কক্সবাংলা ডটকম(৭ আগষ্ট) :: ইরানে আবার যুক্তরাষ্ট্রের আরোপ করা নিষেধাজ্ঞা ৭ আগষ্ট থেকে কার্যকর হচ্ছে। বিক্ষোভ ও দুর্নীতি নিয়ে ধরপাকড়ের মধ্যে এ অবরোধ দেশটির অর্থনীতিতে বিশাল আঘাত হয়ে আসতে পারে। খবর এএফপি।
ইরানের বিভিন্ন শহরে পানিস্বল্পতা, নাজুক অর্থনীতি এবং রাজনৈতিক ব্যবস্থার বিরুদ্ধে বেশকিছু জায়গায় বিক্ষোভ দেখা গেছে।
বিক্ষোভের কেন্দ্রবিন্দু তেহরানের পশ্চিমে অবস্থিত কারাজ শহরে ভারী সাঁজোয়া যানসহ দাঙ্গা পুলিশ রোববার রাতে অবস্থান নিয়েছে। এলাকাটির ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন রাখা হয়েছে এবং বিদেশী সাংবাদিকদের ওপর নজরদারি বাড়িয়ে বিক্ষোভের সংবাদ প্রচারে বাধা দেয়া হচ্ছে।
মে মাসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইরানের সঙ্গে ২০১৫ সালে সম্পাদিত ঐতিহাসিক পারমাণবিক চুক্তি থেকে সরে এসে দেশটির ওপর আবার নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও রোববার প্রত্যয় ব্যক্ত করে বলেন, যুক্তরাষ্ট্র নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়নে চাপ প্রয়োগ করবে এবং তেহরানের ওপর এ চাপের অর্থ হচ্ছে ইরানকে দুষ্ট কার্যক্রম থেকে বিরত রাখা।
এ উত্তেজনায় এরই মধ্যে ইরানের মুদ্রার ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। এপ্রিল থেকে ইরানি রিয়াল অর্ধেকের বেশি দর হারিয়েছে এবং উচ্চ বেকারত্ব, মূল্যস্ফীতি ও সংস্কারের অভাব নিয়ে দেশটিতে উদ্বেগ বেড়েছে।
ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানির গতকাল রাতে মুদ্রার অবনমন এবং নিষেধাজ্ঞার প্রভাব কীভাবে মোকাবেলা করা যায়, এ বিষয়ে জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেয়ার কথা ছিল।
রোববার রাতে রুহানির সরকার নতুন বৈদেশিক মুদ্রানীতি প্রকাশ করে। এর মাধ্যমে অসীম মাত্রায় করবিহীন মুদ্রা ও স্বর্ণের আমদানি এবং মুদ্রা বিনিময় কার্যালয়গুলো আবার খোলার অনুমতি দেয়া হয়েছে। এপ্রিলে বিনিময়কেন্দ্রগুলো বন্ধ করে রিয়ালের মান নির্ধারিত রাখার চেষ্টা করা হলে কালোবাজারে লেনদেন বেড়ে যায়।
এদিকে দেশটির ধর্মীয় নেতারা দুর্নীতির বিরুদ্ধে অভিযানের আহ্বান জানানোয় বিচার বিভাগ রোববার জানিয়েছে, তারা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ভাইস প্রেসিডেন্ট ও বৈদেশিক মুদ্রা বিনিময় বিভাগের দায়িত্বে থাকা আহমেদ আরাঘছিসহ একজন সরকারি কর্মকর্তা ও চার মুদ্রা ব্রোকারকে গ্রেফতার করেছে।
মার্কিন নিষেধাজ্ঞা দুই স্তরে কার্যকর হবে। প্রথম স্তরে আজ থেকে ইরানের মার্কিন ব্যাংকনোট প্রাপ্তি বন্ধ এবং কার্পেটসহ গুরুত্বপূর্ণ শিল্পকে লক্ষ্যবস্তু বানানো হবে।
আগামী থেকে দ্বিতীয় দফায় ৫ নভেম্বর ইরানের তেল বিক্রির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ হবে। ওই পদক্ষেপের ফলে বেশি ক্ষতির আশঙ্কা থাকলেও এরই মধ্যে চীন, ভারত এবং তুরস্ক ইঙ্গিত দিয়েছে, তারা ইরানের জ্বালানি তেল ক্রয় পুরোপুরি বন্ধ করবে না।
পম্পেও বলেন, এটা স্রেফ ইরানিদের নিজেদের সরকারের বিরুদ্ধে অসন্তুষ্টি এবং প্রেসিডেন্ট এ ব্যাপারে নিশ্চিত যে, আমরা চাই তাদের নেতা কে হবে, এ বিষয়ে ইরানি জনগণের একটি জোরালো মতামত থাকুক।
জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জন বোল্টনসহ ট্রাম্প প্রশাসনের কিছু গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি এর আগে ইরানে সরকার পরিবর্তনের কথা বললেও আনুষ্ঠানিক বক্তব্যে তারা দাবি করেন ওয়াশিংটন কেবল ইরানের আচরণের পরিবর্তন চায়।
Posted ৬:০০ অপরাহ্ণ | মঙ্গলবার, ০৭ আগস্ট ২০১৮
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta