কক্সবাংলা,কলাম(২২ জুন) :: নিকট ভবিষ্যতে পর্যটন শহর কক্সবাজার ধ্বংশ হবে, জনগণ উদ্বাস্ত হবে! সিভিল এভিয়েশনের প্রতারনায় সরকার পা দিয়েছে। কক্সবাজারবাসী বিমান বন্দর বিরোধী নয়। যদি সত্যই আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর নির্মান করতে হয়, তবে কেন কক্সবাজারের উন্নয়নের মহাপরিকল্পনার সাথে সমন্বয় রেখে হচ্ছেনা?
মাতারবাড়ীর তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র, গভীর সমুদ্র বন্দর, মেরিন ড্রাইভ রোড, চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত ছয় লেনের হাইওয়ে যাহা পরবর্তী পর্যায়ে চীনের কুংমিন পর্যন্ত সড়ক সংযোগ হবে। এ’ছাড়া দোহা জারি থেকে রেল লাইন এসে বালু খালি সীমান্ত এলাকা পর্যন্ত যাবে। সার্বিক বিবেচনায় কক্সবাজার জেলা উন্নয়নের মহা সোপানে পা রেখেছে। কক্সবাজার শহর থেকে টেকনাফ পর্যন্ত চোখ ধাঁধানো পর্যটনের উন্নয়ন হবে! তখন কি কক্সবাজার আজকের এই পর্যায়ে থাকবে?
কক্সবাজার হবে আন্তর্জাতিক মানের পর্যটন ও বানিজ্যিক শহর। পর্যটকদের আগমনের সুবিধার্থে সম্প্রসারিত হচ্ছে কক্সবাজার বিমান বন্দর। শুভ উদ্যোগ! কিন্তুু প্রশ্ন থেকে যায়। যদি আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে প্রতিদিন বিশাল পরিবহন এবং যাত্রীবাহি বিমান ওঠানামা করে, তাহলে বিকট শব্দ দূষণ হবেনা? শব্দ দূষণ কি এই শহরে অবস্থিত স্টার হোটেল বা সাধারণ হোটেল মোটেলে অবস্থানকারি দেশীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যটকদের জন্য বিব্রতকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করবেনা? কারণ বিমান বন্দরটি শহরের বক্ষস্থলে অবস্থিত।
আন্তর্জাতিক সিভিল এভিয়েশন আইন অনুযায়ী কোন বিমান বন্দর নির্মান করতে হলে শহর থেকে নূন্যতম ২৫ কিলো মিটার দূরে হতে হবে। কেননা, শব্দ দূষণের কারন ছাড়াও, বিমানের ওঠানামার সুবিধার্থে বিমান বন্দরের পাঁচ কিলোমিটার সীমানার মধ্যে উচ্চ ইমারত নির্মান ঝু্কিপূ্র্ণ হবে। অথচ হাজার হাজার কোটি টাকা ব্যয় করে এই পর্যটন শহর গড়ে উঠেছে। যাকে আমরা পর্যটন রাজধানী বলে থাকি। এই শহর আগামীতে শব্দদূষনের মুখোমুখি। যে শহরে শিশু জন্মের সময়ে বিমানের ভৌতিক শব্দে তার হৃদযন্ত্র কেঁপে উঠবে,বধির হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে, অন্যান্য শারিরীক উপসর্গ হলেও হতে পারে।কেউ ভাবছেনা এই শহরের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম নিয়ে!
ভাবছে না তিলে তিলে গড়ে ওঠা পর্যটন রাজধানী নিয়ে! সাগর পাড়ের জায়গা দখলের অভিলাশে সিভিল এভিয়েশন কর্তৃপক্ষ সরকারকে ভুল তথ্য দিয়ে যেন তেন করে, গোঁজামিল দিয়ে একটি নাম মাত্র আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরের রুপ দিতে চাচ্ছে! যা একটি দুঃস্বপ্ন ডেকে নিয়ে আসছে! আশীর্বাদ নয় অভিশাপ হয়ে আসছে! আমরা কেহই আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর বা বিমান ঘাটির বিরোধী নই। মাননীয় প্রধান মন্ত্রীর ভিষন ২০২১ এখন স্বপ্ন নয়, বাস্তব! এই বাস্তবতার অগ্রগতিকে কেউ যেন ব্যাহত করতে না পারে সেদিকে সকলকে সজাগ থাকতে হবে! যারা ৯১’র জলোচ্ছাস দেখেছেন, তারা বিমান বন্দরের উপর জলোচ্ছাসের ক্ষতির প্রতিক্রিয়া প্রত্যক্ষ করেছেন। প্রকৃতির কাছেও এই বিমান বন্দর তেমনটা নিরাপদ নয়।
আমাদের পরামর্শ হলো বিমান বন্দরে যেহেতু ব্যাপক বিনিয়োগ হয়েছে, তাই বিমান বন্দরটির আর একটু মান সম্মত করা। শতবর্ষী পরিকল্পনা নিয়ে বিশাল আকারের আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরের কাজে হাত দেওয়া। যে বিমান বন্দরটি ভবিষ্যৎ কক্সবাজারের সাথে সংগতিপুর্ণ হবে। এর পাশাপাশি একটি শক্তিশালী বিমান ঘাটি নির্মান করতে হবে। সময় এখনি, কেননা, ভবিষ্যতে জায়গা পাওয়া কঠিন হবে। খুরুসকুল বা চকোরিয়া পাহাশিয়াখালিতে উপযোগ্য জায়গা পাওয়া যেতে পারে। বিশাল পরিসরের আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর নির্মান শেষে এই বিমান বন্দরটির সরিয়ে নেওয়া যেতে পারে।(সূত্র : ফেইসবুক)
লেখক : মোহাম্মদ শাহজাহান(কক্সবাজার মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ডেপুটি কমান্ডার)
Posted ১:৫৪ পূর্বাহ্ণ | রবিবার, ২৩ জুন ২০১৯
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta