এম শোয়েব চৌধূরী
চীন দেশে উৎপন্ন করোনা ভাইরাসের জন্য সারা বিশ্বের ন্যায় বাংলাদেশ এক মানবিক বিপর্যয়ের মধ্যে দিন কাটাচ্ছে lসংযোগ,স্বাস্থ্য সেবা ও অর্থনীতি প্রায় থমকে দাঁড়িয়েছে l দিশেহারা হয়ে আছে পুরো বাঙালি জাতি l মৃত্যু ও আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে l ভয় ও মানুষিক শঙ্কায় গৃহ বন্দী কোটি কোটি মানুষ l হঠাৎ করে যেন এই বিপদ নেমে এসেছে l বিধাতা কেন এতো অসন্তুষ্ট মানবজাতির প্রতি ? আমরা কি খুব বেশি অন্যায় করে ফেলেছি?
এদিকে আজ ভয়ঙ্কর সুপার সাইক্লোন আম্ফান ধেয়ে আসছে বাংলাদেশের দিকে,যথাযথ প্রস্তুতি না থাকলে মর্মান্তিক ও হৃদয় বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হতে পারে lসরকার প্রস্তুতি নিয়েছে বলে, সংবাদপত্র লিখেছে, টিভিতে স্ক্রল দিচ্ছে l সোমবার বঙ্গপোসাগরে সুপার সাইক্লোনে পরিণত হয় আম্ফান, ফলে উপকূলবর্তী এলাকাগুলি ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়তে পারে। দুই দশকে এটি দ্বিতীয় সবচেয়ে শক্তিশালী সুপার সাইক্লোন।
যদিও ঝড়ের সঠিক পথ জানা যায়নি, দক্ষিণ-পূর্ব বাংলাদেশে রয়েছে মিলিয়ন সংখ্যক মায়ানামারের রোহিঙ্গার বাস, তাঁরা বেশীরভাগই শিবিরের বাসিন্দা। জাতিসংঘ জানিয়েছে, খাবার, ত্রিপল, জল পরিশুদ্ধ করার ওষুধ মজুত করা হয়েছে।
১৯৯১ সালে টাইফুন, টর্নাডো, বন্যায় ফলে বাংলাদেশে ১৩৯,০০০ লোকের মৃত্যু হয়, ২০০৮ সালে সাইক্লোন নার্গিসের প্রভাবে মায়ানমারে ১৩৮,০০০ লোকের মৃত্যু বা নিখোঁজ হয়। ঘনঘন ঝড় এবং দুর্যোগের কারণে জলবায়ুকে দায়ী করা হয়েছে, তবে দ্রুত মানুষকে সরানো, ত্রাণ শিবির করায় এই মৃত্যু কমেছে বলে জানিয়েছে সংবাদ সংস্থা এএফপি।
ঘূর্ণিঝড় এবং অমাবশ্যার প্রভাবে বাংলাদেশের উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বগুড়া, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, লক্ষীপুর, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনী, চট্টগ্রাম এবং তাদের অদূরবর্তি দ্বীপ ও চরসমূহের নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে পাঁচ থেকে ১০ ফুট অধিক উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।
ঘূর্ণিঝড় অতিক্রমকালে সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, লক্ষীপুর, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনী, চট্টগ্রাম জেলাসমূহ এবং তাদের অদূরবর্তি দ্বীপ ও চরসমূহে ভারি থেকে অতি ভারি বর্ষণসহ ঘন্টায় ১৪০ থেকে ১৬০ কিলোমিটার বেগে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।
সুপার সাইক্লোন ‘আম্ফান’ বাংলাদেশ ও ভারতের পশ্চিমবঙ্গেও আঘাত হানতে পারে। বুধবার সকাল থেকে ৭ নম্বর বিপদ সংকেতের পরিবর্তে মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে হবে। এই দুটি বন্দরের আশপাশের অঞ্চলও ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে বলে আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে l
বিধাতা,আমরা আজ দুটি ভয়াবহ বিপদের সম্মুখীন l আপনি আমাদের ক্ষমা করে দিন আর এই দুটি মহা বিপদ থেকে বাঙালী জাতিকে সুরক্ষা করুন l
লেখক পরিচয় : সম্পাদক মন্ডলীর সভাপতি ডেইলি এশিয়ান এইজ ও ভাইস প্রেসিডেন্ট আইবিসিসি, ২0 মে ২০২০,ঢাকা
Posted ১২:১০ অপরাহ্ণ | বুধবার, ২০ মে ২০২০
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta