহ ইসলামী দলগুলোর সঙ্গ ছাড়া নিয়ে বিএনপিতে বিরাজ করছে ক্ষোভ। দলের মুক্তিযোদ্ধা ও প্রগতিশীল নেতাকর্মীরা জামায়াতে ইসলামীসহ মৌলবাদী দলগুলোর সঙ্গ ত্যাগের পক্ষে সোচ্চার। সম্প্রতি দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠকেও বিষয়টি নিয়ে বিতর্ক হয়। পরে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জামায়াতবিরোধী নেতাদের তিরস্কার করেন। ভোটব্যাংকের কথা মাথায় রেখে জামায়াত-সঙ্গ ছাড়ার ব্যাপারে দলের হাইকমান্ড চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে পারছে না বলে সূত্র জানিয়েছে।

এদিকে বিএনপি বা জোটের নির্দলীয় সরকারের অধীনে অবাধ ও সুষ্ঠু পুনর্নির্বাচনের দাবি ইতোপূর্বে প্রত্যাখ্যান করেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। বিএনপির এমপিদের সংসদে যোগ দেওয়ার পর ওই দাবির গুরুত্ব আরও কমে গেছে। তারপরও এ দাবিতেই আগামী তিন বছর রাজনীতি করে যাওয়ার কৌশল নিয়ে এগোচ্ছে তারা। সঙ্গে দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি, রাষ্ট্রের নিরাপত্তা, জনস্বার্থবিরোধী কর্মকাণ্ড, দুর্নীতি প্রতিরোধের মতো জনস্বার্থসংশ্নিষ্ট দাবি-দাওয়া নিয়ে মাঠে থাকার চেষ্টা করবে।

কর্মসূচি :

ভোর ৬টায় দলীয় কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন, সকাল ১১টায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে দলের জাতীয় স্থায়ী কমিটির নেতৃবৃন্দ, সাড়ে ১১টায় ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ও ১২টায় মহানগর উত্তর বিএনপির নেতৃবৃন্দ শেরেবাংলা নগরে দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের কবরে পুষ্পমাল্য অর্পণ ও দোয়া করবেন। বিকেল সাড়ে ৩টায় বিএনপি প্রতিষ্ঠাতার ‘উদ্দেশ্য ও তাৎপর্য’ শীর্ষক ভার্চুয়াল আলোচনা সভা করবে বিএনপি। দলীয় পোস্টার ও ক্রোড়পত্র প্রকাশ করা হচ্ছে। সারাদেশে সব ইউনিট বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে সুবিধাজনক সময়ে দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন করবে। এ উপলক্ষে এক বাণীতে দলের নেতাকর্মী, সমর্থক ও দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

340 ভিউ

Posted ৪:০৯ পূর্বাহ্ণ | মঙ্গলবার, ০১ সেপ্টেম্বর ২০২০

coxbangla.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

এ বিভাগের আরও খবর

Editor & Publisher

Chanchal Dash Gupta

Member : coxsbazar press club & coxsbazar journalist union (cbuj)
cell: 01558-310550 or 01736-202922
mail: chanchalcox@gmail.com
Office : coxsbazar press club building(1st floor),shaheed sharanee road,cox’sbazar municipalty
coxsbazar-4700
Bangladesh
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
বাংলাদেশের সকল পত্রিকা সাইট
Bangla Newspaper

ABOUT US :

coxbangla.com is a dedicated 24x7 news website which is published 2010 in coxbazar city. coxbangla is the news plus right and true information. Be informed be truthful are the only right way. Because you have the right. So coxbangla always offiers the latest news coxbazar, national and international news on current offers, politics, economic, entertainment, sports, health, science, defence & technology, space, history, lifestyle, tourism, food etc in Bengali.

design and development by : webnewsdesign.com