রবিবার ২৮শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৫ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম

রবিবার ২৮শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

শিরোনাম

বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব : বঙ্গবন্ধুর শক্তি, বঙ্গবন্ধুর প্রেরণা

রবিবার, ০৮ আগস্ট ২০২১
1571 ভিউ
বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব : বঙ্গবন্ধুর শক্তি, বঙ্গবন্ধুর প্রেরণা

‘আমার মা ছিলেন সবচেয়ে বড় গেরিলা। বাবার নেতৃত্বের পেছনে মূল চালিকাশক্তি ছিলেন আমার মা।’

-প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

স্বাধীন বাংলাদেশ আজ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কাছে ঋণী; ঠিক তেমনই বঙ্গবন্ধু ঋণী বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের কাছে। টুঙ্গিপাড়ার সেই ছোট্ট খোকা যদি আজ এই বঙ্গভূমির স্থপতি হন, তবে টুঙ্গিপাড়ার সেই ছোট্ট রেণু আজ সেই স্থপতির স্থপতি। শেখ লুৎফর রহমান ও শেখ সায়েরা খাতুনের সেই দুরন্ত খোকা থেকে আজকের বঙ্গবন্ধু হয়ে ওঠার পেছনে যার অবদান সবচেয়ে বেশি; তিনি আর কেউ নন, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব। বঙ্গবন্ধুর কাছে যিনি কখনও রেণু আবার কখনও বেগম সাহেবা।

খোকা থেকে শেখ মুজিব, শেখ মুজিব থেকে বঙ্গবন্ধু হওয়ার পথটা যেমন মসৃণ ছিল না, ঠিক তেমনি রেণু থেকে বঙ্গমাতা হওয়ার সফরটিও কুসুমাস্তীর্ণ ছিল না। ১৯৩০ সালের ৮ আগস্ট গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জন্মগ্রহণ করা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব সম্পর্কে ছিলেন বঙ্গবন্ধুর জ্ঞাতি বোন। বাবা শেখ মোহাম্মদ জহুরুল হক ও মা হোসনে আরা বেগম। খুব ছোটবেলাতেই মুরব্বিদের অনুরোধে বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব। তাদের বিয়ের ঘটনাটি ছিল খুবই চমকপ্রদ। বঙ্গবন্ধু তার ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’তে ঘটনাটির বর্ণনা দিয়েছেন এভাবে- “আমার যখন বিবাহ হয় তখন আমার বয়স বার তের বছর হতে পারে। রেণুর বাবা মারা যাবার পরে ওর দাদা আমার আব্বাকে ডেকে বললেন, ‘তোমার বড় ছেলের সাথে আমার এক নাতনীর বিবাহ দিতে হবে। কারণ আমি সমস্ত সম্পত্তি ওদের দুই বোনকে লিখে দিয়ে যাব।’ রেণুর দাদা আমার আব্বার চাচা। মুরুব্বির হুকুম মানার জন্যই রেণুর সাথে আমার বিবাহ রেজিস্ট্রি করে ফেলা হলো। আমি শুনলাম আমার বিবাহ হয়েছে। তখন কিছুই বুঝতাম না। রেণুর বয়স তখন বোধহয় তিন বছর হবে।”

সাত বছর বয়সের মধ্যে যখন পিতা-মাতা ও দাদাকে হারিয়ে ফেলেন, তখন থেকে ফজিলাতুন্নেছা শেখ মুজিবের মায়ের কাছে তার ভাইবোনদের সঙ্গে বড় হতে থাকেন। ১৯৩৮ সাল নাগাদ শেখ মুজিবের সাথে পারিবারিক জীবন শুরু করেন। ছোটবেলা থেকে একই পরিবারে বেড়ে ওঠার কারণে তাদের মাঝে ছিল অগাধ স্নেহ, মমতা ও ভালোবাসা। তিনি বঙ্গবন্ধুর দুই কন্যা ও তিন পুত্র সন্তানের রত্নগর্ভা জননী হন। পরবর্তী জীবনের প্রতিটি ধাপে শেখ ফজিলাতুন্নেছার এই চিরায়ত আটপৌরে বাঙালি রমণী রূপটি বঙ্গবন্ধুর শক্তি, নির্ভরতা আর সাহসের উৎস হয়ে ওঠে। তার উল্লেখ পাওয়া যায় বিভিন্ন নিকটজনের বিভিন্ন উৎসে।

