কক্সবাংলা রিপোর্ট(২ সেপ্টেম্বর) :: বাংলাদেশে ঈদের ছুটি শুরু হওয়ায় কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফ সীমান্তে তেমন নজরদারি নেই বললেই চলে। এ অবস্থায় টেকনাফ এবং উখিয়া সীমান্ত দিয়ে গত দু’দিনে এক লাখের বেশি রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ করছে। প্রধান রাস্তার পাশে এবং পাহাড়ি এলাকায় নতুন করে বসতি স্থাপন শুরু করেছে এসব রোহিঙ্গা।
অভিযোগ পাওয়া গেছে মিয়ানমারের রাখাইনের রোহিঙ্গাদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টির মাধ্যমে বাংলাদেশমুখী করার জন্য মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী তাদের হত্যার পর লাশ নাফ নদীতে ভাসিয়ে দিচ্ছে বলে । গত ১০দিনে নাফ নদীর বাংলাদেশ অংশ থেকে যে ৫০টি লাশ উদ্ধার করা হয়েছে তার বেশির ভাগই গুলিবিদ্ধ এবং ধারালো অস্ত্রের জখমপ্রাপ্ত।
নিজ দেশ ছেড়ে বাংলাদেশমুখী হওয়ার জন্য মিয়ানমার বাহিনীর নির্যাতনের বর্ণনা দেন টেকনাফ সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে আসা রোহিঙ্গারা।
এছাড়া রাখাইনে বসবাসরত হিন্দুরাও নির্যাতনের শিকার হয়ে বাংলাদেশে চলে আসছে। নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে গত দু’দিনে ৫৭টি পরিবারের ৪শ ৯৫ জন হিন্দু ধর্মালম্বী উখিয়ার কুতুপালং এলাকার পশ্চিম হিন্দু পাড়ায় আশ্রয় নিয়েছে।
এদিকে টেকনাফে নাফ নদী থেকে আরেক রোহিঙ্গা নারীর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। শনিবার সকাল ৮টায় সাবরাং ইউনিয়নের শাহপরীর দ্বীপ পয়েন্টে ওই নারীর ভাসমান মরদেহ পাওয়া যায়।
টেকনাফ থানার ওসি মো. মাইনউদ্দিন খান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, সকাল সাড়ে ৮টার দিকে নাফ নদীর শাহপরীর দ্বীপ পয়েন্টে একটি মৃতদেহ ভাসতে দেখে স্থানীয়রা পুলিশকে খবর দেয়। পরে পুলিশ স্থানীয়দের সহযোগিতায় এক ‘রোহিঙ্গা নারীর’ মৃতদেহ উদ্ধার করে।
তিনি আরও জানান, আনুমানিক ২৫ বছর বয়সী এ নারীর পরনে ছিল বার্মিজ থামি ও ব্লাউজ।
এটি নাফ নদীতে রোহিঙ্গাদের বহনকারী নৌকাডুবির ঘটনায় মারা যাওয়া কোনো নারীর মৃতদেহ হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে জানান ওসি। টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপে এক কবরস্থানে মৃতদেহটি দাফনের ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে জানান ওসি মাইনউদ্দিন।
অপরদিকে টেকনাফ শাহপরীরদ্বীপ থেকে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশে সহযোগিতা করার দায়ে ২৫ জন দালালকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেয়া হয়েছে। এরমধ্যে ১ জনকে ১৫ দিনের ৩ জনকে ১ মাসের এবং ২১ জনকে ৬ মাস করে বিনাশ্রম সাজা দেয়া হয়েছে। তাছাড়া শাহপরীরদ্বীপে বিক্ষুব্ধ জনতা ৩টি ট্রলার পুড়িয়ে ধ্বংস করেছে।শাহপরীরদ্বীপসহ বিভিন্ন এলাকায় পুলিশ ও কোস্টগার্ডসহ ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে এদেরকে আটক করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. জাহিদ হোসেন ছিদ্দিক এবং টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) প্রণয় চাকমা পৃথকভাবে দণ্ডাদেশ প্রদান করেন।
উল্লেখ্য গত ১০দিন আগে মিয়ানমারের রাখাইনে পুলিশ পোস্ট ও সেনাক্যাম্পে রোহিঙ্গা বিদ্রোহীদের হামলার পর সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ার পর গত চার দিনে নাফ নদী থেকে ৫০ জন রোহিঙ্গার মরদেহ উদ্ধার হলো।
এর আগে বুধবার চার জন, বৃহস্পতিবার ১৯ জন ও শুক্রবার ২৬ জন রোহিঙ্গার মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছিল।
Posted ৪:০৫ অপরাহ্ণ | শনিবার, ০২ সেপ্টেম্বর ২০১৭
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta