রবিবার ২৮শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৫ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম

রবিবার ২৮শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

শিরোনাম

ইজরায়েল ও প্যালেস্তাইন যুদ্ধে কাতারের রহস্যময় ভূমিকা!

সোমবার, ৩০ অক্টোবর ২০২৩
145 ভিউ
ইজরায়েল ও প্যালেস্তাইন যুদ্ধে কাতারের রহস্যময় ভূমিকা!

কক্সবাংলা ডটকম :: পশ্চিম এশিয়ার গাজ়ায় যুদ্ধ ২৩ দিন হতে চলল ইজরায়েল এবং প্যালেস্তাইনের শসস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের মধ্যে যুদ্ধ। তবে এই দুই যুযুধান দেশের ‘শত্রুতা’ বা লড়াই নতুন নয়। সেই দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের আগে থেকেই চলছে দু’পক্ষের সংঘাত। আরবদের সঙ্গে ইহুদিদের জাতিগত শত্রুতার শুরু ইসলামের জন্মের আগে থেকেই।

বাইবেলের ওল্ড টেস্টামেন্ট থেকে জানা যায়, ইজরায়েল অঞ্চল থেকে ইহুদিদের বিতাড়িত হতে হয়েছিল। তার পর তারা দেশ-বিচ্ছিন্ন হয়ে বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ে। কিন্তু, আধুনিক কালে আরব ও ইহুদিদের সংঘাতের সূত্রপাত প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় থেকে।

প্রথম বিশ্বযুদ্ধে ব্রিটিশ সরকারকে ইহুদি সম্প্রদায় অর্থসাহায্য করে। পরিবর্তে ইহুদি জ়ায়োনিস্ট নেতারা (ইহুদিদের সংহতি বিষয়ক এবং আদিভূমি পুনরুদ্ধারের লক্ষ্যে সংগঠিত আন্দোলন) তাঁদের আদিভূমির দাবি জানান। ১৯১৭ সালে ব্রিটেনের বিদেশ সচিব আর্থার ব্যালফুর ব্রিটিশ ইহুদি নেতা লর্ড রথসচাইল্ডের কাছে এক পত্র দ্বারা সেই সময়ে ওটোমান সাম্রাজ্যের হাত থেকে ইজরায়েল উদ্ধার সম্ভব হলে তা ব্রিটেন ও আয়ারল্যান্ডের জায়োনিস্ট ফেডারেশনের হাতে তুলে দেওয়ার কথা বলেন।

ব্যালফুরের এই আশ্বাসকে ‘ঘোষণাপত্র’ হিসেবে ইহুদিরা গণ্য করে এবং যুদ্ধ শেষ হলে সেখানে বসতি স্থাপনের আশা পোষণ করতে থাকে। সংশ্লিষ্ট অঞ্চলে বসবাসরত ইহুদিরা বার বার বিভিন্ন শক্তির আক্রমণে বিধ্বস্ত হতে হতে সংখ্যালঘু হয়ে পড়েছিল। জায়োনিস্ট আন্দোলন তাদের মনেও নতুন আশার সঞ্চার ঘটায়।

১৯১৮ সালে ইহুদিদের একটি বাহিনী ব্রিটিশ সেনাদের প্যালেস্তাইন দখলে সহায়তা করে। একটি ম্যান্ডেট দ্বারা সংশ্লিষ্ট অঞ্চলের উপর ব্রিটেন এবং ফ্রান্সের আধিপত্য স্বীকৃত হয়। বিভিন্ন দেশ থেকে ইহুদিরা ইজরায়েল-প্যালেস্তাইন অঞ্চলে আসতে শুরু করেন। স্বাভাবিক ভাবেই ওই অঞ্চলে বাসরত আরবেরা বিষয়টিকে ভাল চোখে দেখেনি। তাদের সঙ্গে ইহুদিদের দাঙ্গা শুরু হয়। ব্যালফুর ঘোষণাপত্রে আরবদের প্যালেস্তাইন দেওয়ার প্রতিশ্রুতিও ছিল। ফলে আরব ও ইহুদিদের সংঘাত অনিবার্য হয়ে পড়ে।

দুই বিশ্বযুদ্ধের মধ্যবর্তী পর্বে ইজরায়েলে ধনী ইহুদিদের আগমন অব্যাহত থাকে। তুলনায় দরিদ্র, পশুপালন ও সামান্য কৃষি নির্ভর আরবেরা এতে শঙ্কিত বোধ করে এবং সমস্যা আরও বাড়তে থাকে।

জার্মানিতে হিটলারের শাসন কায়েম হলে সেখানে ইহুদি বিরোধিতা মারাত্মক আকার নেয়। ইহুদিদের নির্বিচারে হত্য করা শুরু হয়। নয়তো পাঠিয়ে দেওয়া হতে থাকে ‘কনসেন্ট্রেশন ক্যাম্প’-এ, যা আরও আতঙ্কের। জার্মানি ছেড়ে সেই সময় বহু ইহুদিই তখন প্রাণ বাঁচাতে পালিয়ে এসেছিলেন তাঁদের আদিভূমি হিসাবে কথিত জেরুসালেমের দেশ প্যালেস্তাইনে।

প্যালেস্তিনীয় আরব ও ইজ়রায়েলপন্থী ইহুদিদের মধ্যে সংঘাত বাড়লে ১৯৪৭ সালে ব্রিটেন প্রস্তাব দেয়, ইহুদিদের থাকার জন্য আলাদা রাষ্ট্র হওয়া দরকার।তারা জানায়, ১৯৪৮ সালে প্যালেস্তাইনকে ব্রিটিশ শাসনমুক্ত করা হবে। তবে তার আগে এই এলাকা ভাগ হওয়া দরকার। জাতিসংঘে সেই প্রস্তাব গৃহীত হয়।

প্যালেস্তাইনকে ভেঙে দেওয়া হয় দু’ভাগে— আরবীয়দের থাকার আলাদা অংশ, ইহুদিদের জন্য আলাদা। যদিও এই ভাগাভাগি কখনওই মেনে নিতে পারেনি একক রাষ্ট্র থাকতে চাওয়া প্যালেস্তাইন। তারা জাতিসংঘের ওই প্রস্তাবের বিরোধিতা করে। শুরু হয় বিদ্রোহ।

সেই শুরু। তার পর থেকে বহু যুদ্ধ হয়েছে। ক্রমশ বদলেছে প্যালেস্তাইনের মানচিত্র। ১৯৪৮ সালে প্যালেস্তাইন ভেঙে যায় দু’খণ্ডে। আলাদা রাষ্ট্র হিসাবে স্বীকৃতি পায় ইজ়রায়েল। শুরু হয় নতুন লড়াই। ইজরায়েলিদের তাড়া খেয়ে দেশ ছেড়ে পালাতে হয় বহু প্যালেস্তিনীয়কে।

কম করে সাত লক্ষ প্যালেস্তাইনবাসীকে আশ্রয় নিতে হয় মিশর, জর্ডনের মতো আরব বিশ্বের অন্যান্য দেশে।তত দিনে ধাক্কা খেতে খেতে কোণঠাসা হয়েছে আজকের প্যালেস্তাইন। ১৯১৭ সালে গোটা দেশের মানচিত্র যা ছিল, ৪০ বছরে তা কমতে কমতে এসে ঠেকেছে দু’টি ছোট্ট টুকরোয়। এক ভাগের নাম ওয়েস্ট ব্যাঙ্ক। অন্য ভাগটির নাম গাজা স্ট্রিপ।

সেটা ১৯৫৬ সাল। প্যালেস্তাইন তখন তাদের মূল ভূখণ্ডের মাত্র ২২ শতাংশ এলাকায় বিরাজমান। বাকি ৮৮ শতাংশ জুড়েই রয়েছে ইহুদিদের রাষ্ট্র ইজরায়েল। তবে দুই দেশেরই দাবি পবিত্র শহর জেরুসালেমের উপর। এই নিয়ে সংঘাতের জেরে একের পর এক অভ্যুত্থান শুরু হয় প্যালেস্তাইন এবং ইজরায়েলে।

১৯৬৭ সালে ছ’দিনের যুদ্ধে গোটা প্যালেস্তাইনের দখল নেয় ইজরায়েলিরা। প্যালেস্তাইনের ওয়েস্ট ব্যাঙ্ক এবং গাজা স্ট্রিপে শুরু হয় ইজরায়েলের শাসন।কিন্তু প্যালেস্তাইনের মুক্তির লড়াই থামেনি। ১৯৯৩ আমেরিকার মধ্যস্থতায় ইয়াসির আরাফতের নেতৃত্বে প্যালেস্তাইন মুক্তি সংগঠন পিএলও এবং ইজরায়েল একটি সমঝোতায় আসে। স্বাক্ষরিত হয় অসলো চুক্তি।

ওই চুক্তিতে সিদ্ধান্ত হয়, প্যালেস্তাইন তাদের চিহ্নিত অংশ দু’টি নিজেরাই শাসন করবে। ইজরায়েল মান্যতা দেবে প্যালেস্তাইনের মানুষের অধিকারকে।কিন্তু ২০০৬ সালে আবার গুলিয়ে যায় পুরনো হিসাব আর যাবতীয় বোঝাপড়া। পিএলও নিয়ন্ত্রিত ফতাহ পার্টিকে পিছনে ফেলে প্যালেস্তাইনের সংসদীয় নির্বাচনে জয়ী হয় চরমপন্থী হামাস।

নতুন করে শুরু হয় নিজেদের মধ্যে লড়াই। ২০০৭ সালে গাজ়া স্ট্রিপের দখল নেয় হামাস। ইজরায়েল জানিয়ে দেয়, গাজায় কোনও যানবাহন ঢুকতে পারবে না। কোনও পণ্য নিয়ে যাওয়া যাবে না বাইরে থেকে।গাজার সীমানার এক প্রান্তে ভূমধ্যসাগর। অন্য প্রান্তটি পুরোপুরি ইজরায়েলের গা ঘেঁষে থাকা। ইজরায়েলের ওই সিদ্ধান্তে একঘরে হয়ে যায় গাজ়া।

তত দিনে প্যালেস্তাইন মূল দেশের ১৫ শতাংশে এসে ঠেকেছে। টুকরো টুকরো করে ভেঙে দেওয়া হয়েছে প্যালেস্তাইনের ওয়েস্ট ব্যাঙ্ককে। এক একটি টুকরো এক একটি ‘এনক্লেভ’। এর মধ্যে প্যালেস্তাইনের নিয়ন্ত্রণে ১৬৫টি। ইজরায়েলের নিয়ন্ত্রণ ২০০টি এনক্লেভের উপর।

জেরুসালেমে তখনও ইজরায়েলি নিয়ন্ত্রণ। তাই নিয়ে প্যালেস্তাইন-ইজরায়েলের ক্ষমতার লড়াইও জারি।গত ৭ অক্টোবর সেই লড়াই পরিণত হল রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে। দু’দিন আগে প্যালেস্তাইনের দুই ‘জঙ্গি’কে খতম করে ইজরায়েলের সেনা। সেই হামলা নিয়ে হামাসের সঙ্গে সংঘাতের মধ্যেই গাজার শাসক হামাস নিরন্তর রকেট হামলা শুরু করে জেরুসালেমে।

ভোর সাড়ে ৬টায় প্রায় ৫০০০ রকেট হামলার পরে হামাসের প্রধান মহম্মদ দাইফ ঘোষণা করেন তাঁরা অপারেশন আল আকসা ফ্লাড শুরু করে। পাল্টা ইজ়রায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু ঘোষণা করেন, যুদ্ধ শুরু হল।

এই যুদ্ধে প্রাণ হারিয়েছেন না হোক ১০ হাজার মানুষ। জখম প্রায় সাড়ে তিন হাজার। ২০০ জনকে বন্দি করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে গাজায়। তাঁদের ভবিষ্যৎ কী জানা যায়নি। ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে হাজারেরও বেশি মানুষের ঘরবাড়ি। ঘরছাড়া লক্ষাধিক। আপাতত যুদ্ধ থামার লক্ষণই নেই গাজ়ায়।

এদিকে পশ্চিম এশিয়ায় চলমান এ যুদ্ধে ইজরায়েল বা প্যালেস্তাইন নয়,আখেরে লাভ হচ্ছে ১৭০০ কিমি দূরের অন্য এক দেশের! গাজ়ায় জারি মৃত্যুমিছিল। কিন্তু ইজরায়েল এবং হামাসের যুদ্ধ থেকে আখেরে লাভ হচ্ছে অন্য এক দেশের, তেমনটাই মনে করছেন অনেকে।

রাশিয়া-ইউক্রেনের পর যুদ্ধের দামামা বেজেছে পশ্চিম এশিয়ায়। প্যালেস্তিনীয় সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের আক্রমণের পর ইজরায়েল যুদ্ধ ঘোষণা করে প্রত্যাঘাত করেছে। সেই যুদ্ধ রবিবার পা দিল ২৩তম দিনে।

যুদ্ধে মৃত্যুমিছিল দেখছে গাজা। প্যালেস্তাইনের স্বাস্থ্য মন্ত্রকের দাবি, ইতিমধ্যে গাজায় প্রায় আট হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে। যাঁদের মধ্যে রয়েছে অনেক শিশুও।

এখনই যুদ্ধ থামার কোনও লক্ষণ নেই। আমেরিকা-সহ পশ্চিমি দেশগুলিকে যুদ্ধে পাশে পেয়েছে ইজরায়েল। তারা গাজায় স্থলপথে অভিযান শুরু করেছে। ইজরায়েলি সেনা জানিয়েছে, হামাসের হাতে বন্দি ইজরায়েলিদের মুক্ত করাই তাদের প্রাথমিক লক্ষ্য।

যুদ্ধে তাঁদের জয় নিশ্চিত বলে জানিয়েছেন ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। হামাসকে নিশ্চিহ্ন করার বিষয়ে তিনি আশাবাদী এবং আত্মবিশ্বাসী। কিন্তু পশ্চিম এশিয়ার এই দ্বন্দ্বে আখেরে লাভ হচ্ছে অন্য এক দেশের।

পশ্চিম এশিয়ার পশ্চিম প্রান্তে ভূমধ্যসাগরের ধারে গা ঘেঁষাঘেঁষি করে আছে ইজরায়েল এবং প্যালেস্তাইন। তাদের থেকে প্রায় ১৭০০ কিলোমিটার দূরে কাতার। তাকেই এই যুদ্ধে ‘আসল লাভবান’ বলে মনে করছেন অনেকে।

কিন্তু কেন? ইজরায়েল আর হামাসের দ্বন্দ্বে কী ভাবে কাতার লাভবান হচ্ছে? এই দেশটির সঙ্গে পশ্চিম এশিয়ার সঙ্কটের সম্পর্ক কী?

অনেকের মতে পশ্চিম এশিয়ায় আসলে ‘ডবল গেম’ খেলে কাতার। তারা প্রকাশ্যে হামাসকে সমর্থন করে। আবার সময় বিশেষে তাদের সঙ্গে সমঝোতাও করে এবং করায়।

২০০৭ সাল থেকে গাজা স্ট্রিপ হামাসের হাতে। তারাই ওই এলাকার প্রশাসনকে নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। আমেরিকা-সহ পশ্চিমি দেশগুলি হামাসকে সন্ত্রাসবাদী সংগঠন হিসাবে ঘোষণা করেছে। কারণ, হামাস বলে, ‘জিহাদ’ ছাড়া প্যালেস্তাইন সমস্যার সমাধানের আর কোনও উপায় নেই।

কোনও আন্তর্জাতিক শান্তি চুক্তিকে মানে না হামাস। তারা জানিয়েছে, তাদের মূল লক্ষ্য হল ইজরায়েলের ভূখণ্ড দখল করা এবং সেখান থেকে ইহুদিদের তাড়ানো। একাধিক সন্ত্রাসবাদী হামলাও হামাস করেছে বলে অভিযোগ। এই সব কথা জানার পরেও ২০০৭ সাল থেকে হামাসকে সমর্থন করে কাতার।

২০১২ সালে কাতারের রাষ্ট্রপ্রধান প্রথম বার গাজায় যান। শহরটির পুনর্গঠনের জন্য তিনি ৪০ লক্ষ ডলার অর্থসাহায্যও করেছিলেন। তার পর থেক অর্থসাহায্য কখনও বন্ধ হয়নি। কাতার থেকে এখনও গাজায় প্রতি মাসে তিন কোটি ডলার পাঠানো হয়।

অনেকে বলেন, হামাস কোনও সন্ত্রাসবাদী সংগঠন নয়। বরং তারা একটি স্বাধীনতা সংগ্রামীদের গোষ্ঠী, যারা প্যালেস্তাইনের জন্য লড়াই করছে। হামাসের শীর্ষ নেতাদের অধিকাংশই গাজায় থাকেন না। ২০১২ সাল পর্যন্ত হামাসের নেতারা ছিলেন সিরিয়াতে। কাতারেও তাদের অনেক নেতা থাকেন।

২০১৯ সালে হামাসের এক শীর্ষ নেতা গাজ়া থেকে সাময়িক ভাবে বিদেশে ঘুরতে যাচ্ছেন বলে বেরিয়েছিলেন। তার পর থেকে কাতারের দোহায় বসে তিনি হামাসের বিভিন্ন কর্মসূচি পরিচালনা করেন।

অর্থাৎ, কাতার শুধু গাজায় অর্থসাহায্যই করে না। হামাসকে তাদের বিভিন্ন অভিযানে সাহায্য করে। হামাসের নেতারা ভিন্‌দেশ থেকে গাজায় অভিযান পরিচালনা করেন। তবে শুধু হামাসের সাহায্যকারী নয়, কাতারের ভূমিকা আরও বেশি।

পশ্চিম এশিয়ার ভূ-রাজনৈতিক সঙ্কটে কাতার বরাবর সমঝোতাকারীর ভূমিকা পালন করে এসেছে। হামাস হোক বা লেবাননের হিজ়বুল্লা কিংবা আফগানিস্তানের তালিবান, কাতারের সঙ্গে সকলেরই সুসম্পর্ক রয়েছে। পশ্চিমি দেশগুলির সঙ্গে সন্ত্রাসবাদী সংগঠনগুলির মধ্যস্থতার কাজ করে কাতার।

কাতারে আমেরিকার গুরুত্বপূর্ণ একটি সেনাঘাঁটি রয়েছে। যার নাম আল উডেড বিমানঘাঁটি। ২০১৪ সালে আমেরিকান এক সার্জেন্টকে তালিবান নিজেদের হেফাজতে নিয়েছিল। সেই সময় মধ্যস্থতার কাজ করেছিল এই কাতার।

কাতার তালিবানের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে আমেরিকান সার্জেন্টকে মুক্ত করেছিল। পরিবর্তে আমেরিকাকে তাদের জেল থেকে পাঁচ তালিব সদস্যকে মুক্তি দিতে হয়। নানা সময়ে এমন নানা সহযোগিতার কারণে পশ্চিমি দুনিয়ার কাছে কাতার এখন ‘পরম মিত্র’।

এক দিকে সমঝোতার মাধ্যমে আমেরিকার ঘনিষ্ঠ হয়ে উঠেছে কাতার, অন্য দিকে আবার তারাই বিপরীত অবস্থানে গিয়ে সন্ত্রাসবাদকে সমর্থনও করে চলেছে। কাতারের এই দ্বৈত ভূমিকা কৌতূহল জাগাচ্ছে।

কাতার যে সন্ত্রাসবাদী সংগঠনগুলিকে গোপনে সাহায্য করে, তাদের অর্থ এবং অস্ত্রের জোগান দেয়, সে বিষয়ে সৌদি আরব কিংবা সংযুক্ত আরব আমিরশাহি একাধিক বার অভিযোগ করেছে। কিন্তু সব জেনেও কাতারের বিরুদ্ধে কেউ কোনও পদক্ষেপ করে না।

কাতার সন্ত্রাসবাদী সংগঠনগুলির সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রেখে তাদের সঙ্গে সমঝোতার রাস্তা প্রস্তুত রাখে। এ ভাবে তারা ধীরে ধীরে গোটা বিশ্বের কাছে ‘ত্রাতা’ হিসাবে নিজেদের তুলে ধরতে পেরেছে।

কাতারের মতো সমঝোতাকারী দেশের সবচেয়ে বেশি লাভ হয় যুদ্ধের সময়। কারণ তারা উভয় পক্ষের সঙ্গেই কথা বলে আলোচনার মাধ্যমে যে কোনও পরিস্থিতির মধ্যস্থতা করতে সক্ষম।

ইজরায়েল এবং হামাসের যুদ্ধের আবহেও তাই কাতারের দর বেড়ে গিয়েছে। আমেরিকা কিংবা আরব দেশগুলি জানে, সমঝোতার সময় এলে একমাত্র কাতারই পারবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে।

145 ভিউ

Posted ১১:৪৪ অপরাহ্ণ | সোমবার, ৩০ অক্টোবর ২০২৩

coxbangla.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

এ বিভাগের আরও খবর

Editor & Publisher

Chanchal Dash Gupta

Member : coxsbazar press club & coxsbazar journalist union (cbuj)
cell: 01558-310550 or 01736-202922
mail: chanchalcox@gmail.com
Office : coxsbazar press club building(1st floor),shaheed sharanee road,cox’sbazar municipalty
coxsbazar-4700
Bangladesh
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
বাংলাদেশের সকল পত্রিকা সাইট
Bangla Newspaper

ABOUT US :

coxbangla.com is a dedicated 24x7 news website which is published 2010 in coxbazar city. coxbangla is the news plus right and true information. Be informed be truthful are the only right way. Because you have the right. So coxbangla always offiers the latest news coxbazar, national and international news on current offers, politics, economic, entertainment, sports, health, science, defence & technology, space, history, lifestyle, tourism, food etc in Bengali.

design and development by : webnewsdesign.com