মঙ্গলবার ৭ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২৪শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম

মঙ্গলবার ৭ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

শিরোনাম

একটি সাফল্য ও ক্লেশের গল্প : বাংলাদেশে অটিজম সেবার বাস্তবায়ন

বুধবার, ০১ এপ্রিল ২০২০
232 ভিউ
একটি সাফল্য ও ক্লেশের গল্প : বাংলাদেশে অটিজম সেবার বাস্তবায়ন

কক্সবাংলা ডটকম(১ এপ্রিল) :: অটিজম ও প্রতিবন্ধী অধিকার নিয়ে বাংলাদেশের লক্ষ্য, পরিকল্পনা, অর্জন, অগ্রগতি ও করণীয় নিয়ে সম্প্রতি বার্তা সংস্থা ইন্টার প্রেস সার্ভিসে (আইপিএস) একটি নিবন্ধ লিখেছেন সায়মা ওয়াজেদ হোসেন। মূলত তার হাত ধরেই বাংলাদেশে অটিজম বিষয়ে গণসচেতনতা ও উপযুক্ত পরিকাঠামো তৈরির কাজ শুরু হয়। এক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য সফলতা অর্জন করেছে বাংলাদেশ। যদিও এগুলো যথেষ্ট নয় বলে মনে করছেন প্রধানমন্ত্রী কন্যা সায়মা ওয়াজেদ। তার নিবন্ধে এ বিষয়গুলোই উঠে এসেছে। পাঠকদের জন্য ইংরেজী নিবন্ধটি বাংলায় ভাষান্তর করা হলো-

কিছুদিন আগে এক বন্ধু আমাকে বললেন, অটিজমের ওপর আমার গুরুত্ব দেয়ায় (যদিও সফল), ইস্যুটি বাংলাদেশে অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ সামাজিক সঙ্কটকে ছাপিয়ে গেছে। আমার ওই বন্ধু জানতে চান, প্রধানমন্ত্রীর কন্যার কারণে জনপ্রিয় একটি ইস্যুতে যখন সবাই নজর দিতে আগ্রহী হওয়ার কারণে আপাত উপেক্ষিত অন্য ইস্যুগুলোতে আমি আমার অটিজমে সফল পদচারণা এবং উপস্থিতি আরো বিস্তৃত করতে আগ্রহী কিনা। আমি জানি আমার বন্ধুর এ বক্তব্য উসকানিমূলক! কিন্তু এ বক্তব্য বাংলাদেশে যখন কাজ শুরু করি সেই সময়কার স্মৃতি স্মরণ করিয়ে দেয়। যারা এই ইস্যুটি নিয়ে এরই মধ্যে নিজেকে উৎসর্গ করেছেন তাদের হাতে দায়িত্ব তুলে দেয়ার মতো যথেষ্ট অর্জন কি আমার হয়ে গেছে যে বাংলাদেশ ও অন্যান্য অঞ্চলে অন্য সামাজিক ইস্যুতে আমার দৃষ্টি দেয়ার সময় হয়েছে?

অটিজম নিয়ে আলোচনায় নানা কারণেই বাংলাদেশ সামনের কাতারে রয়েছে। আমাদের সবচেয়ে আনকোরা এবং সৃষ্টিশীল ও কার্যকর সেবার কারণেই এমন হয়েছে তা নয়, বরং অটিজমের ক্ষেত্রে অন্যতম কঠিন একটি বিষয় আমরা অর্জন করেছি: যারা প্রত্যক্ষভাবে প্রভাবিত নন তারাও এখন এ ব্যাপারে আগ্রহ দেখাচ্ছেন।

একজন বিশেষজ্ঞ ও গবেষক হিসেবে যদি অটিজম ইস্যুতে বাংলাদেশের অর্জনকে কেউ দেখেন তাহলে অবশ্যই স্বীকার করতে হবে, বাংলাদেশকে এখনো বহুদূর পথ পাড়ি দিতে হবে। আমাদের এখনো যথেষ্ট প্রশিক্ষিত বিশেষজ্ঞ নেই, উপাত্তভিত্তিক পদক্ষেপ এবং প্রাথমিক পর্যায়ে সনাক্তকরণ এবং ওইসব পরিবারকে সহাযোগিতার বিষয়গুলো যথেষ্ট অর্জিত হয়নি। ১৬টি মন্ত্রণালয়ের সমন্বয়ে জাতীয় কমিটি, উপযুক্ত আইন, নিরাপত্তা এবং কার্যকর নীতির ভিত্তিতে একটি পরিপূর্ণ জাতীয় কৌশলগত পরিকল্পনা থাকলেও ভুক্তভোগীর পরিবারগুলোর জন্য ইতিবাচক কোনো পরিবর্তন ঘটছে এর দৃষ্টান্তস্বরূপ তৃণমূল পর্যায়ে কোনো কর্মসূচি দৃশ্যমান নয়। এখনো অনেক কিছু করার বাকি।

বাংলাদেশে এখনো ব্যাপকভাবে তুলনামূলক ভালো সেবা কার্যক্রম নেই এ বাস্তবতা সত্ত্বেও সামগ্রিকভাবে প্রতিবন্ধী সেবা এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক কাজে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে। মাধ্যমিক ও ম্যাট্রিকুলেশন পরীক্ষায় দৃষ্টি ও শ্রবণ প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের নিয়মিত অংশগ্রহণ দেখা যাচ্ছে। নতুন যেসব বিদ্যালয়ভবন হচ্ছে সেগুলোতে এখন হুইলচেয়ারে চলাচলের উপযুক্ত ব্যবস্থা থাকতে হয়; প্রাথমিক শিক্ষকদের প্রতিবন্ধিতা বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেয়া হয় এবং নিয়মিত এ ধরনের শিক্ষার্থী ভর্তি করা হয়। যদিও বর্তমানে এসব শিক্ষার্থীর ঝরে পড়ার হার বিবেচনায় নেয়া হচ্ছে না।

অটিজমসহ অন্যান্য প্রতিবন্ধীদের সঙ্গে কীভাবে যোগাযোগ করতে হবে এবং তাদের সহযোগিতা করতে হবে সে ব্যাপারে বাংলাদেশের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও পরিকল্পার একটি সামগ্রিক পদ্ধতি ও প্রক্রিয়া রয়েছে।  আশ্রয়কেন্দ্রগুলো প্রতিবন্ধীদের ব্যবহার উপযোগী করা হচ্ছে, এ ধরনের মানুষের প্রয়োজনগুলো বুঝার সক্ষমতা তৈরিতে কর্মীদের প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে, এবং সঙ্কটকালে মানসিক স্বাস্থ্য সহায়তা- সবকিছু মিলিয়ে একটি আদর্শ চর্চার পরিবেশ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।

সরকার এবং বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের উদ্যোগে ক্যাফে, বুকশপ, স্যুভেনির শপ এবং আর্ট গ্যালারিতে এ ধরনের মানুষের তৈরি পণ্য ও সৃষ্টিকর্ম প্রদর্শন ও বিপণনের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। অনেকে তাদের চাকরিও দিচ্ছে। এ ধরনের সামাজিক পরিবর্তন সচেতনতা ও গ্রহণযোগ্যতারই ইঙ্গিত দেয় যা পাঁচ বছর আগে অভাবনীয় ছিল।

বিশেষ করে একটি উন্নয়নশীল দেশে কোনো দীর্ঘমেয়াদি পরিবর্তন আনার চেষ্টা করলে যেসব চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হয় তা বাংলাদেশের অটিজম পরিস্থিতি দেখলেই বুঝা যায়। একদিকে আমাদের ব্যাপক সামাজিক সচেতনতা আছে এবং অটিজমের ব্যাপারে দৃশ্যমান কিছু একটা করার ক্ষেত্রে রাজনীতিক, সমাজকর্মীদের প্রবল আগ্রহ রয়েছে। অপরদিকে এ ধরনের মানুষের ব্যাপারে তথ্য-উপাত্ত ভিত্তিক চিকিৎসা (থেরাপি) সেবা এবং অন্যান্য সেবার চরম ঘাটতি রয়েছে।

রাজনৈতিক স্বদিচ্ছা, অর্থ ও রসদের পাশাপাশি বাংলাদেশের মতো এতো বড় জনসংখ্যার দেশে (১৬ কোটি) যেখানে ছোট ভূখণ্ডের বেশিরভাগই নদী বিধৌত এবং নিয়মিত প্রাকৃতিক ও মানবসৃষ্ট দুর্যোগের মোকাবেলা করতে হয় সেখানে কোনো বৃহৎ উদ্যোগ রীতিমতো একটি পরীক্ষা।

অটিজমও ওইরকমই একটি জটিল চ্যালেঞ্জ যেটি মোকাবেলা করতে দরকার বহুমুখী পদক্ষেপ, সৃজনশীল চিন্তা এবং প্রাণান্তকর আগ্রহ।

শুধু অটিজমের কথা যদি ধরি তাহলে বেশিরভাগ দেশ অটিজম মোকাবেলায় অর্জন বলতে যা বুঝায় সেসব বিবেচনায় বাংলাদেশ সম্ভবত এখনো সব মাইলস্টোন স্পর্শ করতে পারেনি। তারপরও যখন সামাজিক পরিবর্তনের দিকগুলো দেখি তখন মনে হয়, পরিবর্তন তত্ত্বের প্যারামিটারগুলো বাংলাদেশ ভালোভাবেই অর্জন করেছে। সামাজিক সচেতনতাই যদি একমাত্র লক্ষ্য হয় তাহলে আমরা সেটি সম্পূর্ণভাবেই পেরেছি। অবশ্য ব্যক্তি বা একটি পরিবারের প্রয়োজন প্রকৃত অর্থে বুঝতে পারাটা এখনো আমাদের লক্ষ্য এবং এটি অর্জনে কাজ করছি। এ ব্যাপারে এই দেশের প্রতিশ্রুতি আমাকে আশা জোগায় যে কোনোভাবে এটি একদিন অর্জিত হবেই।

সায়মা ডব্লিউ হোসেন, স্কুল সাইকোলজিস্ট; অটিজম ও মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা মহাপরিচালকের উপদেষ্টা; মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বিশেষজ্ঞ উপদেষ্টা প্যানেলের সদস্য; বাংলাদেশের ন্যাশনাল অ্যাভাইজরি কমিটি অন অটিজম অ্যান্ড এনডিডি -এর চেয়ারপারসন; সূচনা ফাউন্ডেশনের চেয়ারপারসন

232 ভিউ

Posted ৪:১৮ পূর্বাহ্ণ | বুধবার, ০১ এপ্রিল ২০২০

coxbangla.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

এ বিভাগের আরও খবর

Editor & Publisher

Chanchal Dash Gupta

Member : coxsbazar press club & coxsbazar journalist union (cbuj)
cell: 01558-310550 or 01736-202922
mail: chanchalcox@gmail.com
Office : coxsbazar press club building(1st floor),shaheed sharanee road,cox’sbazar municipalty
coxsbazar-4700
Bangladesh
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
বাংলাদেশের সকল পত্রিকা সাইট
Bangla Newspaper

ABOUT US :

coxbangla.com is a dedicated 24x7 news website which is published 2010 in coxbazar city. coxbangla is the news plus right and true information. Be informed be truthful are the only right way. Because you have the right. So coxbangla always offiers the latest news coxbazar, national and international news on current offers, politics, economic, entertainment, sports, health, science, defence & technology, space, history, lifestyle, tourism, food etc in Bengali.

design and development by : webnewsdesign.com