বুধবার ১লা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৮ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম

বুধবার ১লা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

শিরোনাম

কক্সবাজারের শরনার্থী শিবিরে হঠাৎ বন্ধ রোহিঙ্গাদের পরিবার ভিত্তিক রেজিস্ট্রেশন

শুক্রবার, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৮
293 ভিউ
কক্সবাজারের শরনার্থী শিবিরে হঠাৎ বন্ধ রোহিঙ্গাদের পরিবার ভিত্তিক রেজিস্ট্রেশন

কক্সবাংলা রিপোর্ট(২৭ সেপ্টেম্বর) :: শুরুতেই হোঁচট খেয়েছে রোহিঙ্গাদের পরিবারভিত্তিক রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া। হঠাৎ করে বন্ধ হয়ে গেছে কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফের মিয়ানমার শরণার্থীদের রেজিস্ট্রেশন।

এ পর্যন্ত মাত্র তিন হাজারের কিছু বেশি পরিবারের রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন হয়েছে। সব মিলিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা পরিবারের সংখ্যা প্রায় পৌনে তিন লাখের মতো।

রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে আসার সময় বহিরাগমন ও পাসপোর্ট অধিদফতরের করা রেজিস্ট্রেশন কোনো কাজেই আসছে না। গত বছরের নভেম্বরে মিয়ানমারের সঙ্গে হওয়া চুক্তি অনুযায়ী নতুন ফরমে রেজিস্ট্রেশন চলছিল। কিন্তু চারটি কারণে রেজিস্ট্রেশন বন্ধ হয়ে আছে।

শরণার্থী প্রত্যাবাসন বিষয়ক কমিশনার আবুল কালাম আজাদ বৃহস্পতিবার টেলিফোনে বলেন, রেজিস্ট্রেশন ফরমে শরণার্থীরা তাদের পরিচয় হিসেবে ‘রোহিঙ্গা’ শব্দটি রাখতে দাবি জানাচ্ছেন। কিন্তু একটি দেশের নাগরিকদের পরিচয়পত্রে কোনো গোষ্ঠীর পরিচয় আলাদাভাবে উল্লেখ থাকে না। এই বিষয়টি তাদের বুঝিয়ে বলা হচ্ছে।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, রোহিঙ্গাদের সঙ্গে জোর করে কোনো উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে না। বিষয়টা তারা বুঝতে পারবে বলে আমার বিশ্বাস।

এদিকে পুনরায় রেজিস্ট্রেশন কার্যক্রম চালু করতে শুক্রবার দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের একটি প্রতিনিধিদল কক্সবাজার সফরে যাচ্ছে। এই প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ও শরণার্থী সেলে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ হাবিুবল কবীর চৌধুরী।

কক্সবাজার সফরকালে তিনি জেলা প্রশাসন, প্রত্যাবাসন কমিশনারের সঙ্গে আলাদা বৈঠক করবেন বলে জানা গেছে। সেইসঙ্গে রোহিঙ্গাদের একটি প্রতিনিধিদলের সঙ্গে কথা বলে রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়ায় যেন তারা ঠিক মতো অংশ নেন সে সরকারের অবস্থান তুলে ধরবেন।

সূত্র জানায়,পরিচয়পত্রে ‘রোহিঙ্গা’ পরিচয় ছাড়া আরও যে তিনটি কারণে দ্বিতীয় পর্যায়ের রেজিস্ট্রেশন থমকে আছে তার মধ্যে রয়েছে, পাসপোর্ট অধিদফতরের প্রথম করা ব্যক্তিভিত্তিক রেজিস্ট্রেশনে কক্সবাজারের স্থানীয় প্রায় লাখ দেড়েক বাঙালি মিথ্যা তথ্য দিয়ে রোহিঙ্গাদের সঙ্গে তালিকাভুক্ত হয়। যে তালিকার পরিপ্রেক্ষিতে এখন বিভিন্ন সাহায্য সহযোগিতা দেওয়া হচ্ছে। নতুন তালিকায় ভুল তথ্য দিয়ে নিবন্ধিত হওয়ার সুযোগ নেই। তাই এই অংশটি বড় বিরোধিতা করছে।

দ্বিতীয়ত, রোহিঙ্গাদের মধ্যে অনেক পরিবারের সদস্যরা একাধিক পরিবার পরিচয় দিয়ে রেজিস্ট্রেশন করেছিল। এরা সেই অনুযায়ী ত্রাণ সহায়তা পাচ্ছে। ফলে নিজেদের প্রয়োজনীয় খাদ্য সংস্থানের পর অন্য ত্রাণ বিক্রি করে দিয়ে তারা আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছে। নতুন তালিকা যেহেতু পরিবারভিত্তিক হওয়া আগের সুবিধাগুলো বন্ধ হয়ে যাবে। তাই এই গ্রুপটি নতুন রেজিস্ট্রেশনে আসতে চাচ্ছে না।

তৃতীয়ত, রোহিঙ্গা শিবিরে একটি প্রত্যাবাসনবিরোধী  গ্রুপ আছে। এরা বিভিন্ন উসকানি দিয়ে সাধারণ রোহিঙ্গাদের ভয়-ভীতির মধ্যে রাখে। মিথ্যা তথ্য দিয়ে নানান প্রচারণা চালায়। যাতে রোহিঙ্গারা মিয়ানমারে ফিরে না যায়।

অপরদিকে এই কারণগুলো চিহ্নিত হওয়ার পর প্রশাসনের পক্ষ থেকে এই বিষয়ে এখনও পর্যন্ত কোনো কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।

ত্রাণ মন্ত্রণালয় সূত্রের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, রোহিঙ্গাদের সঙ্গে সর্বোচ্চ ভালো ব্যবহারের মাধ্যমে তাদের জন্য নেওয়া উদ্যোগুলো বাস্তবায়ন করতে চায় সরকার। এ কারণেই মন্ত্রণালয় ও স্থানীয় প্রশাসন রোহিঙ্গাদের বিষয়ে বিশেষ যত্ম নিয়ে কাজ করছে।

ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন দায়িত্বশীল একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, রোহিঙ্গারা যেন তাদের জন্য নেওয়া সরকারের আন্তরিক পদক্ষেপগুলো বুঝতে পারে সেই চেষ্টা করছি।

তিনি বলেন, আপাতত রেজিস্ট্রেশন প্রায় বন্ধ আছে। এখন রোহিঙ্গাদের প্রথমে বুঝিয়ে বলা হবে যেন তারা পরিবারভিত্তিক রেজিস্ট্রেশনে অংশ নেয়। আর যদি তারা কোনোভাবেই রাজি না হয় তাহলে আমরা একটি নির্দিষ্ট তারিখ ঘোষণা করব।

সেই তারিখে যারা পরিবারভিত্তিক রেজিস্ট্রেশনে অন্তর্ভুক্ত হবে তারাই শুধু ত্রাণ পাবেন। যারা নতুনভাবে রেজিস্ট্রেশন করবে না তাদের কোনো ত্রাণ দেওয়া হবে না।

সূত্রে আরও জানা যায়, দ্বিতীয় পর্যায়ে রোহিঙ্গাদের প্রতি তিনি পরিবার অনুযায়ী অত্যাধুনিক পদ্ধতিতে রেজিস্ট্রেশন কার্যক্রম চলছিল। প্রথমবার পাসপোর্ট অধিদফতরের তত্ত্বাবধানে হওয়া রেজিস্ট্রেশনটি ছিল ব্যক্তিভিত্তিক। একাধিক স্পটে রেজিস্ট্রেশন কাজ সম্পন্ন করায় কেউ কেউ নিজেদের দুই-তিন জায়গায় রেজিস্ট্রেশন করিয়েছেন। ফলে কৌশলে বেশি ত্রাণ সুবিধা পাচ্ছেন।

নতুন রেজিস্ট্রেশন হচ্ছে জাতিসংঘের তত্ত¡াবধানে। একটি বড় ক্যাম্পে আধুনিক যন্ত্রপাতি ব্যবহার করে কাজ চলছে। এখানে এমন ক্যামেরা আছে, কেউ যদি দ্বিতীয়বার রেজিস্ট্রেশন করতে ছবি তুলতে আসে তাহলে ধরা পড়ে যাবে।

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে গত নভেম্বরে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে হওয়া চুক্তির সময় মিয়ানমার ব্যক্তিকেন্দ্রিক তথ্যের ভিত্তিতে প্রত্যাবাসন শুরু করতে অস্বীকৃতি জানায়। তখন বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপের সদস্যরা বৈঠক করে একটি নতুন ফরম অনুমোদন করে। সেই ফরমের ভিত্তিতে রেজিস্ট্রেশন কার্যক্রম চলছিল।

রেজিস্ট্রেশন বন্ধ হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে কক্সবাজার সফরে যাওয়ার প্রসঙ্গে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ হাবিুবল কবীর চৌধুরী বলেন, রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে অত্যন্ত যত্নের সঙ্গে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে। তাদের জন্য সরকার অনেক উদ্যোগ নিচ্ছে।

তিনি বলেন, নতুন রেজিস্ট্রেশনের বিষয়ে রোহিঙ্গাদের কিছু দুষ্টু লোক ভুল তথ্য দিচ্ছে। আশা করি এই বিষয়টা তারা (রোহিঙ্গারা) বুঝতে পারবে।

293 ভিউ

Posted ১:৩০ পূর্বাহ্ণ | শুক্রবার, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৮

coxbangla.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

এ বিভাগের আরও খবর

Editor & Publisher

Chanchal Dash Gupta

Member : coxsbazar press club & coxsbazar journalist union (cbuj)
cell: 01558-310550 or 01736-202922
mail: chanchalcox@gmail.com
Office : coxsbazar press club building(1st floor),shaheed sharanee road,cox’sbazar municipalty
coxsbazar-4700
Bangladesh
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
বাংলাদেশের সকল পত্রিকা সাইট
Bangla Newspaper

ABOUT US :

coxbangla.com is a dedicated 24x7 news website which is published 2010 in coxbazar city. coxbangla is the news plus right and true information. Be informed be truthful are the only right way. Because you have the right. So coxbangla always offiers the latest news coxbazar, national and international news on current offers, politics, economic, entertainment, sports, health, science, defence & technology, space, history, lifestyle, tourism, food etc in Bengali.

design and development by : webnewsdesign.com