মঙ্গলবার ৩০শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৭ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম

মঙ্গলবার ৩০শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

শিরোনাম

খেলার মাঠে মরিনহোর যত বিতর্কিত উদযাপন

শুক্রবার, ০৯ নভেম্বর ২০১৮
295 ভিউ
খেলার মাঠে মরিনহোর যত বিতর্কিত উদযাপন

কক্সবাংলা ডটকম(৯ নভেম্বর) :: আবার বিতর্কিত উদযাপন করে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় তুলেছেন হোসে মরিনহো। বুধবার চ্যাম্পিয়ন্স লিগে জুভেন্টাসের বিপক্ষে ২-১ গোলে জিতেছে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। ম্যাচের শেষ বাঁশি বাজার সঙ্গে সঙ্গেই জুভেন্টাস সমর্থকদের ব্যঙ্গ করে কানে হাত দিয়ে মুখ বাকা করে উদযাপন করেন ইউনাইটেডের পর্তুগিজ কোচ। জুভেন্টাস সমর্থকরা তো নয়ই, অন্য ফুটবলপ্রেমীদেরও অনেকে বিষয়টিকে ভালোভাবে নেননি। অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন, একজন কোচ হয়ে মরিনহো কিছুতেই প্রতিপক্ষ দলের সমর্থকদের এভাবে ব্যঙ্গ-বিদ্রুত করতে পারেন না। এটা শোভনীয় নয়!

গোল বা জয়ের পর ফুটবলাররা নানাভাবেই উদযাপন করেন। কখনো কখনো উচ্ছ্বাসের তোড়ে ভেসে খেলোয়াড়ী চেতনা বিরোধী কাণ্ড কারখানাও করে বসে। সেজন্য পেতে হয় শাস্তিও। তবে পাগলাটে উদযাপনের জন্য খেলোয়াড়দের সমালোচনা কমই হয়। কিন্তু একজন কোচও যদি খেলোয়াড়দের মতো আবেগের স্রোতে ভেসে উল্টাপাল্টা কিছু করে বসে, সমালোচনা-প্রশ্ন তো উঠবেই।

একবার, দুবার নয়, ক্যারিয়ারজুড়ে কোচ মরিনহো সেই প্রশ্নের জন্ম দিয়েছেন বারবার। দীর্ঘ কোচিং ক্যারিয়ারে কোচ মরিনহো যতবার বিতর্কিত উদযাপন করে সমালোচনার জন্ম দিয়েছেন, পরিসংখ্যানের পাতা ঘেটে সেই ঘটনাগুলো তুলে এনেছে স্পেনের জনপ্রিয় ক্রীড়া দৈনিক মার্কা। পরিবর্তন পাঠকদের জন্য কোচ মরিনহোর সেই বিতর্কিত, খেপাটে উদযাপনগুলো তুলে ধরা হলো।

১. কানে হাত দিয়ে জুভেন্টাস সমর্থকদের ব্যঙ্গ

মরিনহো ইন্টার মিলানের কোচ থাকাকালীন সময়েই তার সঙ্গে জুভেন্টাস সমর্থকদের শত্রুটা তৈরি হয়। জুভেন্টাস সমর্থকরা ইন্টার মিলানকে সহ্যই করতে পারে না। সেই সূত্র ধরেই মরিনহোর সঙ্গে আড়ি তাদের। এতোদিন পরও সেই শত্রুতাটা ভুলতে পারেনি জুভেন্টাস সমর্থকরা। দীর্ঘ ৯ বছর পর বুধবার যখন আবার তুরিনের জুভেন্টাস স্টেডিয়ামের ডাগআউটে পা রাখেন মরিনহো, জুভেন্টাস সমর্থকদের মনে পুরোনো শত্রুতাট টগবগ করে জেগে উঠে। ম্যাচের পুরো ৯০ মিনিটই জুড়েই তারা মরিনহোর নামে নেতিবাচক সব স্লোগান দেন, ব্যঙ্গ-বিদ্রুপ করেন।

ম্যাচ শেষে কানে হাত দিয়ে মুখ বাকা করে সেই ব্যঙ্গ-বিদ্রুপের কড়া জবা দিয়েছেন মরিনহো! এক অর্থে তিনি ঠিক কাজটাই করেছেন। প্রতিশোধ নিয়েছেন। কিন্তু একজন কোচ প্রতিপক্ষ দলের সমর্থকদের ব্যঙ্গ-বিদ্রুপের জবাব এভাবে প্রকাশ্যে দেবেন, এটা ঠিক শোভনীয় নয়। ফুটবলের চেতনার সঙ্গেও যায় না। তাই সমালোচনার ঝড় উঠেছে। অবশ্য মরিনহোর পক্ষ নিয়ে দু-একজন এমনটা বলছেন, মরিনহো ঠিকই করেছেন। তিনিও তো মানুষ। তারও তো খারাপ লাগে!

২. ওল্ড ট্রাফোর্ডে ১০০ মিটার দৌড়

বিতর্কিত উদযাপনের মাধ্যমে কোচ মরিনহো প্রথম সমালোচনার জন্ম দেন ২০০৩/৪ মৌসুমে। এবং সেই বিতর্কিত উদযাপনটা তিনি করেছিলেন নিজের বর্তমান ক্লাব ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের বিপক্ষে গোল করার পর,  ইআুনাইটেডের মাঠ ওল্ড ট্রাফোর্ডে। তখন তিনি ছিলেন দেশ পর্তুগালের ক্লাব এফসি পোর্তোর কোচ। তো চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শেষ ষোলতে স্যার অ্যালেক্স ফারগুসনের ইউনাইডেডের মুখোমুখি হয় মরিনহোর পোর্তো। দ্বিতীয় লেগের সেই ম্যাচে ২-১ গোলে জিতে ইউনাইটেডকে বিদায় করে কোয়ার্টার ফাইনালে উঠে যায় পোর্তো। শেষ পর্যন্ত সেবার শিরোপাও জিতে নেয় পোর্তোই।

যাই হোক, ম্যাচে প্রথমে গোল খেয়ে বসে পোর্তোই। পরে ঘুরে দাঁড়িয়ে ২-১ গোলে জিতে যায় তারা। ৯০ মিনিটে পোর্তোর জয়সূচক গোলটা করেন কস্টিনহা। গোল করেই পোর্তোর খেলোয়াড়েরা উদযাপন করতে করতে ছুটে যায় কর্নারের কাছে। সেখানে গিয়ে সবাই একসঙ্গে একে অন্যের উপর শুয়ে উপরে উদযাপন করেন। মজার বিষয়টা হলো, ডাগআউট থেকে উসাইন বোল্টের গতিতে ১০০ মিটার দৌড়ে গিয়ে খেলোয়াড়দের সেই উদযাপনে শরীক হন কোচ মরিনহোও!

৩. ন্যু-ক্যাম্পে তার প্রথম বিতর্কিত উদযাপন

দীর্ঘ ৩ বছর রিয়াল মাদ্রিদের কোচ ছিলেন মরিনহো। এই ৩ বছরে বার্সেলোনার সমর্থকদের চক্ষুশূল হয়ে উঠেছিলেন তিনি। তবে মরিনহো বার্সেলোনা সমর্থকদের চোখের বিষ হয়ে উঠেন তারও অনেক আগেই। বল যায় বার্সেলোনা সমর্থকদের সঙ্গে মরিনহোর শত্রুতার শুরুটা ২০০৬ সালে। তখন তিনি ইংলিশ ক্লাব চেলসির কোচ। তো চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ম্যাচে ন্যু-ক্যাম্পে বার্সেলোনার মুখোমুখি হয় চেলসি।

ম্যাচের ৯০ মিনিটে দারুন এক গোল করেন আইভরিকোস্টের সাবেক তারকা দিদিয়ের দ্রগবা। গোলের আনন্দে দ্রগবারা যতটা আবেগপ্রবন হন, কোচ মরিনহোর উচ্ছ্বাস দেখান তার চেয়েও বেশি। আনন্দের আতিশয্যে ডাগআউটের সামনে হাঁটু গেড়ে মাটির দিকে ঘুষি ছুড়েন মরিনহো। ঠিক খেলোয়াড়েরা যেভাবে উদযাপন করেন।

৪. ন্যু-ক্যাম্পে মরিনহোর পাগলাটে দৌড়

৪ বছর পর ২০১০ সালে আবারও ন্যু-ক্যাম্পকে কাঁপিয়ে দেন মরিনহো। এবার তিন ছিলেন ইন্টার মিলানের কোচ। তো চ্যাম্পিয়ন্স লিগ সেমিফাইনালে বার্সেলোনার মুখোমুখি হয় মরিনহোর ইন্টার মিলান। বার্সেলোনাকে হারিয়ে ফাইনালেও উঠে যায় ইন্টার মিলান। ফাইনালে বায়ার্ন মিউনিখকে হারিয়ে জেতে শিরোপাও। তো ন্যু-ক্যাম্পের দ্বিতীয় লেগটিতে স্বাগতিক বার্সেলোনাই জিতে যায় ১-০ গোলে।

কিন্তু দুই লেগ মিলিয়ে ৩-২ অগ্রগামিতায় ফাইনালে উঠে যায় ইন্টার মিলান। তো ন্যু-ক্যাম্পে ম্যাচ শেষ হওয়ার আগেই আচমকা ডাগআউট ছেড়ে দৌড়ে মাঠে ঢুকে পড়েন মরিনহো। হাত উঁচিয়ে খেপাটে ষাড়ের মতো দৌড়াতে থাকেন মাঠজুড়ে। এই কাণ্ড করার সময় মাঠের মধ্যেই বার্সেলোনার গোলরক্ষক ভিক্টর ভালদেসের সঙ্গে তার একটু বেঁধে যায়। ভালদেস দৌড়ে এসে মরিনহো ধাক্কিয়ে মাঠের বাইরে পাঠানোর চেষ্টা করেন। তবে তার সতীর্থ কোচরা ছুটে এসে ভালদেসের কবল থেকে তাকে মুক্ত করেন এবং একসঙ্গে উদযাপন করেন!

৫. খেলোয়াড়ের কাঁধে চেপে বসে উদযাপন

এবারের কাণ্ডটা তিনি করেন রিয়াল মাদ্রিদের কোচ হিসেবে। ২০১১ সালে সেভিয়ার বিপক্ষে স্প্যানিশ লা লিগার ম্যাচে। সেভিয়ার ঘরের মাঠ মেস্তালায় প্রথমে এগিয়ে যায় রিয়াল মাদ্রিদ। গোলের পর উচ্ছ্বাসের জোয়ারে ভেসে মরিনহো দৌড়ে গিয়ে নিজ দলেরই খেলোয়াড় হোসে কায়েওনের কাঁধে চেপে বসেন। যিনি বদলি হিসেবে মাঠের নামার জন্য ডাগআউটে জগিং করছিলেন।

৬. ভিয়ারিয়ালের রিজার্ভ বেঞ্চের সামনে গিয়ে উদযাপন!

এই কাণ্ডটিও তিনি করেন রিয়ালের কোচ হিসেবে, ২০১১ সালেই। ভিয়ারিয়ালের বিপক্ষে ম্যাচে। নিজেদের ঘরের মাঠ সান্তিয়াগো বার্নাব্যুর সেই ম্যাচে ৪-০ গোলের জয় পায় রিয়াল। দলের ৪ নম্বর গোলটি করেন ব্রাজিলিয়ান তারকা কাকা। মরিনহো এই গোল উদযাপন করতে চলে যান প্রতিপক্ষ ভিয়ারিয়ালের ডাগআউটে, মানে রিজার্ভ বেঞ্চের সামনে। যেখানে ভিয়ারিয়ালের কোচ-খেলোয়াড়েরা বসে ছিলেন।

কেন তিনি উদযাপন করতে প্রতিপক্ষের ডাগআউটে যান? উত্তরে মরিনহো দিয়েছিলেন মজার এক তথ্য, ‘আমি আমার ছেলের সঙ্গে শপথ করেছিলাম, আমরা গোল করলে তার সঙ্গে উদযাপন করব। সে সব সময়ই সফরকারী দলের রিজার্ভ বেঞ্চের পেছনে গিয়ে বসে থাকত।’ মরিনহো বোঝাতে চান, ওই ম্যাচেও তার ছেলে সফরকারী ভিয়ারিয়ালের রিজার্ভ বেঞ্চের পেছনে গিয়ে বসেছিলেন।

৭. ম্যানচেস্টার সিটির বিপক্ষে ন্যু-ক্যাম্প কাণ্ডের পুনরাবৃত্তি

২০১০ সালে ন্যু-ক্যাম্পে যে কাণ্ড করেছিলেন, ২০১২ সালে ম্যানচেস্টার সিটির বিপক্ষে জয়ের পরও সেই কাজই করেন মরিনহো। এবারও রিয়ালের কোচ হিসেবেই। তবে এবার তিনি কাণ্ডটা করেন ঘরের মাঠ বার্নাব্যুতে। ম্যাচের ৯০ মিনিটে গোল করেন ক্রিস্তিয়ানো রোনালদো। গোলের পর রোনালদো স্বভাবসূলভ ভঙ্গিতে দুই হাঁটু গেঢ়ে মাঠে ডাইভ দেন। ডাগআউটে মরিনহোও শিষ্য রোনালদোকে অনুসরণ করেন। দুই হাঁটু গেঢ়ে পিছলে যান অনেক দূর!

295 ভিউ

Posted ৭:০১ অপরাহ্ণ | শুক্রবার, ০৯ নভেম্বর ২০১৮

coxbangla.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

Editor & Publisher

Chanchal Dash Gupta

Member : coxsbazar press club & coxsbazar journalist union (cbuj)
cell: 01558-310550 or 01736-202922
mail: chanchalcox@gmail.com
Office : coxsbazar press club building(1st floor),shaheed sharanee road,cox’sbazar municipalty
coxsbazar-4700
Bangladesh
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
বাংলাদেশের সকল পত্রিকা সাইট
Bangla Newspaper

ABOUT US :

coxbangla.com is a dedicated 24x7 news website which is published 2010 in coxbazar city. coxbangla is the news plus right and true information. Be informed be truthful are the only right way. Because you have the right. So coxbangla always offiers the latest news coxbazar, national and international news on current offers, politics, economic, entertainment, sports, health, science, defence & technology, space, history, lifestyle, tourism, food etc in Bengali.

design and development by : webnewsdesign.com