রবিবার ৫ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২২শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম

রবিবার ৫ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

শিরোনাম

আগুনের পরশমণি

বুধবার, ১৮ অক্টোবর ২০১৭
676 ভিউ
আগুনের পরশমণি

যুথিকা বড়ুয়া,টরোন্ট-কানাডা(১৮ অক্টোবর) :: মনের ভাব প্রকাশ করার জন্যই বিধাতা আমাদের দিয়েছেন কথা বলার শক্তি। দিয়েছেন পঞ্চ ইন্দ্রিয়শক্তি। চক্ষু, কর্ণ, নাসিকা, জিহবা এবং তক। আর সেই সঙ্গে গড়িয়ে দিয়েছেন, একটি সুন্দর মুখমন্ডল। বিশেষ করে মেয়েদের রূপরাশি এবং পরিপূর্ণতায় সৃষ্টিকর্তা এমনভাবে সৃষ্টি করেছেন, যার সৌন্দর্য্যের অপার মহিমায় বাচ্চা, বুড়ো, জোয়ান প্রতিটি মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করে চুম্বকের মতো। কখনোবা মুগ্ধ বিস্ময়ে এতটাই অভিভূত হয়ে পড়ে যে, পলকমাত্র দৃষ্টিপাতেই আবেগের বশীভূত হয়ে প্রেমের পত্তন ঘটে হাবুডুবু খায়। শুধুমাত্র তরুণ যুবকই নয়, নবীণ প্রবীণ প্রতিটি মানুষ একেবারে দেওয়ানা হয়ে যায়।

কিন্তু মেয়েদের বেলায় কিছুটা ব্যতিক্রমী হলেও বেশীরভাগ ক্ষেত্রে তেমনভাবে প্রকাশ্যে কখনো দৃষ্টিগোচর হয়না। কারণ মেয়েরা সর্বাবস্থায় নারীত্ব বজায় রেখে যথাসাধ্য সংযত হয়েই চলে। তথাপি ক্ষণিকের মোহে অদৃশ্য এক মায়াজ্বালে আবিষ্ট হয়ে হ্রদস্পন্দন মুহূর্তের জন্য কেঁপে ওঠে। যা হ্রদয়কে গভীরভাবে স্পর্শ করে। জেগে ওঠে ভালোলাগার একটা কোমল আবেশ।

আর সেই ভালোলাগার আবেশটুকুই শুধু জড়িয়ে রাখে এক অদৃশ্য অনুভূতিতে। আবার কখনো একান্তে নির্জনে গভীর নিস্তব্ধতায় ডুবে গিয়ে ক্ষণে ক্ষণে অনাবিল খুশীর পাল তুলে মেতে ওঠে রাঙা অনুরাগে। কখনো বা কল্পনায় বিচরণ করতে করতে রক্তগোলাপ ঠোঁটের কোণে চমকিত বিজলীর মতো রহস্যাবৃত হাসির ঝিলিক দিয়ে ওঠে। কখনো স্নিগ্ধ সতেজ হাওয়ায় মধুর গুঞ্জরণে ভেসে বেড়ায় সঙ্গীতের অপুর্ব মূর্ছণা। তবু না বলা কথাকলিকে কখনো মুখ ফুটে উচ্চারণ করতে পারেনা।

তখন ছিল ফাল্গুন মাস। বসন্তের প্রারম্ভকাল। সৃষ্টির অমোঘ নিয়মে প্রকৃতির কি নিদারুণ বৈচিত্রময় রূপ। স্বচ্ছ রৌদ্রাজ্জ্বল গাঢ় নীল আকাশ। ঝুরু ঝুরু মিহিন বাতাসের মৃদু ছোঁয়ায় শিহরণে দোল খায় মন-প্রাণ, সারাশরীর। মনকে পুলকিত করে। সুপবনও আমোদিত হয়ে আছে, পথের প্রান্তরে ফুটে থাকা নাম না জানা লাল-নীল-হলদে-বেগুনী ফুলের মধুর সুরভীতে। যেন প্রকৃতির বুকের মাঝে চলছে আলো বাতাসের লুকোচুরি খেলা। কি নিদারুণ সেই অনুভূতি। রাজ্যের পশু-পক্ষী থেকে শুরু করে বাচ্চা, বুড়ো, জোয়ান প্রতিটি প্রাণীই উচ্ছাসে উতলা। অব্যক্ত আনন্দে একেবারে আত্মহারা।

প্রকৃতির এহেন চমকপ্রদ বাতাবরণে সারাদিনের কর্মক্লান্ত দেহের অবসন্নতা ঝেরে ফেলে মন-প্রাণ চকিতে চাঙ্গা হয়ে ওঠে। স্বতঃস্ফূর্ত মনে বদ্ধঘর থেকে বেরিয়ে আসি বাইরের পৃথিবীতে। বেরিয়েই দেখি, শহরের চারিদিকে উচ্ছাসিত মানুষের ভীঁড়। চলছে আনন্দ উল্লাসের মিছিল। সবাই উন্মুক্ত অন্তর মেলে আস্বাদন করছে প্রকৃতির মনমাতানো রূপ আর রঙ। অন্যদিকে একঝাঁক যুবতীর দল প্রচন্ড উষ্ণতার তাপদাহে ঝলসে ওঠা শহরের পীচঢালা রাজপথে পায়ে রোলার ব্লেডিং পড়ে প্রস্তুতি নিচ্ছিল রেস দেবে বলে। ইত্যবসরে হঠাৎ সুদর্শণ চেহারার এক কৃষ্ণাঙ্গ তরুণ যুবক, সেও পায়ে রোলার ব্লেডিং পড়ে ঝরের বেগে ছুটে এসে ইচ্ছাকৃতভাবেই হুমড়ি খেয়ে পড়ে, উজ্জ্বল সুদর্শণা অনন্যা এক ষোড়শী স্প্যানিশ কন্যার দুধসাদা মসৃণ দেহের উপর। একেবারে মেয়েটির সুকোমল অঙ্গে লেপটে গিয়ে দুজনেই চিৎপটাং হয়ে পড়ে যায় মাটিতে। তখন মনে হয়েছিল, ওরা দুজন দুজনার চেনা জানা পরিচিত।

কিন্তু না, দেখা গেল আচমকা অনাকাঙ্ক্ষিত বিভ্রান্তিকর পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়ে অপ্রস্তুত মেয়েটি লজ্জা আর ক্রোধের সমণ্বয়ে মুহূর্তের জন্য কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে পড়ে। চোখমুখ ওর লাল হয়ে ওঠে। কিন্তু মেয়েটির বিচিত্র মুখাবয়বে দৃঢ়ভাবেই অনুমেয় হচ্ছিল, স্পর্শকাতরতায় বিদ্যুতের শখের মতোই ঝটকা লেগেছে ওর দেহে এবং মনে। সৃষ্টি হয় অন্তর্নিহীত প্রতিক্রিয়া। সম্ভবত মেয়েটির সারাশরীর জুড়ে সঞ্চালিত হচ্ছিল, বর্ণনাতীত এক অভিনব ভালোলাগার তীব্র অনুভূতি। যা খোলা খাতার মতো ওর পলকহীন নেত্রের অব্যক্ত ভাষায় অত্যন্ত সুস্পষ্টভাবে অনায়াসেই বোধগম্য হচ্ছিল। যখন চুম্বকের মতো চিত্তাকর্ষণে ওদের দুজনার দ্বীপ্তিময় চোখের তারাদু’টি মুহূর্তের জন্য স্থির হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু তখন যে ওরা এক অবিস্মরণীয় কাল্পনিক জগতে মন দেয়া নেয়ার সন্ধিক্ষণে বিচরণ করছিল, তা কে জানতো!

বয়ে যায় নীরব নিস্তব্ধতায় বেশ কিছুটা সময়। হঠাৎ সঙ্গী-সাথিদের অট্টহাসিতে দুজনেরই চমক ভাঙ্গে। মেয়েটি তক্ষুণি উত্তপ্ত মেজাজে যুবিকটির সংস্পর্শ থেকে দ্রুত ছিটকে বেরিয়ে আসে। অবিলম্বে ভ্রু-যুগল উত্তোলণ করে তীক্ষ্ণ কণ্ঠে গর্জন করে ওঠে।-“হে মিষ্টার, আর ইউ ব্লাইণ্ড? রাবিশ! নন্‌সেন্স!”

ইতিপূর্বে অপরাধীর মতো যুবকটি সলজ্জে ‘সরি’ বলে চোখের নিমেষে অদৃশ্য হয়ে যায় জন-অরণ্যের মাঝে। মেয়েটির কটূক্তির একাংশও কর্ণগোচর হোলো না। মেয়েটি এম্ব্যেরেসিং ফিল করে। লজ্জা আর অপমানের সংমিশ্রণে ক্রোধে ফুলে ওঠে। তখন ওর চোখেমুখের ভাব-ভঙ্গিমায় পরিষ্কার বোঝা গেল, যুবকটি আননোন পার্সন। মেয়েটির অচেনা অপরিচিত। হতেই পারে! কিন্তু ক্ষণিকের দৃষ্টি বিনিময়ে এবং সুকোমল অঙ্গের সংস্পর্শে ওরা যে দুজন দুজনকে অন্তরের অন্তরস্থলে গেঁথে ফেলেছিল, তা কেউই টের পেল না।

তার কদিন পর অবগত হলাম, মেয়েটি আমাদের প্রতিবেশী। আমাদের পাশের ফ্ল্যাটের বাসিন্দা। প্রতিদিন বিকেল হলেই ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে থাকা ওর অভ্যাস। চেনা পরিচিত কাউকে নজরে পড়লে আবেগের প্রবণতায় উৎফুল্ল হয়ে ওঠা, কখনো বা উচ্ছাসিত কণ্ঠস্বরে পথচারীর দৃষ্টি আকর্ষণ করা, চোখেমুখে বিচিত্র ইশারায় সংকেত প্রেরণ করা, এসবই মেয়েটির চরিত্রের একটি প্রধান বৈশিষ্ট।

দিন যায়। মাস যায়। আসে শীতের মৌসম। কানাডার শীত মানে হাঁড়কাঁপানো কনকনে ঠান্ডা। প্রায়শঃই মধ্যরাতের অবিশ্রান্ত তূষারপাতে শুভ্র রঙের আবরণে ছেয়ে যায় প্রকৃতির বুক। তন্মধ্যে প্রচন্ড শীততাপে তূষার জমে আইস রিঙ্ক তৈরী হয়ে পিছল হয়ে থাকে শহরের গোটা রাস্তা। রাজ্যের তরুণ-তরুণীরা দলবেঁধে স্কেটিং করতে করতে মনের উৎসাহ-উদ্দীপণায় এগিয়ে চলে আপন ঠিকানায়।

সেবারও প্রায় তিনদিনব্যাপী অ্নবরত তূষারপাতে গোটা শহর জুড়ে আইস রিঙ্কে তৈরী হয়ে যায়। তরুণ তাপসের মতো উজ্জ্বল রৌদ্র-খড়তাপেও এতটুকু প্রভাব পড়েনি। তদুপরি সূর্য্যের প্রচন্ড তাপে ঝলসে গিয়ে চিক্‌ চিক্‌ করছে তূষারের কণা। স্নিগ্ধ শীতল বাতাসে ধূঁয়োর মতো উড়ছে চারিদিকে। যেন স্বর্গোদ্যান! কি নিদারুণ মনোরম পরিবেশ! যেন শহরের সমস্ত মানুষগুলিকে অভিবাদন জানাচ্ছে আর অকুণ্ঠভাবে আহবান করছে, প্রকৃতির মনমাতানো বৈচিত্র্যময় রূপ আস্বাদন করার জন্য।

স্বাভাবিক কারণে অব্যক্ত আনন্দের উন্মাদনায় উচ্ছাসিত সেই ষোড়শী মেয়েটির সন্ধানি চোখদুটো চড়কির মতো ঘুরছে চারিদিকে। তারুণ্যের প্রথম প্রহর। যৌবন ছুঁই ছুঁই করছে। মুক্ত বিহঙ্গের মতো চিন্তাহীন, বন্ধনহীন জীবন। উরু উরু মন। অন্ত নেই স্বাধীনতার। খুশির পাল তুলে জীবন জোয়ারে ভেসে বেড়াচ্ছে। ঠেকায়ে কে! কিন্তু আকস্মিক ওর বিবর্তন রূপ ছিল অত্যন্ত লক্ষণীয়। একেবারে মিরাকলের মতো হঠাৎই যেন যৌবনের বন্যা উপছে পড়তে লাগলো ওর শরীরে। স্বয়ং বিধাতাই যেন রাতারাতি রূপের মাধুর্য্য ঢেলে এক উদ্বিগ্ন নব যৌবনসম্পন্না অনন্যা করে মেয়েটিকে গড়ে তুললেন। যেন স্বর্গের দেবী, কৃতার্থ হয়ে নেমে এসেছে মর্তে। যেমন কোমল মসৃণ শরীরের গড়ন, তেমনি নিত্যনতুন চটকদারি প্রসাধনের বাহার, নতুনত্বের সম্ভার।

প্রতিদিনকার মতো সেদিনও ষোড়শী মেয়েটি ব্যালকনিতে দাঁড়িয়েছিল। নায়িকাসুলভ মুখাবয়বে ওর গালের পাশে ঝুলে থাকা একগোছা কোঁকড়া চুল নিয়ে আপনমনে খেলা করছিল। হঠাৎ কাকে যেন দেখতে পেয়ে দৌড়ে ঢুকে পড়ে ঘরের ভিতর। তার কিছুক্ষণ পর পায়ে স্কেটিং পড়ে বেরিয়ে আসে রাস্তায়।

স্বভাবসুলভ কারণে আমার কৌতূহল জেগে ওঠে। গলা বারিয়ে দেখতেই শুধু চমকৃতই নয়, বিস্ময়ে হতবাক হয়ে গেলাম। চোখ পাকিয়ে দেখি, সে আর অন্য কেউই নয়, সেই কৃষ্ণাঙ্গ তুরুণ যুবকটিই নির্দ্বিধায় প্রেমিকসুলভ কণ্ঠস্বরে মেয়েটিকে বলছে,-“কাম্অন্‌ টিনা, মাই সুইটহার্ট, কাম্অন্‌! হারিয়াপ!”

উফুল্ল টিনা একগাল হেসে মহাআনন্দে হাত প্রসারিত করতেই যুবকটি বাজপাখীর মতো ছোঁ মেরে ওকে টেনে নেয় ওর পেশীবহুল উষ্ণ বক্ষের মাঝে। অপ্রস্তুত টিনা সলজ্জে দুহাতে মুখ ঢেকে ফ্যালে। ততক্ষণে যুবকটি ওকে সজোরে বেঁধে নেয় প্রেমালিঙ্গনে। যুগলবন্দী হয়ে টিনার কানের কাছে মুখ নিয়ে কি যেন বলতেই টিনা একগাল মুক্তোঝরা হাসি ছড়িয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। হাসতে হাসতেই মুখখানা বাঁকা করে বলল,-“ওঃ নো! নটিবয়!”

যুবকটি বলল,-“ওকে, লেটস্‌ গো হানি!” বলে দুজনে হাত ধরাধরি করে উচ্ছাসিত বাক্যালাপে স্কেটিং করতে করতে চোখের নিমেষে অদৃশ্য হয়ে গেল।

তারপর প্রায়শঃই অন্তরঙ্গ মুহূর্তে ওদের নজরে পড়ে। কখনো হাসি কলোতানের ধ্বঃনি প্রতিধ্বঃনিত হয়ে হাওয়ায় ভাসে। আবার কখনো নির্দ্বিধায় বাহুবেষ্টিত হয়ে প্রেমালাপে মশগুল হয়ে থাকে। মনে মনে ভাবি, একবিংশ শতাব্দিতে পৃথিবীটা যেন একেবারে বদলে গিয়েছে। বদলে গিয়েছে মানুষ। মানুষের মনোবৃত্তি। ব্যক্তিগত রুচী। ধ্যান-ধারণা। মানবিক মূল্যায়ন বোধ। এখন ইন্টারনেটের যুগ।

টেকনলজির যাবতীয় মেশিনারী কাজকর্ম যেমন ইন্টারনেটের হাই স্পীডের মতো দ্রুতগতীতে চলছে, তেমনই শুধু প্রেমের পত্তনই নয়, অনিবার্য পরিণতির শেষ পর্যায়ে পৌঁছাতেও এখন এক মুহূর্ত দেরী লাগে না। শুধু হ্রদয় নামক বিশাল সাম্রাজ্যের আধিপত্যের স্বীকৃতিটুকু পাওয়ার অপেক্ষা মাত্র। তারপর মঞ্জিল একেবারে হাতের মুঠোয়। নাগাল পায় কে! খুশীর তুফান উড়িয়ে পারি জমাতে ছুটে চলে একান্ত আকাঙ্ক্ষিত রঙ্গিন স্বপ্নময় জগতে। যেখানে বেগ আছে, আবেগের প্রবণতা নেই। সম্পৃক্ততা আছে, ভালোবাসার গভীরতা নেই। আছে শুধুমাত্র সীমাহীন চাহিদা প্রাপ্তীর অফুরন্ত আশা।