বঙ্গবন্ধু তার জীবনের পুরোটা সময় জনগণের সেবায় ব্যয় করেছেন; দেশের কল্যাণে করতে হয়েছে কারাভোগও। সে সময় দক্ষ মাঝির মতো হাল ধরেছিলেন বেগম মুজিব, ছিলেন বঙ্গবন্ধুর ছায়াসঙ্গী হয়ে। নিজে ত্যাগ স্বীকার করেছেন কিন্তু বঙ্গবন্ধুকে কখনও তার কাজ থেকে দেশের সেবা থেকে বিরত রাখেননি। কন্যা শেখ রেহানা তার স্মৃতিচারণে বলেছেন-

‘আর আমার মা। তার কথা ভাবি। কত অল্প বয়সে বিয়ে হয়েছে। মাত্র ৪৪ বছর বয়সে তো তিনি আমাদের ছেড়ে চলেই গেলেন। কত অল্প বয়সে এতগুলো ছেলেমেয়ে নিয়ে তাঁকে জীবন সংগ্রামে নেমে পড়তে হয়েছিল। আব্বা আগের দিন মন্ত্রী, পরের দিন জেলখানায়। বাচ্চাকাচ্চা নিয়ে সরকারি বাসা ছেড়ে দিতে হয়েছে, কিন্তু কেউ মাকে বাসা ভাড়া দিচ্ছে না।’

বঙ্গবন্ধুর কারাজীবন ছিল তার পরিবারের জন্য সবচেয়ে বেশি বেদনাদায়ক, বিশেষ করে শেখ ফজিলাতুন্নেছার জন্য। একবার জেলে বঙ্গবন্ধু গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে শেখ ফজিলাতুন্নেছার অশ্রুভরা আকুতি আমরা জানতে পারি বঙ্গবন্ধুর ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’তে-

‘রেণু আমাকে যখন একাকী পেল, বলল, জেলে থাকো আপত্তি নাই, তবে স্বাস্থ্যের দিকে নজর রেখো। তোমাকে দেখে আমার মন খারাপ হয়ে গেছে। তোমার বোঝা উচিত আমার দুনিয়ায় কেউ নাই। ছোটবেলায় বাবা-মা মারা গেছেন।’ তার এই উক্তি থেকে অনুধাবন করা যায় বঙ্গবন্ধুও বাংলাদেশের জন্য তিনি কতটা ত্যাগ স্বীকার করেছিলেন।

বঙ্গবন্ধুর পরিবারের ঘনিষ্ঠজন ছিলেন এবিএম মূসা, যার ‘মুজিব ভাই’ গ্রন্থটিতে একটি অধ্যায়ের নামকরণ করা হয়েছে। ‘প্রেরণাদায়িনী ফজিলাতুন্নেছা মুজিব’ অধ্যায়টিতে লেখক জানিয়েছেন বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক নেতা হয়ে ওঠার পেছনে তার পত্নী ফজিলাতুন্নেছার সর্বত্যাগী, সাহসী ভূমিকার কথা। লিখেছেন বেগম মুজিবের সহজ-সরল বাঙালি গৃহিণীরূপ এক কথা। লেখকের চমৎকার বর্ণনাটি ছিল এরূপ- “দেখেছি ৩২ নম্বর বাড়ির দোতলায় বিছানায় পা ছড়িয়ে বসে জাঁতি দিয়ে সুপারি কাটছেন, মুখে পান। হাতের ওপরে চুন। কোনদিন সকালবেলা বাড়ির পেছনের সিঁড়িটি বেয়ে দোতলায় শোবার ঘরের দরজায় উঁকি মারতেই বলতেন, ‘আসুন, পান খান।’ আমাকে যখন পানটি এগিয়ে দিতেন, পাশে আধশোয়া মুজিব ভাই পত্রিকার পাতায় চোখ রেখে পাইপ ধরা মুখের ফাঁক দিয়ে মৃদু হাসতেন। আমার দিকে তাকিয়ে সুর করে বলতেন, ‘বাটা ভরে পান দেব গাল ভরে খেয়ো’।”

এ যেন শিল্পীর নিপুণ তুলিতে আঁকা মুজিবগিন্নির স্নিগ্ধ সরল প্রতিচ্ছবি। রাজনীতি থেকে দূরে থেকেও মুজিব গিন্নি ছিলেন রাজনীতির কেন্দ্রবিন্দুতে। রাজনীতির পালাবদলে অলক্ষ্যে যিনি রেখেছিলেন সাহসী অবদান। এবিএম মূসার ভাষ্যমতে- “সেই কাহিনী নেহাত কিংবদন্তি নয়, হলেও সেই কিংবদন্তি আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা ভেস্তে যাওয়ার ইতিহাসভিত্তিক ক্যান্টনমেন্টে বসে শেখ সাহেব কী ভাবছেন, কেউ তা জানে না। সারাদেশের মানুষও কিছুটা বিভ্রান্ত। তারা প্রাণ দিচ্ছে, রক্ত দিচ্ছে প্রিয় নেতাকে মুক্ত করে আনার জন্য, মুচলেকা দিয়ে আইয়ুবের দরবারে যাওয়ার জন্য নয়। কিন্তু এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবেন যিনি, তিনিও ছিলেন দ্বিধাগ্রস্ত। সেদিন মুচলেকা দিয়ে নাকি নিঃশর্ত মুক্তি- এই যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন এবং জানিয়েছিলেন একজন নারী। মুজিবের সহধর্মিণী, যিনি রাজনীতি বুঝতেন না; কিন্তু নিজের স্বামীকে জানতেন। বুঝতে পেরেছিলেন, তার স্বামীর মানসিক দ্বন্দ্ব। বন্দি স্বামীকে চিরকুট পাঠালেন- ‘হাতে বঁটি নিয়ে বসে আছি প্যারোলে মুচলেকা দিয়ে আইয়ুবের দরবারে যেতে পারেন; কিন্তু জীবনে ৩২ নম্বর আসবেন না।'”

আর এভাবেই রেণু থেকে হয়ে উঠলেন তিনি বঙ্গমাতা, বঙ্গবন্ধুর ছায়াসঙ্গী ও ভরসার আশ্রয়স্থল। সেদিন যদি তিনি এই সাহসী ভূমিকা পালন না করতেন, তবে আজ হয়তো বাংলাদেশের ইতিহাস ভিন্নভাবে রচিত হতে পারত। এমনই আরও বাংলার ভাগ্য নিয়ন্ত্রণকারী সিদ্ধান্তের পেছনে ভূমিকা রেখেছিলেন এই গৃহিণী।

৭ মার্চ ১৯৭১। ছাত্ররা উড়িয়ে দিয়েছে বাংলাদেশের পতাকা। সবাই তাকিয়ে আছে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের দিকে। শুনতে চায় স্বাধীনতার ডাক, তাদের প্রিয় নেতার মুখ হতে। অন্যদিকে আমেরিকা ও পাকিস্তানের ষড়যন্ত্র চলছে। প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান অপারেশন ব্লিৎসের মতলব আঁটছেন। বাঙালির ভাগ্য তখন নির্ভর করছে রেসকোর্স ময়দানে। প্রিয় নেতা তখনও চিন্তাগ্রস্ত। এমন সময়ে ত্রাণকর্ত্রী হয়ে আবারও আবির্ভূত হলেন বেগম মুজিব। শেখ হাসিনার ভাষায়-

“আমি মাথার কাছে বসা, মা মোড়াটা টেনে নিয়ে আব্বার পায়ের কাছে বসলেন। মা বললেন, মনে রেখো তোমার সামনে লক্ষ মানুষের বাঁশের লাঠি। এই মানুষগুলির নিরাপত্তা এবং তারা যেন হতাশ হয়ে ফিরে না যায় সেটা দেখা তোমার কাজ। কাজেই তোমার মনে যা আসবে তাই তুমি বলবা, আর কারও কোন পরামর্শ দরকার নাই। তুমি মানুষের জন্য সারা জীবন কাজ করেছো। কাজেই কী বলতে হবে তুমি জানো।”

এর পরের ইতিহাস আমাদের কারোই অগোচরে নেই। রেসকোর্স ময়দানে লাখো মানুষের সম্মুখে রাজনীতির এই অমর কবি পাঠ করলেন তার সেই মহাকাব্যিক শ্নোক- ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।’

এরূপ আরও তেজোদীপ্ত রূপ আমরা দেখতে পাই বেগম মুজিবের। তার কন্যা শেখ হাসিনার ‘শেখ মুজিব আমার পিতা’ গ্রন্থের স্মৃতির দখিন দুয়ার; স্মৃতি বড় মুধুর, স্মৃতি বড় বেদনার- প্রবন্ধদ্বয়ে শেখ হাসিনার স্মৃতিতে মুক্তিযুদ্ধকালীন বাংলাদেশ ও মুজিব পরিবারের দিনপাত।

স্বাধীনতার অন্তিম মুহূর্তে রেসকোর্স ময়দানে জেনারেল নিয়াজি যখন আত্মসমর্পণ করছে, ঠিক সেই সময়ে মুজিব পরিবার বন্দি ছিল ধানমন্ডির ১৮ নম্বর রোডের বাড়িতে। দেশবাসী যখন বিজয়ের আনন্দে ভাসছে, তখনও মুজিব পরিবার দাঁড়িয়ে আছে জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে। পাকিস্তানি বাহিনী আত্মসমর্পণ করার পরপরই বাড়ির বাইরে বেরিয়ে পড়েন বেগম মুজিব। শেখ হাসিনার ভাষ্যমতে- ‘মা সঙ্গে সঙ্গে আবদুলকে হুকুম দিলেন পাকিস্তানি পতাকা নামিয়ে ফেলতে। পতাকাটি নামিয়ে মার হাতে দিতেই মা ওটাকে নিচে ফেলে পা দিয়ে মাড়াতে শুরু করলেন। তারপর ছিঁড়ে টুকরো টুকরো করে আগুন ধরিয়ে দিলেন।’

বঙ্গবন্ধু ও বঙ্গমাতা ছিলেন একে অপরের পরিপূরক। বঙ্গবন্ধুর কতটা জায়গা জুড়ে ছিলেন শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব, তার অসংখ্য-অগণিত প্রমাণ পাওয়া যায় শেখ হাসিনা, শেখ রেহানা এমনকি বঙ্গবন্ধুর নিজের লেখায়। ৫ ফুট ১১ ইঞ্চি দীর্ঘদেহী রাজনীতিবিদ শেখ মুজিবের লেখক হয়ে ওঠার গল্পেও রয়েছে শেখ ফজিলাতুন্নেছার অবদান। আজ যে আত্মজীবনীর (অসমাপ্ত আত্মজীবনী) আড়ালে বাংলাদেশের ইতিহাস জানতে পারছি, তার নেপথ্যেও বেগম সাহেবার ‘বসেই তো আছ, লেখো তোমার জীবনের কাহিনি’ অনুপ্রেরণামূলক সরল উক্তি। বঙ্গবন্ধু লিখেছেন, ‘আমার স্ত্রী যার ডাকনাম রেণু, আমাকে কয়েকটা খাতাও কিনে জেলগেটে জমা দিয়ে গিয়েছিলো। জেল কর্তৃপক্ষ যথারীতি পরীক্ষা করে খাতা কয়টা আমাকে দিয়েছেন। রেণু আরও একদিন জেলগেটে বসে আমাকে অনুরোধ করেছিল। তাই আজ লিখতে শুরু করলাম।’ নিজের সহধর্মিণীর উদ্দেশে বঙ্গবন্ধুর এমন উক্তিই অনেক বুঝিয়ে দেয়- জাতির পিতার জীবনে প্রিয় স্ত্রীর অবদান।

নিজে আপাদমস্তক গৃহিণী হয়েও স্বামীর রাজনৈতিক জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে সহযোগিতা করেছেন বঙ্গমাতা। বেগম মুজিব ছিলেন মনেপ্রাণে পূর্ণ আদর্শ বাঙালি নারী। বুদ্ধিমত্তা, শান্ত, আতিথেয়তা ও দানশীলতা তাঁর গুণ। পরিস্থিতি মোকাবিলা করতেন অসীম ধৈর্য, সাহস ও দৃঢ়তা নিয়ে। বিভিন্ন সময়ে বঙ্গবন্ধুর ১৪ বছরের কারাবন্দিকালে দলের কঠিন সংকট সব সমস্যার সমাধানও দিয়েছেন তিনি। কারাগারে বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে ১৫ দিন অন্তর অন্তত একবার দেখা করার সুযোগ পেতেন; তা-ও কয়েক মিনিটের জন্য। সেখান থেকেই নানা সমাধান নিয়ে এসে দল আওয়ামী লীগে বিচক্ষণ পরামর্শদাতার ভূমিকা পালন করতেন বেগম মুজিব। নেতাকর্মীদের রোগে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা, কারাগারে অন্তরীণ কর্মীদের খোঁজ নেওয়া ও পরিবার-পরিজনদের সংকটে পাশে দাঁড়ানো ছিল তার রুটিন ওয়ার্ক। একবার কর্মীর আর্থিক সংকট নিরসনে নিজের হাতের বালা পর্যন্ত খুলে দিলেন। কন্যা শেখ হাসিনা তার ‘স্মৃতি বড় মধুর, স্মৃতি বড় বেদনার’ প্রবন্ধে লিখেছেন- ‘আন্দোলনের সময় বা আব্বা বন্দি থাকা অবস্থায় পার্টির কাজকর্মে বা আন্দোলনে খরচের টাকাও মা জোগাতেন। অনেক সময় বাজার হাট বন্ধ করে অথবা নিজের গায়ের গহনা বিক্রি করেও মাকে দেখেছি সংগঠনের জন্য অর্থের যোগান দিতে।’ সুখে-দুঃখে বঙ্গবন্ধু ও তার প্রিয় দল আওয়ামী লীগের সারথি হিসেবে তার এই অবদান জাতি কোনোদিন ভুলবে না।

শিল্পীর তুলিতে যদি আজ বেগম মুজিবকে আঁকা হতো, তবে আমরা দেখতে পেতাম পান খাওয়া ঠোঁট, হাতে পানের বাটা, তাতে সুন্দর করে সাজানো পান-সুপারি মসলা। আঁচলে একগোছা চাবি। যেন কবির মানসী প্রতিমা। এই চিরায়তে চিরন্তন, সাধারণে অসাধারণ শাশ্বত বঙ্গজননী আজ বাংলাদেশের বঙ্গমাতা। বঙ্গবন্ধু যদি হন জাতির কাণ্ডারি তবে বঙ্গমাতা হবে সেই কাণ্ডারির হাতের মশাল। যিনি তাকে সামনের পথ দেখিয়েছিলেন। স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস রচনায় বঙ্গমাতার ত্যাগ ও ভূমিকার কথা কোনোভাবেই এড়িয়ে যাওয়ার সুযোগ নেই। তাকে দেখেই বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুলের সেই ‘নারী’ কবিতার দুটি চরণ আমাদের মনে পড়ে যায়, যেন কবিতাটি তাকেই নিয়েই রচিত-

‘কোন কালেই একা হয়নিকো জয়ী পুরুষের তরবারি

প্রেরণে দিয়েছে, শক্তি দিয়েছে বিজয়লক্ষ্মী নারী।’

মো. সাহাবুদ্দিন চুপ্‌পু

বীর মুক্তিযোদ্ধা ও সদস্য উপদেষ্টা পরিষদ, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ

1571 ভিউ

Posted ১:৩২ পূর্বাহ্ণ | রবিবার, ০৮ আগস্ট ২০২১

coxbangla.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

এ বিভাগের আরও খবর

Editor & Publisher

Chanchal Dash Gupta

Member : coxsbazar press club & coxsbazar journalist union (cbuj)
cell: 01558-310550 or 01736-202922
mail: chanchalcox@gmail.com
Office : coxsbazar press club building(1st floor),shaheed sharanee road,cox’sbazar municipalty
coxsbazar-4700
Bangladesh
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
বাংলাদেশের সকল পত্রিকা সাইট
Bangla Newspaper

ABOUT US :

coxbangla.com is a dedicated 24x7 news website which is published 2010 in coxbazar city. coxbangla is the news plus right and true information. Be informed be truthful are the only right way. Because you have the right. So coxbangla always offiers the latest news coxbazar, national and international news on current offers, politics, economic, entertainment, sports, health, science, defence & technology, space, history, lifestyle, tourism, food etc in Bengali.

design and development by : webnewsdesign.com