টিনাদের দৃষ্টগোচর হলেই সাংসারিক দায়বদ্ধতা থেকে সাময়িক বিচ্ছিন্ন হয়ে অতীত জীবনে ফেলে আসা স্বর্ণালীদিনের স্মৃতিগুলি রোমন্থনে বিভোর হয়ে ডুবে যাই কল্পনায়। যা আজও একাকীত্বে নির্জন নিস্তব্ধতায় স্মরণ করিয়ে দেয়, এককালে আমাদেরও যৌবন ছিল। সুকোমল হ্রদয়ে প্রেম ছিল। অকৃত্রিম ভালোবাসা ছিল। স্বপ্নবিজড়িত একটি মাসুম মনও ছিল। কিন্তু মাতা-পিতার কঠোর শাসনের সীমাবদ্ধতায় আবদ্ধ থেকে যৌবনের প্রথম ফুল কবে কখন ফুটেছিল, টেরই পাইনি। যেদিন সৃষ্টির অমোঘ নিয়মে আবেগের প্রবণতায় শরীর ও মন-প্রাণ এক নিদারুণ শিহরণে দোলা দিয়ে অত্যাশ্চর্য্যময় এক অভিনব আনন্দানুভূতিতে জীবনকে গভীরভাবে উপলব্ধি করার প্রবল ইচ্ছা দৃঢ়ভাবে জেগে উঠল, সেদিন নিজেকে আবিস্কার করি, সদ্য পরিণীতা নববধূ রূপে। নারীজাতির চিরন্তন কর্তব্য সংসার ধর্ম পালন রত একজন দায়িত্বপরায়ণশীল গৃহিনী রূপে।

আসলে আমরা হলাম বাঙালী। বাঙালী ঘরের সন্তান। বয়োজ্যেষ্ঠ ব্যক্তিবর্গকে গণ্যমান্য করা, অভিভাবকের অনুগত হয়ে চলা এবং সামাজিক ও পারিবারিক রীতি-নীতি অনুসরণ করে চলা শুধু আমাদের দায়িত্ব-কর্তব্যই নয়, এটা আবহমানকালের চিরাচরিত বাঙালীর ঐতিহ্য। যা লঙ্ঘন করার স্পর্ধা আমাদের নেই। কিন্তু আমাদের এ প্রজন্মের ছেলে-মেয়েরা, বিশেষ করে যারা জন্মাবধিই এদেশের বাতাবরণে গড়ে উঠছে অর্থাৎ ইউরোপীয় সভ্যতা ও সংস্কৃতির প্রভাবে তাদের অনাগত ভবিষৎ প্রজন্মের ছেলেমেয়েদের জীবনে নিজের বাঙালীর কৃষ্টি, সভ্যতা, সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্য বংশপরস্পরা অব্যাহত থাকবে কি না সেটাই চিন্তার বিষয়।

তা না হলে, আমাদের অবর্তমানে টিনাদের মতো অপ্রাপ্ত বয়সেই প্রেমে আসক্তি হয়ে বাপ-ঠাকুরদার ঐতিহ্যকে বেমালুম ভুলে গিয়ে সামাজিক রীতি-নীতি লঙ্ঘন করে জীবনকে নতুন রঙ্গে, নতুন ঢঙ্গে গড়ে তুলতে পবিত্র ভালোবাসাকে কলঙ্কিত এবং বিকৃত করে প্রকাশ্যে মেতে উঠবে প্রেমলীলায়। রচনা করবে প্রেমের সাতকাহন। যখন রোধ করার মতো তাদের মা-ঠাকুমা কিম্বা বাপ-ঠাকুদা কেউ আর জীবিত থাকবে না এই সুন্দর পৃথিবীতে।

সমাপ্ত

যুথিকা বড়ুয়া — কানাডার টরোন্ট প্রবাসী গল্পকার, গীতিকার, সুরকার ও সঙ্গীত শিল্পী।

676 ভিউ

Posted ৯:২৫ অপরাহ্ণ | বুধবার, ১৮ অক্টোবর ২০১৭

coxbangla.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

এ বিভাগের আরও খবর

Editor & Publisher

Chanchal Dash Gupta

Member : coxsbazar press club & coxsbazar journalist union (cbuj)
cell: 01558-310550 or 01736-202922
mail: chanchalcox@gmail.com
Office : coxsbazar press club building(1st floor),shaheed sharanee road,cox’sbazar municipalty
coxsbazar-4700
Bangladesh
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
বাংলাদেশের সকল পত্রিকা সাইট
Bangla Newspaper

ABOUT US :

coxbangla.com is a dedicated 24x7 news website which is published 2010 in coxbazar city. coxbangla is the news plus right and true information. Be informed be truthful are the only right way. Because you have the right. So coxbangla always offiers the latest news coxbazar, national and international news on current offers, politics, economic, entertainment, sports, health, science, defence & technology, space, history, lifestyle, tourism, food etc in Bengali.

design and development by : webnewsdesign.com